গতরাতের ঘটনা
এমনিতেই বৃহস্পতিবারের দিনটা আমার কাছে ভীষণ ব্যস্ততাপূর্ণ ভাবে কাটে। যেহেতু রাত্রিবেলা দীর্ঘসময় কমিউনিটির হ্যাংআউট থাকে এবং তা শেষ করে আবার পরিবারকেও কিছুটা সময় দিতে হয়। সর্বোপরি হ্যাংআউট শো থেকে শুরু করে, নিজের পরিবারকে সামলানোর জন্য আলাদা একটা মানসিক প্রস্তুতির দরকার হয়।
গতরাতে শো শেষ করার পরে যখন কেবল খেতে বসেছি, তখন ঘড়িতে রাত্রি বারোটার মত বাজে। হঠাৎ মুঠোফোনটা বেজে উঠলো এবং ফোনটা ধরতেই যে কথাগুলো শুনলাম, তার জন্য এই রাত্রিবেলা মোটেও প্রস্তুত ছিলাম না। আমার এক গ্রামের আত্মীয়ের ছোট বাচ্চা হঠাৎ করেই অসুস্থ হয়ে গিয়েছে এবং সেই আত্নীয় তখন আমাদের স্থানীয় সরকারি হসপিটালে এসেছে, তার বাচ্চার চিকিৎসার জন্য ।
মূলত সে আমার সঙ্গে কেন যোগাযোগ করেছে তা আমি আর নতুন করে বলছি না। তবে আমি ব্যাপারটা কে বেশ আন্তরিকভাবেই দেখার চেষ্টা করেছি । তাছাড়াও এটা আমার দায়িত্বের মধ্যেই পড়ে। এমনিতেই আত্মীয়, তারপর গ্রাম থেকে এসেছে আর সর্বোপরি মাঝরাত, তাই ব্যাপারটা কে একটু গুরুত্ব দিয়েই দেখার চেষ্টা করলাম ।
এ ধরনের ঘটনা যে একদম আমার সঙ্গে নতুন ঘটছে, ব্যাপারটা কিন্তু তেমন না। বলা যায়, প্রায়ই আমার সঙ্গে এ ধরনের ঘটনা ঘটে থাকে। অনেকটা মানবিকতার খাতিরেই কাউকে না বলতে পারিনা। চেষ্টা করলাম জরুরী বিভাগের দায়িত্বে কে আছে সেই খবরটা দ্রুত নেওয়ার জন্য। অতঃপর বেরিয়ে পড়লাম মাঝরাতেই।
সরকারি হসপিটালের সেবা নিয়ে কিছুই বলতে চাই না। এই সেবা সম্পর্কে সবারই কমবেশি ধারণা আছে। যেহেতু আমি এখানকার স্থানীয় আর নিজের পূর্বের ছোট পেশাগত পরিচয় আছে, তাই হয়তো সেটার জন্যই, মাঝে মাঝে গ্রামের আত্মীয়-স্বজন আমার কাছে রাত-বিরাতে এমন সমস্যায় পড়লে, যোগাযোগ করার চেষ্টা করে ।
৫০ শয্যার সরকারি হাসপাতালে সব সময় ২০০ থেকে ৩০০ রুগী অনেকটা গাদাগাদি করে ভর্তি থাকে। শুধুমাত্র একটু সু-চিকিৎসা পাওয়ার জন্য। জরুরী বিভাগের মেডিকেল অফিসার হিসেবে এই রাতে যে দায়িত্বে পালন করছে, সে আমার পূর্ব পরিচিত।
একটা বিষয় চিন্তা করে দেখুন তো একজন ডাক্তার, দুজন নার্স আর দুইজন ওয়ার্ড বয় দিয়ে পুরো হসপিটালে ভর্তি ২০০ থেকে ৩০০ মানুষের চিকিৎসা কার্যক্রম এই রাত্রিবেলা কিভাবে চলছে, সেটা ভাবতেই আমার শরীর যেন শিরশির করে উঠছে। সত্যিই কিচ্ছু করার নেই। এটাই আমাদের প্রান্তিক স্বাস্থ্যসেবার আসল চিত্র। যাইহোক এসব নিয়ে আসলে মাথা ঘামিয়ে লাভ নেই, যে কাজের জন্য এসেছি সেটা দ্রুত করতে পারলেই এখন রেহাই পাই।
যেহেতু বাচ্চাটার ফুড পয়জনিং জনিত ঝামেলা হয়েছে, তাই আজকের রাতটা এই হসপিটালেই তাদের থাকতে হবে। অবশেষে বাচ্চাটার সঠিক চিকিৎসা নিশ্চিত করে, তারপরে কিছুটা সময় আমার পুরনো কলিগের সঙ্গে কথাবার্তা বললাম। আমার কলিগ এখনো এই হসপিটালেই কর্মরত আছে। তার সঙ্গে এক সময় কত রাত যে এখানে ডিউটি করেছি, তার কোন নির্দিষ্ট হিসেব নেই। আজ হঠাৎ করেই সেই সব দিনের কথা মনে পড়ছিল।
ডিসকর্ড লিংক
https://discord.gg/VtARrTn6ht
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
VOTE @bangla.witness as witness
OR
https://twitter.com/sharifShuvo11/status/1672207700095270912?t=2vuPSsqkHvrNLnrl3-r0dA&s=19
