ছেলেবেলার স্মৃতি -- " ছেলেবেলায় আকস্মিক একটি ঘটনায় স্তব্ধ হয়ে যাওয়া "

in আমার বাংলা ব্লগ10 months ago

আসসালামু আলাইকুম


প্রিয় আমার বাংলা ব্লগে সবাইকে স্বাগতম


হ্যালো বন্ধুরা,



মাতৃভাষা বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি আমার প্রিয় "আমার বাংলা ব্লগ"এর ভারতীয় এবং বাংলাদেশী সদস্যগণ,কেমন আছেন সবাই?আশা করি সবাই ভাল আছেন।আমিও আলহামদুলিল্লাহ্‌ আল্লাহ্‌র অশেষ রহমতে বেশ ভাল আছি।আর প্রতিনিয়ত ভালো থাকার চেষ্টা করে যাচ্ছি। আশাকরি আপনারা ও এমনটাই চেষ্টা করে যাচ্ছেন ভালো থাকার।

আমি @shimulakter,"আমার বাংলা ব্লগ"এর আমি একজন নিয়মিত ইউজার।আমি ঢাকা থেকে আপনাদের সাথে যুক্ত আছি। আমি প্রতিনিয়ত চেষ্টা করি নতুন নতুন পোস্ট শেয়ার করতে।প্রতিদিনের মত আমি আজও নতুন একটি ব্লগ নিয়ে আপনাদের মাঝে হাজির হয়েছি।আমি প্রতিনিয়ত চেষ্টা করি নতুন নতুন কিছু শেয়ার করতে তাইতো আজ ছেলেবেলার স্মৃতি নিয়ে আপনাদের মাঝে হাজির হয়ে গেলাম।

ছেলেবেলায় আকস্মিক একটি ঘটনায় স্তব্ধ হয়ে যাওয়াঃ


child-817373_1280.jpg

সোর্স

প্রত্যেকটা মানুষের জীবনে শৈশবকালকে তার সোনালী সময় বলা যায়। এই ছেলেবেলার অনেক কথাই মনে আছে আবার অনেক কথাই হারিয়ে গেছে মনের গভীর থেকে।যা কিছু মনের গভীরে আছে তাই মাঝে মাঝে মনে এসে দোলা দিয়ে যায়। আর কষ্টের অনুভূতি গুলো কিছুটা সময় হলেও মনের মাঝে কিছুটা ব্যথা হয়ে ঝরে যায়। এরপরে ও বলবো শৈশব কাল মধুমাখা সময় সকলেরই মনের মাঝে দক্ষিনা বাতাসের মতো শিহরণ জাগায়।

আজ আমি আপনাদের মাঝে আমার ছেলেবেলার একটি স্মৃতি শেয়ার করতে এলাম।সত্যি কথা বলতে ছোটবেলার অনেক কিছু এখন ভাবলে মনে হয়, এ আর এমন কি।কিন্তু ঐ বয়সে ওটাই অনেক কিছু ছিল।তখন সবেমাত্র স্কুলে যাই আমি।আমার দাদা মারা গেছে আমার আব্বুর ছোটবেলাতেই।আমার দাদু আমাদের সব কিছু।আমার আব্বু,বড় চাচা আর ছোট কাকু।এই আমাদের যৌথ পরিবারের সংসার।আমার ছোট চাচা তখন ও বিয়ে করেননি।আমরা ৪ ভাই-বোন ছোট ছোট।বড় চাচার মেয়ে চারজন ছোট ছোট। আমার বড় হওয়াটা পুরান ঢাকাতেই।

volcano-2262295_1280.jpg

সোর্স

আগে এতো বড় বড় বিল্ডিং ছিল না।সব জায়গাতেই টিন শেড ছিল।উপরে টিন নীচে সিমেন্টের পাকা ঘর।আমরা যে বাড়িতে তখন থাকতাম।তখন ওখানে অনেকগুলো ঘরই ছিল।ভাড়াটিয়া ও ছিল অনেক।যেদিনের ঘটনা শেয়ার করব।সেই দিনের সময়টা ছিল দুপুর বেলা।বাসায় আব্বু, চাচা,কাকা কেউ নেই।আম্মা( বড় চাচী)আম্মুর বয়স ও তখন কম।হঠাৎ করে আমার দাদুকে কেউ একজন এসে বলল।ঐ এলাকায় আমাদের বাসা থেকে কিছু দূরে একটি দোকানে আগুন লেগেছে।এই শুনে আমার দাদু আম্মা,আম্মুকে জানায়।দাদু বাইরে দেখতে গেলো সাথে আমিও গেলাম।গিয়ে দেখি, যে যেভাবে পারছে আগুন লেগেছে সেই জায়গা থেকে সরে আসছে।রাস্তায় মানুষ আর মানুষ। আমি আর দাদু তাকিয়ে দেখি দূরে আকাশ কালো ধোঁয়ায় ভরে গেছে।

