দীর্ঘ ত্রিশ মিনিট

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago

stopwatch-g14e3e98ab_1920.jpg
Source

সেই স্কুল জীবন থেকেই দেখে আসছি প্রতিনিয়ত প্রতীম কে । পড়াশোনায় আসলে ওর ধারে কাছেও যেতে পারতাম না , হোক সেটা স্কুল নতুবা কলেজ জীবনে । তাছাড়াও আমি যে খুব পড়াশোনায় পটু ছিলাম, এমন কথা বলবো না । আমি পড়াশোনায় বরাবরই কাঁচা ।

একটা সময়ের পরে মনে হতো, স্কুল কলেজের গন্ডি পেড়িয়ে প্রাতিষ্ঠানিক পড়াশোনার আর খুব একটা দরকার জীবনে পরে না বললেই চলে । তবে এক্ষেত্রে হাতে গোনা কিছু একাডেমিক সাবজেক্ট ছাড়া, যেমন মেডিকেল বা ইঞ্জিনিয়ারিং । অন্যান্য সাবজেক্টকে আমি ছোট করছি না, তবে এই দুটো সাবজেক্টে সবকিছু শুরু থেকেই হাতে-কলমে শিখতে হয় । তাছাড়াও যারা এই দুটো সাবজেক্ট নিয়েই পরবর্তীতে কর্মজীবনে এগিয়ে যায়, তাই বিষয়গুলো প্রতিটা ক্ষেত্রেই কমবেশি লেগে যায় ।

আচ্ছা এর বাইরে একটু গভীরভাবে চিন্তা করে দেখুন তো, এতো এতো মেধাবী এতসব সাবজেক্ট নিয়ে যারা অনার্স মাস্টার্স সম্পন্ন করেছে আর কত শত ডজন খানেক সার্টিফিকেট অর্জন করেছে। তবে দিন শেষে তাদের কর্ম কোথায়। সবাইতো কম বেশি একই রকম পদ গুলোর জন্য চাকরির আবেদন করছে। যেখানে কিনা দেখা যাচ্ছে, স্কুল কলেজের শিক্ষকতার মতো পেশার চাকরির আবেদন করেছে বিভিন্ন সাবজেক্ট পড়ুয়া মেধাবীরা।

হোক সেটা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া ছাত্র নতুবা জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া ছাত্র বা গ্রাম-গঞ্জের ডিগ্রী পড়ুয়া ছাত্র। সবাই যেন একই পদের চাকরির জন্য একইভাবে ক্রমাগত লেগে আছে এবং প্রতিনিয়ত সব জায়গাতেই চাকুরীর আবেদন করছে । হোক সেটা সরকারি বা বেসরকারি চাকরি, সর্বক্ষেত্রেই একই অবস্থা।

তবে বাস্তবিক অর্থে সাবজেক্ট ভিত্তিক চাকরি ছাড়া অন্যান্য চাকরিতে আসলে শুধু নামে মাত্র সার্টিফিকেট গুলো কাজে লাগে। তাছাড়া কর্ম ক্ষেত্রে সার্টিফিকেট গুলোর কোন দরকার ই পরে না। এই চরম সত্য কথাটা যদি আপনার গিলতে অসুবিধা হয়, তাহলে এখনে আমার আর কিছু বলার নেই ।

জীবনে আসলে দক্ষতাই বড় কথা আর দক্ষতাই শেষ কথা । যে যত বেশি দক্ষ, সে ততো বেশি এগিয়ে গিয়েছে বা যাচ্ছে । আর তাছাড়াও এই প্রযুক্তির যুগে এসে যদি আপনি আদিকালের নিয়ম অনুযায়ী চাকরির কথা প্রতিনিয়ত চিন্তা করেন, তাহলে আমি মনে করব সেই অনুযায়ী আসলে সত্যিই চাকরির বাজারে চাকরি নেই বললেই চলে বা পদ সংখ্যা খুবই সীমিত । তবে এই সত্য কথাটা জানার পরেও, আমরা সেই সীমিত সংখ্যক মুলা ঝুলানো চাকরির পিছনেই হা-হুতাশ করে দৌড়ে মরি ।

