রবিবারের আড্ডা - পর্ব ৮৬ | জীবনের গল্প - পর্ব ৯
ব্যানার ক্রেডিট @hafizullah
সবাইকে স্বাগতম জানাচ্ছি আমার বাংলা ব্লগের নতুন আয়োজন জীবনের গল্পের শো-তে । মূলত আমরা যেহেতু প্রথম থেকেই বলেছিলাম, রবিবারের আড্ডার কিছুটা ভিন্নতা হবে, ঠিক সেই ভিন্নতার জায়গা থেকেই, এই সংযোজন। মানুষের জীবনে কত গল্পই তো থাকে, কত সুখস্মৃতি থাকে, থাকে পাওয়া না পাওয়ার অভিজ্ঞতা কিংবা হারিয়ে ফেলার তিক্ততা কিংবা থাকে সফলতার হাজারো গল্প, যা হয়তো অনায়াসেই, অন্য কাউকে অনুপ্রাণিত করে ফেলে মুহূর্তেই। এই গল্পগুলো হয়তো অজানাই থেকে যায়, আমরা আসলে কান পেতে থাকি, এই গল্পগুলো শোনার জন্য। এইজন্য বাংলা ব্লগ আয়োজন করেছে, জীবনের গল্প। যেখানে অতিথি তার নিজের জীবনের গল্প অন্যদের সামনে অনায়াসেই বলে ফেলবে এবং অতিথি নিজের থেকেও বেশ হালকা হবে, সেটা হয়তো মনের দিক থেকে।
আজকের অতিথিঃ @tithyrani
ভেরিফাইড সদস্য, আমার বাংলা ব্লগ
ফেলে আসা জীবন থেকে যদি কিছু কথা স্মৃতিচারণ করতেন।
আমি মূলত ছোটবেলা থেকেই ঢাকায় বেড়ে উঠেছি। স্কুল ও কলেজ জীবন কেটেছে একদম খুব বাসার কাছাকাছি দূরত্বে। তবে বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে গিয়ে, প্রথম পাবলিক পরিবহনে উঠি। মূলত আমাদের দেশে পাবলিক পরিবহনগুলোতে যে সকল নারীরা যাতায়াত করে তারা প্রতিনিয়ত শারীরিক হেনস্থার শিকার হয়। এটা কেউ স্বীকার না করলেও, এটাই দিনশেষ সত্য কথা। যেহেতু আমার সাইনোসাইটিসের সমস্যা ছিল, তাই বিগত সময় থেকেই আমাকে মাস্ক পড়তো হতো। তাই প্রতিনিয়ত আমি এই মাস্ক পড়েই বিশ্ববিদ্যালয়ে যাতায়াত করতাম। একদিন খেয়াল করলাম একটা লোক, বাসের ভিতরে আমাকে নিয়ে প্রতিনিয়ত ছবি তুলছে। মানে তার সেলফি ক্যামেরা তে আমি বারবার এসে যাচ্ছি। সেসময় আমি প্রতিবাদ করে ফেলি, তখন অনেকেই ব্যাপারটা শান্তভাবে নিতে বলেছিল, তবে আমি কোনভাবেই ব্যাপারটা শান্তভাবে নেইনি কেননা আমি ভীষণ বিব্রত বোধ করেছিলাম। অবশেষে আমি তাদের ছবি ডিলিট করতে বাধ্য করেছিলাম।
বিশ্ববিদ্যালয় জীবন শেষ করার পরে, যখন আমি চাকরি জীবনে প্রবেশ করি, তার আগে আমি মূলত চাচ্ছিলাম সেলফ ডিফেন্স এর উপর একটা কোর্স করার জন্য। সেই চিন্তাধারা থেকেই, অবশেষে কারাতে কোর্সে ভর্তি হই। আমরা যে মেয়েরা একসঙ্গে ভর্তি হয়েছিলাম তারা শুরুর দিকে এতটাই অপরিপক্ক ছিলাম যে প্রথম প্রথম আমাদের প্রচুর কষ্ট হতো, কেননা মাংসপেশী শক্ত হতে অনেকটাই সময় লেগেছিল,তবে মজার ব্যাপার হচ্ছে একদম কোর্সের শেষের দিকে আমরা হাত দিয়ে আঘাত করে সবাই কাঠের তক্তা ভেঙে ফেলেছিলাম। আমি শুধু একটা কথাই বলতে চাই, বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে প্রতিটি নারীর সেলফ ডিফেন্স শেখা জরুরী।
দীর্ঘ সময় চাকরি করার পরে অবশেষে আমি ফ্যামিলি প্ল্যানিং নিয়ে ভাবতে শুরু করি। সেই লক্ষ্যে আমরা এগিয়ে গিয়েছি এবং কিছুদিন পরে গিয়েই সুসংবাদটা পেয়ে যাই। তখন আমরা ভাইয়ের বিয়ের জন্য গ্রামে যাই। আমরা ভাই-বোন মোটামুটি ছোটবেলা থেকেই একত্রে বড় হয়ে উঠেছি, তাই টুকটাক আমাদের মাঝে ঝগড়া লেগেই থাকতো। এবার ভাইয়ের বিয়েতে গিয়েও খুব সামান্য বিষয় নিয়ে ভাইয়ের সঙ্গে তর্ক লেগেছিল। পরে শেষমেষ এমন একটা অবস্থা তৈরি হয়ে গিয়েছিল যে, ভাইয়া খেতে বসে অনেকগুলো লোকের সামনে আমাকে চড় মেরে দিয়েছিল।ব্যাপারটা মোটেও আমি ভালোভাবে গ্রহণ করে নিতে পারিনি। অবশেষে সেই রাতেই আমি ঢাকায় চলে এসেছিলাম। তারপর তো অনেকদিন কথা হয়নি তাদের সঙ্গে, যদিও মাঝে আমার বেবি পেটের ভিতরেই মিসক্যারেজ হয়ে যায়। তাই সব দিক থেকে বলতে গেলে ভীষণ ভাবে ভেঙ্গে পড়েছিলাম, যদিও পরবর্তীতে ভাই এবং বাবা-মার সঙ্গে কথা বলে সবকিছু ঠিকঠাক হয়েছিল, তবে মিসক্যারেজ হওয়ার ব্যাপারটা মাঝে মাঝে আমাকে বেশ কষ্ট দিয়ে যায়।
