যায় আসে না || @shy-fox 10% beneficiary
মাঝে মাঝে ভাবি হুট করে জীবনটাকে যদি একটু ঘুরিয়ে দেখা যেত, তাহলে কেমন হতো । এইতো ধরুন ঠোঁটের উপর চ্যাপ্টা গোঁফ । মাথায় মিলিটারি কাটিং চুল । পরনে যেমনটা দেখা যায়, সাদাসিধে ঢিলেঢালা পোশাক । শরীরের ওজন আর নাইবা বললাম । হয়তো বেড়ে গিয়েছে, বিশেষ করে ভুরির ওজনটা ।
আচ্ছা এবার যদি এমন হয় , যেমনটা দশ বছর আগে হয়েছিল । মাথাভর্তি ঝাঁকড়া চুল, পরনে জিন্স প্যান্ট-গোলগলা গেন্জি , ক্লিন শেভ এবং হাতে রং বে রঙের ব্রেসলেট ও চোখে রঙিন সানগ্লাস । আমি দশ বছর আগেকার এবং বর্তমান সময়ের পার্থক্যের কথা বলছি না । তবে আমি যেটা বলতে চাচ্ছি, তখনকার রুচিবোধ আর এখন বর্তমানের ব্যবধান একটু জল্পনা কল্পনা করছি ।
কি ভীষণ চঞ্চল ছিলাম । ঐসব ভাবলেই যেন শরীর শিরশির করে ওঠে। অনেকটা দমবন্ধকর অবস্থা । কত ধরনের কার্যকলাপ করেছি আর আজ যখন আমি গল্পটা লিখছি , তখন ছোট একটা ঘরে বন্দি । ইস এখন যদি আবার দশ বছর আগের সময়টা ফিরে পাওয়া যেত , তাহলে মনে হয় এখনও ঝাঁকড়া চুলেই থাকতাম ।
এই গণ্ডিবদ্ধ জীবনে মনে হয় প্রবেশ করতাম না । ব্যবধান ছিল শুধুমাত্র কিছু কাগজের । তখন কিছু কাগজের পিছনে দৌড়াইতাম আর তার জন্য সবরকম ইচ্ছাকে বিসর্জন দিয়েছি। সেই চুল থেকে শুরু করে পরনের পোশাক পর্যন্ত । কয়েকটা সার্টিফিকেট । সকাল দশটা টু রাত দশটা চেম্বার । রুগী দেখা, সবমিলে জীবনটাকে যেন আমি একটা নরক বানিয়ে ফেলে ছিলাম ।
আজ আমার বড্ড ইচ্ছা হয়, মনেহয় আবারও ঝাঁকড়া চুল রাখি , সেই গোলগলা গেঞ্জি সঙ্গে জিন্স প্যান্ট পড়ে , চোখে সানগ্লাস দিয়ে ইচ্ছামত ঘুরে বেড়াই । আমি জানি সমালোচনার তীর্যক মন্তব্য গুলো আমার দিকে আসবে । সেই গুলোকে একটা বাক্সে বন্দী করে রাখবো আর দিনশেষে একটা একটা করে চিবিয়ে চিবিয়ে খাব আর আঙ্গুল ঝাঁকিয়ে ঝাঁকিয়ে এই সমাজটাকে বলবো, জীবনটা আমার । আমাকে আমার মত করে বাঁচতে দে ।
সবই বুঝি তবে পিছুটান কাজ করে । কি একটা অবস্থা, ছেলের বাপ হয়ে গিয়েছি। তার দিকে আঙুল পড়বে ,বউয়ের দিকে আঙ্গুল পড়বে । নিজের কথা না হয় , বাদই দিলাম । তাদেরকে ছেড়ে তো আর চলতে পারিনা । মাঝে মাঝে মনে হয় দেশান্তরী হয়ে যাব । মনেহয় জনমানবহীন পরিবেশে গিয়ে ঘর বাঁধব। যেখানে কোন জটিলতাপূর্ন সমাজ ব্যবস্থা থাকবে না, যেখানে কোনো হিজিবিজি নিয়ম-কানুন থাকবে না, যেখানে সবাই নিজের মতো করে থাকবে। আচ্ছা পৃথিবীতে কি এমন জায়গা আছে, বড্ড জানার ইচ্ছা হয় ।
