অকৃতজ্ঞ
ডিজাইন canva দ্বারা তৈরি
কয়েকদিন থেকে মনের অবস্থা খুব একটা ভালো নেই আর কেন ভালো নেই, এটার হয়তো নতুন করে তেমন কোন ব্যাখ্যা আপনাদেরকে দিতে হবে না। কারণ আপাদমস্তক পুরো ব্যাপারটাই আপনারা কমবেশি জানেন । সত্যি বলতে কি, দিনশেষে আমরা বাঙালি জাতিরা এমনই। বিশেষ করে আমার অঞ্চলের লোকজন বা আমার দেশের লোকজন ।
আমি কথাটা এজন্যই বললাম যে, এটা আমার বাস্তব জীবনের অভিজ্ঞতা থেকে আলোকপাত করে বলছি এই কথাগুলো। কারো যদি গায়ে লেগে যায়, আমি শুরুতেই তাদের কাছে ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি । লেখালেখির জগতে দীর্ঘ সময় থেকে আছি। বহু উত্থান পতনের অবস্থাও দেখেছি এই প্ল্যাটফর্ম গুলোর। তাছাড়াও বহু মানুষের সঙ্গে পরিচিত হওয়ার সুযোগ হয়েছে এবং যা ক্রমাগত চলছে ।
২০১৭ সাল থেকে এই প্লাটফর্মে যখন প্রথম লেখালেখি শুরু করেছিলাম, তখন সেই সময়ের আঞ্চলিক কমিউনিটি দিয়েই আমার যাত্রা শুরু হয়েছিল। সেখানেও কিছু ভালো মানুষের সঙ্গে পরিচয় হয়েছিল। তারপরেও সেই কমিউনিটিটা একটা সময়ে গিয়ে নষ্ট হয়ে গিয়েছিল মূলত কিছু নিজেদের বাঙালি লোকজনের জন্যই। কারণ স্বার্থের ব্যাপার জড়িত ছিল ।
সেই সময় যে ব্যাপারটি বেশ ভালোভাবে লক্ষ্য করে ছিলাম তা ছিল, মূলত সদস্যদের কোন কিছু শেখার থেকে তাদেরকে অর্থের ব্যাপারটা বেশি টানতো। বিশেষ করে কিভাবে দ্রুত সময়ে বেশি অর্থ কামানো যাবে, কিভাবে মানুষের কাছ থেকে অর্থ বাগিয়ে নিতে পারা যাবে বিশেষ করে বিদেশী লোকজনের কাছ থেকে। এই প্রবণতা গুলোই বেশি ছিল।
আমি এমনও ঘটনা দেখেছি যে, পয়সার জন্য নিজের বাবা মাকে মৃত বানিয়েছে, পয়সার জন্য অসুস্থতার ভান করেছে, পয়সার জন্য গরিব সেজেছে এবং খেতে পারছে না ও নানা রকম অজুহাত দিয়েছে, যেটা অনেকটাই অনুময়-বিনিময় করে মানুষের কাছ থেকে সিমপ্যাথি নেওয়ার চেষ্টা করেছে।
এরপর মোটামুটি সেই সময় আঞ্চলিক কমিউনিটি গুলোতে যখন এরকম ঘটনাগুলো দেখলাম, তারপরে ইচ্ছাকৃতভাবেই এদের এই অবস্থা দেখে নিজেকে সরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে অন্যত্র বিদেশি কমিউনিটি গুলোতে লেখার চেষ্টা করলাম। তবে সেই সব কমিউনিটিতে যখন যেতাম এবং লেখালেখি করতাম, শুরুতেই সম্মান পাওয়াটা সেখানে সহজ ছিল না। এমনও কথা শুনতে হয়েছিল, আপনি যে দেশের মানুষ তারা একদম অনেকটাই চোর-ছেচরা ও ভিখারি স্বভাবের মানুষ ।
এতো কিছুর পরেও কিন্তু একটা সময় গিয়ে সেই সব কমিউনিটি গুলোতে নিজেদের কাজ দিয়ে আমি বা আমরা বেশ ভালোই সফল হয়েছিলাম। যাইহোক মূলত ব্লকচেইন ভিত্তিক ব্লগিং প্লাটফর্ম বা যতগুলো কমিউনিটিতে লেখালেখি করেছি, সত্যি বলতে কি বাঙালি বা বাংলাদেশের মানুষজনকে বহির্বিশ্বের মানুষজন খুব একটা পছন্দ করে না। এটা একদম চিরন্তন সত্য কথা। এটা হয়তো আমার দীর্ঘ পাঁচ বছরের অভিজ্ঞতা থেকে কথাটা বলেই ফেললাম। তাছাড়াও তো এখনো ক্রমাগত এই অভিজ্ঞতা হয়েই যাচ্ছে ।
