সময়ের ব্যবধান || @shy-fox 10% beneficiary

in আমার বাংলা ব্লগ3 years ago

20211113_112947.jpg
আমি মানুষটা ব্যক্তিগতভাবে ভীষণ স্বাধীনচেতা স্বভাবের মানুষ এবং বলতে পারেন , আমি নিজের মত করে ব্যাখ্যা রাখতে সবসময় পছন্দ করি । আসলে দিন শেষে আমি সবারটা শুনতে রাজি আছি, সবারটা মানতেও রাজি আছি কিন্তু কাজের বেলায় আমার জায়গা থেকে, যেটা আমি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করবো, সেটাই আমি করতে বাধ্য থাকি এবং এটা করতেই আমি বেশি পছন্দ করি ।

ধর্মীয় বিষয়গুলোতে আমার খুব একটা বেশি আগ্রহ থাকে না বললেই চলে, কারন বিষয়গুলো অনেকটা জটিলতাপূর্ণ লাগে আমার কাছে । তবে যেহেতু একটা সমাজের ভিতর আমাকে বসবাস করতে হয় আর মূলত এই সমাজে বিভিন্ন মন-মানসিকতার লোকজন থাকে, তাই বাধ্য হয়ে আমাকে অনেক সময় অনেক ধর্মীয় বিষয় গুলো মেনে নিতে হয়।

PhotoCollage_1636811594539.jpg

এইতো কয়েকদিন আগেও, এই বাড়িতে একদম কান্নাকাটির রোল পড়ে গিয়েছিল এবং এতটা পরিমাণ বিষাদের ছায়া নেমে এসেছিল, যা বলে শেষ করা যাবে না। কিন্তু তিন-চারদিন না গড়াতেই এই বাড়ির চিত্র সম্পূর্ণ এখন আলাদা। মনে হচ্ছিল যেন পিকনিক হচ্ছে এই বাড়িতে। আমি সকালবেলা যখন গ্রামের বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছি এবং যখন গ্রামের বাড়িতে গিয়ে পৌঁছলাম, তখন দেখি সবার মাঝে সেকি ব্যস্ততা ,সবাই একদম হেসে আনন্দে রান্না করছে। কারণ দুপুরের পরে অনেক লোক খাওয়া-দাওয়া করতে আসবে ।

20211113_154654.jpg
মসজিদের হুজুরের বাহন।

যাইহোক আমি খুব একটা বেশি সেদিকে কর্ণপাত করলাম না এবং চলে গেলাম মোটামুটি ছোট মায়ের কবরের কাছে এবং সেখানে গিয়ে কবর জিয়ারত করে, তারপরে রুমের ভিতরে কিছুক্ষণ শুয়ে ছিলাম এবং মোটামুটি তারপরে মসজিদে গিয়ে নামাজ আদায় করে, মিলাদ মাহফিলে যুক্ত হয়ে তারপরে আবার বাড়ির ভিতরে এসেছি। কিন্তু মসজিদের ইমাম যখন মিলাদের পরে, খাওয়ার ঘোষণা করে দিল, তখন সবার চোখে-মুখে যে আনন্দের ছাপটা আমি দেখেছি, মনে হচ্ছিল যে তাদের খাবার খাওয়ার জন্য একদম ভিতরটা কেমন জানি করছিল ।

PhotoCollage_1636811627337.jpg

যাইহোক গ্রামের সকল মানুষজন এসেছে এবং তাদের জন্য খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। মূলত কয়েকটা ভাগে ভাগ করা হয়েছে, মহিলাদেরকে বাড়ির ভিতরে খেতে দেওয়া হয়েছে এবং যারা পুরুষ মানুষ ছিল তাদেরকে বাড়ির উঠোনে সুপারি বাগানের ভিতর খেতে দেওয়া হয়েছে । যখন তাদেরকে খেতে দেওয়া হয়েছিল আমি আসলে তখন বাড়ির ভিতরে আর ঢুকিনি, আমি আসলে বাড়ির সামনের নদীর পাশেই বসে ছিলাম, মানে যেখানে নামাজ পড়া হয়েছিল সেখানে। যাইহোক মোটামুটি যখন খাওয়া দাওয়ার পর্ব শেষ এবং সবাই যখন যাচ্ছিল, তখন একজন আরেকজনকে বলছিল, আরে ভাই মাংসতো তুই আমার থেকে বেশি পাইলি, আমি তো ভাগে কম পাইলামরে ।