কেউ ছোট বাচ্চা কোলে নিয়ে,কেউ বৃদ্ধ মা-বাবাকে নিয়ে,কেউ তার প্রয়োজনীয় যা কিছু আছে তাই নিয়ে দৌঁড়ে যাচ্ছে।আমি এমন ঘটনা আগে কখনও দেখিনি।তাই আমার মনটা কেমন যেনো করে উঠলো এই আকস্মিক আগুনের কালো ধোঁয়া দেখাতে।দাদুর মুখের চিন্তার রেখা দেখতে পেলাম।দাদু বাসায় এসে আমার বড় আম্মা (চাচী) কে বলল,প্রয়োজনীয় গয়না,টাকা সব গুছিয়ে বাচ্চাদের নিয়ে ঘরে তালা দিয়ে বের হতে।আম্মুকেও তাই বলল।আমি স্তব্ধ হয়ে গেলাম।আমি ভাবলাম আমরা এখন কোথায় যাব। আমার এই চিরচেনা ঘর,খেলার সাথি এদের ছেড়ে। আমার যেনো কান্না পাচ্ছিল।সবাই ব্যস্ত গুছানো নিয়ে।আর আমি ভাবছি এই ঘরগুলোকে সব আগুনে পুড়িয়ে দেবে।কিছুই তো আর থাকবে না।এসব নানা ভাবনায় স্তব্ধ হয়ে গেলাম।

আব্বু,চাচা আর কাকা সকালেই বেড়িয়ে গেছে বিজনেসের কাজে।তখন মোবাইল ও ছিল না।যে আব্বু,চাচাকে জানাবে।এরপর আম্মা,আম্মু আমাদের নিয়ে বের হলো।আমরা দাদুকে অনুসরন করে এগিয়ে যাচ্ছিলাম।কিছুদূর যেতেই কেউ একজন এসে দাদুকে বলল,আর যেতে হবে না আগুন নিভিয়েছে।তবে অনেক টাকার ক্ষতি হয়ে গেছে।দোকানের সাথে সাথে অনেক গুলো ঘর ও পুড়ে গেছে।ভাগ্যিস মানুষ গুলো আগেই বের হয়েছিল।তবে এই ঘটনা রাতে হলে এই মানুষ গুলো জানার আগেই পুড়ে যেতো।

যাক সেই যাত্রায় আমরা বেঁচে গেলাম।এরপরে ও দাদু ঘরে যায়নি।অনেক সময় ধরে আমাদের নিয়ে বাসার বাইরে দাঁড়িয়ে ছিল।এলাকার ছেলেদের কাছে বার বার জানতে চাইলো আগুন নিভেছে কিনা। এভাবে ই সেই আকস্মিক ঘটনার দিনটি কেটে গেলো।

পোস্ট বিবরন


শ্রেণীআমার ছেলেবেলা
ক্যামেরাSamsungA20
পোস্ট তৈরি@shimulakter
লোকেশনঢাকা,বাংলাদেশ

5ZJ4Z52ZRyQfNkCWFfXsATSsPtfkBwT3a5k8RVinr673527MWFPCsxERaZquGbUkHMV9WZ5MJwmXkTuv41F5Tq4AiFtFdLYgppcpWVNLwb...45PzVWAMcnH3yQBxf5fXNb4aF4ANTTkpXKaNkmtZGTkGBuPWrd7E3SfVFzVaxiHJgeTsGASc2ZrWcbGiPkcj8D1MPwYnifrMpkxFpyc2eASgEzhaJ8suX7YJTg (1).png

আজকের মতো এখানেই শেষ করছি। আবার দেখা হবে নতুন কোন লেখা নিয়ে ।সে পর্যন্ত সবাই ভাল থাকুন, সুস্থ থাকুন।আমার ছেলেবেলার দুঃস্বপ্নের গল্পটি পড়ার জন্য সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

