গন্তব্য যখন শায়ানের দাদু বাড়ি || @shy-fox 10 beneficiary
শেষ যেবার শায়ানের দাদু বাড়িতে গিয়েছিলাম, সেবার আমার ছোট মা মারা গিয়েছিল। ঠিক সেই সময় গিয়েছিলাম , তারপর থেকে আর সেখানে যাওয়া হয়নি। বলা যায় পরিবারের সঙ্গে আমার অনেকটাই দূরত্ব হয়ে গিয়েছে । এটা যদিও নতুন কিছু না, তবে আমি আমার ব্যক্তিগত জীবন ও আমার কাজের জন্য, হয়ত এমনটা দূরত্ব হয়ে গিয়েছে । তবে আমি এত কিছুর মাঝেও, চেষ্টা করি সবার খোঁজ খবর নেওয়ার জন্য ।
বিশেষ করে আমার কাছে প্রতিটি শুক্রবারের দিন অনেক গুরুত্বপূর্ণ । যাইহোক গত শুক্রবারে আমি গিয়েছিলাম শায়ানের দাদু বাড়িতে। মূলত আমার প্রথম যে টার্গেট ছিল সেটা হচ্ছে, সেখানে গিয়ে আমার ছোট মায়ের কবর জিয়ারত করব এবং দ্বিতীয় টার্গেট ছিল শায়ানের দাদু ভাইয়ের খোঁজখবর নেব । কারণ শায়ানের দাদুভাই এখন একাই জীবন যাপন করছে ।
আগের রাতেই ড্রাইভারকে বলে রেখেছিলাম যে, সকালবেলা আমরা শায়ানের দাদু বাড়িতে যাব। যাইহোক সকালবেলা ঘুম থেকে ওঠার পরেই মোটামুটি রেডি হয়ে গাড়িতে করে সোজা চলে গেলাম শায়ানের দাদুবাড়িতে। যদিও যাত্রাপথে একটু বিরতি দিয়েছিলাম , কারণ দীর্ঘদিন পরে শায়ানের দাদু বাড়িতে যাচ্ছি, তাই মূলত কিছু ফল কেনার জন্য যাত্রা বিরতি নিয়েছিলাম।
যাইহোক পাঁকা রাস্তা পেরিয়ে, যখন গ্রামের কাঁচা রাস্তায় ঢুকে পড়লাম, তখন গাড়ি কাঁচা রাস্তায় একটু দোল খাচ্ছিল। শায়ান মাঝেমাঝেই তখন হেসে উঠছিল। শায়ান মোটামুটি ভালই খুশি ছিল এবারের ভ্রমণে।কারণ তাকে নিয়ে দীর্ঘদিন পরে বাহিরে বের হয়েছি । অবশেষে খানিকবাদে আমরা পৌঁছে গেলাম শায়ানের দাদুবাড়িতে।
মোটামুটি শায়ানের দাদু বাড়িতে পৌঁছে যাওয়ার পরপরই, আমরা সোজা গেলাম শায়ানের দাদু ভাইয়ের কাছে এবং সেখানে তার সঙ্গে কুশল বিনিময় করে , অবশেষে আমি চলে গেলাম আমার কাজে মূলত কবর জিয়ারত করার জন্য। যাইহোক যদিও সেই সময় একটু আমি মানসিকভাবে ইমোশনাল হয়ে গিয়েছিলাম , তবে চেষ্টা করেছি নিজেকে একটু শক্ত করে রাখার জন্য । কারণ যে চলে যায়, তাকে তো আর ফেরত পাওয়া যায়না । বরং যে আছে, তাকে আগলে ধরে রাখাই বুদ্ধিমানের কাজ ।
ছোট মায়ের বানানো খামার বাড়িতে, মোটামুটি সবকিছু ঠিক আগের মতই আছে এখন। যদিও কিছুটা পরিবর্তন হয়েছে, কারণ সেখানে কিছু নতুন লোক নেয়া হয়েছে । তারাই মূলত খামারবাড়িটা দেখাশুনা করে এবং তারাই মূলত এখন খামার বাড়ির কাজগুলো করে থাকে । যদি শায়ানের দাদুভাই এ ব্যাপার গুলো একটু হ্যান্ডেল করে , তবে তার জন্য অনেকটা কষ্টকর হয়ে গিয়েছে । কারণ তার দিনশেষে নিজস্ব একটা জীবন আছে। সেই জীবনে সে, ভীষণ একা হয়ে গিয়েছে ।
