😢 " হঠাৎ অসুস্থ হয়ে আব্বু ICU তে "
হ্যালো বন্ধুরা,
মাতৃভাষা বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি আমার প্রিয়"আমার বাংলা ব্লগ"এর ভারতীয় এবং বাংলাদেশী সদস্যগন,কেমন আছেন সবাই?আশা করি সবাই ভাল আছেন।আমিও আলহামদুলিল্লাহ্ আল্লাহ্র অশেষ রহমতে বেশ ভাল আছি।
আমি @shimulakter,"আমার বাংলা ব্লগ"এর আমি একজন নিয়মিত ইউজার।আমি ঢাকা থেকে আপনাদের মাঝে যুক্ত আছি।আমি প্রতিনিয়ত নতুন নতুন বিষয় নিয়ে ব্লগ শেয়ার করে থাকি।আমি বিশ্বাস করি আমার ব্লগ আপনাদের কাছে ভালো লাগে।আমি আমার প্রতিদিনের নানা রকম কর্মকান্ড থেকে কিছু কিছু বিষয় আপনাদের মাঝে শেয়ার করে থাকি।আজ ও এসেছি এমন একটি বিষয় আপনাদের মাঝে তুলে ধরতে।আশাকরি সঙ্গেই থাকবেন।
হঠাৎ অসুস্থ হয়ে আব্বু ICU তেঃ
বন্ধুরা,কাল মনটা ভীষণ খারাপ ছিল।আজ কিছুটা ভালো।আর তাই মন খারাপের ঘটনাটি আপনাদের মাঝে শেয়ার করতে চলে এলাম।প্রতিনিয়ত নানান রকমের পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে আমাকে সম্মুখীন হতে হচ্ছে।সবকিছু প্রকাশ করতেও পারছি নাতবে মনটা খুব একটা ভালো নেই।বাবা হলো মাথার উপর বটগাছের ছায়া।বাবা ছিলেন খুব আমোদী একজন মানুষ।সেই বাবাকে যখন ICU তে নিথর দেহ নিয়ে পরে থাকতে দেখা যায় তখন মনের অনুভূতি কতটুকুই বা ভালো রাখতে পারা যায়।আপনারা অনেকেই হয়তো জানেন আমার আব্বু কিডনির পেসেন্ট।সপ্তাহে দুইদিন তার ডায়ালাসিস হয়।এমনিতে আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছে।কেননা এই সেপ্টেম্বর মাসেই শ্বাসকষ্ট নিয়ে প্রায় ১৮ দিন হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন।তাই সেই অবস্থা থেকে কিছুটা ভালো ই যাচ্ছিল।
কাল রাত নয়টায় রবিবারের আড্ডা শুরু হওয়ার কিছু সময় আগে বড় ভাইয়ার মেয়ে ফোন দিয়ে জানায়,আব্বুর হঠাৎ করে শ্বাসকষ্ট শুরু হওয়াতে আব্বুকে এ্যাম্বুলেন্সে করে ধানমন্ডি হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছে।আমি এ খবর শুনে কিছুটা অবাক ই হলাম।কারন সন্ধ্যার পর আম্মুর সাথে কথা হলো আব্বু ভালো আছেন জানলাম।হঠাৎ করে কি হলো?? দুশ্চিন্তায় পরে গেলাম।আমি ছেলেকে পড়াচ্ছিলাম।পড়া বন্ধ করে আমি ঝটপট তৈরি হয়ে হাসপাতালের উদ্দেশ্যে রওনা হলাম।আমি হাসপাতালে রিকশার থেকে নামতেই ছোট বোনকেও আসতে দেখলাম।
