মৃত্যু নামক যন্ত্রণার আজকের বাস্তব অভিজ্ঞতা -@১০ শতাংশ শিয়াল মশাই এর জন্য
প্রতিদিনের মত আজকেও সন্ধ্যার পর পড়তে বসার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। কয়েকদিন পর ভার্সিটির ফাইনাল পরীক্ষা হাওয়ায় খুব চাপে ছিলাম। এর মধ্যে হঠাৎ আমার বন্ধু আমাকে ফোন দেয় এবং বাইরে বের হতে বলে মেডিকেলে যাওয়ার জন্য।
এরপর যত দ্রুত সম্ভব আমি শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেলে যাওয়ার জন্য বের হয়ে যাই। এরপর বাহিরে যাওয়ার পর ফোন দেই দোস্ত কে এবং সাথে সাথে সে রিক্সা নিয়ে হাজির এবং দুইজন রিকশায় উঠে মেডিকেল এর উদ্দেশ্যে রওনা দেই।প্রায় 20 মিনিট পর মেডিকেলে গিয়ে পৌঁছাই।
পৌঁছার পর জরুরি বিভাগের চতুর্থ তলায় দিয়ে রোগীকে দেখতে পাই। গিয়ে দেখি ততক্ষণে রোগী মারা গেছে।
তো মারা যাওয়ার কারণে রোগীর আত্মীয় স্বজন খুবই কান্না করছিল। এর মধ্যে রোগীর হাসবেন্ড হঠাৎ আমার বন্ধুর বড় আব্বু কে শান্তনা দিচ্ছিলাম। সান্তনা দিতে দিতেই চোখের সামনে আরেকটা লোক মারা গেল।
এরপর রোগীকে বের করার জন্য কিছু ফর্মালিটি অনুসরণ করতে হয়। তো এরপর সেখানে বেধে যায়। মেডিকেলে লাশকে বের করতে একটু ঝামেলা করতে ছিল। তারপর পরিচিত এক রাজনৈতিক বড় ভাই এর মাধ্যমে বিষয়টির সমাধান করে ডেথ সার্টিফিকেট বের করে নিয়ে আসি আমরা। এরপর লাশকে নিচে নিয়ে এসে অ্যাম্বুলেন্সে তুলে দিয়ে অশ্রু সিক্ত হৃদয়ে তাদেরকে বিদায় দিয়ে আমি আমার গন্তব্যস্থলের দিকে রওনা দিলাম।
আসলে রোগীর ছিল আমার বন্ধুর চাচী আম্মা। আগে থেকেই হার্টের সমস্যা ছিল এবং আজকের সন্ধ্যার আগে আগেই সমস্যা বেড়ে গিয়েছিল এবং পল্লী চিকিৎসকের দেখানোর পর তার সিদ্ধান্তে মেডিকেলে আসার কথা বলেছিল।
মেডিকেলে আসার পর রোগীর পালস রেট মোটামুটি ছিল কিন্তু রোগী ছটফট করছিল। কিন্তু প্রথম স্যালাইন দেওয়ার পর রোগীর পালস রেট একটু কমে যায়। এবং এর কিছুক্ষণের মধ্যেই ইনজেকশন দেওয়ার আগেই পালস রেট একেবারেই বন্ধ হয়ে যায় এবং চিরদিনের মতো পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে চলে যায়।
সবচেয়ে ভয়ঙ্কর বিষয় চোখের সামনে মানুষের মৃত্যু। আর এই বিষয়টি আমার জীবনে আজকেই প্রথম ঘটেছে। আমরা পৃথিবীতে কেন এসেছি কি কি করছি আর কি করতে হবে এসব বিষয় জানতে আমরা উদাসীন। যেমন এক যন্ত্রণা যেটা প্রত্যেক প্রাণীকেই এর স্বাদ গ্রহণ করতে হবে।
এই পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে সবাইকে চলে যেতে হবে। দুই দিনের দুনিয়ায় আমরা এমন কিছু করবো না যাতে অন্যের হৃদয়ে আঘাত লাগে বা মনঃক্ষুণ্ণ হয়। এই দিনের দুনিয়ায় আমাদের কিসের এত অহংকার ,কিসের এত আধিপত্য ,কিসের এত ক্ষমতা। আর এই সব কিছু দূর মৃত্যু পর্যন্ত গিয়ে স্থবিরতার মত আছড়ে পড়বে।
সুস্থতা কত বড় নিয়ামত একমাত্র হসপিটাল গেলেই বোঝা যায়। আল্লাহ তাআলা আমাদের সকলকে সুস্থ ,সুন্দর ও সৎ পথে চলার মত তৌফিক দান করুক।
পোস্ট টি পড়ার জন্য আপনাদেরকে অসংখ্য ধন্যবাদ। সকলের জন্য শুভকামনা
