নীরব ঘাতক || silent killer || @shy-fox 10% beneficiary

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago

sniper-g64270b8a4_1920.jpg
pixabay source

আমার মাঝে মাঝে মনেহয়, যদি কথা না বলে বোবা হয়ে থাকতে পারতাম । যদি পৃথিবীর রীতি-নীতি আমি কিছুই না বুঝতে পারতাম । তাহলে মনে হয় বড্ড শান্তি পেতাম । হয়তো অনেকটাই মানসিক যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পেতাম। মানসিক যন্ত্রণার কথা কেন বলছি তা একটু খোলাসা করছি ।

ধরুন আপনি শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন, শরীরের কোথাও আঘাত পেয়েছেন বা কোথাও কেটে-ছিঁড়ে গিয়েছে সেটা কিন্তু সকলে দেখতে পায় বা সকলকে দেখানো যায় এবং সেই অবস্থার কথা চিন্তা করে সকলেই ভিন্ন রকম মন্তব্য পোষণ করে । কিন্তু মানসিক যন্ত্রণার ব্যাপারটা পুরোপুরি আলাদা । এটা অনেকটা নীরব ঘাতকের মত। যা কেউ খালি চোখে দেখতে পারেনা বা যা কাউকে বলে বোঝানো যায় না । তবে শুধুমাত্র যার সঙ্গে ঘটে, সেই ঠিকঠাক ভাবে উপলব্ধি করতে পারে ।

বেঁচে থাকাটা যেখানে গুরুত্বপূর্ণ , সেখানে কথা না বলায় উওম বরং মুখ বন্ধ করে সবকিছু হজম করা বুদ্ধিমানের কাজ । ইচ্ছে করেই তার থেকে চোখের সামনে অন্ধকার নিয়ে আসা ভালো । মানে আপনি কিছু দেখেন নি, শোনেন নি ও বোঝেন নি , এমনটাই হওয়া বেশি শ্রেয় ।

ভাবছেন নীতি কথা বলছি, মোটেও না । আমি শুধুমাত্র, যারা নীরব ভাবে মৃত্যু পথযাত্রী মানুষ থাকে, তাদের কথা অনুভব করার চেষ্টা করছি । আসলে নীরব ভাবে মানসিক যন্ত্রণায় যারা প্রতিনিয়ত মারা পড়ে যায়, সেই সকল মৃত্যুর কোন নথিপত্র থাকে না । থাকে না কোন সাক্ষী বা প্রমাণ । তবে শুধুমাত্র যে মানসিক ভাবে নীরব ঘাতকের শিকার হয়, সেই বোঝে কতটা পরিমাণ যন্ত্রণা তাকে প্রতিনিয়ত সহ্য করতে হয়েছিল ।

মানসিক যন্ত্রণার সঙ্গে আসলে কোন কিছুই যুক্তিতে মেলানো যায় না । এখানে যদি আপনি একবার ফেঁসে যান তাহলে সেই যন্ত্রণার শিকার আপনাকেই ভোগ করতে হবে । ভেবে নিবেন আপনার পরবর্তী পরিণয় মোটেও সুখকর হবে না । যখন আপনি বুঝে যাবেন, আপনার একাকিত্বের ও মানসিক যন্ত্রণার কারণ আপনি নিজেই । তখন আপনি নিজের থেকেই মুখ বন্ধ করে ফেলবেন । কারণ এখন শুধু দেখার অপেক্ষা নরকীয় সময় গুলোর । যা আপনাকে মেনে নিতেই হবে ।

চতুর্দিকে আনন্দ উল্লাস হচ্ছে আর আপনি মানসিক যন্ত্রণায় ধুকে ধুকে মরছেন । যেখানে দেখার কেউ নেই, কেউ নেই আপনাকে সান্ত্বনা দেওয়ার। নিজেই শেষ হয়ে যাবেন , কাউকে বলে হালকা হতে পারবেন না । মুক্তি পেতে পারবেন না নরকীয় যন্ত্রণা থেকে । কারণ আপনি বুঝে গিয়েছেন , কি হচ্ছে চারপাশে আর কি অপেক্ষা করছে আপনার জন্য। এক কথায় নীরব ঘাতকের শিকার আপনি । আপনার মৃত্যু অনিবার্য । যদিও কথা গুলো বেশ তিতা তবে চিরন্তন সত্য ।

মেডিকেলের ফোর্থ ইয়ারে যখন পড়তাম । আমার এক বন্ধু সুইসাইড করেছিল । সুইসাইডের ঘটনা যখন কলেজ কর্তৃপক্ষ অনুসন্ধান করল তখন তেমন কিছুই মিলল না । ব্যাপারটা জাস্ট অপমৃত্যু বলে চালিয়ে দিল । তবে শুধুমাত্র গুটিকয়েক কিছু মানুষ জানত, আসল ঘটনা কি । কি চলছিল আমার বন্ধুর মনে ।

