গল্পে গল্পে পরিচয় ||@shy-fox 10% beneficiary

in আমার বাংলা ব্লগ3 years ago

20211116_200237.jpg
এই ইট পাথরের শহরে , আমি যতই ঘোরাঘুরি করি ততই ভিন্ন রকমের মানুষজন দেখি। তবে মানুষজনের আচার ব্যবহার এবং তাদের বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী তাদেরকে আমার কাছে বিভিন্ন রকমের মনে হয় । কাউকে ভাল মনে হয়, কাউকে জটিলতা সম্পন্ন মনে হয় , আবার কাউকে অনেকটা রোবট মনে হয়। তবে এই শহরে আসলে ভালো মানুষ খুব একটা নেই বললেই চলে। কারণ আমার কাছে ভালো মানুষের সংজ্ঞাটা একটু ভিন্ন রকম। তাই আমার সংজ্ঞা অনুযায়ী, ভালো মানুষ খুজেঁ পাওয়া এই শহরে অনেকটাই কঠিন হয়ে যায়, আমার কাছে।

আমার সংজ্ঞায় অবশ্য তেমন কোন কিছু নেই। আমার সংজ্ঞায় একটা শুধুমাত্র দিক থাকে, সেটা হচ্ছে দিন শেষে যাকে দেখছি, আসলে সে মানুষ হিসেবে কেমন । আমার কাছে এটাই সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ দিক । একটা মানুষের তো আর ভিতরে প্রবেশ করা যায় না, তবে হুটহাট করে কিছু কিছু কারণ দেখে আমি সেই সংজ্ঞায় সেই মানুষকে সংজ্ঞায়িত করতে বাধ্য হয়ে যায় ।
গতকাল গিয়েছিলাম ফল কিনতে। আসলে ফল কিনতে যাওয়ার পরে, আমি যে বিষয়গুলো খেয়াল করছিলাম। সেটা হচ্ছে আমি যে ফলটা কিনবো, সেটা কেমন সেটা কিন্তু আমার প্রধান কোন বিষয় না। আমি দেখার চেষ্টা করছিলাম, ফল বিক্রেতারা আসলে কেমন আচার-আচরণ করে সেইটা । কারণ অনেকজন মানুষ আমাকে ফল কেনার জন্য ডাকছিল কিন্তু আমি শুধু দেখছিলাম তাদের চোখ মুখের দিকে। কারণ তারা আসলেই কেমন আচরণ করে সেইটা বোঝার জন্য।

PhotoCollage_1637579182235.jpg

হুট করে কানে একটা কথা এলো, এই যে ভাই টাকা ছেড়ে গেলেন যে। এই কথাটা আমাকে অনেকটাই আকর্ষণ করেছে। এই পৃথিবীতে আর যাইহোক, কেউ কাউকে সহজে টাকাপয়সার ব্যাপারে ছাড় দিতে চায় না । তারপরেও যখন অতিরিক্ত টাকা কেউ হাতে পেয়ে, অন্য মানুষকে ডেকে দিতে চায় । সেটা আমার কাছে অবশ্যই বেশি দৃষ্টি পায় । আগ্রহ নিয়ে এগিয়ে গেলাম, জানার চেষ্টা করলাম তাকে। বিবিএ কমপ্লিট করে বাবার ব্যবসায় বসেছে, নাম হচ্ছে আরজু ।

বেশ হাসিখুশি ও তরুণ একটা ছেলে। যাইহোক গল্প করার চেষ্টা করলাম । তবে তার কাজের ফাঁকে ফাঁকে তাকে বললাম যে, আমাকে এই ফলটা দিও ঐ ফলটা দিও । সেও চেষ্টা করছে আমার পছন্দ অনুযায়ী, আমার ফলগুলো দেওয়ার জন্য । আমি আসলে তার ফলগুলো দেখার চেষ্টা করিনি, দেখার চেষ্টা করছিলাম তার আচার-আচরণ ও দৃষ্টিভঙ্গি । বেশ মুগ্ধ হয়েছিলাম স্বল্প সময়ের জন্য । যা জানলাম তা শুনে কিছুটা খারাপ লেগেছিল । শুধুমাত্র তার লেখাপড়ার প্রতি অদম্য আগ্রহ দেখে, তার ফল বিক্রেতা বাবা কষ্ট করে তাকে প্রাইভেট ইউনিভার্সিটিতে পর্যন্ত পড়িয়ে ছিল। কিন্তু চাকরির বাজার ভাই, খুবই কঠিন । এই বাজারে অবশ্য ইমোশনাল হলে চলে না । তাই অবশ্য সাত-পাঁচ না ভেবে, নিজের বাবার ব্যবসায় বসে পড়েছে এবং বাবাকে বিশ্রামে পাঠিয়েছে। চেষ্টা করছে বাবার ব্যাবসাটাকে মডিফাই করার জন্য ।