হাসপাতালে নেওয়ার সাথে সাথে উনারা ICU তে নেয়ার জন্য বলল।আমরা গিয়ে দেখি আব্বু ICU তে।তারা আব্বুকে অক্সিজেন দিয়ে কিছু সময় পর প্রায় রাত ১১ টার পরে ডায়ালাসিস শুরু করেছেন।এরপরেও এরা এসে বার বার বলছিল প্রয়োজন হলে লাইফ সাপোর্ট দিতে হতে পারে।আমাদের কে পেপারে সাইন করতে বলছিল।আমার চাচা-চাচী,কাজিন এসেছিল।আমরা বার বার বলছিলাম আমরা লাইফ সাপোর্টের জন্য এখন সাইন করবো না।কারন আমার বাবা এখন ভালো আছেন।আমি ভেতরে গিয়ে দেখে এসেছিলাম একবার।আব্বু তখন ঘুমাচ্ছিল।শ্বাস-প্রশ্বাস স্বাভাবিক না হলে একটা মানুষ এভাবে বিছানায় শুয়ে থাকতে পারতো না।এ কথাটা আমি সেই ডাক্তারকে বোঝানোর চেষ্টা করছিলাম।
কিন্তু তারা রাত ১২ টার পরে পেপারে সাইন দেয়া ছাড়া কিছু ই করবে না।তাদের কথা হলো আপনারা যেকোনো পরিস্থিতিতে লাইফ সাপোর্ট করবেন কি করবেন না সেটাতে সাইন করেন।করলে হ্যা,আর না করলে না।এরপর আমরা সময় নিয়ে সবাই আলোচনা করলাম।তাদের মাধ্যমে জানতে পেরেছি আব্বুর প্রেশার, ডায়বেটিস আর এর পরে অক্সিজেনের লেভেল ঠিক আছে।তবে এটা পজিটিভ একটি দিক মনে হলো আমার কাছে।আমি তাদেরকে তা বললাম।কিন্তু তাদের বক্তব্য হচ্ছে রাতে যেকোনো সময় ডায়ালাসিস চলাকালীন সময় সমস্যা হতেও পারে।তখন লাইফ সাপোর্ট এ সাইন দেয়া থাকলে তারা সবকিছু করতে পারবে।আমরা বললাম আমরা সবাই চলে গেলেও আমার ভাইয়া এখানে থাকবে।আপনারা এমন পরিস্থিতি হলে ভাইয়ার থেকে সাইন নিয়ে করতে পারেন।এই বলে আমরা তখন পেপারে লাইফ সাপোর্ট না দেয়ার জন্য সাইন করে দিলাম।এরপর রাত ১ টায় বাসায় চলে এলাম আম্মুকে নিয়ে।আর বোন,ভাবী বাসায় চলে গেলো।হাসপাতালে রইল ভাইয়া।
সকালে খবর দিল ভাইয়া আব্বু আগের চেয়েও আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছেন।একজন বয় এসে জানিয়েছেন আব্বুকে তখন নেবুলাইজার করছিল।আম্মু সকালে উঠে নাস্তা করে ই চলে গেলো হাসপাতালে।আব্বুর অনেক রকমের টেস্ট করা হয়েছে।আশাকরি তার রিপোর্ট ও আজ ভালো আসবে।সবাই দোয়া করবেন আমার আব্বুর জন্য।আম্মু আর ভাইয়া ডাক্তারের সাথে কথা বলবেন আজ।ডাক্তার যেমনটা বলবেন তাই করা হবে আজ।যদি আজ ও ICU তে রাখতে বলে রাখবেন। আর যদি বলেন কেবিনে রেখে চিকিৎসা করাবেন তবে তাই ই করবেন।এতো সব কিছুর মধ্যে কি করে মনটাকে শান্ত রেখে চলা যায় আমার তা জানা নেই।আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের সাহায্য চাই।তিনি যেনো আমার বাবাকে সুস্থতা দান করেন,আমিন।আমাদের মাথার ছায়া হয়ে বাবা থাকবেন,আজ শুধু এতটুকুই চাওয়া।
আজ আর নয়।ভারাক্রান্ত মন নিয়ে আজ মনের অনুভূতি গুলো আপনাদের মাঝে শেয়ার করলাম।আমার বাবার জন্য দোয়া কামনা করছি সবার।সবাই সুস্থ থাকবেন,ভালো থাকবেন।আবার কোন নতুন ব্লগ নিয়ে হাজির হয়ে যাব।
ধন্যবাদ সবাইকে
পোস্ট বিবরন
শ্রেনি | লাইফ স্টাইল |
---|---|
প্রয়োজনীয় ডিভাইস | Samsung A 20 |
ফটোগ্রাফার | @shimulakter |