ঐ যে বললাম , তেমন কিছুই না । শুধুমাত্র মানসিক যন্ত্রণায় ভুগছিল সে । বেচারা আসলে চাপ সামলাতে পারেনি । যার কারণে স্বেচ্ছায় উপরে চলে যেতে বাধ্য হয়েছে । আসলে এক সকল মৃত্যুর কোন সাক্ষ্য-প্রমাণ থাকে না ।

বড্ড বেঁচে গিয়েছে, সেই যাত্রায় কলেজের নাম করা প্রফেসর । সে তো এখনো আগের মতো রোজ ক্লাস নেয় । আসলে সেই দিনের সেই আইটেম পরীক্ষায় কি হয়েছিল আমার বন্ধুর সঙ্গে, সেটা এখনও অজানা । তবে মানসিক যন্ত্রণায় সে যে প্রতিনিয়ত ভুগতো , তা হয়তো তার মৃত্যু পরিস্কার বুঝিয়ে দিয়েছিল ।

আসলে সকলের ধারণ ও সহ্য ক্ষমতা এক না । কেউ পারে, কেউ হেরে যায় । কেউবা আবার মুখ বন্ধ করে দেয় নতুবা কেউবা আবার আমার মতো তথ্য-উপাত্ত মেলানোর জন্য মাঝরাতে হুমড়ি খেয়ে পড়ে ।

Banner-3.png

ডিসকর্ড লিংক:
https://discord.gg/VtARrTn6ht


20211003_112202.gif


JOIN WITH US ON DISCORD SERVER

banner-abb4.png

Follow @amarbanglablog for last updates


Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png


VOTE @bangla.witness as witness


witness_vote.png

OR

SET @rme as your proxy

witness_proxy_vote.png

Sort:  
 2 years ago 

ঠিক বলেছেন ভাইয়া শরীরের ক্ষত তো মানুষ দেখতে পারে কিন্তু মানুষের মনের ক্ষত কেউ দেখতে পারে না। মানসিক যন্ত্রণায় যে ভুগে সেই বুঝতে পারে যে বিষয়টি কতটা কঠিন । আপনার বন্ধুর মৃত্যুর কথাটি শুনে থ্রি ইডিয়েট সিনেমার কাহিনীর কথা মনে পড়ে গেল । আসলে এরকম মানসিক চাপ সহ্য করতে না পেরে হাজার হাজার স্টুডেন্ট এবং সাধারণ মানুষ আত্মহত্যার পথ বেছে নিচ্ছে। যা আসলেই কোন ভালো দিক না। সবাই এই মানসিক যন্ত্রণা থেকে ভালো থাকুক সেই কামনাই করি।

 2 years ago 
ভাইয়া আমার কাছে মনে হয় মানসিক যন্ত্রণা একটা বড় মাপের রোগ। যে রোগের কোন ঔষধ নেই, চিকিৎসাও নেই, নিজে নিজে সাফার করতে হয়। এবং একপর্যায়ে নিঃশেষ হয়ে যেতে হয়। বাইরে থেকে দেখলে অনেক কিছুই মনে হয়, কিন্তু ভেতরে একেবারে শেষ হয়ে যায়।
 2 years ago 

ঠিক বলেছেন ভাই বাহ্যিক ব্যথার তুলনায় মানসিক ব্যথা অনেক বেশি যন্ত্রণা দেয়। বিশেষ করে, আমারও একটি বন্ধু পড়ার সময়ে সুইসাইড করেছিল আমি এই বিষয়টা খুব ভালভাবেই বুঝতে পারি। সর্বোপরি আপনার বন্ধুর জন্য অনেক দোয়া রইল।।

 2 years ago 

আপনার বন্ধুর ব্যাপারটা জেনে বেশ ব্যথিত হলাম ভাই ।

 2 years ago 

মানুষিক যন্ত্রনা এমন একটা জিনিস যা কাউকে বলা যায়না আবার সহ্য ও করা যায়না ,সেই ক্ষেত্রে মানুষটি দিনে দিনে আস্তে আস্তে নিজেকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে নিয়ে যাই, আর তার শেষ পরিণতি হয় মৃত্যু ,কিন্তু অবাক করা বিষয় হলো তার মানষিক যন্ত্রণার কারণটা সবার কাছে অজানায় থেকে যায়।

 2 years ago 

পৃথিবীটাই এমন এখানে সবাই ব্যস্ত নিজেকে নিয়ে অন্যের খবর কেউ নেবে এমন সময় তো কারও কাছেই নেই ।

