মামির বাড়িতে ঝটিকা সফর || @shy-fox 10% beneficiary
একটা ব্যাপার খেয়াল করে দেখবেন। হঠাৎ যখন আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে কোন কারণে হুট করে যাওয়া হয়ে যায়। তখন সেটা কিন্তু আরো অনেকটা মজার হয়ে যায় । যাইহোক এই শুক্রবারের দিনটাতে ঠিক এমনটাই ঘটে ছিল আমার সঙ্গে । দীর্ঘদিন মামির বাড়িতে যাওয়া হয় না । যেহেতু দীর্ঘদিন পরে মামির বাড়িতে ঝটিকা সফর হয়েছিল তাই সেই প্রসঙ্গে কিছু কথা বলার চেষ্টা করব । আশাকরি ব্যাপারটা ভালোই লাগবে আপনাদের ।
আমার তিনটা মামি । মানে তিন মামার তিন বউ। তবে যত যাই বলি না কেন, মেজো মামির মত অন্যান্য মামিদের ভূমিকা আমার জীবনে তেমন একটা নেই বললেই চলে। বড় মামিই বলেন আর ছোটো মামিই বলেন না কেন , মেজো মামির সঙ্গে কারো তুলনাই আমি করতে পারবোনা । ব্যাপারটা এমন যে,মেজো মামি যখন আমাদের নানীর বাড়িতে বউ হয়ে এসেছিল । তখন আমি সবেমাত্র ক্লাস থ্রিতে পড়ি । যাইহোক যেহেতু বাবা-মা চাকরিসূত্রে তাদের কর্মস্থলে যেত আর যেহেতু আমার নানি বাড়ি এই শহরেই ছিল। তাই পুরো সময়টা আমার মেজো মামির কাছেই কাটতো ।
ছোটবেলা থেকেই মেজো মামির ভীষণ ভক্ত ছিলাম আমি । কেন যে এত ভক্ত ছিলাম তা আমি জানিনা। আসলে তার প্রতিটি কার্যকলাপ আমার ভীষণ ভালো লাগতো আর আমাকে আদর করত সেই ছোটবেলা থেকেই। এখন বড় হয়েছি, মেজো মামির দুটো ছেলে রয়েছে , তবে আমার প্রতি তার ভালোবাসা কিন্তু এখনো কমেনি । যদিও আমি আগের মতো সময় করে আর তাদের বাড়িতে যেতে পারিনা কিন্তু মেজো মামির প্রতি আমার ভালোবাসা এখনো অটুট আগের মতই ।
সময় বড়ই অদ্ভুত কিভাবে কিভাবে যে কেটে যায় বলাই যায় না । জীবনটা মুহূর্তেই বদলে যায় কিচ্ছু করার নেই । আমি মনেকরি এটাই বাস্তব, এটাকে মেনে নিয়ে চলাই বুদ্ধিমানের কাজ । আত্মীয়-স্বজন বন্ধু-বান্ধব যেইহোক না কেন , দিনশেষে একটা সময় সবার গতিবিধি পরিবর্তন হয় এবং সবার সঙ্গে সবার দূরত্ব তৈরি হয়ে যায় এটাই চিরন্তন সত্য ।
ব্যস্ততার অজুহাতে কর্মের অজুহাতে কত সম্পর্কগুলো যে হালকা হয়ে যায় , আবার কত সম্পর্কগুলো যে আরও গভীর থেকে গভীর হয়ে যায়, তা আসলে বোঝা মুশকিল । কিচ্ছু করার নেই জীবন এমনি । আমি আজকে সকালবেলা পর্যন্ত সিওর ছিলাম না যে , মেজো মামির বাড়িতে যাব । যদিও আমাকে আগেই দাওয়াত করা হয়েছিল কিন্তু আমি সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছিলাম । কারণ সময় বের করতে পারবো কিনা এইটা নিয়ে আমি ভীষণ চিন্তায় ছিলাম । কারণ মেজো মামি আগেই আমাকে দাওয়াত দিয়েছে ।
যাইহোক যেহেতু শুক্রবারের দিন , এমনিতেই গতরাতে অনেক দেরিতে ঘুমিয়েছি । ভাবছিলাম একটু আরাম করে আরো বেশি সময় ধরে ঘুমিয়ে থাকবো কিন্তু অবশেষে দায়িত্ববোধের জায়গা থেকে আমাকে যেতেই হলো । কারণ অনেক স্মৃতি জমে আছে মামির সঙ্গে আর মামির হাতের রান্নার কথা যদি মনেকরি, তাহলে যাওয়ার আগ্রহটা এমনিতেই বেড়ে যায়। তবে সময় পাইনা এখন আর এজন্য যেতে চাইলেও আর যাওয়া হয়ে উঠে না ।