স্থান | ঢাকা |
আমার পরিচয়
আমি শিমুল আক্তার।আমি একজন বাংলাদেশী।আমি এম এস সি(জিওগ্রাফি) কমপ্লিট করি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে।আমি বিবাহিতা।আমি একজন গৃহিণী।আমি স্বাধীনচেতা একজন মানুষ।ভালোবাসি বই পড়তে,নানা রকমের রান্না করতে,ফটোগ্রাফি করতেও আমি ভীষণ পছন্দ করি।বাংলায় লিখতে আর বলতে পারার মধ্যে অনেক বেশী আনন্দ খুঁজে পাই।নিজের মধ্যে থাকা সৃজনশীলতাকে সব সময় প্রকাশ করতে পছন্দ করি।এই বাংলার মাটিতে জন্মগ্রহণ করেছি বলে নিজেকে অনেক ধন্য মনে করি।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
মানুষের বিপদ বলে আসে না। তবে পিতা-মাতা বা সন্তান যদি অসুস্থ হয়ে পড়ে খুবই কষ্ট লাগে। আপনার আব্বু অসুস্থ হয়ে আইসিওতে নেয়া হয়েছে এরপর নেবুলাইজারের মাধ্যমে গ্যাস দেওয়া হয়েছে এ সমস্ত বিষয়গুলো জেনে খুবই খারাপ লাগলো। কখন যে কার কি অবস্থা হয়ে যায় কে জানে। তবে আগের তুলনায় একটু ভালো আছে জেনে ভালো লাগলো। সব সময় দোয়া করি আপনার পরিবার-পরিজনের জন্য। যেন মহান সৃষ্টিকর্তা সবসময় সুস্থ রাখেন।
অসংখ্য ধন্যবাদ আপু।
X-promotion
আঙ্কেলের অসুস্থ্যের বিষয় জেনে খুবই খারাপ লাগলো। আসলে কখন কার কিভাবে সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় কেউ জানে না। তবে মোটামুটি সুস্থ রয়েছেন জেনে খুশি হলাম। দোয়া করি যেন দ্রুত সুস্থ হয়ে বাসায় ফিরতে পারেন।
সুন্দর মন্তব্য শেয়ার করার জন্য অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া।
আসলে সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থনা করি যেন আপনার বাবা দ্রুত সুস্থ হয়ে যান। আসলে এভাবে হঠাৎ করে যখন কেউ অসুস্থ হয়ে পড়ে তখন আমাদের চিন্তার কোন শেষ থাকে না। আর আপনার বাবার এই ঘটনাটা শুনে আমরা সবাই খুব দুঃখিত। অবশ্যই আপনারা সবাই আপনার বাবার দিকে খেয়াল রাখবেন।
অনেক ভালো লাগলো দাদা মন্তব্য টি পড়ে। অসংখ্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
শুনে বেশ খারাপ লাগলো। সত্যি বলতে এই আইসিইউ ওয়ালাদের আর কোন কাজ নেই লাইফ সাপোর্ট দেওয়া ছাড়া। ওরা যেন সারাক্ষন শুধু লাইফ সাপোর্টের রোগীর জন্য পথ চেয়ে থাকে। আর একটি পেলে খপ করে ধরে ফেলে। সে যাই হোক এখন যে আঙ্কের মোটামুটি ভালো আছেন সেটা যেনেও ভালোই লাগলো। দোয়া রইল উনার জন্য।
অসংখ্য ধন্যবাদ আপু।
আপু আপনার আব্বু অসুস্থ সেটা আমি অনেক আগে থেকে জানি। আসলে মানুষের বয়স হলে রোগ ব্যাধি কিছুটা বেড়ে যায়। আপনি আপনার বাবাকে নিয়ে অনেক দৌড়াদৌড়ি করছেন। আপনার কষ্ট যেন সফল হয়। আপনার বাবার সুস্থতা কামনা করি। ধন্যবাদ।