শায়ানের দাদুভাই মানে আমার বাবা, আমাকে দীর্ঘদিন পরে কাছে পেয়ে সে মোটামুটি ভালই আনন্দিত হয়েছিল এবং আমরা দীর্ঘ সময় একসঙ্গে পারিবারিক সময় কাটিয়েছি। দীর্ঘদিন পরে বাবা নিজের হাতে রান্না করে আমাদেরকে খাইয়েছে । তবে ব্যাপারটার জন্য একটু হলেও আমাকে খারাপ লাগছিল। আসলে কিছু কিছু সময় , কিছু কিছু ব্যাপারে কোন কিছু বলার থাকে না, কিছু কিছু সময় কিছু কিছু ব্যাপারে নীরব থাকতে হয় ।
যাইহোক মোটামুটি আমিও আমাদের সেই খামারবাড়িটা ভালোভাবে একটু দেখভাল করার চেষ্টা করলাম এবং মোটামুটি খামারবাড়িতে যারা কাজ করে, তাদের কাছ থেকে খোঁজ খবর নেওয়ার চেষ্টা করলাম এবং বুঝতে পারলাম সবকিছু ঠিকঠাকই চলছে । শুধুমাত্র ছোটমার অভাবটা ভালোভাবেই বুঝতে পারলাম । আজ হয়তো যদি ছোট মা বেঁচে থাকতো, তাহলে ব্যাপারটা অন্যরকম হতে পারতো। আরো আনন্দঘন হতে পারতো সময়টা আমাদের জন্য । অবশেষে পারিবারিক সময় কাটানোর পরে, তারপরে আমরা শায়ানের দাদু বাড়ি থেকে শায়ানের নানির বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছিলাম ।।
যেহেতু শুক্রবারের দিন আর আমাদের মূলত এই দিনে, দুটো জায়গায় ভ্রমণ করতে হয়েছিল ।প্রথমত শায়ানের দাদুবাড়িতে এবং দ্বিতীয়তো শায়ানের নানুবাড়িতে । কারণ অন্যান্য দিন ঠিকঠাকমতো সময় পাওয়া যায় না। তাই আমরা মূলত এই দুটো জায়গাতেই গত শুক্রবারে গিয়েছিলাম ।
যাইহোক গত শুক্রবারের ভ্রমণের উপর আমি চেষ্টা করব দুটো জায়গার উপরেই লিখিত আর্টিকেল লেখার জন্য এবং সঙ্গে ভিডিও কনটেন্ট পরবর্তী সময়ে আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করার জন্য । আশাকরি আপনারা সেই পর্যন্ত আমার সঙ্গেই থাকবেন। শুভেচ্ছা রইল সকলের জন্য ।।
ডিসকর্ড লিংক:
https://discord.gg/VtARrTn6ht
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
আপনার গ্রামের বাড়ি ভ্রমণের গল্প পড়লাম। আমাদের প্রত্যেকেরই উচিত মাঝে মাঝে গ্রামে যাওয়া কেননা গ্রামেই আমাদের শিকড়। তবে ছোটমা বলতে কি আপনি চাচিকে বুঝিয়েছেন কিনা বুঝতে পারলাম না। সায়ানের জন্য দোয়া রইল। সেইসঙ্গে আপনাদের জন্য শুভকামনা।
আমার ছোট মা । হুম আপনার চাচি ।