দুপুরের ঠিক একটু আগেই মোটামুটি সিদ্ধান্ত নিয়েই ফেললাম । ঝাঁপ দিয়ে ঘুম থেকে বিছানায় উঠে বসে পড়লাম এবং চিন্তা করলাম, যতো যাই হোক না কেন , যতো ঝামেলাই থাকুক না কেন, মেজো মামির বাড়িতে আজকে যাবোই । হিরা কে চেঁচিয়ে বললাম, রেডি হয়ে নাও । গন্তব্য এখন আমার মেজো মামির বাসায় । অতঃপর ত্রিশ মিনিটের মধ্যেই মেজো মামির বাড়িতে পুরো পরিবার নিয়ে পৌঁছে গেলাম । যাইহোক মোটামুটি বেশ ভালই লাগছিল কারণ দীর্ঘদিন পরে এই বাড়িতে আসা হলো ।
আমি যাওয়ার আগেই মোটামুটি আমার অন্যান্য আত্মীয়-স্বজনরা সেখানে পৌঁছে গিয়েছে। আমি গিয়ে দেখি আমার মা , আমার মেজো আন্টি ও আমার মেজো মামা সবাই মিলে সেই আগের নিয়মেই লুডু খেলছে। আসলে লুডু খেলাটা আমাদের মামার বাড়িতে একটা ঐতিহ্য । যাইহোক দীর্ঘদিন পরে সেটা আবারও দেখে বেশ ভালই লাগলো ।
আগের থেকে বাড়িটার অনেক পরিবর্তন হয়েছে। কারণ আমার মামাতো ভাই ইমু বেশ ক্রিয়েটিভ চিন্তার মানুষ। ও তো বেশ ভালোভাবেই ওর রুমের ডেকোরেশন ও নিজেই করেছে । বিভিন্ন জায়গায় দেখছি বেশ ভালোই সুন্দর অঙ্কন ও দেয়ালটাকে নিজের ক্যানভাস বানিয়ে সাজিয়েছে । ব্যাপারটা কিন্তু আমাকে বেশ আগ্রহ যুগিয়েছে । ওর পড়ার টেবিলের সামনে থেকে শুরু করে, বিছানার পাশের দেয়াল গুলো যেন ওর নিজের হাতের শৈল্পিক ছোঁয়ায় পরিপূর্ণতা পেয়েছে ।
আমি গিয়ে মোটামুটি এঘর ওঘর ঘুরে ইমু কাছে খানিকটা সময় বসে গল্প করা শুরু করলাম। আর এইদিকে হিরাকে বললাম তোমরা দুপুরের খাবারটা খেয়ে নাও এবং আমি একটু পরেই খেয়ে নেব । যাইহোক অতঃপর মেজো মামির সঙ্গে ও অন্যান্য আত্মীয়ের সঙ্গে কুশল বিনিময় পর্ব সেরে মোটামুটি ইমুর সঙ্গে ভালোই সময় কাটালাম ।
আজকাল সময় গুলো বড্ড দ্রুত চলে যায়। বসতে না বসতেই হিরাদের খাওয়া শেষ হয়ে গেল। ভাবলাম একটু ইমুর সঙ্গে জম্পেশ আড্ডা দেবো কিন্তু তা আর হল না । যাইহোক অতঃপর আমার খাওয়ার পর্ব । আমি মামির রান্নার বেশ ভক্ত । কারণ মামির প্রতিটি রান্নার মধ্যে যেন আলাদা একটা বাড়তি টেস্ট কাজ করে আমার কাছে । যাইহোক নিজের হাতে দীর্ঘদিন পর মামি প্রতিটা আইটেম আমার পাতে তুলে দিল ।
সেই চিকেন ঝাল রোস্ট থেকে শুরু করে সেই খাসির কলিজা দিয়ে সবজি, ডিমের কোরমা, বেগুন ভাজা ,পোলাও ,সালাদ, দই-মিষ্টি কত কিছুইনা করেছে মামি । যাইহোক এই অলস দুপুরে , এইরকম ভরপুর খাওয়া-দাওয়ায় একদম আমার ক্ষুধার্ত পেট যেন আরো পরিতৃপ্তি পেল ।
