ফিরে দেখা
গত দুইদিন থেকে যে কি পরিমাণ চাপের ভিতরে আছি, তা আসলে বলে বোঝাতে পারবো না। এমনিতেই বাসা পরিবর্তন করা ভীষণ কষ্টদায়ক ব্যাপার, তার ভিতরে আবার নতুন বাসায় গিয়ে সেগুলো সেটিং করা আবার সেখানে বসবাস করার জন্য নিজেকে মানসিকভাবে প্রস্তুত করা, ব্যাপার গুলো আসলে মোটেও সহজ নয়। তারপরেও জীবনের তাগিদে অনেক কিছুই করতে হয়।
দীর্ঘ দুটো বছর এই বাসাতে ছিলাম। দুটো বছর অনেক লম্বা সময়। আমার বাবুর যখন ৪৫ দিন বয়স ছিল, তখন উঠেছিলাম এই বাসাতে। বেশ সাজানো গোছানো ও নতুনত্ব ভাবে শুরু করেছিলাম আমাদের ছোট্ট সংসার, ভালোই যাচ্ছিল সবকিছু। এখনো যে খারাপ যাচ্ছে, তা বলবো না। তবে বলব যে, জীবন আমাকে অনেক কিছুই শিখিয়ে দিয়েছে। কিভাবে সব পরিবেশে মানিয়ে চলতে হয়।
জীবনে উত্থান পতন আরো বহু কিছুই ঘটবে। তবে সবকিছু কাটিয়ে কিভাবে জীবনে বেঁচে থাকতে হবে সেটাই হচ্ছে আসল ব্যাপার। আমি সুখস্মৃতিকে আঁকড়ে ধরে রাখতে ভালোবাসি। এই যেমন ঐ বাসার স্মৃতিগুলো আমার কাছে অনেকটাই স্মরণীয় হয়ে থাকবে, যা আমি বাস্তবে চাইলেই আর ফেরত পাব না। তবে সেই স্মৃতিকে ভিত্তি করে দুটো কথা আমি লিখতেই পারি।
প্রথম যেবার ঐ বাসাতে উঠেছিলাম, তখন আমার সামনের বাসাতে বৌদি ছিল। তার সঙ্গে বেশ ভালো আন্তরিকতাপূর্ণ সম্পর্ক হয়েছিল, যা এখনো আছে। আমি মনেকরি বৌদির সঙ্গে যে আত্মিক সম্পর্ক হয়েছে, তেমনটা আর কারো সঙ্গেই হয়নি।
দোতলার রিতু আমিন ম্যাডামের সঙ্গেও আন্তরিকতা ছিল, তবে সেটা খুব একটা আত্মিক নয়। তাছাড়া ঐ বাসার অন্য সকল যারা ছিল, তাদের সঙ্গেও টুকটাক আন্তরিকতা ছিল। আমি নিজের মতো করে থাকতেই ভালবাসি। আমি যখন ঐ বাসা থেকে চলে আসি, তখন ইচ্ছে করেই কাউকে জানিয়ে আসিনি। জগত সংসারে কেউ কারো খোঁজ-খবর রাখতে চায় না। তারপরেও যখন কিছু মানুষ নিজের থেকে খোঁজখবর নেয়, তখন সেটা অনেকটাই পরম পাওয়া হয়ে যায়। এদিক থেকে বৌদির কাছে আমি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। ভদ্রমহিলা চেষ্টা করেছে,আমাদের খোঁজখবর নেওয়ার জন্য।
ঐ বাসাতে ওঠার পর থেকে মোটামুটি বাবুর জন্মদিন, আমার জন্মদিন, আমার বাংলা ব্লগের জন্মদিন, আমাদের বিবাহ বার্ষিকী এই রকম অনেক অনুষ্ঠান পালন করা হয়েছিল। সব মিলে প্রত্যেকটা মুহূর্তের স্মৃতি গুলো যেন এখনো আমার চোখের সামনে ভাসমান। হয়তো জীবন এমনই, প্রতিনিয়ত একরকম থাকবে না, শুধুমাত্র স্মৃতি গুলো নিয়েই বেঁচে থাকতে হবে।
দীর্ঘ দুটো বছর এখানে কেটে নিয়ে দিয়েছি, আজ সবকিছু নিয়ে যখন নতুন বাসার উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছি, তখন যেন কিছুটা খারাপ লাগছিল। এটা আমি বুঝতে পারছিলাম, তবে কিচ্ছু করার নেই। ঠিকানা পরিবর্তনশীল বলেই, প্রতিনিয়ত নিজেকে মানিয়ে নিতে হচ্ছে।
ডিসকর্ড লিংক
https://discord.gg/VtARrTn6ht
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
VOTE @bangla.witness as witness
OR
https://twitter.com/sharifShuvo11/status/1669306255498969088?t=15fDppPyE2OsT1EhY3sUSw&s=19