 2 years ago 

ক্যান্সার থেকেও ভয়ানক রোগ হচ্ছে মানসিক যন্ত্রণা। একটা মানুষকে ভেতর থেকে শেষ করে ফেলে এই যন্ত্রনা। যেটা যায় না কারো দেখানো এবং যায় না কারো বোঝানো শুধু গোপনে নিজের ভেতরে চাপিয়ে রাখতে রাখতে আত্ম হননের পথ বেছে নিতে হয়। আসলে সকল মানুষের ধারণ এবং সহন ক্ষমতা এক নয় এটা কেউই বুঝতে চায়না। অবস্থাটা এমন যে মারো, নয় মরো।

 2 years ago 

আসলে নীরব ভাবে মানসিক যন্ত্রণায় যারা প্রতিনিয়ত মারা পড়ে যায়, সেই সকল মৃত্যুর কোন নথিপত্র থাকে না ।

শরীরের ক্ষতচিহ্ন হয়তো সবাই দেখে এবং সেই ক্ষতচিহ্নের জন্য আফসোস করে। কিন্তু মনের মাঝে তৈরি হওয়া হাজারো ক্ষতচিহ্ন যখন তিলে তিলে নিজেকে ধ্বংস করে দেয় তখন কেউ আফসোস করে না। বরঞ্চ কেউ জানতেও পারে না ভিতরে কি চলছে। আসলে প্রত্যেকটি মানুষের যেমন আলাদা নিজস্ব একটি পৃথিবী আছে তেমনি আলাদা চিন্তাধারা আছে। আমাদের সেই গভীর চিন্তাধারা গুলো শুধু একান্তই নিজের। তাইতো কখন যে হতাশাগ্রস্থ হয়ে কিংবা মানসিক চাপে আমরা আত্মহত্যার পথ বেছে নেই তা কেউ অনুমানও করতে পারে না। হয়তো সেই সমস্যাগুলো শুধুই নিজের। তাইতো নিরবেই আমাদেরকে প্রতিনিয়ত আঘাত করে যায়।

 2 years ago 

এই মেডিকেলে হওয়া কাহিনীটা আসলে আমিও অনেক শুনেছি আমার আশেপাশেই।কে জানে কি যে এমন হয়!মানসিক যন্ত্রণা আর বলতে না পারাটা মারাত্মক কষ্টের আসলে।

 2 years ago 

হুম আসলেই বলতে না পারাটা বেশ যন্ত্রণাদায়ক ।

 2 years ago 

আসলেই ভাই এটা একটা নির্মম কিছু, কেউ বুঝতে পারে না, কেউ অনুভব করে না, কিন্তু ধীরে ধীরে একটা মানুষ মৃত্যুর শেষ কিনারায় চলে যায়। আফসুস, পাশে থাকা মানুষগুলো যখন নানাভাবে স্নাইপার এর মতো আড়ালে থেকে ক্রমাগতভাবে মানসিক আঘাত করতে থাকে, তখন সত্যি বেঁচে থাকার ইচ্ছাটা হাওয়া হয়ে যায়। বিবেক জাগ্রত হোক সবার, সেই প্রত্যাশা করছি।

 2 years ago 

বিবেক গুলো জাগ্রত হোক , মানবিকতা প্রকাশিত হোক প্রতিনিয়ত, এমনটাই তো প্রত্যাশা করে সবাই ।

 2 years ago 

দাদা আসলে দিনশেষে সবকিছু সহ্য করেই থাকতে হবে ৷ কারন দুনিয়াটা তাই বলেছেন তো ফেসেছেন ৷ তাই মনে যাই কিছু হোক নিজে নিজে সামলাতে চেষ্টা করুন ৷
বর্তমান তো দালালের দুনিয়া যদি আপনার বন্ধুর টাকা থাকতো তাহলে অনেক কিছু করার ছিল ৷ কিন্তু ওই বিনা স্বার্থে কেউ পাশে নেই ৷

 2 years ago 

মানসিক যন্ত্রণা সবচেয়ে মারাতক যন্ত্রণা ।বাহিরে শরীর কোন অংশের আঘাত পেলে ঔষধ দিলে ভাল হয়ে যায় ।কিন্তু ভেতর যন্ত্রণা দেখা যায় না ।যে ভুগে সেই একমাত্র জানে ।মানসিক যন্ত্রণা তিলে তিলে একটা মানুষকে শেষ করে দেয় ।মানুষ সেই যন্ত্রণা বাঁচার কোন উপায় না পেয়ে বেঁছে নেয় মৃতু্্য কে ।

Coin Marketplace

STEEM 0.16
TRX 0.15
JST 0.029
BTC 56477.82
ETH 2390.38
USDT 1.00
SBD 2.33