বিষয় - আমার ছেলেবেলা " গান শেখার অনুভূতি "| | @shimulakter | | ২০।১০। ২০২২ইং | |
আজ ৪ ঠা কার্তিক,১৪২৯ বঙ্গাব্দ,
২০ শে অক্টোবর ২০২২ ইং,
রোজ- বৃহস্পতিবার
হ্যালো বন্ধুরা,
আসসালামু আলাইকুম,আদাব “আমার বাংলা ব্লগ” এর সকল ভারতীয় ও বাংলাদেশী ভাই ও বোনেরা কেমন আছেন সবাই? আশাকরি সবাই ভাল আছেন।আমিও আপনাদের শুভকামনায় ও ভালবাসায় বেশ ভালোই আছি।আমি @shimulakter বাংলাদেশ,ঢাকা থেকে আপনাদের সাথে যুক্ত আছি। “আমার বাংলা ব্লগ “ এর ভারতীয় ও বাংলাদেশী যত সদস্য আছে সবাইকে আমার পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন।
বন্ধুরা,আমি আজ কোন রেসিপি বা কবিতা নিয়ে আসিনি।আমার আজকের ব্লগটি আমার ছেলেবেলার “গান শেখার অনুভূতি “ নিয়ে আপনাদেরকে আমার অনুভূতি শেয়ার করতে এসেছি।আশাকরি আমার ছেলেবেলার অনুভূতির গল্পটি শুনতে আপনাদের ভালো লাগবে।চলুন তবে শুরু করি----
Canva দিয়ে তৈরি
" গান শেখার অনুভূতি " |
---|
আমার বয়স যখন ৫/৬ ,তখন আমার এলাকায় বাচ্চাদের গান শেখার একটি স্কুল হয়।নামটি ছিল "সীমান্ত খেলাঘর "। আমার বাবা খুব সংস্কৃতিমনা একজন মানুষ।আব্বুর ইচ্ছে ছিল আমি গান শিখি।কিন্তু দুঃখের বিষয় হল ,আমার গান খুব শেখার ইচ্ছে ছিল।কিন্তু আমি এত চুপচাপ আর শান্ত ছিলাম,কথাই বলতাম না।সেখানে গান কিভাবে ? কি ? যাই হোক আমার আম্মু আর বড় এক কাজিন বোনকে নিয়ে আমাকে গানের স্কুলে ভর্তি করাতে যায়।স্কুলে ত ভর্তি করিয়ে এলো।আমারও খুব ভাল লাগছিল।😊অনেক ছেলে আর মেয়েরা সেখানে ভর্তি হল।আমি ভেবেছি ছেলেদের আলাদা ক্লাস হবে।ওমা ! ভর্তি হওয়ার পর আম্মু জানতে চায়,তখন বলল একসাথেই ক্লাস হবে।এ কথা শুনে আমার সঙ্কোচ আরও বহুগুন বেড়ে গেল।😂তবে আম্মু ভেবেছিল,যেতে যেতে আমার সঙ্কোচ কেটে যাবে।
একদিকে আমার খুব আনন্দ লাগছিল গান শিখব,অন্যদিকে ছেলেদের কথা আর গান শিখাবে ভাইয়া সব মিলিয়ে খুব খারাপ লাগছিল।এর মধ্যে খুশির বিষয় আব্বু জেনে গেছে সকালেই,আমি আজ গান শেখার স্কুলে যাব ভর্তি হতে,আব্বু রাতে হারমোনিয়াম নিয়ে হাজির।আমার কি যে ভালো লেগেছিল সেদিন বোঝাতে পারব না।আব্বু আমাকে ধরিয়ে ধরিয়ে সা,রে,গা,মা শিখিয়ে দিচ্ছিল।এভাবেই সেদিন কেটে গেলো।
পরের দিন ছিল শুক্রবার।আজ প্রথম গানের ক্লাস।আর শনিবার,এই দুই দিন ক্লাস হবে।যথারীতি আম্মুর সাথে গেলাম।গিয়ে দেখি অনেক ছেলেমেয়ে সেখানে।আমিতো এম্নিতেই ঘরকুনো স্বভাবের মানুষ,তার উপর এত মানুষ আবার ছেলেরা আমার খুব বিরক্ত লাগছিল।আম্মুকে বলছিলাম,বাসায় চলো আমি গান শিখব না।আম্মু বলল, আমি বসে আছি পাশের রুমে তুমি বসো।