বাসা পরিবর্তন করা সত্যি অনেক ঝামেলার। আর প্রিয় মানুষগুলোকে ছেড়ে আসা আরো বেশি কষ্টের। কিছু কিছু মানুষ আছে তাদের সাথে বছরের পর বছর থাকলেও আন্তরিকতা তৈরি হয় না। আর কিছু কিছু মানুষ আছে কয়েকদিনের আন্তরিকতায় তাদেরকে কখনো ভোলা যায় না। বৃষ্টি চাকি বৌদি সত্যি একজন ভালো মানুষ। জানিনা হঠাৎ করে বাসা পরিবর্তন করার সিদ্ধান্ত কেন নিলেন। তবে দোয়া করি নতুন বাসায় যেন সময়টা ভালো কাটে।
বাসাটা পরিবর্তন করার কোন ইচ্ছে ছিল না আপু, তবে সমসাময়িক ও ব্যক্তিগত কিছু সমস্যার কারণে বাসাটা পরিবর্তন করতে হয়েছে।
আসলে ভাইয়া এক বাসা থেকে আরেক বাসা পরিবর্তন করলে নতুন ভাবে সবকিছু ঠিক করতে খুবই কঠিন হয়ে পড়ে। এক জায়গায় অনেকদিন থাকলে আশেপাশে মানুষের সাথে অনেক আন্তরিকতা সৃষ্টি হয়। তাদের ছেড়ে আসতে অনেক কষ্টও হয়। হঠাৎ করে বাসা পরিবর্তন করার এই সিদ্ধান্তের জন্য আপনার নতুন একটি বাসায় উঠলেন। আবার নতুনভাবে এখানে মানিয়ে নিতে হবে। নতুন ভাবে নতুন মানুষের সাথে আন্তরিক গড়ে উঠবে।
দেখি গিয়ে নতুন জায়গায় কি হয়, আগেই তো অনেক কিছু বলা যায় না, তবে অনুপ্রেরণা দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ।
আসলে ভাইয়া আমাদের জীবনটাই এমন ।প্রতিনিয়ত পরিবর্তনশীল । আজ যেগুলো সুখের সময় কাল সেগুলো স্মৃতি । এভাবেই সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে কিছুই করার নেই, নিয়তির খেলা । আপনি আপনার পুরনো সুন্দর পরিবেশটাকে ছেড়ে নতুন ঠিকানায় যাচ্ছেন , হয়তো সেখানেও বেশ ভালো কিছু প্রতিবেশী পাবেন ।আবার নতুন করে সম্পর্ক গড়ে উঠবে । তবুও পুরনো কিছু স্মৃতি যা সব সময় রয়ে যাবে, যেগুলো ভোলার নয় । বেশ খারাপ লাগলো। ধন্যবাদ ।
এটা সত্য যে, নিয়তির খেলা বোঝা বড় দায়। আমি কৃতজ্ঞতা বোধ প্রকাশ করছি আপু, আপনার সাবলীল মন্তব্যের জন্য।
জীবনের সৌন্দর্য এখানেই যে জীবনে বাঁক আছে,আছে চড়াই উৎরাই। অন্ধকার আছে বলেই আমরা বুঝি আলো কতটা দরকারি। বিপদের মুহূর্তগুলো যেনো চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দেয় সুখের গুরুত্ব।তাই মনে করবেন যা হয়েছে ভালোর জন্যই হয়েছে।অনেক গুলো দিন আপনাদের সাথে কাটিয়েছি প্রথম প্রথম আপনাদের চলে যাওয়ার কথাটা একদম মন থেকে মেনে নিতে পারছিলাম না, পরে এই ভেবে মন কে শান্তনা দিতে পেরেছি যে আপনারা খুব দূরে তো নয় চোখের সামনেই থাকবেন।সবসময় না হলেও দিনশেষে একবার তো দেখা হবে।নিজের বাড়িতে উঠেছেন এটা সবচেয়ে শান্তির জায়গা আশাকরি আপনাদের আগামী দিনগুলো অনেক সুন্দর কাটবে।শায়ান বাবু ওর দাদীমার ভালোবাসা পাবে যা ওর জন্য খুবই জরুরি।আগামী দিনের জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইলো আপনার জন্য।
হঠাৎ তৈরি হওয়া আত্মিক সম্পর্ক গুলো অমলিন থাকুক সব সময়, এমনটাই প্রত্যাশা ব্যক্ত করছি। ধন্যবাদ অনুপ্রেরণা দেওয়ার জন্য। 🙏
আসলে ভাইয়া, একটি বাসাতে দীর্ঘ দুই বছর থাকলে সেখানে অনেকগুলো স্মৃতি এমনিতেই জড়িয়ে থাকে। আর বর্তমান সময়ে অনেকেই প্রতিবেশীদের তেমন একটা খোঁজখবর নিতে আগ্রহ প্রকাশ করে না। কিন্তু যাদের সাথে আত্মিক সম্পর্ক গড়ে ওঠে তারা অনেক সময় পরস্পরের খোঁজ খবর রাখেন। যাহোক ভাইয়া, আপনার পুরনো বাসা্য দারুন এক স্মৃতিময় পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।