20211116_200203.jpg

ব্যাপার গুলো শুনতে খারাপ লাগছিল। তবে একটা সময়ে গিয়ে যখন, পরিবারের হাল নিজের থেকে ধরার চেষ্টা করেছে এবং পৃথিবীর আসল রূপ বৈচিত্র দেখতে বুঝতে পেরেছে ও সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে,তখন তার প্রতি একটা শ্রদ্ধা জাগ্রত হল। কারণ আসলেই পৃথিবীতে চাকরির অবস্থা খুব একটা ভাল না । যাইহোক সেই জায়গা থেকে সে নিজের মতো করে কাজ করার চেষ্টা করছে, এটাই বা কম কিসের ।

ভালো লাগলো আরজু ভাইয়ের সঙ্গে কথা বলে। আমি জানি, সে আমাকে যে ফলগুলো দিয়েছে অবশ্যই সেই ফলগুলো ভালো হবে এবং ফরমালিন মুক্ত হবে। যাইহোক অবশেষে তাকে ফলের দাম দিয়ে , বাসার উদ্দেশ্যে চলে আসলাম।

Banner.png

ডিসকর্ড লিংক:
https://discord.gg/VtARrTn6ht


20211003_112202.gif


JOIN WITH US ON DISCORD SERVER

banner-abb4.png

Follow @amarbanglablog for last updates


Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png

Sort:  
 3 years ago 

কি খারাপ লাগে আসলস ব্যাপার গুলো দেখলে!!
এতো কষ্ট করে পড়ালেখা করে যখন হাজার চেষ্টা করেও আর চাকরি পাওয়া যায়না!
আসলে তাও ভালো যে উনি শিক্ষিত বেকার হয়নি। উনি নিজের সাধ্য মতো পরিবারের জন্য করছে, এই বয়সের ছেলেরা এতুটুকুও কই আর চিন্তা করে!তবে আমার ও টাকা নিয়ে যেতে বলার ব্যাপার টা ভালো লাগলো খুব।

 3 years ago 

ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য। শুভেচ্ছা রইল।

 3 years ago 

আমরা বাঙালি জাতি এমন একটা জাতি,আজকের লেখাপড়া শিখে আশা করি যে ভালো কোন একটা সরকারি চাকরি পাব। কিন্তু যখন ব্যর্থ হয় তখন মন-মানসিকতা অন্যরকম হয়ে পড়ে। কখনো ভাবি না নিজের পায়ে দাড়াবো নিজের মতো করে। হোক সেটা চাকরি না হয় সেটা কোন ব্যবসা-বাণিজ্য। তবে এই ঘটনা পরে আমার খুবই ভালো লাগলো যে পরবর্তীতে তিনি চাকরির প্রয়োজন মনে করেন নাই। চাকরি না হয়েছে তো কি হয়েছে। তিনি তার বাবার ব্যবসাটাকে নিজের ব্যবসা করে বড় করে তুলতে চেয়েছেন এবং সততা নিয়ে ব্যবসা করতে চেয়েছেন এটাই আমাদের জাতির জন্য অনেক কিছু।

