সিরিজ 2. শারদীয়া কনটেস্ট ১৪২৮ | নবমীর দিন - মা দুর্গা প্রতিমা দর্শন ও দুর্গা পূজার ফটোগ্রাফি
দুর্গা পূজা বাঙালির অনেক গর্বের পূজা । দুর্গা পূজায় সমস্ত ধর্মের মানুষ অনেক আনন্দের সাথে এই উৎসবে মেতে ওঠে। তাঁরা ঠাকুর দর্শনে বেরিয়ে পড়ে। এখনো করোনা মহামারী যায় নি তাই আমাদের কোভিড বিধি মেনে সচেতন ভাবে পূজা দেখা উচিত। আমি এই প্রথম বার বর্ধমান শহরে পূজা দেখলাম। প্রাকৃতিক দুর্যোগের মধ্যে দিয়ে পূজা দেখে শেষমেস বাড়ি ফিরলাম।
নতুন অভিজ্ঞতা
■বর্ধমানে যেহুতু প্রথম বার ঠাকুর দেখতে গেছি আমার বোনের সাথে। সব জায়গা ঠিক মতো না চেনার দরুন সমস্ত প্যান্ডেল ঘুরে দেখা সম্ভব হয় নি। তবে যেগুলি দেখেছি সেগুলি টোটো নিয়ে ঘুরে দেখেছি। যা আমাকে নতুন অভিজ্ঞতা দিয়েছে। কারণ টোটো ড্রাইভার 10 টাকার পথ 40 টাকা পর্যন্ত ও নিয়েছে। চেনা পথ হলে হেঁটে দেখেই বেশি মজা পেতাম । যাই হোক পথ চিনে নিলাম পরের বছর হেঁটেই পূজা দেখবো।
●প্রথমে আমরা টোটো করে আলমগঞ্জ বারোয়ারি ক্লাবের পূজা দেখতে গেছিলাম। আলমগঞ্জ এর পূজা দেখে টোটো করে শ্যামলাল কমিটির পূজা দেখতে যায়। তারপর আবার টোটো নিয়ে ময়ূরমহল মাতৃ সংঘ কমিটির পূজা দেখি।তারপর সবুজ সংঘ দেখে পদ্মশ্রী ক্লাবের পূজা দেখি শেষে পুলিশ লাইনের পূজা কমিটির দেখে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দেয়।
1.আলমগঞ্জ বারোয়ারি ক্লাবের দুর্গা পূজা
থিম: আঁধারে আলো
●আঁধারে আলোর মধ্যে পৃথিবীকে আলোর দিশা দেখানো ও সকল জড়তা দূর করে সকল অন্ধকার কাটিয়ে বিশ্ব আবার নতুন আলোয় উজ্জ্বীবিত হোক তারই বার্তা দিয়েছে।
2.শ্যামলাল দুর্গা পূজা কমিটির দুর্গা পূজা
থিম : শান্তির দেশ
●শান্তির দেশ বলতে এমনই এক দেশকে বোঝানো হয়েছে সেটা কিছুটা রূপকথার গল্পের মতো। সেখানে শান্ত শীতল পরিবেশ । পরীদের বসবাস। আমরা পরীর মতো নিজের ইচ্ছা ডানা নিয়ে ঘুরে বেড়াবো। এক কথায় স্বর্গের মতো সুখময় দেশ।
ময়ূর মহলের কমিটির পাশের একটা ঘরোয়া পূজা
3.ময়ূরমহল মাতৃ সংঘ কমিটির দুর্গা পূজা
থিম : বুদ্ধ বিহার
● বুদ্ধ ধর্মের পবিত্র স্থানকে বোঝায়। বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের মঠ। এই মঠ বৌদ্ধ ধর্মের মানুষদের শিক্ষা কেন্দ্র। তারা ধ্যান ও করে এই মঠে। সেই বুদ্ধ বিহার মঠ নিয়ে তৈরি করা হয়েছে।
ছবির লোকেশন
প্রাকৃতিক দুর্যোগ ( হালকা ঝড়ের সাথে প্রচণ্ড বৃষ্টি)
বুদ্ধ বিহার থিমটি দেখে যখন টোটো করে যাচ্ছি ওই মুহূর্তে ঝড় বৃষ্টি শুরু হয়ে গেছে। প্রচণ্ড বৃষ্টি হচ্ছে। তাও টোটো ড্রাইভার টোটো নিয়ে সবুজ সংঘের পাশে নামিয়ে দেয়। সেখানে 1 ঘন্টা আমরা দাঁড়িয়ে থাকি। তারপর বৃষ্টি থেমে গেলে পূজা দেখতে যায় । কিন্তু দুঃখের বিষয় এই যে প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে তখন কারেন্ট ছিলো না। যখন আমরা সবুজ সংঘ ক্লাবের পূজা দেখতে যায়। তখন প্যান্ডেলের মধ্যে অন্ধকার। মাকে ভালোভাবে দর্শন করতে পারে নি। তবে অন্ধকার অবস্থায় একটা ছবি তুলেছিলাম।