এই পৃথিবীটা আমাদের জন্য ক্ষণস্থায়ী একটি জীবন। আমাদের প্রিয় মানুষগুলো সময়ের সাথে সাথে হারিয়ে যায়। আর রেখে যায় সুখ-দুঃখ, হাসি-কান্নার বিভিন্ন স্মৃতি। যে স্মৃতিগুলো সারাজীবন রয়ে যায়। আপনার ছোট মা যেন পরপারে ভালো থাকো এই দোয়াই করছি। তবে যাই হোক শায়ান বাবু তার দাদুর কোলে গিয়ে অনেক খুশি হয়েছে এটা বোঝাই যাচ্ছে। যেহেতু তার ছোট দাদিমা এই পৃথিবীতে নেই তাই তার দাদু ভাই একা হয়ে গিয়েছেন। ভাইয়া আপনি একদম ঠিক বলেছেন যে চলে গেছে তাকে আর কখনো ফিরে পাওয়া যাবে না কিন্তু যে এই পৃথিবীতে রয়েছে তাকে আঁকড়ে ধরে রাখতে হবে। হয়তো শায়ান বাবুর দাদু অনেক একা হয়ে গেছে। তার একাকীত্ব জীবনে আপনাদেরকে পেয়ে অনেক খুশি হয়েছে। একদিকে যেমন শায়ান বাবু অনেক খুশি হয়েছে অন্যদিকে তার দাদুও তাকে পেয়ে অনেক খুশি হয়েছে। ছুটির দিনে আপনি আপনার পরিবারের সকলকে নিয়ে অনেক সুন্দর মুহূর্ত কাটিয়েছেন এটা বোঝাই যাচ্ছে। এভাবেই কাটুক আপনাদের প্রতিটি দিন এবং প্রতিটি মুহূর্ত এই কামনাই করছি ভাইয়া। সর্বশেষে একটি কথাই বলতে চাই শায়ান বাবুর জন্য অনেক অনেক শুভকামনা এবং ভালোবাসা রইলো। 😍😍😍
ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য। শুভেচ্ছা রইল ।
আংকেল আপনাদের নিজের হাতে রান্না করে খাইয়েছে এই বিষয়টি আমার কাছে দারুণ লেগেছে।আসলে আনন্দের মূহুর্তে এই চলে যাওয়া মানুষগুলোকে মিস করা হয় খুব।
ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য। শুভেচ্ছা রইল ।
ভাইয়া আপনার বাবার বাড়ি ভ্রমণের ব্যাপার জেনে খুবই খুশি হলাম। তবে আপনার ছোট মা আর জীবিত নেই সে কথা শুনে মনটা ব্যথিত হয়ে গেল। সৃষ্টিকর্তা ওনাকে ওপারে ভালো রাখুন এই দোয়া করি। আপনাদের পরবর্তী ভ্রমণের আর্টিকেল করার জন্য আগ্রহে রইলাম। ধন্যবাদ আপনাকে ভাইয়া খুব সুন্দর ভাবে আপনাদের যাত্রা পথের অভিজ্ঞতা আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য। শুভ হোক আপনার আগামী যাত্রা।
সব বাবারা সত্যিই তার ছেলেকে অনেক ভালোবাসে যেমন আপনি শায়ানকে ভালোবাসেন আপনার বাবাও ঠিক তেমন ভালোবাসে, বেচে থাকুক সকল বাবা মায়ের ভালোবাসা।সকল বাবা মা আরো দীর্ঘজীবী হোক। ভালো থাকুক সকল বাবা মা।
ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য। শুভেচ্ছা রইল ।
ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য। শুভেচ্ছা রইল ।