আচ্ছা যারা চাকরি করে না, তারা কি বেঁচে থাকে না । নাকি তারা পৃথিবী থেকে হারিয়ে যায় । নাকি তারা সমাজ বা অন্য মানুষের চোখে একটু বাঁকা নজরের শিকার হয় । আর তাছাড়াও সমাজ সামাজিকতার ব্যাপারগুলো তো আসলে নিজের উপর নির্ভর করে । ব্যাপারগুলো সহজ করে নিলেই সহজ আর একটু জটিল করে নিলে বেশ ভোগান্তিকর । আর তাছাড়া এই চাকরি নামক গোলক-ধাঁধা পূর্ণ নিয়মের বাহিরে বেরিয়ে এসেও তো জীবনটাকে একটু উপভোগ করা যায়।

আপনি জীবনে যে কর্মই করুন না কেন, সেখান থেকেই সফল হওয়া যায় । যদি আপনার কর্ম করার মানসিকতা সঠিক থাকে ।

আসলে দিন শেষে ঐ বস্তা ভর্তি সার্টিফিকেট আর ঐ চাকরির পিছনে দৌড়ানোর থেকে যদি , শুরু থেকেই একটু ব্যতিক্রম ভাবে সবকিছু নিয়ে ভাবা যায় এবং প্রথম থেকেই যদি নিজের ইচ্ছাশক্তি কে কাজে লাগানো যায় এবং নিজের ভালোলাগা কে যদি প্রাধান্য দেওয়া যায় , তাহলে তো শুরু থেকেই অনেকটা এগিয়ে থাকা যায় । তখন আসলে দক্ষতা ও সফলতা এমনিতেই চলে আসে ।

আজ প্রীতম ফোন দিয়েছিল , ও ছাত্র জীবনে নামকরা একটা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অনার্স মাস্টার্স শেষ করে এখন বেকার বসে আছে । অন্যদিকে সে বিয়েও করে ফেলেছে । যাকে বিয়ে করেছে সেও মাস্টার্স শেষ করে এখন বেকার । দু'জনেই চাকরির পিছনে দৌড়াদৌড়ি করে মোটামুটি বেশ ভালোই হতাশ ।

অতঃপর আজ দীর্ঘ ত্রিশ মিনিটের মতো প্রীতম ও ওর সহধর্মিনীর সঙ্গে কথা বললাম । ওর সহধর্মিনীকে বললাম, যেহেতু আপনার বাড়ি গ্রাম অঞ্চলে, আপনি চাইলেই শহর থেকে ভালো মানের কাপড় স্বল্প দামে কিনে নিয়ে গিয়ে , যদি গ্রামের মেয়ে-মহিলাদের কাছে ঠিকমত পৌঁছে দিতে পারেন, তাহলে সেখান থেকে শুরুতেই কিছুটা ভালো অভিজ্ঞতা অর্জন করতে পারবেন ।

আর এসবের জন্য, খুব যে আহামরি পরিমান পুঁজির দরকার হয় তেমনটা কিন্তু না । আপনি শুধুমাত্র নিজের ইচ্ছাশক্তিকে কাজে লাগিয়ে একবার কাজে নেমে পড়ুন আর বোঝার চেষ্টা করুন, আপনার গ্রাম অঞ্চলের মেয়ে-মহিলাদের রুচি ও চাহিদার ব্যাপারটি এবং সেই রুচি মাফিক একটু বুদ্ধি খাটিয়ে কাজ করুন , দেখবেন পরবর্তী ধাপটি নিজেই শিখে যাবেন, কি করতে হবে আর কোন পথে এগোতে হবে ।

শুভেচ্ছা রইল , বাল্যবন্ধু প্রীতম ও তার সহধর্মিনীর জন্য । তারা এই বেকারত্বের গ্লানি থেকে মুক্তি পাক এই প্রত্যাশায় করছি ।

Banner-5.png

ডিসকর্ড লিংক
https://discord.gg/VtARrTn6ht


20211003_112202.gif


JOIN WITH US ON DISCORD SERVER

banner-abb4.png

Follow @amarbanglablog for last updates


Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png


VOTE @bangla.witness as witness


witness_vote.png

OR

SET @rme as your proxy

witness_proxy_vote.png

Sort:  
 2 years ago (edited)

ভাই আপনি বর্তমান সময়ে বাস্তব ঘটনা শেয়ার করেছেন। মাস্টার্স পাশ করা কত ছাত্র-ছাত্রী যে বসে তার কোন ঠিক নেই। এই চাকরির বাজারে চাকরির বড়ই অভাব। এত কষ্ট করে পড়াশোনা করার পরে চাকরি করতে গেলে বলবে আপনার কি এই বিষয়ে অভিজ্ঞতা আছে। বিশেষ করে যারা কোন সাবজেক্ট ধরে পড়াশোনা করে না তাদের ক্ষেত্রে। যাইহোক আপনার বন্ধুর সহধর্মিনী কে আপনার দেওয়া উপদেশ টি ভালই ছিল। এভাবে জামাকাপড় বিক্রি করে হলেও তারা কিছু অর্থ উপার্জন করতে পারবে। আর এভাবে যদি তারা ধৈর্য ধরে কাজ করতে পারে তাহলে নিশ্চয়ই একদিন বড় ব্যবসায়ী হয়ে যেতেও পারেন। ধন্যবাদ।