ধন্যবাদ সবাইকে

@shimulakter

আমার পরিচয়


আমি শিমুল আক্তার।আমি একজন বাংলাদেশী।বাংলাদেশ ঢাকা থেকে আমি আপনাদের সাথে যুক্ত আছি।আমি এম এস সি ( জিওগ্রাফি) কমপ্লিট করি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। আমি বিবাহিতা।আমি একজন গৃহিণী।আমি একজন স্বাধীনচেতা মানুষ। ভালোবাসি বই পড়তে, নানা রকমের রান্না করতে,আর সবাইকে নতুন নতুন রান্না করে খাওয়াতে ভীষণ ভালোবাসি।ফটোগ্রাফি করতে আমি ভীষণ পছন্দ করি।বাংলায় লিখতে আর বলতে পারার মধ্যে অনেক বেশী আনন্দ খুঁজে পাই।নিজের মধ্যে থাকা সৃজনশীলতাকে সব সময় প্রকাশ করতে পছন্দ করি।এই বাংলার মাটিতে জন্মগ্রহণ করেছি বলে নিজেকে অনেক ধন্য মনে করি।

3YjRMKgsieLsXiWgm2BURfogkWe5CerTXVyUc6H4gicdRPoZy22X6tAEZ9xgTbv2Je13wLGWX6qAR4kcd6SV3G37oehcHNcRjmX6A1q12Y...WC7kZeaVu5T7dbm9ERtHe3tnT7hwaRXTD2EyUpeSUz9PKCQmghcWTCTKcTeewqEJ5MozD2X9oNg6fcY45fCALQGms5N3uYJuVCFsuFyUkADwts16186D4ooWNZ (1).gif

3YjRMKgsieLsXiWgm2BURfogkWe5CerTXVyUc6H4gicdRQ2cJZBsiyuMbbQNbt2XY3bPDP3soCEvgarH2Jwxn58HCSwZqnJoPtfVfPHher...f1Dq76pKECV4KekfqyZj18qfc4ziQW3kRYsgW1PMLc47emsksqLgif1cmhk34QEfazWiZ3aAFVCXuC6ZFp39Mc57NeUUL4DNuymUk8Cq7TJkvoxEtUzQNAfKJd (1).gif

3YjRMKgsieLsXiWgm2BURfogkWe5CerTXVyUc6H4gicdRQ1VkjUz8HgY93iu9LmdTomBnX3wHwivw1EntvGjs3kaesGG5gEQD45h4WqnW4...YCceN9hPx1HGSFzgd87BrYLWAMowRtRsrESPuLkeoC5hJeWGU8G6ppscSR47a2NvmgZtobfAUrmRUjmiYuLHg9ktTNxnfHtLvg1JqdLPhqQL3dBv8ExEN11EHL (4).png

Sort:  
 10 months ago 
 10 months ago 

আসলে ছোটবেলার স্মৃতি যা কখনো ভোলার মতো নয়। আপনার ছোটবেলার ঘটনাটি পড়ে আমার কাছে খুব খারাপ লেগেছে। আসলে ঘরে চোর ডাকাত আসলে কতটুকুই আর নিতে পারে। কিন্তু যদি কোথাও আগুন লাগে তাহলে আর কিছুই থাকেনা একদম সব নিঃস্ব করে পুড়িয়ে দিয়ে যায়। আর আমার কাছে বেশি খারাপ লেগেছে। ঘর বাড়ি ছেড়ে চলে যাওয়ার বিষয়টি। যাইহোক পরে আগুন নিভাতে পেরে যাওয়া হয়নি। আসলে এ ধরনের ঘটনা গুলো চোখের সামনে দেখলে সত্যি স্তব্ধ হয়ে যাওয়ার মতোই ধন্যবাদ আপনাকে।

 10 months ago 

আগুন খুব ভয়ঙ্কর ব্যাপার।ছেলেবেলায় সবকিছু হারিয়ে ফেলবো এই ভয়ে স্তব্ধ হয়েছিলাম।ধন্যবাদ আপু মন্তব্য শেয়ার করার জন্য।

 10 months ago 

আসলেই শৈশবকাল হচ্ছে সোনার সময় ৷ এই সময়ে এসে আমি সেই সময়টা বড্ড বেশি মিচ করি ৷ কত মধু ছিলো সেই সময়টা , কত স্মৃতি নিযে আমার শৈশব ৷ যাই হোক আগের দিনে আসলেই প্রত্যেকটা বাড়ি ঘর ছিলো টিনের ৷ গ্রামের দিকে আবার মাটি টিন আর খরের ঘর বেশি ছিলো ৷ আর সেই খরের ঘরে আগুন লাগানো বিষয়টা প্রায় দেখা যেতো গ্রামের এই দিকে সে সময় ৷ আপনার ছোটবেলার এমন দূর্ঘটনা অভিক্ততার গল্প পড়ে অনেক ভালো লাগলো ৷ ধন্যবাদ আপনাকে শেয়ার করার জন্য ৷

