জীবন বদলায় || @shy-fox 10% beneficiary
ছবির যে মানুষটিকে দেখতে পাচ্ছেন, সে হচ্ছে আমার বাবা । সবথেকে বড় বিষয় তার প্রথম ও শেষ পরিচয় হচ্ছে, সে আমার জন্মদাতা পিতা। তবে তাকে ঘিরে কিছু ঘটনা আছে । যাইহোক আমি সেদিন বলেছিলাম যে, তাকে ঘিরে একটা ঘটনাটা আছে, সময় হইলে সেইটা ব্যাখ্যা দেওয়ার চেষ্টা করব । যাইহোক আজকে যেহেতু, হাতে সময় আছে। তাই আজকে একটু চেষ্টা করব, ঘটনাটা শেয়ার করার জন্য ।
আমার নিজের মায়ের সঙ্গে, আমার বাবার সেই কলেজ জীবনে থাকার সময় হালকা খুনসুটি করে প্রেম হয়েছিল এবং সেই প্রেম পরবর্তীতে বিয়েতে প্রণয় হয়েছিল এবং পরবর্তীতে জন্ম হয়েছিল আমাদের তিন ভাইয়ের। হয়তো ব্যাপারটা সেখানেই সীমিত থাকতে পারতো কিন্তু ব্যাপারটার বিস্তরণ ঘটেছে অন্যভাবে ।
আমি কোনো দোষারোপ করব না আমার বাবাকে, আবার অন্যদিকে আমার মাকেও দোষ দিব না। হয়তো তাদের পরবর্তীতে নিজেদের ভিতর আন্ডারস্ট্যান্ডিং ঠিকমতো হচ্ছিল না ,বিধায় দীর্ঘ 25 বছর পরে আমার মা আর আমার বাবার ভিতরে ডিভোর্স হয়ে গিয়েছিল । যদিও মা স্বেচ্ছায় ডিভোর্স দিয়ে দিয়েছিল। কারণ মা চাচ্ছিল না, সেই কঠিন সম্পর্কটাকে আর কন্টিনিউ করার জন্য । আমার মা কিন্তু এখনও একাই জীবন যাপন করছে, হয়তো আমাদের কথা চিন্তা করে সে আর পরবর্তীতে বিবাহ করেনি ।
আসলে আমার মার এত বড় একটা সিদ্ধান্ত নেওয়ার পিছনে ঘটনা ছিল। কারণ আমাদের সঙ্গে যখন আমার বাবা থাকতো, তখন হয়তো তার অন্য কোনো কারণে, সে আমার মার সঙ্গে সম্পর্ক থাকা অবস্থাতেই সে আর একটা বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে গিয়েছিলো । আমি জানিনা, আসলে সেটার সঠিক কি কারণ ছিল। হয়তো আমার বাবার ইচ্ছা ছিল বিধায় এমন একটা ঘটনা ঘটিয়েছিল ।
তারপরেও কিছু কথা থেকে যায় , আসলে যে কথা গুলো অনেক সময় বলে ওঠা যায় না। মা আসলে কোনোভাবেই বাবার পরবর্তী বিবাহ টা মেনে নিতে পারছিল না এবং সে মানসিকভাবে অনেকটাই হতাশাগ্রস্ত হয়েছিল। তাই হয়তো সেই সম্পর্কটাকে মা আর কন্টিনিউ করতে চাচ্ছিল না। যার কারণে পরবর্তীতে সেইটা ডিভোর্সের দিকে গড়িয়েছিল । যাইহোক ব্যাপারটা এই রকমই ছিল তবে মা-বাবাকে অনেকটাই সুযোগ দিয়েছিল কিন্তু বাবা সেই সুযোগ গ্রহণ করেনি ।
আজ ঠিক বাবার পরের বিবাহ জীবনের 23 বছর অতিক্রম করার পরে, আমার ছোট মা রোড এক্সিডেন্টে মারা যায় এবং বাবা একদম এই সময়ে এসে একাকী জীবন যাপন করতে শুরু করেছে এবং সেই পক্ষে আমার দুটো ছোট বোন আছে। যাইহোক ঐ যে বললাম, জীবন অনেক কঠিন ও অনেক পরিবর্তনশীল। কখন কার কি হয়ে যাবে, এটা বলা খুব মুশকিল ।
আজ যখন বাবাকে, আমি এই অবস্থায় দেখছি। তখন ভাবছি, সেই আগের জীবনের কথা, যে মানুষটা কখনো নিজের জন্য তেমন খুব একটা কিছু ভাবেনি, মূলত অনেকটাই স্বাধীন স্বভাবের মানুষ ছিল । যখন যা মন চাইছে, ঠিক তখন তাই করছে। সেই মানুষটা একদম হঠাৎ করেই, ভীষণভাবে পরিবর্তন হয়েছে । আজ সে নিজে নিজে রান্না করছে, নিজে নিজে খাওয়া-দাওয়া করছে এবং নিজে নিজে পুরো বাড়িটাকে সামলাচ্ছে এবং তারপরে তার সরকারী চাকরি সামলিয়ে নিচ্ছে, কি একটা অবস্থা ?