PhotoCollage_1636811657245.jpg

আসলে এই কথাগুলোর, সঠিক কোনো ব্যাখ্যা আমার কাছে আপাতত নেই । তবে যেহেতু একসঙ্গে অনেক মানুষের রান্না করা হয়েছে, তাই একটু এদিক-সেদিক হতেই পারে। তবে এর থেকে আমি ভাবছিলাম, যদি এই খাওয়া-দাওয়ার ব্যবস্থা না করে , এই খাওয়া-দাওয়ার পরিমাণ অর্থ, যদি কোন এতিমখানা বা কোন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের প্রাতিষ্ঠানিক উন্নয়নের কাজে দেওয়া যেত, তাহলে মনে হয় সেটা আরো বেশি ভালো হতো। কারণ দিনশেষে আসলে, মানুষকে খাইয়ে তাদেরকে সঠিকভাবে পরিতৃপ্ত করা খুবই কঠিন কাজ ।

সময়ের ব্যবধান এমন একটা জিনিস, একটু ঠান্ডা মাথায় ভাবার চেষ্টা করেন, যে বাড়িতে দুইদিন আগেও কান্নাকাটির একটা রোল পড়ে গিয়েছিল এবং বিষাদের ছায়া নেমে এসেছিল , সেই বাড়িতেই দুই দিন পরে খাবারে মাংসের পরিমাণ কম হয়েছে দেখে, কি তর্কাতর্কি ও সমালোচনা। ব্যাপারটা কি ভাবা যায়, কি একটা অবস্থা ।

Banner.png

ডিসকর্ড লিংক:
https://discord.gg/VtARrTn6ht

Sort:  
 3 years ago 

মনে হচ্ছে এই ইভেন্টটি খুব মজার এবং আমি ভিড় এবং একতা দেখছি

 3 years ago 

ভাই আপনার চার দিন আগে আপনার বাড়িতে কান্নার রোল পড়েছিল। সেই দিন টি আমাদের সাথে শেয়ার করেছেন, খুবই কষ্ট পেয়েছি দুঃখ প্রকাশ করেছিলাম ভাইয়া।

তবে আজকের পোষ্টের বিষয়বস্তু নিয়ে কিছু বলার ছিল না, আবার না বলেও পারছি না। আমাদের পুরো বাংলাদেশ একটা নিয়ম হয়ে গেছে। মানুষ মারা গেলে ৪০ দিনে খাওয়াতে হবে। আর না হলে চার দিনে খাওয়াতে হবে। এটা কি আমাদের বিদির কোন বিধান, না আমাদের নিজেদের করা কোন নিয়ম। আপনি সবকিছু নিজের মতো করে করেন এবং কি দিন শেষে সবার সবকিছু শুনতে রাজি আছে সেটা আমি খুব ভাল করে জানি।

আমার কথা হলো ভাইয়া যখন আপনার বাড়িতে এরকম একটা অনুষ্ঠানের আয়োজন করছেন, তখন সেটা কি আপনি জানতেন না। এবং কি আপনার কোন মত প্রকাশ করার মত মাধ্যম ছিল না। আজ পর্যন্ত আমি কোনদিন কোন মানুষকে খাওয়ায় সন্তুষ্ট করে পারেনি। আর আপনার লাইফে আপনি কখনো কাউকে খাইয়ে-পরিয়ে দিয়ে কতটুকু সন্তুষ্ট করতে পেরেছেন সেটা আপনি ভালো জানেন।

আপনি নিচে গিয়ে খুব সুন্দর করে লিখেছেন এবং কি বুঝিয়েছেন। এভাবে মাংস কমবেশি নিয়ে কথা কাটাকাটি না জড়ানো এবং কি মানুষের অসন্তুষ্টির ঢেকুর দেওয়া এবং কি হাজার মানুষের হাজার রকম আলোচনা থেকে বাঁচার উপায়। আপনি অনেক সুন্দর করেই বলে দিয়েছেন। আমার মতে আপনার ফ্যামিলির সাথে আপনি কথা বলে ওইরকম কিছু একটা করার দরকার ছিল। যেটা আপনার মায়ের জান্নাতের জন্য খুবই প্রয়োজন ছিল। এতিমখানায় দান সদগা এবং কি নির্মাণাধীন কাজে যদি অর্থগুলো ব্যয় করতেন। তার জন্য কবরবাসীর সারাজীবন সোয়াব লেখা হতো।