4.সবুজ সংঘের দুর্গা পূজা
থিম: দিল্লির লক্ষীনারায়ন মন্দির
দিল্লির বিরাট বড় মন্দির 7.5 একর পর্যন্ত বিস্তৃত। সেই মন্দিরের থিম টা সবুজ সংঘ ক্লাব তৈরি করেছে।
5.পদ্মশ্রী ক্লাব
থিম : চিত্র পরিচালক সত্যজিৎ রায়
●ভারতীয় চিত্র পরিচালক সত্যজিৎ রায় তাঁর কর্মের মধ্যে দিয়ে অমরত্ব লাভ করেছেন। ভারতীয় সিনেমাকে নতুন মাত্রা দিয়েছেন। তাঁর প্রতিভা ততা কাজের দক্ষতা এতটাই ছিলো যে সমালোচকরা পর্যন্ত তাকে ভূয়সী প্রসংসা করতো। বিখ্যাত চিত্র পরিচালক সত্যজিৎ রায় অনুসারে পদ্মশ্রী ক্লাব থিম টি করেছে ।
সামান্য খাওয়া দাওয়া
●এবার আমরা একটা দোকান থেকে কিছু চপ কিনে খায়। যেহুতু দিনের বেলা তেমন ভিড় ছিলই না। এই জন্য বাইরে খাবার খাওয়ার সাহস পেয়েছিলাম।
6 .পুলিশ লাইন কমিটির দুর্গা পূজা
থিম : আদিবাসীদের জীবনযাত্রা
●অনেক আর্টের মধ্যে আদিবাসীদের জীবন যাত্রা তুলে ধরা হয়েছে। তারা হাড় ভাঙা পরিশ্রম করে সাদাসিধে জীবন যাপন করে তারই অনেক চালচিত্র আপনারা ছবির মধ্যে দেখতে পাবেন।
আতঙ্কের খবর
নবমীর দিন পূজা দেখে সন্ধ্যায় বর্ধমান স্টেশনে যখন পৌঁছায় তখন সন্ধ্যা হবো হবো এমন সময়। গোধূলি সময় বলা চলে। তারপর বোন আমি প্লাটফর্মে ওভার ব্রিজে দাঁড়িয়ে থাকি। যখন হাওড়া যাওয়ার ট্রেন ঘোষণা হয় যখন ট্রেন স্টেশনে আসে। আমরা 4 নং প্লাটফর্মে যেয়ে ট্রেনে উঠি। ট্রেন প্রায়ই আধা ঘন্টা প্লাটফর্মে দাঁড়িয়ে আছে। কারণ বর্ধমান থেকে ট্রেনটি ছাড়বে। ততক্ষণে সন্ধ্যা হয়ে গেছে। তারপর ট্রেন ছাড়লে আমরা ট্রেনে করে আমার স্টেশন পালসিটে নেমে পড়ি। গ্যারেজ থেকে সাইকেল নিয়ে বাড়ি ফিরি। পরের দিন দশমীর সকালে যখন ফোন খুলে খবর দেখি। তখন শুনলাম। সন্ধ্যার সময় বর্ধমান স্টেশনে নাকি বড় একটা ব্যাগে কারা বোমা রেখে গেছে 1 নং প্লাটফর্মে। খবর টি শুনে অনেক টা আতঙ্ক অনুভব করি। কারণ সন্ধ্যার সময় আমরা বর্ধমান স্টেশনে ছিলাম। যাইহোক পুলিশ সময় মতো বোমার ব্যাগ উদ্ধার করে। কারো কোনো ক্ষতি হয় নি জানা মতে। ভগবানের কাছে এই জন্য কোটি কোটি প্রনাম।
মানুষ সুযোগ পেলেই ঠকায় ঠিক বলেছেন। যদি আপনি রাস্তা চিনতেন তাহলে ১০ টাকার ভারা ৪০ টাকা চাওয়ার সাহস পেত না। ভাই কি বলবো আপনি সেরা পোস্ট করেছেন কারন ইন্ডিয়াতে অনেক টাকা খরচ করে পূজাতে। যার এক কোনাও করে না আমাদের দেশে সেন্ট্রাল এরিয়ার পূজাতে। আপনার জন্য শুভকামনা রইল।🥰🥰🥰🥰
ইন্ডিয়াতে থিম করে প্রচুর টাকা খরচ করেই পূজা করে। তবে এই বছর সবজায়গায় বড় করে হয় নি করোনার জন্য। আগামী তে হবে সেগুলো আপনাদের মাঝে ভাগ করে নেবো। আমার পোস্ট টি ভালো লাগার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া।
আসলেই ভাইয়া 🥰🥰🥰