আমি অবশ্য চুপচাপ থাকার মানুষ । পাশের বাড়ির দারোগা ভাই যখন খিলখিল করে হেসে বললো কিগো ভাই, ভোর পাঁচটা পর্যন্ত জেগে জেগে কি করেন । তখন আমিও হো হো করে হেসে উত্তর দিলাম , মাগনায় আপনার ঘর বাড়ি পাহারা দেই ।
আবার মাঝেমাঝে মনেহয় ব্যাটার বাপ হয়েছি , তার মানে এই না যে , জীবনের সব শখ-আহ্লাদ গুলোকে বিসর্জন দিয়েছি। চামড়া একটু ঢিল হয়েছে, হয়তো চিন্তাভাবনাতেও কিছুটা পরিবর্তন এসেছে। হয়তো প্রফেশনাল প্র্যাকটিস করতে করতে ,জীবনটাকে একটা প্র্যাকটিক্যাল মঞ্চ করে ফেলেছি , তবে এত শত কিছুর মাঝেও আমি এখনো দশ বছর আগের সেই দুরন্তপনা শৈশব জীবনটাকে খুঁজে পাই । মনেহয় এখন যদি একটু এদিক-সেদিক ঘুরে বেড়ানো যেত এবং যদি জীবনটাকে একটু অন্যভাবে দেখার চেষ্টা করা যেত, তাহলে মনে হয় মন্দ হত না ।
ঘড়িতে কাঁটায় কাঁটায় রাত্রি আড়াইটা বাজে। হুট করে বিছানা থেকে উঠে এবং মোটা হেডফোনটা কানে গুঁজে দিলাম। ধাক্কা দিয়ে ফ্লাটের দরজাটা খুলে , সোজা ছাদের উদ্দেশ্যে চলে গেলাম । গান শুনে বিড়বিড় করছি আর চাঁদটাকে দেখছি । শৈশবটাকে যদি একটু টেনে হিঁচড়ে কাছে নিয়ে আসা যেত , তাহলে মনে হয় ভালোই হতো ।
জীবনটা আমার রে হারামজাদা, সেটা মাঝরাত হোক আর মাঝ দুপুর হোক । তুই খিলখিল করে হাসার কে ! আমি আমার মতো করে, চিন্তায় মশগুল থাকতে চাই । কে কি বলল আর কে কি ভাবলো , তাতে আমার যায় আসে না ।।
ডিসকর্ড লিংক:
https://discord.gg/VtARrTn6ht
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
![Heroism_3rd.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmRejDSNMUFmRz2tgu4LdFxkyoZYmsyGkCsepm3DPAocEx/Heroism_3rd.png)
আসলেই ভাইয়া,হারানো দিন গুলো যদি ফিরে পাওয়া যেতো।ম্যাচিং জামা, ম্যাচিং কানের দুল, ম্যাচিং চুড়ি,ম্যাচিং লিপিস্টিক, কোথায় বের হতে হলে এক ঘন্টা আগ থেকে সব কিছু পরে সেজে বের হওয়া।বার বার আয়না দেখা কেমন লাগছে নিজেকে।আগের দিন গুলো খুব ভালো ছিলো।এখন মনে হয় ছেলেকে কিভাবে সাজালে সুন্দর লাগবে।একবার মনে সঙ+ সার ছেরে আগের জীবনে চলে যাই,কিন্তুু পরক্ষনে মনে আমার ছেলে।কোথায় গেলো আগের দিন,বেলি রোডে ফুটপাতে বন্ধুদের সাথে আড্ডা দেওয়া। কোথায় হারানো দিনগুলো।ধন্যবাদ
ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য। শুভেচ্ছা রইল।
আসলে আমি মনে করি জীবন যার যার,তাই এ জীবনে বাঁচার অধিকারটা আর বাঁচার ধরণটাও আলাদা সবার।কারো জীবনের প্রতি কারো এতোটাও হাত দেওয়া উচিত না যে মানুষটা বিরক্ত হয়ে যায় বা বিব্রত বোধ করে।দারুণ লিখেছেন।একেবারে সকলের মনের কথা গুলো।
ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য। শুভেচ্ছা রইল।
মাঝে মাঝে আমারও মনে হয় নিজের মতো করে একটু বাঁচতে। জটিলতা পূর্ণ এই সমাজের মানুষগুলো থেকে অনেকটা দূরে গিয়ে বাসা বাঁধতে খুব ইচ্ছা করে। একদম শান্ত নিরিবিলি পরিবেশে। যেখানে শুধু আমি এবং আমার অস্তিত্ব বিরাজ করবে। যেখানে লোক দেখানো ভালো সাজার অভিনয় আর করতে হবে না। নিজের খেয়াল খুশি মতো নিজের ইচ্ছে গুলোকে প্রাধান্য দিয়ে চলতে পারব সেখানে। তখন কেউ আর দেখে হাসবেনা। তখন আর কেউ বিদ্রুপ করবে না। আপনার লিখাগুলো আমার খুবই ভালো লাগে। আপনার লেখা কথাগুলো যতই পড়ি ততই মুগ্ধ হয়ে যাই। অসাধারণ লিখনী আপনার। নিজের উপলব্ধিগুলো দারুন ভাবে আমাদের মাঝে তুলে ধরেছেন এজন্য আপনাকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি ভাইয়া। সেই সাথে আপনার জন্য শুভকামনা ও ভালোবাসা রইলো।
ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য। শুভেচ্ছা রইল।
আসলে ভাইয়া সময়ের সাথে সাথে সবকিছুই পরিবর্তন হয়ে যায়। ফেলে আসা দিনগুলি আমরা কখনই ফিরে পাবো না। আমাদের সবার জীবনে কিছু সোনালী অতীত থাকে। জীবনে একটা পর্যায়ে এসে অতীতকে আমরা ফিরে পেতে চাই কিন্তু বাস্তবতা আমাদের সেদিকে কখনোই নিয়ে যাবে না। একদিন মনে হবে আজ যে সময়গুলো পার করছেন সেই সময়গুলো ফিরে পাওয়ার জন্য কিন্তু তা কখনোই পাওয়া সম্ভব নয়। শুধু স্মৃতি কে আঁকড়ে ধরে আমাদের ভালো সময় গুলো নিয়ে কথা বলতে পারি আপনার সমসাময়িক জীবনধর্মী পোস্টগুলো আমার ভালো লাগে। আমি একজন আপনার নিয়মিত পাঠক। ধন্যবাদ ভাইয়া।
ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য। শুভেচ্ছা রইল।
ভাই আজকে আপনার পোষ্টটি পড়ে আমার খুবই ভালো লাগলো। আপনার পোষ্টের মধ্যে সেই পুরনো দিনের কথা গুলো ভেসে উঠেছে। আসলেই পুরনো দিনগুলো অনেক আনন্দের ছিল মাথাভর্তি চুল জিন্স প্যান্ট কত রকমের ব্যাচলেট পড়ে রঙিন চশমা পড়ে সারা শহর ঘুরে বেড়ানো, এদিক-ওদিক। নেই কোনো বাঁধা কারো কোনো কথা শোনার টাইম নেই। শুধু আনন্দময় সময় পার করা। আসলে সেই দিনগুলো আজ বারবার মনে পড়ছে। এখন আপনার বয়স মোটামুটি সেই দিনগুলোর মতো নেই। ছেলের বাবা হয়েছেন, এখন পরিবার স্ত্রীকে নিয়ে টেনশন। ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা। আসলেই দিনগুলো এখন মনে করে শুধু ভাবনাচিন্তাতেই রয়ে যায়। তার পরেও সেই দিনগুলো ফিরে পেতে প্রত্যেকটা মানুষের চায়।