ঠিকই বলেছেন ভাইয়া আমাদের সকলকে আল্লাহ হেদায়েত নসিব করুন। আপনার পোষ্টটি পড়ে কি সান্ত্বনা দেব ওরকম কোন ভাষা ছিল না। ভাইয়া তবুও ছোট ভাই হিসেবে অনেক কথা বলে ফেললাম ক্ষমা দৃষ্টিতে দেখবেন। আর আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য ভালোবাসা অবিরাম ভাইয়া।

 3 years ago 

ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য। শুভেচ্ছা রইল আপনার জন্য।

 3 years ago 

প্রিয় মানুষের মৃত্যুর পর তাঁর রূহের মাগফিরাত কামনা করার জন্য এবং তার জন্য দোয়া মাহফিল করার জন্য কোন মসজিদ বা এতিমখানায় যদি খাবার বা সেই পরিমাণ টাকা দেওয়া হয় আমার কাছে মনে হয় সেটাই উত্তম হবে। কারণ আমার কাছে মাঝে মাঝে মনে হয় এই পৃথিবীর মানুষগুলো বড়ই স্বার্থপর ক্ষণিকের জন্য খারাপ লাগা থাকলেও ধীরে ধীরে ভুলে যায় এবং সেই মাহফিলের অনুষ্ঠান হয়ে যায় উৎসবমুখর অনুষ্ঠান। যাই হোক নিজের বিবেক নিজের কাছে। তাই আমাদের সবসময় নিজ দায়িত্বে আমাদের প্রিয় জনের মৃত্যুর পর তাদের জন্য দোয়া করা উচিত সবসময়। শুভকামনা রইলো ভাইয়া।

 3 years ago 

ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য। শুভেচ্ছা রইল আপনার জন্য।

 3 years ago 

আপনার সাথে আমি একমত ভাই। আমাদের সমাজের এই নিয়মটা একেবারে অদ্ভুত লাগে আমার কাছে। মৃত মানুষের কুলখানী করা। যেটা কীনা শরিয়ত বিরোধী বলা যায়।

এই খাওয়া-দাওয়ার পরিমাণ অর্থ, যদি কোন এতিমখানা বা কোন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের প্রাতিষ্ঠানিক উন্নয়নের কাজে দেওয়া যেত

এটা সঠিক বলেছেন। যুক্তি আছে কথাটায়। এবং এটাই হওয়া উচিত ছিল। কিন্তু আমাদের সমাজে এই রকম চিন্তা ভাবনার লোকের অভাব আছে।

 3 years ago 

ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য। শুভেচ্ছা রইল আপনার জন্য।

 3 years ago 

😊😊

 3 years ago 

আপনি নিজের মতো করে যেগুলো ব্যাখ্যা করেন ভাইয়া। অনেক সুন্দর এবং সবকিছু ভালোভাবে আপনি ঠিক রাখেন। এটা খুবই ভালো লাগে।হ্যাঁ ভাইয়া সমাজের কিছু নিয়মকানুন থাকে সেগুলো বলতে গেলে বাধ্য এগুলো মানতে হয়। সমাজের মানুষের সাথে ভালো ভাবে বসবাস করার জন্য।আসলে ভাইয়া একটা জিনিস যে যাওয়ার সে চলে যাবে আর সকলে দুনিয়া নিয়ে ব্যস্ত হয়ে যাবে এটাই এখনকার সমাযে বাস্তবতা।যাইহোক নারীদের জন্য আলাদা জায়গায এবং পুরুষদের জন্য আলাদা জায়গা এবং সবকিছু ভালোভাবে শেষ করতে পেরেছেন। আলহামদুলিল্লাহ।আপনার মূল্যবান কথা টা অনেক ভাল ছিল যে সাধারণ মানুষকে না খাওয়ায়ে। সে টাকা যদি এতিম মিসকিনদের বা মসজিদে দান করা যায় তাহলে আরো ভাল হবে কারন এদের যত দেওয়া যায় তত আরো বেশী চাই। একটু কম পড়লে সমস্যা।

 3 years ago 

ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য। শুভেচ্ছা রইল আপনার জন্য।

 3 years ago 

এই সমাজের মানুষগুলো কে আপনি যতই উজাড় করে দেন না কেন কখনো তাদের মন পাওয়া যায় না। আমরা সবসময় চেষ্টা করি দাওয়াতের মানুষকে ভালোভাবে খাওয়ানোর। কিন্তু মাঝে মাঝে এমন কিছু মানুষ রয়েছে যারা সব সময় নিন্দা করতেই ব্যস্ত থাকে। আসলে এসব মানুষের নিন্দা করাই হচ্ছে বড় কাজ। তাদেরকে কখনোই তৃপ্ত করা সম্ভব নয়। তাই আমার মনে হয় এই বিষয়গুলো নিজের থেকে এড়িয়ে চলা উচিত। যখন আপনি তাদের কথাগুলো ধরবেন তখন মনে হবে যে আপনারই হয়তো ব্যর্থতা ছিল। তাই এদেরকে সবসময়ই নিজ দায়িত্বে এড়িয়ে চলে নিজের সেই মুহূর্তগুলো কাটানো উচিত। ধন্যবাদ ভাইয়া আপনার পোস্টটি পড়ে অনেক কিছু সম্পর্কে জানতে পারলাম।