অতিথি ও উপস্থিত দর্শকদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ।
পুরস্কার বিতরণের সম্পূর্ণ অবদান @rme দাদার
উপস্থিত দর্শক শ্রোতারা বেশ ভালই উপভোগ করেছিল অতিথির জীবনের গল্প। তারা বেশ ভালই প্রশ্ন রেখেছিল এবং উত্তরগুলো খুঁজেও পেয়েছিল, অতিথির গল্পের মাঝে।
সব মিলিয়ে জীবনের গল্প চলছে, একদম দুর্বার গতিতে । পরবর্তীতে আমরা আসছি কিন্তু আপনার দরজায়, আপনি প্রস্তুত তো।
ধন্যবাদ সবাইকে।
ডিসকর্ড লিংকঃ
https://discord.gg/VtARrTn6ht
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
VOTE @bangla.witness as witness
OR
https://x.com/sharifShuvo11/status/1840701868777042272?s=19
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
গতকালকের রবিবারের আড্ডা অনেক ভালোভাবে উপভোগ করেছিলাম। বিশেষ করে তিথি আপুর সম্পর্কে অনেক কিছু জানতে পেরেছি। যার কারণে অনেক বেশি ভালো লেগেছিল। যারা উপস্থিত ছিল না তারা অনেক সহজে পুরো পোস্ট পড়ে জেনে নিতে পারবে সবকিছু।
ধন্যবাদ আপু আপনার সাবলীল মন্তব্যের জন্য।
তিথি আপুর জীবনের কিছু কথা সত্যি হৃদয়ে আঘাত করেছে। তিনি নিজের অনাগত সন্তানকে হারিয়েছেন এটা সত্যি অনেক কষ্টের ছিল। ভাইয়া আপনাকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি সুন্দর করে লেখাগুলো উপস্থাপন করার জন্য।
এটা সত্যিই বেশ হৃদয়বিদারক ঘটনা ছিল ।
hello, nice to meet you help vote back friends 🙏🙏🙏
আসলে তিথি আপু ঠিকই বলেছে,বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে প্রতিটি মেয়ের উচিত কারাতে শেখা। কারণ আমাদের দেশের কিছু কিছু মানুষ এখনো মেয়েদেরকে পণ্য মনে করে। তাদের মতো অমানুষদেরকে শায়েস্তা করার জন্য কারাতে শেখা খুবই জরুরী। যাইহোক এই রিপোর্টটি আমাদের মাঝে তুলে ধরার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
আমার কাছেও তেমনটাই মনে হয় ভাই।
রবিবারের আড্ডা - জীবনের গল্পে তিথি আপুর জীবনের কিছু অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা সত্যি বেশ কষ্টে ছিলো। তিথি আপুর জীবনের কিছু ঘটনা শুনে খুব কষ্ট লাগলো। আসলে যে কোন অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করা খুবই প্রয়োজন। ধন্যবাদ আপনাকে পোস্টটি শেয়ার করার জন্য।
এই সপ্তাহের রবিবারের আড্ডায় তিথি আপুকে পেয়ে অনেক বেশি ভালো লেগেছিল। অতীথি হিসেবে তিথি আপু আসার কারণে, আপুর সম্পর্কে অনেক কিছু জানতে পেরেছি। তিনি নিজের জীবনের কিছু কথা আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। আপুর জীবনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা কষ্টের ছিল। কিছু কিছু অমানুষ রয়েছে আমাদের সমাজের যাদেরকে শায়েস্তা করা অনেক বেশি জরুরী।
গতদিনের আড্ডায় অনেক কিছু জানতে পেরেছিলাম তিথি আপুর সম্পর্কে।আসলে মানুষের জীবনে কিছু দুঃখের ঘটনা থাকে যেগুলো তিনি শেয়ার করেছিলেন।আবার কিছু আনন্দের ঘটনাও থাকে যেগুলো বলেছিলেন।ভালো লাগলো আপনি পোস্টটি সুন্দর করে তুলে ধরেছেন,ধন্যবাদ ভাইয়া।