আসলে হুট করে আমার ছোট মা মারা যাওয়ার পরে, বাবা ভীষণ একা হয়ে গিয়েছে। আর যেহেতু আমার নিজের মার সঙ্গে তার অনেক আগেই ডিভোর্স হয়ে গিয়েছে, এখন সে চাইলেও আমার মার কাছে ফেরত আসছে পারছে না এবং আমার মাও তাকে মনের দিক থেকে গ্রহণ করতে পারছে না । কারণ আমার মার মনের উপরে বাবা সেই সময় একটা ভীষণ অভিমানের দাগ কেটে দিয়েছে। যাইহোক, আসলে দিনশেষে জীবনে কখন কার কি হয়ে যায়, এটা আসলে বলা খুব মুশকিল । আমি শুধু একটা কথাই বলতে চাই, এই ছোট্ট জীবনে আর যাই করুন না কেন, কারো মনে অভিমানের মত দাগ কেটে দেওয়া কোনোভাবেই ঠিক না । কারণ সেটার পরবর্তীতে রূপটা খুব একটা ভালো হয় না ।।
বি:দ্র:
জীবন বদলায়, থেমে থেমে বদলায় ক্ষণে ক্ষণে বদলায়। এটা কেউ না মানলেও, আমি সেটা খুব ভালোভাবে মানি। যাইহোক আজকের কথাগুলো আমি একদম আমার নিজের জীবনের অভিজ্ঞতা থেকে লিখলাম। আমি জানি না ব্যাপারটা কেমন লেগেছে ,তবে আমি সত্যি কথাটাই উপস্থাপন করেছি । তবে আমরা সন্তান হিসেবে চেয়েছি আমার বাবা-মা দুজনকেই পাশে রাখার জন্য। তবে যেহেতু তারা দিনশেষে স্বাধীন মানুষ এবং তাদের নিজেদের সিদ্ধান্ত নেওয়ার মতো বিবেক, বুদ্ধি ও শিক্ষা সবই আছে। আসলে এজন্যই তাদের ব্যক্তিগত স্বাধীনতার উপর আমরা কখনই হস্তক্ষেপ করিনি আর করাও ঠিক হবে না । কারণ জীবনটা তাদের ,তাদের সিদ্ধান্ত তাদেরকেই নিতে হবে ।।
ধন্যবাদ সকলকে
ডিসকর্ড লিংক:
https://discord.gg/VtARrTn6ht
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
![Heroism_3rd.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmRejDSNMUFmRz2tgu4LdFxkyoZYmsyGkCsepm3DPAocEx/Heroism_3rd.png)
আপনার এই কাহিনীটি পড়ে সত্যি অনেক খারাপ লাগলো। কিন্তু বাস্তবতা কে তো উপেক্ষা করার কোন অপশন নেই। দিনশেষে আপনার কথাই সত্য সময় আর জীবন পরিবর্তনশীল। আপনার আব্বা আম্মার জন্য আমার তরফ থেকে অনেক ভালোবাসা রইলো। আর দোয়া করি জীবনের শেষ সময়টায় হলেও যেনো তারা এক হতে পারে।🖤
ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য। শুভেচ্ছা রইল ।
আপনি সঠিক বলেছেন ভাই। জীবন যে কখন বদলায় তা বোঝাই যায় না।পরিস্থিতি মানুষকে এমন করতে বাধ্য করে।
ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য। শুভেচ্ছা রইল ।
আপনার এই কথাটির সাথে আমি একদম একমত জীবন বদলায় থেমে থেমে বদলায় বা ক্ষণে ক্ষণে বদলায় কখন কার জীবন বদলে যাবে আমরা সেটা কেউ জানতে পারি না। জীবন তার নিজের মত চলে। তার নিজের গতিতেই চলে। আমরা আমাদের জীবনের গতি কখনো বদলাতে পারিনা। আমাদের চলার পথ গুলো কখন বদলে যাবে তা আমরা কখনো বুঝতেও পারিনা। সময় এবং পরিস্থিতি সবকিছু বদলে দেয়। সময়ের সাথে সাথে যেমন সব কিছু বদলে যায় তেমনি জীবনের চাওয়া পাওয়া গুলোও জীবনের চলার সাথে সাথে পাল্টে যায়। হয়তো