আমরা মানুষ এমন এক অদ্ভুত চিড়িয়া, সারা জীবন যদি কারো কাছ থেকে সুবিধা পাই আর তা যদি হুট করে এসে কখনও একটু এদিক-সেদিক হয়ে যায়, তাহলেই যার কাছ থেকে সুবিধা প্রতিনিয়ত পেয়েছি বা যেখান থেকে সুবিধা পাচ্ছি, সেই মানুষ গুলোকে নিয়ে এলোমেলো কথা বলতে আমরা একটু দ্বিধাগ্রস্ত হই না ।
আমি মনেকরি আমাদের জাতির আজকের এই অবস্থানের জন্য আমরা নিজেরাই দায়ী। তারপরেও কিছু মানুষ দিনশেষে তাদের জন্য ভালো কিছু করার সুযোগ করে দেয় বা ভালো কিছু নিয়ে তাদের জন্য অপেক্ষা করে। কিন্তু আমাদের নিজেদের বিকৃত মানসিকতার জন্যই আমরা সেই সুযোগগুলো গ্রহণ তো করতেই পারি না বরং সুযোগগুলো যদি সামনে আসে সেটার সদ্ব্যবহার না করে সেই সুযোগগুলোকে নষ্ট করে ফেলি ।
আমরা জাতি হিসেবে যেমন স্বার্থপর,নোংরা ও বিকৃত মস্তিষ্কের অধিকারী ঠিক আমরা মানুষ হিসেবেও ভীষণ অকৃতজ্ঞ, এটাই বাস্তব । কেউ এখানে ধোয়া তুলসী পাতা না, আমিও না । হয়তো আজকে এমন কথাগুলো আপনাদের সঙ্গে বলছি, তার একটাই কারণ, আমিও জীবনে বহু ধাক্কা খেয়েছি, বহু মানুষের দায়িত্ব নিয়েছিলাম এই লেখালেখির জগতে , তবে যে তিক্ততার স্বাদ আমি পেয়েছি তা আসলে ভোলার মতো না।
আসলে অকৃতজ্ঞ মানুষদের নিয়ে পথ চলাটাও ভীষণ মুশকিল। কারণ একটু অসুবিধা হলেই, পিছনে ফিরে তাকালে কাউকেই পাওয়া যায় না ।
একটা চিরন্তন সত্য কথা বলি, এখন ২০২২ সাল চলে, দেখতে দেখতে শেষই হয়ে যাচ্ছে বছরটা। তবে এখন থেকে ৫ -৭ বছর পরের কথা যদি চিন্তা করেন, আমি এক কলমে লিখে দিতে পারি। পুঁথিগত শিক্ষা ব্যবস্থা তখন খুব একটা থাকবে না বললেই চলে। সবকিছু ইন্টারনেট কেন্দ্রিক হয়ে যাবে এবং ব্লকচেইনের মতো আরো আধুনিক অনেক টেকনোলজি চলে আসবে, মানুষ তখন সেদিকে ধাবিত হবে, মানুষের জীবনের সঙ্গে সেই সময় ইন্টারনেটের ভূমিকা থাকবে ওতপ্রোতভাবে। এবং ইন্টারনেটেই জীবন-জীবিকার ও আয়, রুজি-রোজগারের পথ খুঁজে নেবে।
আর সেই সময়েও যদি আমাদের এরকম অকৃতজ্ঞ মনোভাব থেকেই যায়, তাহলে আমরা বাঙালি জাতি হিসেবে সেই সময়েও অনেকটাই পিছিয়ে পড়ে থাকবো। আজকে কথাটা বলে রাখলাম, সময় সুযোগ হলে মিলিয়ে নেবেন ।
ধন্যবাদ
ডিসকর্ড লিংক
https://discord.gg/VtARrTn6ht
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
VOTE @bangla.witness as witness
OR
আমার বাংলা ব্লগের সন্মানিত ফাউন্ডার আমাদের সকলের অতিপ্রিয় এবং শ্রদ্ধাভাজন @rme দাদা একজন বাঙালি। আমি নিজেও তাই। আমি কোন বাঙালি জাতিকে এভাবে অবমাননা করতে পারি না। সব জাতির মধ্যে খারাপ এবং ভালো মানুষ আছে। আমি আমাকে ফুটিয়ে তুলতে চাই আমার কাজের মাধ্যমে। ঠিক যে বিষয়টি নিয়ে উদ্যোগ নিয়েছেন আমাদের সকলের প্রিয় দাদা। বাংলা ভাষাকে অন্যরা এত বেশি অবহেলা করে জন্য, সর্বোচ্চ আসনে নিয়ে যেতে চান এই বাংলা ভাষাভাষী কমিউনিটি আমার বাংলা ব্লগকে।