 3 years ago 

ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য।

 3 years ago 

এখনকার যুগে চাকরির বাজার আসলেই খুব কঠিন। চাকরিতে গেলে বড় বড় কর্তারা বড় অঙ্কের টাকা দাবি করে বসেন। তার চেয়ে বড় ভাইটি অনেক ভালো সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। বাবার ব্যবসাকে মডিফাই করে আরো বড় করতে চান। আচার-আচরণ এবং চোখের চাহনি দেখেই ভালো মানুষ চেনা যায়। ছবিতে ভাইটিকে দেখে বেশ ভালই মনে হচ্ছে। বিষয়টি আপনিও খুব ভালোভাবে উপস্থাপন করেছেন। ধন্যবাদ আপনাকে।

 3 years ago 

ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য। শুভেচ্ছা রইল।

 3 years ago 

আপনার পোস্টগুলো এই জন্য আমার বেশি ভালো লাগে, কারণ আপনার পোষ্টের মাধ্যমে আমাদের মধ্যে বাস্তবতা তুলে ধরেন। সত্যিই আমার খুবই খারাপ লেগেছে কারণ বর্তমানে অনেক শিক্ষিত মানুষ একটি চাকরির পিছনে সারাজীবন ঘুরে চাকরি পাচ্ছে না, শেষমেশ পরিবারের কাছে হতাশ হয়ে ফিরে আসতে হচ্ছে।পরিবারকে হাসি ফুটিয়ে তুলতে পারে না, এটা জেনে ভালো লাগলো যে, সে পরিবারের বোঝা হয়নি, সে নিজে কিছু করতে পেরেছে।আপনি খুব সুন্দর ভাবে উপস্থাপন করেছেন। আপনাকে অনেক ধন্যবাদ ভাই।

 3 years ago 

ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য। শুভেচ্ছা রইল।

 3 years ago 

হ্যাঁ ভাই ঠিকই বলেছেন, এই ইট পাথরের শহরে ভালো মানুষ খুঁজে পাওয়া খুবই কষ্টকর। শহরের মানুষগুলো অনেকটা রোবটের মত। এদের আচরণ একটু ভিন্ন, সাধারণত আমি যখন শহরে প্রথম এসেছিলাম আমি একটা রাস্তায় দশ জনকে যদি কোন একটা অ্যাড্রেস বা ঠিকানা বলেছি ঐ রাস্তাটা কোন দিকে। ওই দশজন মানুষ না হলেও দশবার ঘুরপাক খাওয়া। কিন্তু সঠিক জায়গায় সঠিক সন্ধান টা কেউ দিতে রাজি নয়, তার মানে আজ পর্যন্ত আমি খুঁজে পেলাম না, এর কারনটা কি। মানুষকে মানুষ নাচাতে ভালোবাসে নাকি মানুষ মানুষকে সহযোগিতা করতে ভালোবাসেন। যাই হোক সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে আপনি অনেক বিচার-বিশ্লেষণ করে মানুষকে মেপে জোপে তার পরে কথা বলেন সেটা আমি জানি। আপনার অনেক কিছু থেকে আমার এই অর্জন। ছেলেটার বাবা ফল বিক্রেতা কিন্তু ছেলেটা একজন গ্র্যাজুয়েট হওয়ার পরেও তার বাবার কলোর দোকানে বসে বাবাকে বিশ্রামে পাঠিয়েছেন এবং ফলের দোকান কে মডিফাই করার চেষ্টা করছেন। বুঝতেই হবে তার মন-মানসিকতা কত ভালো। এবং সে কত বড় মনের মানুষ হতে পারে। আপনার সাথে কথাবার্তা হল এবং আপনি তার কথাগুলো শুনে কষ্ট পেয়েছেন। তারপরও কিছু করার ছিলনা এবং সেই বিষয়গুলো আমাদের সাথে শেয়ার করেছেন। সত্যি ভাইয়া এই শহরে কারো যদি এক টাকা হোক আর দশ টাকা হোক পড়ে যায় কেউ কাউকে ডেকে দিতে বাধ্য নয় যদি না শে মানুষ হয়। আমাদের শহরে চলতে হলে পা ফেলতে হয় হিসাব করে এবং কি পদে পদে বিপদ হয়। আর শহরের মানুষগুলো হচ্ছে বহুরূপী, মানুষদেরকে দেখে কখনো ভালো-মন্দ বিচার করা যায় না। আমাদের সাথে এত সুন্দর একটা পোস্ট ভাগাভাগি করে নেওয়ার জন্য। ভালোবাসা অবিরাম ভাইয়া।