আপনার দর্শনীয় স্থানগুলো আমার খুব পছন্দ হয়েছে। বিশেষ করে শান্তির দেশ থিমটি আমার অনেক ভালো লেগেছে ।এসব অসাধারণ কারু কাজ গুলোর মাধ্যমে মানুষ নতুন করে বাঁচার উদ্দীপনা পায়। সেই সাথে আমার খুব মন খারাপ হচ্ছে এই কথাটি শুনে যে বর্ধমান স্টেশনে বোমা রেখে যাওয়ার ঘটনাটি নিয়ে। যাই হোক মহান সৃষ্টিকর্তার অশেষ রহমতে কারোর কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। যাইহোক পোস্টটি অসাধারণ হয়েছে শুভেচ্ছা রইল আপনার জন্য।
হা ভাইয়া। সেইরকমই আতংক তৈরি হয়েছিলো। কারো কিছু হয় নি ভগবানের অশেষ কৃপা। আপনার গঠনমূলক যথার্থ সুন্দর মন্তব্যর জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। ভাইয়া আপনি একদম ঠিক ধরেছেন। যখন শান্তির দেশ প্যান্ডেল তাই প্রবেশ। ভেতরে বড় বড় ফ্যানের হওয়া এমন ভাবে বইছে মনে হচ্ছে স্বর্গের শীতলতা অনুভব করছি। দারুন লাগছিলো যতক্ষন প্যান্ডেল টার মধ্যে ছিলাম। শুভেচ্ছা আবিরাম ভাই।
আপনার জন্যেও অবিরাম শুভেচ্ছা ভাই
প্রত্যেকটি ছবিই অনেক সুন্দর হয়েছে দাদা। আপনাদের ভিন্ন ভিন্ন পূজো মন্ডপ সম্পর্কে জানতে পারলাম। পুলিশ লাইন কমিটির পূজোর ছবিগুলো আমার কাছে ভালো লেগেছে দাদা। শুভেচ্ছা রইল আপনার জন্য।
অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে ভাইয়া।
এই থিমটা দেখে যেন চোখদুটোয় একটা শান্তির ছায়া নেমে এলো। এতো অদ্ভুত সুন্দর যে আইডিয়া হতে পারে অথবা এত অদ্ভুত সুন্দর একটা আইডি আছে কারো মাথায় আসতে পারে!! এটা আসলে ভাবাই যায় না।
একদম ঠিক বলেছেন। আমার কাছে খুব ভালো লেগেছে। ভিতরে ঢুকলেই ঠান্ডা হাওয়া মন প্রাণ জুড়িয়ে যাচ্ছিলো। অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে আপু। শুভেচ্ছা রইলো ।
এতো সুন্দর হয় পূজা মন্ডব গুলো যা আপনার ফটোগ্রাফি না দেখলে বুঝতাম না। বাংলাদেশের পূজাগুলো মনে হয় আপনাদের ধারে কাছেও না। কত সুন্দর সাথে আপনার বিশ্লেষণাত্মক লেখনি। সব মিলে অসাধারণ।
আপনাকে ও অসংখ্য ধন্যবাদ আপনার সুন্দর মন্তব্যর জন্য।
আসলে ভারতে পুজা অনেক বেশি যাক জমক করে করা হয় আমাদের দেশে এমন দেখিনা।আপনার ফটোগ্রাফি গুলো অনেক সুন্দর ছিল দাদা শুভ কামনা রইলো।
ভাইয়া অনেক অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
সমস্ত ফটোগ্রাফি গুলো অসাধারণ ছিল। সত্যিই চমৎকার ভাবে নবমীর দিনটি পার করেছেন। বিশেষ করে আপনি ঠকেছেন এটা শুনে অতীব আশ্চর্য লাগছে।
যাইহোক ঠাকুর দেখতে গিয়ে কোন প্রকার ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয় নি এটাও একটি ভাল দিক।
সবকিছু মিলিয়ে ভালোই ছিল
ঠকা বলতে পূজার সময় টোটোয় বেশি টাকা নেয়। সেটাই দিতে হলো ভাই। কিন্তু যদি পথ চিনতাম তাহলে যেগুলো হাঁটার পথ ওই গুলো হেঁটে দেখলে টোটো ড্রাইভার কে বেশি টাকা গুনতে হতো না। তবুও শহর টা চেনা দরকার ছিলো। পুরোটাই টোটোয় ঘুরলেও শহরের পথ ঘাট চিনলাম। অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
প্রত্যেকটি ফোটোগ্রাফি অসাধারণ দাদা।তবে বোমের কথা জেনে এখনো মন কেমন শিউরে উঠছে।সত্যিই পূজা দেখা ভালো ছিল।ধন্যবাদ দাদা।
হা আমিও আতঙ্কিত হয়েছিলাম খবর শুনে। শুভেচ্ছা রইলো।