ঐ যে বললাম মামির আগ্রহ আমার প্রতি বেশি কাজ করে । এই জন্যই মামি আসার সময় হিরার হাতে কিছু পিঠা পাঠিয়ে দিল আমার বাসার জন্য । যাইহোক ব্যাপার গুলো মনে থাকবে বহুদিন পর্যন্ত । হুটহাট এই ঝটিকা সফরে বেশ ভালই আনন্দ পাওয়া গেল। এমন সময় গুলো ফিরে আসুক বারবার। ভালো থাকুক আমার মেজো মামি তার পরিবার ও তার সন্তানদের নিয়ে । শুভেচ্ছা, শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা রইল তার জন্য নিরন্তর ।।
ডিসকর্ড লিংক:
https://discord.gg/VtARrTn6ht
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
![Heroism_3rd.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmRejDSNMUFmRz2tgu4LdFxkyoZYmsyGkCsepm3DPAocEx/Heroism_3rd.png)
আমাদের শায়ান বাবা মাশাল্লাহ দিন দিন বড় হয়ে উঠছে,কবে হাঁটতে শুরু করবে সেই আশায় আছি আমি।বাচ্চাদের অল্প অল্প হাঁটা গুলো জাস্ট দারুণ লাগে।
আপনার এসব দেখে আমার আবার ও মামা বাড়ি যেতে ইচ্ছে হচ্ছে।
ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য। শুভেচ্ছা রইল আপনার জন্য।
কথায় আছে না মামার বাড়ি রসের হাড়ি।কিন্তু আমি তো দেখছি আপনার মামীর বাড়ি খানা পিনার হাড়ি।অনেক খাবার তৈরি করেছে আপনাদের জন্য।আর লুডু খেলার বিষয়টা বেশ দারুন লেগেছে আমার😍।সব মিলিয়ে অসাধারণ।
ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য। শুভেচ্ছা রইল আপনার জন্য।
ভাইয়া আপনার মামির বাড়ির সফরটি, মনে হচ্ছে অনেক উপভোগ করেছে যা আপনার ছবিগুলোতে একদম ক্লিয়ার বুঝা যাচ্ছে।আমাকে এই পোষ্টের মধ্যে সব চেয়ে মন কেড়েছে প্রথম ছবিটি ,যা বই পড়ার টেবিল আর ঘরের দেয়ালে নানা কিছু ছবির অঙ্কন। অসাধারন লাগলো এই ব্যাপারটা।শুভ কামনা রইল ভাইয়া
ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য। শুভেচ্ছা রইল আপনার জন্য।
ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য। শুভেচ্ছা রইল আপনার জন্য।
আপনি একদম ঠিক বলেছেন ভাইয়া ঝটিকা সফর গুলো সত্যি অনেক ভালো হয়। অনেক মজার হয়। অনেক আনন্দ থাকে কেননা আমরা যেখানে সফর করতে যাই তারা অনেক খুশি হয় । আপনি মামার বাড়িতে গিয়ে অসাধারণ সুন্দর মুহূর্ত কাটিয়েছেন যেমন লুডু খেলেছেন। আত্মীয়-স্বজন এর সাথে লুডু খেলতে বেশ মজা লাগে। এছাড়াও আপনি খুব সুন্দর ভাবে তাদের সাথে কাটানো মুহূর্তগুলো আমাদের সাথে শেয়ার করেছেন। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া।
ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য। শুভেচ্ছা রইল আপনার জন্য।
ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য। শুভেচ্ছা রইল আপনার জন্য।
কথায় আছে মামার বাড়ির আবদার। অর্থাৎ মামাবাড়িতে চাওয়া-পাওয়ার একটা দাবি সবসময়ই থাকে। আমাদের চারপাশে অনেক মানুষ থাকলেও সবার প্রতি আমাদের সমান সহানুভূতি কাজ করে না। যে যাকে যেমন ভালোবাসে প্রতিদানে সে তেমন ভালোবাসাই ফেরত পায়। আপনার ঝটিকা মামাবাড়ি সফর মনে হচ্ছে বেশ ভালোই কেটেছে। জম্পেশ খাওয়া দাওয়া আর আড্ডা থাকলে আর কি চাই
ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য। শুভেচ্ছা রইল আপনার জন্য।
আপনার ঝটিকা সফরটির গল্প বেশ ভালো লাগলো যা আমার অতীতের সাথে কিছুটা মিল আছে। আমার ও ক্লশ ৫ পর্যন্ত আমার মামার বাসাতে কেটেছে। আমার মামা ছিলো ৫টা কিন্তু ছোট মামার সাথেই বেশী ফ্রি তাই তাদের বাসায়ই থাকতাম। যদিও এখন খুব একটা যাওয়া হয় না।
আপনার মামাতো ভাই সত্যি অনেক ক্রিয়েটিভ মানুষ। ওয়ালে তার পেইন্টিং দেখলাম অনেক সুন্দর গাছের পেইন্টিং করেছে। আপনার চিকেন ঝাল রোস্ট খাওয়ার কথা সুনে এখন আমারও খাইতে মন চাচ্ছে।
আপনার পোস্ট টি পড়ে মনে হচ্ছে আমারও একটু মামার বাড়ি থেকে ঘুরে আসা উচিত। কথায় আছে মামার বাড়ি রসের হাড়ি
হঠাৎ করে প্রতিটি সফরই দারুন মজার হয়। খুব অল্প সময়ে আপনি আপনার মামার বাড়িতে অনেক আনন্দঘন মুহূর্ত কাটিয়েছেন। মামার বাড়ির শৈল্পিক জিনিসগুলো আমাকে দারুণভাবে আকর্ষিত করেছে। হাসি খুশির এমন বন্ধন টিকে থাকুক আজীবন। এমন সুন্দর মুহূর্ত গুলো আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ শ্রদ্ধেয়। শুভকামনা ও ভালোবাসা রইলো।
ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য। শুভেচ্ছা রইল আপনার জন্য।
ভালবাসা অবিরাম শ্রদ্ধেয়।
ভাইয়া আপনি একদম ঠিক বলেছেন সময় বড়ই অদ্ভুত। সময় কখন যে পার হয়ে যায় আমাদের জীবন থেকে তা আমরা বুঝতেই পারিনা। আমরা আমাদের কর্মব্যস্ততার জীবনে ফেলে আসা অতীত গুলোকে আর ফিরে পাবোনা। কারণ আমরা সেই সময় গুলো যেভাবে উপভোগ করেছি বর্তমানে সেটা আর হয়ে ওঠে না। আগে যেমন ছুটির দিনগুলোতে আমরা আত্মীয়-স্বজনদের বাসায় গিয়ে অনেক আনন্দ করলাম সবাই মিলে লুডু খেলতাম এখন আর সেটা হয়ে ওঠে না। কারণ বর্তমানে সবাই ব্যস্ত হয়ে পরেছে। সত্যি কথা বলতে ভাইয়া আপনি আপনার অনুভূতি গুলো এত সুন্দর ভাবে উপস্থাপন করেছেন যখন পড়েছিলাম তখন মনে হচ্ছিল যেন আমার চোখের সামনে ভেসে বেড়াচ্ছিল সেই মধুর স্মৃতিগুলো। আসলে কিছু কিছু মুহূর্ত রয়েছে যেগুলো সারাজীবন মনের মধ্যে গেঁথে থাকে। মাঝে মাঝে সময় করে সেই প্রিয় মানুষগুলো ও প্রিয় জায়গা গুলোতে গেলে অনেক ভালো লাগে। তখন মনের অগোচরে পুরনো স্মৃতিগুলো আবার মনে পড়ে যায়। তবে আমি একটি কথা বলতে চাই শায়ান বাবুকে কিন্তু দারুন লাগছে দেখতে। আপনি কিছুদিন আগে শায়ান বাবুর জন্য যে জুতা গুলো কিনেছিলেন সেগুলো শায়ান বাবুকে খুব সুন্দর মানিয়েছে। আমার কাছে অনেক ভালো লাগছে দেখতে। আপনার কাটানো সুন্দর মুহূর্ত আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি ভাইয়া।
ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য। শুভেচ্ছা রইল আপনার জন্য।