 3 years ago 

ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য। শুভেচ্ছা রইল।

 3 years ago 

ইট পাথরের দেয়াল ঘেরা এই শহরের মাঝে মানুষগুলো ইট পাথরের মত হয়ে গেছে। শহরের সব মানুষগুলো যান্ত্রিক জীবন যাপন করতে বেশি পছন্দ করে। তারা তাদের কর্ম ব্যস্ততাকে ঘিরে তাদের দিন পার করে। কিন্তু এই অচেনা শহরের মাঝে ইট-পাথরের চার দেয়ালের পাশেও কিছু কিছু মানুষ বেঁচে রয়েছে যারা আজও তাদের ব্যবহারে মানুষকে মুগ্ধ করে। তেমনি একজন মানুষের সাথে আজ আপনার পরিচয় হয়েছে এটা জেনে অনেক ভালো লাগলো। সেই ফল বিক্রেতা সম্পর্কে কিছু কথা জেনে বোঝা যাচ্ছে তিনি একজন ভালো মনের মানুষ এবং সঠিক সময়ে তিনি পরিবারের পাশে দাঁড়িয়ে তার বাবার কাঁধের উপর থেকে সংসারের বোঝা নামাতে চেষ্টা করেছেন। পৃথিবীতে কোন কাজ ছোট নয়। একজন শিক্ষিত ব্যক্তি ছোট কোন কাজ করতে পারবে না এটা কোথাও বলা নেই। অবশ্যই তিনি তার জীবনের সফলতা অর্জন করবে এই কামনাই করি।

 3 years ago 

ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য। শুভেচ্ছা রইল।

 3 years ago 

আসলে ভাই সত্যি কথা বলতে কোন কাজে কিন্তু ছোট না। যে যেই কর্মেই থাকুক না কেন সেটা যদি সৎ আর পরিশ্রম হয় তবে সেটা সম্মানের চোখে দেখাটাই উত্তম বলে আমি মনে করি।
আরে ধরনের ছোট ছোট উদ্যোক্তারা ব্যবসায়ী জানান তাদের মোটামুটি একটু কষ্টে দিনাতিপাত হয়। এরা মুখ ফুটে কারো কাছ থেকে কোন কিছু চাইতে পারে না অনেকটা সততা নিয়ে নিজের কাজ করে যায়।
আপনার পোষ্টের মাধ্যমে ও সেরকমই একটা দৃশ্য খুঁজে পেলাম। খুব ভালো লাগলো আপনার পোস্ট পড়ে ভাই।
ভালোবাসাটা আরো বেড়ে গেল বোধহয়। দোয়া রইল আপনার এবং সেই ফল বিক্রেতার জন্য।

 3 years ago 

ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য। শুভেচ্ছা রইল।

এখন যে যুগ চলে চাকরী পাওয়া সোনার হরিণ... উনি একটা ভালো কাজ করছে এখন সে স্বাবলম্বী পরিবারের জন্য কিছু করতে পারছে। আসলে এই রকম হাজারো বেকার যুবক রাস্তাই রাস্তাই ঘুরে বেড়াচ্ছে চাকরীর অভাবে। অনেকে ডিপ্রেশনে শেষ হয়ে যাচ্ছে নেশায় জড়িয়ে পড়ছে।

অনেক অনেক ধন্যবাদ শুভ ভাই আজকের সমাজের বাস্তবতা তুলে ধরার জন্য 💓💓💓

 3 years ago 

এখনকার চাকরির বাজারে পড়ালেখায় যোগ্য হলে হবে না। থাকতে হবে ঘুস দেওয়ার মতো যোগ্যতা। দেশে চাকরির অভাব নেই কিন্তু সেইটা গরীবদের জন্য না। লোকবল আর মানি না থাকলে চাকরি পাওয়া অনেকটাই কষ্টসাধ্য।

Coin Marketplace

STEEM 0.18
TRX 0.14
JST 0.029
BTC 57440.82
ETH 3108.89
USDT 1.00
SBD 2.42