 3 years ago 

ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য। শুভেচ্ছা রইল আপনার জন্য।

 3 years ago 

ভাই আপনি একদম ঠিক বলেছেন আসলে মানুষকে কোনদিনও মনে হয় না তৃপ্তি মিটিয়ে খাওয়ানো সম্ভব। যতই খাওয়াবেন মনে হয় তারপরও যেন কোথাও কমতি রয়ে গিয়েছে। এটা একটি ভালো কথা বলেছেন এই সমস্ত কাজ গুলি থেকে ভালো হয় যদি ওই টাকাগুলি এতিমখানায় যারা অসহায় বাচ্চা আছে তাদের পেছনে খরচ করা হয়। আরেকটি বিষয় হযরত আশরাফ আলী থানবী রহঃ মাতুল্লাহি তাঁর কিতাবের মধ্যে লিখেছেন যদি কোন মানুষ এইরকম টা চিন্তা করে কোনো মানুষ মারা গেলে তার চারদিনের দিন খাওয়াতেই হবে বা মিলাদ পড়াতেই হবে তাহলে এটা বেদাত এ পরিনিত হয়ে যাবে। আসলে দোয়া যে কোন সময় করা যায় কিন্তু চারদিনের দিন বা ৪০ দিনের দিন করতেই হবে এরকমটার কোন বিধান আসলে কোরআন এবং হাদীসে কোথাও নেই।

 3 years ago 

ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য। শুভেচ্ছা রইল আপনার জন্য।

 3 years ago 

এজন্যই আমার বাবা কোনোদিন ও আমাদের বাড়িতে এসব হতে দেয় না একদম।কয়েক বছর আগে আমার দাদি মারা গেলো।তখন গ্রামের সবাই বলছিলো কমতি নাই মানুষ খাওয়াতেই সমস্যা কেনো। আমার আব্বু সোজা বলে দিয়েছে গ্রামের লোক খাওয়ানো হবে না।এরপর অনেক খাবার,চাউল,মাংস,মসলা সব কিনে এতিমখানায় দিয়ে দেয় আর সাথে টাকা ও। আসলে এদের খাইয়ে তৃপ্তি করা সম্ভব ই না।

 3 years ago 

ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য। শুভেচ্ছা রইল আপনার জন্য।

 3 years ago 

ভাই আপনার প্রতিটা পোস্টে আমার খুবই ভালো লাগে, কারণ আপনি প্রতিটা পোস্টের এর মধ্যে রয়েছে আমাদের শিক্ষনীয় কিছু উদ্দেশ্য।পোষ্টের মাধ্যমে আপনি অনেক কিছু বুঝিয়ে দিয়েছেন, সত্যিই আমরা যদি গরীব-দুঃখীদের জন্য আপনার পরিকল্পনা মতে খাওয়া-দাওয়ার ব্যবস্থা করা যেতো তাইলে অনেক ভালো হতো। আপনার এই সুন্দর পরিকল্পনা আমার অনেক ভালো লেগেছে। আপনার জন্য শুভকামনা রইল।

 3 years ago 

ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য।

 3 years ago 

ভাইয়া আমরা মানুষ জাতি, সে বড় এক অদ্ভুত জাতি। আমাদের জীবনে চাওয়ার কোন শেষ নাই। আর এটাও সত্যি যে মানুষকে খাওয়াইয়ে কখনো তৃপ্ত করা যাবে না। এটা মানুষের স্বভাব নাকি মানুষের মানসিকতা তা নিশ্চিতভাবে আমার জানা নেই।। ভাইয়া আমার মতেও এই সব ধর্মীয় আয়োজনে মানুষকে না খাওয়াইয়ে কোন এতিমখানা তে অর্থ দান করা বা মসজিদ নির্মাণে অথবা কোন অসহায় ব্যক্তি কে‌ এই অর্থ দান করা উচিত।

Coin Marketplace

STEEM 0.16
TRX 0.15
JST 0.028
BTC 54451.29
ETH 2281.47
USDT 1.00
SBD 2.33