সুস্থতা যে কত বড় নেয়ামত অসুস্থ হলে বোঝা যায়। তাই সৃষ্টিকর্তার উপর অনেক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করি সবসময়ই। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ এমন একটি বাস্তব অভিজ্ঞতা আমাদের সাথে ভাগ করে নেয়ার জন্য 💌
আপনিও সাবধানে থাকুন আর সুস্থ থাকুন, দোয়া রইল ♥️
ঠিক বলেছেন।সুস্থ থাকা অবস্থায় আমরা তার কদর করতে পারি না।দোয়া রাখবেন যেন সাবধানে থাকতে পারি।আপনিও সাবধানে থাকবেন।আপনার কমেন্ট করার জন্য ধন্যবাদ। আপনার জন্য শুভকামনা রইল আগামী দিনগুলোর জন্য।
খুবই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা। জীবনটা এমনই কখন যে সঙ্গ ছেড়ে দেয় বলা যায় না। তারপরও আমরা এই সত্যটাকে মেনে নিতে নাখোশ। মানুষ চলে গেলে রয়ে যায় শুধু তার ব্যবহার। এজন্য আমাদের সবারই অন্যের সাথে এমন আচরণ করা উচিত যাতে আমাদের অনুপস্থিতিতে তারা আমাদের স্মরণ করে ।
অবশ্যই ঠিক বলেছেন। আমরা সত্যের সাথে মিলিয়ে উঠতে পারিনা। দুনিয়ার কার্যকলাপে ব্যস্ত হতে গিয়ে মানুষের সাথে অনেক দুর্ব্যবহার করে থাকি যা আমাদের দ্বারা কোনোভাবেই কাম্য নয়। আমাদের উচিত সবার সাথে সদ্ব্যবহার করা এবং একজন আরেকজনের পাশে থাকা। এই দুনিয়াতে কেউই থাকবেনা। কমেন্ট করার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ। আপনার জন্য শুভকামনা রইল।
আমাদের সবাইকে একদিন মারা যেতেই হবে।হাসপাতাল জায়গাটা এমনিই।চোখের সামনে পলকেই একজনের মৃত্যু ঘটে।দুনিয়ায় জীবন চিরস্থায়ী নয়।এটা ভেবে আমাদের কাজ করে যেতে হবে। ধন্যবাদ আপনাকে।
জীবনের আসল উদ্দেশ্য এবং জীবনকে উপলব্ধি করা যায় যখন হাসপাতালের বেডে শুয়ে থাকা হয়। তখন কিছুই চাওয়া পাওয়ার থাকেনা শুধু একটা চিন্তায় থাকে সেটা হচ্ছে সুস্থতা। তবে আপনার এই পোস্টটি থেকে অনেক কিছু শেখার আছে। সময় থাকতে আমাদের নিজেদের সৎকর্মে নিয়োজিত করতে হবে। যে সকল কাজ আমাদের জন্য পুণ্যের সে সকল কাজই করতে হবে। আপনার বন্ধুর চাচি আম্মার রুহের মাগফেরাত কামনা করছি। আল্লাহতালা ওনাকে জান্নাতুল ফেরদাউস দান করুক। আমিন
ঠিক বলেছেন আপনি। হাসপাতালে গেলেই এই বিষয় গুলো সহজ হয়ে জাবে।আমাদের সকলকেই সব কাজ ভাল করে করা উচিৎ। আলনাকে অনেক ধন্যবাদ।
আপনি ঠিকই বলেছেন জীবনকে সহজ হতে বুঝতে হলে এবং কতটা ভালো আছি তা বোঝার জন্য একবার হাসপাতলে গেলে বিষয়টি প্রত্যক্ষভাবে পরিলক্ষিত হবে। আর সকল কাজ মানুষের যাতে কল্যাণ কর হয় সেটাই করা উচিত। আপনার নেক দোয়া আল্লাহ তালা কবুল করুক। আপনার মন্তব্য করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ এবং আপনার জন্য আগামী দিনগুলোর জন্য শুভকামনা।
ভাই আপনার পোস্টটি পড়ে আমি সত্যি মর্মাহত। আসলে ভাইয়া প্রতিটি মৃত্যুই হৃদয়বিদারক হয়। আপনার পোস্টটি পড়ে বুঝতে পারলাম আপনার অনেক কষ্ট হয়েছিল। ধন্যবাদ ভাই আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।
ঠিক বলেছেন।মরণ কখন কিভাবে আসবে বলা যাবে না।আসলে অনেক কঠিন বাস্তবতার সম্মুখীন হয়েছিলাম।আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ। আপনার জন্য শুভকামনা