আপনি সবার পাশে থাকার কারনে সবাই আপনার শরণাপন্ন হন।এই গরমে আসলে খাবার থেকে নানা ধরনের সমস্যায় বাচ্চারা অসুস্থ হয়ে যাচ্ছে।আর মাঝ রাতে হলে কষ্টই হয়।যাক আপনি ছিলেন তাই তাদের কাজ সহজ হয়েছে।বাচ্চাটির সুস্থতা কামনা করছি।ধন্যবাদ ভাইয়া আপনাকে সবার কষ্টে পাশে থাকার জন্য।
হ্যাঁ আপু, অতিরিক্ত গরমের কারণেই মূলত এই সমস্যাটা এখন প্রায়ই হচ্ছে।
গ্রামের কেউ অসুস্থ হলে শুরুতেই খোজে যে শহরে পরিচিত কি আছে। এজন্যই হয়তো আপনার গ্রামের ওই লোক প্রথমে আপনার কথা মনে হয়েছে। তাছাড়া আপনি আন্তরিকতার সঙ্গে এগুলো হ্যান্ডেল করার জন্যই আপনাকে সবাই বিরক্ত করে। আসলে মানুষের উপকার করতে পারলেও ভালো লাগে। তাছাড়া একজন ডাক্তার এতগুলো রোগী দেখার কথা শুনে আমারই তো গা শিউরে উঠল। দোয়া করি এ সকল ব্যবস্থার উন্নতি হোক দ্রুতই।
আমি আসলে তাদের উপর বিরক্ত বোধ করিনি আপু। তবে এটা সত্য যে তথ্য দিয়েছি হাসপাতালের চিকিৎসা ব্যবস্থা ও রুগীর ধারণ ক্ষমতা সম্পর্কে, তা কিন্তু একদম বাস্তব সত্য কথা।
ভাইয়া, এখনকার সময়টাই হয়তো এরকম ঘরে ঘরে দুই একজনের শুনছি ফুড পয়জনিং হচ্ছে। আর তাই হয়তো আপনার গ্রামের আত্মীয়ের ছোট বাচ্চাটিও ফুড পয়জনিংয়ে ভুগছে। ভাইয়া একটা কথা কি মানুষ তার কাছেই যায়, যার কাছে আশ্রয় পায়। সবাই কিন্তু সবার উপকার করে না। যারা উপকার করে মানুষ তাদেরই খুঁজে বের করে। সে ক্ষেত্রে হয়তো আপনার পরোপকারী মনটাকে অনেকেই বুঝতে পেরেছে। যার কারণে গ্রামের কেউ অসুস্থ হলে আপনার কাছে আসে। আর আপনার তরফ থেকে আপনিও যথাসাধ্য চেষ্টা করেন সেই সব আত্মীয়-স্বজনের পাশে থেকে সাহায্য করার জন্য। আর হ্যাঁ ভাইয়া, সরকারি হাসপাতালগুলোর সেবার মান আমাদের সকলেরই জানা আছে। তাই চাইবো, এই সরকারি হাসপাতালগুলোর সেবার মান উন্নয়ন ঘটুক।
আসলে আবহাওয়ার পরিবর্তন হচ্ছে তো, যার কারণে মূলত এমন সমস্যাগুলো প্রায়ই হচ্ছে।
ভাইয়া আপনি আপনার ব্যস্ততার মাঝেও বিপদগ্রস্ত মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন জেনে সত্যিই ভালো লাগলো। আসলে সরকারি হাসপাতালে সেবার মান নিয়ে নতুন কিছু বলার নেই। অল্পসংখ্যক নার্স এবং ডাক্তার নিয়েই তারা তাদের সেবা প্রদান করে। সেজন্য সঠিক সেবা কেউ পায় না। যাই হোক ছোট বাচ্চাটার সুস্থতা কামনা করছি ভাইয়া।
বাচ্চাটা আপাতত এখন আগের থেকে অনেকটাই সুস্থ আছে আপু।
এরকম করে এর আগেও আপনি গ্রামের মানুষের জন্য দৌড়ে গিয়েছেন হাসপাতালে। আসলে তারাও কি করবে ভাইয়া তাদের ভরসার স্থল যে এক মাত্র আপনি। তা যাই হোক আপনার পরিচিত ছিল তাই রক্ষে। তানা হলে সরকারী হাসাপাতালের যে অবস্থা। দোয়া রইল আপনার প্রতি এ ধরনের মানবিক হওয়ার জন্য। ভালো থাকেন সবসময়।
হুম আপু, এই তো কিছুদিন আগেও গ্রাম থেকে এক্সিডেন্ট করে দুজনে এসেছিল, তখনও এমন ঘটনা ঘটেছিল। তবে সেটা দিনের বেলা আর এটা রাত্রিবেলা।
আসলে ভাইয়া শত ব্যস্ততার মাঝে আপনার আত্মীয়র ছোট বাচ্চার প্রতি আপনার এই মানবিকতা সত্যি আমাকে মুগ্ধ করেছে। আসলে এরকম অসুস্থ রোগীর অভিভাবকের পাশে দাঁড়ালে তারা অনেকটাই সাহস পায়। আসলে ভাইয়া আপনার এ কার্যকলাপে মানুষ কতটা সন্তুষ্ট হয়ে আমি জানিনা, তবে সৃষ্টিকর্তা আপনার প্রতি শতভাগ সন্তুষ্ট হবে এটা নিশ্চিত। মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে মানুষকে সেবা সহযোগিতা করার শক্তি সামর্থ্য মহান আল্লাহ যেন আপনাকে আরো বেশি দান করেন।