ভাইয়া দেখেও খুব বলছিল,ভয় নেই তুমি বসো। শেষপর্যন্ত আমি বসলাম।সা,রে,গা,মা কিছু সময় ভাইয়া শিখিয়ে একজন একজন করে ধরল।আমি আজ প্রথম,তাই ধরেনি।আমি এ যাত্রায় বেঁচে গেলাম।এরপর হারমোনিয়াম বাজিয়ে ভাইয়া একটা গান ধরল,বলল আমি এক লাইন এক লাইন করে গাইবো, তোমরা পরে আমার মত করে লাইনগুলো গাইবে।গানটা আজও আমার মনে আছে-" খেলাঘরের ভাইবোনেরা আয়রে সবাই একসাথে।লাল-নীল-সাদা পতাকাটা তুলে নে ভাই সব হাতে।"
এভাবেই দিন যাচ্ছিল।কিন্তু আমাকে গান ধরলে আমি গাইতাম না।ভাইয়া বলতো থাক গাইতে হবে না।আসলে ভাইয়া চাইছিল আমার জড়তাটা আগে কাটুক।কিন্তু আমার তো জড়তা একদমই কাটছিল না।অথচ আমি বাসায় এসে ঘরের দরজাটা বন্ধ করে নিজে নিজে হারমোনিয়াম বাজিয়ে গলা ছেড়ে সা,রে,গা,মা করতাম।
এভাবে বেশ কিছুদিন যাওয়ার পর,আমি আর যেতে চাইলাম না।😒আম্মুকে বললাম,আমি যাব না।আমার মনে আছে ভাইয়া বাসার অ্যাড্রেস দেখে আমি যাচ্ছি না কেন? জানতে এসেছিল।আম্মু বলে দিয়েছিল,ও খুব লজ্জা পায়,গান নাকি শিখবে না। ভাইয়া বলেছিল,আমি বুঝিয়ে -শুনিয়ে নিয়ে যাব।কিন্তু দুঃখের বিষয় আমি সেদিন এমন জায়গায় লুকিয়ে ছিলাম।আম্মু আমাকে খুঁজেই পায়নি।🤣এভাবে,এই সঙ্কোচ আর লজ্জার কারনে আমার গান শিখাটা হয়নি।গান শিখলে,আজ আমি বড় শিল্পী না হলেও " আমার বাংলা ব্লগ " এর হাংআউটে গান গাইতে পারতাম।😎এই জড়তা আমার আজও পুরোপুরি কাটেনি।এই জড়তা আর সঙ্কোচ আমাকে অনেকটাই পেছনে রেখে দিয়েছে।এর থেকে মুক্তির উপায় আমার জানা নেই।আপনারা কি জানেন ?
" আমার গান শেখার অনুভূতি " কেমন লাগলো আপনাদের।এই জড়তার জন্য নিজের উপর অনেক বেশি রাগ হয় আমার।আজ এ পর্যন্তই। আবার কোন নতুন ব্লগ নিয়ে আপনাদের মাঝে হাজির হব।সবাই সুস্থ থাকবেন,ভাল থাকবেন।
জড়তা কাটানোর উপায় আমার জানা নেই আপু। তবে সেদিন যদি গান শিখতেন তাহলে হয়তো আমরাও আপনার গান শুনতে পেতাম। আসলে ছোটবেলায় অনেক ক্ষেত্রেই আমরা জড়তার কারণে নিজের প্রতিভা বিকাশ করতে পারতাম না। তবে বড় হয়েও সেই জড়তা কেটে উঠে না। যাইহোক আপু আপনার ছোটবেলার সেই অনুভূতি পড়ে অনেক ভালো লাগলো।
হে আপু চুপচাপ শান্ত হওয়াতে জড়তা কাটেনি। কথা কম বলতাম।😔অনেক ধন্যবাদ আপু ব্লগটি পড়ে সুন্দর মন্তব্য করার জন্য । অনেক শুভকামনা রইল আপনার জন্য। 🥰
আপনার যদি জড়তা না থাকতো তাহলে গানটা শেখা হয়ে যেত এবং আমরাও হ্যাংআউটে আপনার গান শুনতে পেতাম। তবে যাইহোক আপনার ছোটবেলার গান শেখার অভিজ্ঞতা শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।