আপনার বাবা কখনো ভাবতেও পারেনি তার জীবনের গতিপথ এভাবে বদলে যাবে। হয়তো হঠাৎ করে তিনি এই পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়েছেন। মানুষের জীবনের মূল্যবান সময়গুলো যে যার মতো করে পার করে। কিন্তু কখন যে জীবনের সেই মূল্যবান সময়গুলো অতীত হয়ে যায় তা আমরা কখনো বুঝতেও পারিনা। আমরা যখন অতীত নিয়ে চিন্তা করি তখন সেই সময়গুলোর মূল্য বুঝতে পারি এবং সেই অতীতের মানুষগুলোর কথা বুঝতে পারি। সময় যেমন মানুষকে বদলে দেয় তেমনি অতীত গুলো কেউ আরো বেশি মনে করিয়ে দেয়। জীবনের কঠিন বাস্তবতার কাছে যখন অতীত সামনে এসে ধরা দেয় তখন বোঝা যায় আমরা জীবনে কতটা সুখী হতে পারছি। জীবনের এই ওঠাপড়ার মাঝেই আমাদের জীবন বয়ে চলেছে। কখনো সুখ, কখনো আনন্দ, আবার বা কখনো প্রিয় মানুষকে হারানোর ব্যথা সবকিছু মিলিয়ে আমরা আমাদের জীবন পার করছি। দুটি সম্পর্ক যখন মধুর হয় তখন জীবনের ছন্দ ফিরে আসে কিন্তু সম্পর্কের মাঝে যখন ফাটল ধরে সেই সম্পর্ক গুলো ধীরে ধীরে শেষ হয়ে যায়। তবুও আমরা যে যার মতো ভালো থাকার চেষ্টা করি। কারণ আমরা মানুষ। ভাইয়া আপনার লেখা পোস্ট পড়ে খুবই ভালো লাগলো। অনেক সুন্দর একটি বিষয় উপস্থাপন করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য। শুভেচ্ছা রইল ।
ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য। শুভেচ্ছা রইল ।
উফ ভাইয়া আপনার পোস্টটি দেখে মনের অজান্তেই চোখের কোণে জল এসে গেছে। সত্যি মানুষের জীবনে এমন অনেক ঘটনাই ঘটে। আসলে মায়েরাই সত্যিই অসাধারণ। তারা নিজেদের সবকিছু স্যাক্রিফাইস করে সব তাদের মুখের দিকে চেয়ে সবকিছু ভুলে যায় তাদের জীবনের হাসি খুশি আনন্দ উল্লাস সবকিছু তারা যেন বিসর্জন দিয়ে দেয়। আপনার মা ও হয়তো আপনাদের দিকে চেয়ে আর তার ভবিষ্যতের কথা ভাবে নি। আপনাদের কে নিয়ে বেঁচে থাকার স্বপ্ন দেখেছে। হয়তোবা তার মনে আপনাদেরকে নিয়ে অনেক বড় স্বপ্ন। আপনার মাকে সেলুট ভাইয়া। আপনার মায়ের জন্য আমার পক্ষ থেকে সালাম। আন্টির জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইল। ভালো থাকুক আন্টি আপনাদের কে নিয়ে আপনারা ভাল থাকুন আন্টিকে নিয়ে। আপনাদের সবার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইল। আপনার বাবার জন্য ও শুভামনা রইল।
ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য। শুভেচ্ছা রইল ।
আপনার বাবার দিকে দেখে খুবই কষ্ট লাগছে।নিজের রান্না নিজেকে সম্পন্ন করতে হচ্ছে। আপনার ছোটমা মারা যাওয়ার পরেও আপনার বাবা আপনার নিজের মায়ের কাছে ফেরত যেতে পারছে না। ডিভোর্স সংক্রান্ত জটিলতা এবং আত্মসম্মান বোধ এর জন্য। যার ফলে উনি এখন থেকে জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত একাকিত্বের মধ্যে দিন কাটাবেন। জানিনা আপনার মা আপনার বাবাকে ছাড়া একাকী জীবনে কেমন আছেন। তুমিও বোধহয় আপনার বাবার মতই এখন সমস্যায় ভুগছেন। শুভকামনা রইল আপনার পরিবারের সকল সদস্যদের জন্য।
ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য। শুভেচ্ছা রইল ।
যখন আপনার লিখাটি পড়ছিলাম তখন আমার একবার ও মনে হয় আমি আপনার জীবনের গল্প পড়ছি,আমার একবার ও মনে হয়নি এইটা আমাদের এডমিন শুভ ভাইয়ের জীবনের গল্প।আমার বারবার মনে হচ্ছিলো কোথাও লিখবেন এইটা আপনার লিখা গল্প।এটাকেই হয়তো বলে জীবন গল্পের চেয়েও কঠিন।আমি শুধু আপনার একলা হয়ে যাওয়া বাবার কথা ভাবছি কারণ আপনার মা একা জীবনটাতে হয়তো অভ্যস্ত হয়ে গিয়েছে এখন। কিন্তু আপনার বাবার নিশ্চয় খুব কষ্ট হচ্ছে। তাও এখন উনার কিছুই করার নেই এইভাবে চলা ছাড়া।খারাপ লাগলো ভাই খুব,দোয়া করি সৃষ্টিকর্তার কাছে আপনার বাবা মা এর জন্য।
ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য। শুভেচ্ছা রইল ।
ভাইয়া আপনার এই পোস্টটি পড়ে আপনার নিজের পরিবারের সম্পর্কে অনেক কিছু জানতে পারলাম। আমাদের জীবনে কখন কি হয়ে যায় সেটা বলা খুবই মুশকিল। আসলে আমাদের জীবনে কিছু কিছু কথা রয়েছে যেগুলো বলা হয়ে ওঠেনা। কারণ হয়তো সেগুলো বলার মত সুযোগ হয়ে ওঠে না। আপনি অনেক সুন্দর করে আপনার এই পোষ্টের মাধ্যমে প্রতিটি কথা উপস্থাপন করেছেন। সত্যি কথা বলতে পুরো বিষয়টি পড়ার পর অনেক কিছুই জানতে পারলাম। যখন সম্পর্ক গুলো ধোঁয়াশার মধ্যে চলে যায় তখন সেই সম্পর্কে কখনোই আর স্বচ্ছতা ফিরে আসে না। আপনার বাবা ও মার মধ্যে যে সম্পর্ক নষ্ট হয়ে গিয়েছে হয়তো সকলে চাইলেও সেই সম্পর্ক আর আগের মত হবে না। কারণ তাদের মাঝে জমে আছে অনেক অভিমান। অনেকক্ষেত্রে দেখা যায় আমরা আমাদের মনের বিরুদ্ধে অনেক কিছু করে ফেলি। অভিমানের কারণে ভেতরে লুকানো কষ্ট গুলোকে প্রকাশ করতে চাইনা। আপনার বাবা এবং মা যেহেতু দুজন দুজনকে পছন্দ করে বিয়ে করেছিলেন তাই আমার যতটুকু মনে হয় তাদের মধ্যে অভিমানের আড়ালে সেই ভালোবাসা টুকু আজও বেঁচে আছে। কিন্তু আমরা বড়ই অভিমানী। আমাদের জীবন সময়ের সাথে বদলে গেলেও অভিমানগুলো ঠিক একই থেকে যায়। তবে যাই হোক যে যেখানেই থাকুক না কেন আপনার পরিবারের সকলের জন্য শুভকামনা রইলো ভাইয়া।
ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য। শুভেচ্ছা রইল ।
ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য। শুভেচ্ছা রইল ।
ভাইয়া আপনার পূরো জীবনের কাহিনির পিছনে অনেক দুঃখ লুকিয়ে আছে,যা আমি উপল্বদ্ধি করতে পারছি কারন আমিও সেই দুঃখের ভাগিদার ।ভাইয়া আপনার মনের সব কষ্ট দূরে ঠেলে দিয়ে সুখকে কাছে টেনে নিয়ে জীবনের পথ চলেন আশা করি সুখি হবেন। দোয়া রইল আপনার পরিবারের জন্য এবং কি মা-বাবার জন্য ।
ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য। শুভেচ্ছা রইল ।