শায়ানের দাদুর বাড়ি ভ্রমণের মুহূর্তগুলো সুন্দর করে আমাদের মাঝে তুলে ধরেছেন এটা দেখে ভালো লাগলো ভাইয়া। শায়ানের ছোট দাদিমার কথা আমরা আগেই জেনেছি। তিনি দুর্ঘটনায় মৃত্যুবরণ করেছেন। তিনি তার সাজানো গোছানো সংসার রেখে চলে গেছেন পরপারে। আপনি আপনার ছোট মায়ের কবর জিয়ারত করতে গিয়েছেন এটা জেনে খুবই ভালো লাগলো। আপনি আপনার ব্যস্ততার মাঝেও সবার কথা মনে রাখেন এই জিনিসটি আমার কাছে খুবই ভালো লেগেছে। আপনার বাবাকে দেখে অনেক ভালো লাগলো ভাইয়া। সবাই মিলে একত্রে অনেক সুন্দর মুহূর্ত কাটিয়েছেন। দোয়া করি এভাবেই কাটুক আপনাদের আগামী দিনগুলো। ভাইয়া আপনার জন্য এবং আপনার পরিবারের সকলের জন্য শুভকামনা রইলো।
ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য। শুভেচ্ছা রইল ।
ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য। শুভেচ্ছা রইল ।
যার যায় সেই বোঝে বিচ্ছেদে কী যন্ত্রণা 😞। তবে আপনার এই কথা টাও ঠিক যে চলে গেছে তাকে নিয়ে বেশি না ভেবে যে আছে তাকে নিয়ে ভাবনা চিন্তা করাই উওম। আপনার লেখার মধ্যেই আপনার চাপা কষ্ট টা বুঝা যাচ্ছিল। এবং শায়ান বাবু দেখছি তার দাদুর কোলে উঠে বেশ খুশি।
ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য। শুভেচ্ছা রইল ।
আপনার এই লেখাটি পড়ে আমিও বেশ মোটামুটি একটু ইমোশনাল হয়ে গিয়েছিলাম। যাইহোক এটা জেনে ভালো লাগলো যে আপনার বাবাই আপনাদের রান্না করে খাইয়েছে।কতজনের কপালে এমন ভাগ্য জোটে।আর আপনার ছোট মেয়ের জন্য দোয়া করি সৃষ্টিকর্তা যেনো ওনাকে শান্তিতে রাখে।
ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য। শুভেচ্ছা রইল ।
ভাইয়া আপনার বাড়িতে যাওয়া বিষয়টি আনন্দের দিচ্ছিল। আর আপনার মনের ইচ্ছা ছিল আপনার ছোট মায়ের কবর জিয়ারত করা। তবে আপনার বাবা সায়নের দাদু ওনার বৌমাকে কতটা আদার আপ্যায়ন করতে পেরেছে সেটা আমি জানি না। তবে বিষয়টি খুবই খারাপ লাগছে। কারণে দিন শেষে একা সঙ্গীহীন একজন মানুষ। আপনার এবং আপনার বাবার আনন্দঘন কিছু মুহূর্ত খুবই ভালো লেগেছে। আর আপনাদের খামার বাড়ির কথা বলতে গেলে আপনার ছোট বোন নেই বিধায় তার বাড়িটি একটা ভালোবাসার মানুষের শূন্যতা ভোগ করছে। বিষয়গুলো যেমন ভালোলাগা ছিল তেমনি খারাপও লাগছে। যাই হোক সবকিছু ভুলে আবার নতুন করে আপনার ছোট মা এর খামার বাড়ি থেকে শুরু করে আপনার বাবা বাড়ি এবং কি আপনার কর্মজীবন সবকিছু ঠিকঠাক রাখবেন এটুকুই কামনা করি। আমাদের সাথে এত সুন্দর একটা পোস্ট শেয়ার করার জন্য আপনার প্রতি রইল আন্তরিক শুভেচ্ছা এবং ভালোবাসা অবিরাম।
ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য। শুভেচ্ছা রইল ।
ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য। শুভেচ্ছা রইল ।