একেই বলে বীর বাঙালি।খুব অল্প সময়ের মধ্যে বাঙালি ইউজাররা সবাই মিলে আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিকে একটি কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌঁছাতে পেরেছেন ইনশাল্লাহ। তবে এতটুকু বলব সফলতার পথ সব সময় পিচ্ছিল হয়। আর এই পিচ্ছিলতাকে কাটিয়েই সফলতার স্বাদ নিতে হয়।সফলতা মোটেই সহজ নয়।এরকম হাজারো বাধা আসবেই। আর সেগুলো কে অতিক্রম করে ইসামনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার নাম হচ্ছে সফলতার পথ। দু-একজন কুচক্রী মানুষের জন্য নিজের জাতিকে নিজেদের দেশকে কলঙ্কিত না করি। আমি সব সময় বাঙালি গর্বে গর্বিত হতে চাই। ধন্যবাদ♥♥
আসলে ভাই আমরা বাঙ্গালি সব থেকে বেশি খারাপ। আমাদের মধ্যে থেকে যতোদিন লোভ লালাদা দূর হবে না ততোদিন আমরা মানুষ হতে পারবো না।কবি সঠিক বলেছিলেন যে পশুপাখির পেট থেকে জন্ম নিলেই সেটা পশুপাখি হয়ে যায় কিন্তু মানুষ এর পেট থেকে জন্ম নিলেই সেটা মানুষ হতে পারে না তাকে মানুষ করতে হয়।
আমরা সঠিক মানুষ হয়ে উঠতে পারিনি ফলে আমাদের জাতিগত সমস্যা লেগেই রয়েছে যেদিন মানুষ হত্ব পারবো সেদিন ভাল কিছু হবে।আমাদের এই তিলে তিলে গরে তোলা কমিউনিটিতে এই কলঙ্কীত ঘটনা অনেক বেশি খারাপ লাগিয়েছে আমাদের।।।সত্যি মানুষ + জাতী হিসাবে লজ্জিত 😥
ভাইয়া কিছুই আর বলার নেই। সেদিনের ঘটনায় আমি খুব ধাক্কা পেয়েছিলাম।খুব আপসেট হয়ে গিয়েছিলাম।সেদিন মনটা অনেক ভাল ছিল। অথচ সব শুনে আমি সেদিন হতভম্ব। কিছু মানুষের জন্য আজ সব মানুষ ই এক কাতারের হয়ে গেলাম।ভাইয়া বলার কিছু আর ভাষা নেই।😔
শুভ ভাই আসলে এখানে কিছু বলার নেই ৷ আপনি যে কথা গুলো বলেছেন এটাই সত্য ৷ আমাদের দেশের বাঙালিরা হলো বিসধর সাপ ৷ এরা যার সাথে খেলা করবে তাকেই ছোবল মারে ৷ একটা জিনিস ভাবতেই নিজেকে লজ্জা করছে ৷ যে মানুষটি এতো সুন্দর একটি কমিউনিটি তৈরি করেছেন ৷ যেখানে ইন্ডিয়া ইউজার গন নেই সব বাংলাদেশী ৷ সেখানে আমাদের বাঙালী এমন একটা জঘন্য কাজ ৷ আসলে বলতে নিজেকে লজ্জা করছে ৷
তবে আপনি শেষের কথা গুলো অনেক গুরুত্বপূর্ণ বলেছেন ৷ বর্তমান সময়ে যে হারে সব কিছু আধুনিক প্রযুক্তি সাথে ইন্টারনেট ভিত্তিক জড়িয়ে যাচ্ছে ৷ আর জীবিকা আর এই মন মানসিকতা নিয়ে আসলে বাঙালি জাতি এগিয়ে যেতে পারবে না ৷
তাই ভালো মন মানসিকতা নিয়ে কাজ করা অতি আবশ্যক ৷
যা হোক অনেক কথা বললাম ৷ তবে এটা শুধু একজন নয় সব বাংলাদেশীর লজ্জা ৷ আমরা সবাই সঠিক সৎ সততার পরিচয় দিবো আগামীর দিন গুলোতে ৷ এমনটাই প্রতার্শা ৷