 10 months ago 

মন্তব্য শেয়ার করার জন্য অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া।

 10 months ago 

ভয়াবহতা আসলে ছোট বেলায় মানুষ অল্পতেই যেমন খুশি হয় ঠিক তেমনি ভয়ানক কিছু দেখলেই ভয়ে কুকড়ে যায়।ভাগ্যিস আপনাদের কোন ক্ষতি হয়নি।আর যে মানুষ গুলোর অনেক ক্ষতি হয়েছে সে মানুষ গুলোর কথা শুনে খারাপ লাগছে।ধন্যবাদ ভয়ানক সৃতি শোয়ার করার জন্য।

 10 months ago 

ছেলেবেলার সবকিছুই খুব ভাবনার আসলে।ধন্যবাদ দিদি মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য।

 10 months ago 

আসলে শৈশবে অনেক ঘটনা ঘটে যায় মনে পড়লে হৃদয় শিউরিত হয়ে ওঠে। গ্রাম অঞ্চলে এই ধরনের দুর্ঘটনার প্রায় সময় ঘটে থাকে। ছোটবেলা দেখার দুর্ঘটনার অভিজ্ঞতা আমাদের মাঝে বেশ সুন্দর করে শেয়ার করেছেন। আপু আপনি ঠিকই বলেছেন রাতে যদি আগুন লাগতো তাহলে মানুষ পুড়ে যেত। ছেলেবেলায় আকস্মিক একটি ঘটনার অনুভূতি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই।

 10 months ago 

আমার অনুভূতি গুলো পড়ে সুন্দর মন্তব্য করার জন্য অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।

 10 months ago 

আগুন যে কতটা ভয়ংকর জিনিস, সেটা একেবারে ছোটবেলা থেকেই দেখে দেখে উপলব্ধি করতে পেরেছিলাম। আমাদের এদিকে তুলা এবং সুতার ফ্যাক্টরি অনেক। বিশেষ করে তুলার ফ্যাক্টরি অনেক বেশি। ছোটবেলায় দেখতাম রাতে ঘুমানোর পর গভীর রাতে এতো আগুন লেগেছে, মানুষের চিৎকারে ঘুম থেকে উঠে, এমন ভয়ংকর আগুন দেখে শরীরটা একেবারে কেঁপে কেঁপে উঠতো। তবে এখন অত্যাধুনিক ব্যবস্থা রয়েছে সব তুলার ফ্যাক্টরিতে। তাই আগুন লাগলেও তৎক্ষনাৎ নিভিয়ে ফেলতে পারে। আপনাদের তখন কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি, এটা জেনে খুব ভালো লাগলো। কিন্তু রাতের বেলার আগুন খুবই ভয়াবহ রুপ ধারণ করে। যাইহোক ছোটবেলার স্মৃতি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপু।

 10 months ago 

আগুন খুব ভয়ের ব্যাপার।আর আগে তো বড় ব্রিডিং কম ছিল।এটাই ভয়ের কারন ছিল।সব টিনের ঘর।জ্বলতে সময় নিতো না।ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর মন্তব্য শেয়ার করার জন্য।

 10 months ago 

আপু আগুন তো আপনাদের বাসা থেকে কিছুটা দূরে লেগেছিল, তবে আপনার দাদু কেনই বা ঘর থেকে বের হয়ে গেল? উনি মনে হয় ভেবেছিল ঘর অবধি এসে যাবে আগুন। যাক, শেষে আগুন নিভাতে পেরেছিল জেনে ভালো লাগল ☘️

 10 months ago 

আসলে ঘরে ছেলে মানুষ কেউ ছিল না।আমরা বাচ্চা ছিলাম ৮ জন।এ কারনে হয়তো দাদু আগে থেকে আমাদের নিয়ে সরে যেতে চেয়েছিল।ধন্যবাদ ভাইয়া মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য।

 10 months ago 

শৈশবের স্মৃতি হলো মধুর স্মৃতি। আসলে আপু আপনার পোস্ট পড়ে আমার কাছেই অনেক ভয় লাগছিল। সত্যি আপু এমন ঘটনা রাতে হলে সবাই মারা যেত
যাক আপনার তাহলে বেঁচে গেছেন। অনেক ভালো লাগলো আপনার ছোট বেলার ঘটনা পড়তে পেরে।ধন্যবাদ আপু।

Coin Marketplace

STEEM 0.16
TRX 0.15
JST 0.030
BTC 59096.52
ETH 2516.65
USDT 1.00
SBD 2.46