কে কি বলল তাতে কিছু যায় আসে না, সেটা ঠিক। তবে যখন ছেলে,বউয়ের উপরে অন্যরা কথা বলবে তখন সেটা মেনে নেওয়া কষ্টকর। তার পরেও কে কি বলল সেটা যায়-আসে না। নিজের চিন্তা শক্তি এবং আনন্দময় মুহূর্ত পালন করা আমাদের প্রত্যেকেরই উচিত। কারণ আনন্দময় সময় পার করলে শরীর মন ভালো থাকে। আসলে আপনার পোষ্টটি পড়ে আমার খুবই ভালো লেগেছে। আপনার জন্য রইল শুভকামনা।
ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য। শুভেচ্ছা রইল।
ফেলে আসা সেদিনের কথা বড় বেশি মনে পড়ে মধুর মধুর স্বপ্নগুলো রক্ত ঝরায় এই অন্তরে🤔🤔
আপনার লেখাগুলো খুব সুন্দর ভাবে উপলব্ধি করলাম 🤔ঠিক এমন জীবনী এখন পার করছি 🤩 মনে হচ্ছে আপনার মতো কিছুদিন পরে গণ্ডির মধ্যে আবদ্ধ হয়ে যাবো😅 ভাবতে অনেক কষ্ট লাগছে😅
ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য। শুভেচ্ছা রইল।
সবই সময়ের পরিবর্তন, আজকে ছেলের বাবা হইছেন, ৩০ বছর পর দাদা হয়ে যাবেন। এখনি অনেক কিছু ইচ্ছে হলেও করতে পারেন না, তখন আরো পারবেন না। আমারা সবাই জীবনের সুন্দর সময়গুলোকে মিস করি। এমন যদি হতো আমি পাখির মতো উড়ে উড়ে বেড়াই সারাক্ষণ। গানটা অনেক ভালো লাগে। আমিও মাঝে মাঝে এমন চিন্তা করি যদি যদি সংসার, আত্মীয় স্বজনের কোনো পিছুটান না থাকতো লাইফটা কেমন হতো!!
আপনার চিন্তাশক্তি অনেক প্রখর। চিন্তার মাধ্যমেই নতুন কিছুর সৃষ্টি হয়, যেমন গভীর রাতে চিন্তার ফলেই আমরা একটা সুন্দর পোস্ট পড়তে পারলাম। ধন্যবাদ আপনাকে অসাধারণ একটি পোস্ট আমাদের উপহার দেওয়ার জন্য। অনেক অনেক শুভকামনা রইলো ভাই।
ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য। শুভেচ্ছা রইল।
আপনার লেখাগুলো পড়ি আর নিজের জীবনের সঙ্গে মেলাতে চেষ্টা করি। সত্যিই আমরা কতভাবেই না জীবনের মূল্যবান সময় নষ্ট করি। কখনো সার্টিফিকেটের পেছনে, কখনো টাকার পেছনে। আর এভাবেই একদিন জীবনটা ফুরিয়ে যায়। ভালোই লাগে আপনার লেখাগুলো পড়তে। অল্প অল্প লেখার সঙ্গে নানা ধরনের অভিজ্ঞতা আর অনুভূতির বহিঃপ্রকাশ। ভালোবাসা রইলো আপনার জন্য।
ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য। শুভেচ্ছা রইল।
চমৎকার লিখেছেন, পৃথিবীতে এমন কোনো মানুষ নেই যার মনে কখনো এই কল্পনা আসেনি যে অতীতে যেতে পারলে কেমন হতো। সবাই তার অতীত জীবন টাকে খুব বেশি মিস করে থাকে। কারণ অতীতের সাথে জড়িয়ে আছে আমাদের স্মৃতি, স্নিগ্ধতা, ভালোবাসা। আপনার লেখা সত্যি প্রশংসনীয়।
ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য। শুভেচ্ছা রইল।