জি ভাইয়া আপনি একদম ঠিক বলেছেন ৫-৭ বছর পর সব কিছুই অনলাইন নির্ভর হয়ে যাবে।কিন্তু আমাদের এরকম মানসিকতা থাকলে আমরা পিছিয়েই থাকবো অন্যান্য দেশের থেকে।আপনি ২০১৭ থেকে কাজ করছেন।অনেক অভিজ্ঞতা অর্জন করেছে এই প্ল্যাটফর্ম থেকে।প্রথমে বাঙালি দের সাথে কাজ করলেন সেখানে এরকম সমস্যার জন্য বিদেশি কমিউনিটি তে গেলেন ।সেখানে অনেক কথা শুনেছেন অকৃতজ্ঞ চোর ভিখারীর দেশের মানুষ আমরা।তবে দেখেন কিছু কিছু মানুষের জন্য আজ আমাদের এত দুর্নাম এসকল প্লাটফর্মে।হয়তো কালচারাল প্রবলেম এটা,আমাদের নিজেদের স্বার্থে একটু ১৯-২০হলেই আমরা পুরনো কথা ভুলে যাই সব।তবে কিছু মানুষ তো ভালো আছে এজন্যই আজও আমরা এসব প্লাটফর্মে কাজ করতে পারছি।ধন্যবাদ ভাইয়া পোস্টটি শেয়ার করার জন্য।
সত্যি ভাইয়া আমরা বড়ই অকৃতজ্ঞ। আসলে যারা এই কমিউনিটির আগে অন্য কমিউনিটিতে কাজ করেছে তারাই শুধু বুঝতে পারে সাপোর্ট পাওয়াটা কতটা কষ্টের ছিল। নিজের দক্ষতা প্রদর্শন করেও বিন্দুমাত্র আশার আলো দেখতে পেতাম না। এরপর যখন দাদা আমাদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন তখন আমরা নিজের যোগ্য সম্মান পেয়েছি। কিন্তু এমন কিছু মানুষ আছে যারা যে থালায় খায় সে থালায় ফুটো করে। কি আর বলবো এদের কথা। আসলে এরা কখনো শুধরাবেনা। সারা জীবন অকৃতজ্ঞই থেকে যাবে।
আসলে ভাই আজকে আপনার পোষ্টটি পড়ে কি কমেন্ট করব বুঝতে পারছি না। আমরা মানুষ হিসেবে এতোটা অকৃতজ্ঞ যে আমাদের উপকার করে আমরা তাকেই অসম্মান করে থাকি। তার উপকারের সম্মানটুকু আমরা দিতে জানিনা। আমরা নিজেকে এতটা বড় মনে করি যখন আমরা বিপদে পড়ে সেই দিনগুলো ভুলে যাই। কষ্টের দিনগুলো ভুলে যাই এবং সুখের দেখা পেলে সেই কষ্টগুলোকে ভুলে যাই।কে আমাদের পাশে দাঁড়ালো সেটা ভুলে যাই। আমরা খুবই কৃতজ্ঞ মানুষ। কি বলবো দাদা আমাদের জন্য প্রতিনিয়ত কাজ করে যাচ্ছে। আর সেই দাদার প্রতি আমরা যেন কৃতজ্ঞতাবোধ নেই।আরো খারাপ ধারণা করি।আসলে ভাই এইসব অকৃতজ্ঞ মানুষকে যতই ভালোবাসা যাক না কেন, যতই ভাবে সাহায্য করা হোক, এরা কোনদিনও মন থেকে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করবেনা।
সত্যি ভাইয়া এমন কিছু লোক থাকে যাতের কারণে পুরো দেশ ও জাতির বদনাম হয়ে থাকে। আপনি সত্যি বলেছেন ভাইয়া আসলে অকৃতজ্ঞ মানুষদের নিয়ে পথ চলাটাও ভীষণ মুশকিল। তবে এখানে অনেক ভালো ভালো লোক ও রয়েছে যারা তাদের পরিশ্রম দিয়ে প্লাটফর্মটাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চায়। কিছু খারাপ লোকের জন্য তাদের পরিশ্রম কেনো বৃধা যাবে। সব চেয়ে বড় কথা যারা অকৃতজ্ঞই তারা সারা জীবন অকৃতজ্ঞই থেকে যাবে।
আপনি একদম যথার্থ বলেছেন! আমাদের এই দূরাবস্থার জন্য একমাত্র আমরাই দায়ী! আমাদের মানসিকতার পরিবর্তন হবে কখন সেটা আমার জানা নেই! তবে সেটা যদি না হয় তাহলে এর ফলস্বরূপ যে ভালো কিছুও আশা করা যায় না এটা একদমই পরিষ্কার! আমাদের দোষের কারণেই বহির্বিশ্বের মানুষজন আমাদেরকে চোরের খেতাব দেয়! এর থেকে লজ্জার আর কি হতে পারে! চোর কিন্তু গুটিঁ কয়েকজন! তবে পুরোর চোরের খেতাবটা পায় আমি, আপনারা, পুরো বাঙালি তথা বাংলাদেশের সবাই।