 2 years ago 

দিন যতো গড়িয়ে যাচ্ছে, বেকারত্ব ততো বেড়েই যাচ্ছে। এই অবস্থায় ভিন্ন কিছু ভাবাই বুদ্ধি মানের কাজ।

 2 years ago 

ভাই প্রিতম ভাইয়ের জীবনের কাহিনী শুনে অনেক খারাপ লাগলো ৷ যে পড়ালেখা শেষ করেও আজ বেকার ৷

জীবনে আসলে দক্ষতাই বড় কথা আর দক্ষতাই শেষ কথা । যে যত বেশি দক্ষ, সে ততো বেশি এগিয়ে গিয়েছে বা যাচ্ছে৷

এটা ঠিক কথা ভাই সবকিছুর উর্ধে হলো দক্ষতা ৷ সেটা যে কোনো বিষয় হোক না কেন ৷ দক্ষতা থাকলে সে বিষয়ে অনেক এগিয়ে যাবে ৷ আর বর্তমান তো তাই সার্টিফিকেট থাকলেও সবার আগে তার মেধা সৃজনশীলতাকে যাচাই করছে ৷ তবুও বর্তমান যে হারে শিক্ষিত তাতে আসলে চাকরি পাওয়া মান সোনার হরিণ পাওয়া ৷ যেটা আমি মনে করি ৷

 2 years ago 

তাই দক্ষ ভাবেই নিজেকে তৈরি করতে হবে ভাই। এটাই সত্য কথা।

 2 years ago 

অনেক ভাল লাগলো ভাইয়া পোস্টটি পড়ে। বর্তমান সময়কে তুলে ধরেছেন। আজকাল লেখাপড়া করেও ঘুরে বেড়াচ্ছে অনেকে। দক্ষতা অর্জন করা জরুরি।শুধু পুঁথিগত বিদ্যা দিয়ে আজ আর কিছু হয় না। দক্ষতা থাকলে সেই জীবনে উন্নতি করতে পারে। অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া শেয়ার করার জন্য।

 2 years ago 

ধন্যবাদ আপু আপনার সাবলীল মন্তব্যের জন্য। শুভেচ্ছা রইল।

 2 years ago 

ভাই আপনি সময়োপযোগী ঘটনা আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। সামান্য আমাদের ছোট্ট গ্রামে অনেক মানুষ এম,এ,বিএ পাস করে বসে আছে। বর্তমান সময়ে চাকরি পাওয়া কতটা কঠিন শুধু সেই বেকার ছেলেই বুঝতে পারে। তবে বর্তমানে শিক্ষিত মানুষের হার বাড়ছে কিন্তু শিক্ষার মান বাড়ছে না। তবে আমরা শিক্ষিত হয়ে যদি চাকরির পিছনে না ছুটে অন্য কোন ব্যবসা বাণিজ্য করি,এতেও কিন্তু মানুষের জীবনযাত্রা অনেক সহজ হয়ে যায়।

 2 years ago 

আপনি যে বিষয়টা তুলে ধরেছেন দাদা সেটা বেশ গুরুত্বপূর্ণ বিষয় একটা। এটা আমআরও জিজ্ঞাস্য। যারা টেকনিক্যাল লাইনে পড়াশোনা করেছেন তারা বাদে আমাদের পড়াশোনাগুলো চাকরী ক্ষেত্রে কোথায় অ্যাপ্লাই করতে পারছি? আর যারা সিভিল সার্ভিস করে তারা আকবরের দাদু, বাবরের ঠাকুমা, চন্দ্রগুপ্তের পিসি এদের সম্পর্কে জেনে কি লাভ করে? তাদের সিভিল সার্ভিসের সিলেবাসে এসব থাকে কেনো?ভরং রিয়াল টাইম সিচুয়েশন দিয়ে তাদের জবে জয়েন করায় না কেনো? এই সিস্টেম আমআর ছোট মাথায় কখনও ঢুকবে না।

Coin Marketplace

STEEM 0.19
TRX 0.16
JST 0.033
BTC 64041.25
ETH 2762.17
USDT 1.00
SBD 2.66