অনেক ধন্যবাদ আপু। ব্লগটি পড়ে মন্তব্য করার জন্য অনেক ধন্যবাদ আপু। ভাল থাকবেন।
এই ঘরকুনো আপু এতকিছু পাওয়ার পরও আপনি গান শিখলেন. না ৷ অতটুকু বয়সে এতো লজ্জা যে ছেলেদের সাথে গান করা যাবে না৷
হিহিহিিহিহি !!!!! মনে কিছু নিয়েন না মজা করলাম ৲
৷
আপনার গান শিখার সম্পূর্ণ ব্লকটি বেশ ভালোভাবে পড়লাম ৷ আপনার বাবা আপনার জন্য হারমোনিয়ামের এনেছে৷ এরপর গানের স্কুলে ভর্তি করে দিল তারপর আপনি গান শিখতে পারলেন না ৷আপনার লজ্জা আর সবার সামনে কথা বলতে সংকোচ বোধ লাগে৷
তবু আর কি ব্লগটি পরে ভালো লাগলো ৷আসলে সবাই তো আর গান শিখতে পারবে না ৷গান এমন একটি জিনিস সেটা আসলে মনে অনুভূতিতে সৃষ্টি হয় ৷সেখানে কোন জোর করে বা চাপিয়ে দিয়ে আসলে সম্ভব নয়৷
ধন্যবাদ
অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া। এই লজ্জা, সংকোচের জন্য কিছুই হয় না। আমারও হয়নি। কি আর করা, নিজের গান নিজেই শুনি 😂
আসলে আপু আমিও আপনার মতো একটু বেশিই চুপচাপ আর শান্ত ৷ এতো শান্ত আর চুপচাপ স্বভাবের হয়ে বেশ ক্ষতিই হয়েছে আপনার ৷ সেদিন যদি এতো জরতা না থাকতো তাহলে গান শিখে যেতেন আজ ৷ আর এখন আমাদের শুনাতেন প্রতি সপ্তাহে ৷ যাই হোক বেশ ভালোই লাগলো আপনার ছোট বেলার গান শুনার অনুভুতি পড়ে ৷
অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া। সত্যি অনেক শান্ত ছিলাম।আমার কন্ঠ কেউ শোনেনি কখনও।এতটাই কম কথা বলতাম। ব্লগটি ভাল লেগেছে জেনে ভাল লাগলো।
জড়তা বিষয়টা খুবই খারাপ জিনিষ।একবার চোখমুখ বন্ধ করে শুরু করে দেখুন,দেখবেন সব জাস্ট কেটে গিয়েছে।পোস্টের মাঝে ইমোজি ব্যবহার একটু কেমন জানি লাগছে।
ধন্যবাদ আপু।
আপনার মত আমিও ছোটবেলায় প্রচন্ড পরিমাণে লাজুক প্রকৃতির ছিলাম। মানুষের সাথে কথাই বলতে পারতাম না ঠিকঠাক করে।
কি আর করা যাবে আমরা একজন শিল্পী হারালাম। হা হা হা...
যদিও আপনার আব্বু খুব করে চেয়েছিল আপনি ছোটবেলায় গান শিখেন কিন্তু আপনি নিজ থেকেই হয়তো গান শিখতে চাননি। ছোটবেলায় আসলে আমাদের অনেকেরই এরকম জড়তা থাকে খুবই লজ্জা পায় যার কারণে হয়তো অনেকেই সেভাবে অনেক কাজ করা হয়ে ওঠে না। তবে একটা বিষয় জেনে খুবই হেসেছে সেটা হচ্ছে যে, ভাইয়া আপনার খোঁজখবর নিতে এসেছিল এবং আপনাকে গানের আসরে নিয়ে যেতে চেয়েছিল আর আপনি কোথায় যে লুকিয়ে ছিলেন কেউ খুঁজে পায়নি হা হা হা। বর্তমান কিছু কিছু শিশুর মাঝেও এই অবস্থা দেখা দেয়। ভালো লাগলো আপনার এই পোস্ট পড়ে।