জেনারেল রাইটিং:-) দেশে বৃদ্ধাশ্রম কেন প্রয়োজন?

সোর্স

আমরা পিতা-মাতার অতীব আদর যত্নে বড় হয়েছি। আজ আমরা বর্তমান যে অবস্থানে আছি এটা কেবলমাত্র আমাদের পিতা-মাতার অবদান এর নিরিখেই সম্ভব হয়েছে। কেননা তারা পরম আদরে আমাদের তিলে তিলে গড়ে তুলেছেন নিজেদের হাড়ভাঙ্গা পরিশ্রম করার মধ্য দিয়ে আমাদের প্রতিষ্ঠিত করেছেন। এই কথাগুলো আমরা সবাই জানি এবং জানাটাও স্বাভাবিক। আবার একসময় আমরাও আমাদের সন্তান সন্ততিদের কঠোর পরিশ্রমের মধ্য দিয়ে তাদেরকে তিলে তিলে মানুষের মত মানুষ করে গড়ে তুলবো ।আর এটাই কাল ক্রমে চলে আসছে আদিকাল থেকেই এন্ড আগামীতেও চলবে। এখন আমার কথা হচ্ছে একজন সন্তান ,পিতা-মাতার কাছে কতটা গুরুত্বপূর্ণ ? আর পিতামাতা একজন সন্তানের কাছে কতটুকুই বা গুরুত্বপূর্ণ বলেন ?

গুরুত্বের কথা আসলে সবাই বলবে পিতা মাতা আমার কাছে সর্বসমতুল্য এটাই স্বাভাবিক।দেখুন মুখের উপর দিয়ে সবাই সব রকমের কথা বলে দিতে পারে কিন্তু মন থেকে অনেক কথাই আছে যে কথাগুলো মন থেকে মেনে নেওয়া তো দূরের কথা কান দিয়ে শুনতেও আমরা বিরক্ত বোধ করি। তারমধ্যে অন্যতম হচ্ছে বৃদ্ধকালীন সময়ে মা-বাবার কষ্টের কাতরানি, কাশি ইত্যাদি বিষয়গুলো এমন কিছু সন্তান রয়েছে যারা অসহ্যকর মনে করে। কি কথা কি সত্যি বললাম ? হ্যাঁ বন্ধুরা সত্যি কথা একটু তেতো হয় বটেই।

কিছু কিছু সন্তান রয়েছে যারা মা-বাবাকে বৃদ্ধকালীন সময়ে তাদের পাশে রাখতে চায় না কেননা তারা তখন উপার্জন করতে পারে না তাদের পিছনে শুধু ব্যয় হয় আপনারাই বলুন এই বিষয়টা কি আদৌ ঠিক ? সমাজে এই প্রশ্নটা করুন অনেকেই বলবে কুলাঙ্গার সন্তান ? হ্যাঁ কুলাঙ্গার সন্তান বলাটাই স্বাভাবিক কিন্তু খোঁজ নিয়ে দেখুন যে কুলাঙ্গার বলেছে তার মা বাবাই বৃদ্ধাশ্রমে অবস্থান করছে। কেন ? ঐ যে বললাম না মুখে মধু আর মনে বিষের ছুরি। আমরা ভুলে যাই যে আমাদেরও একটা সময় আসবে যখন আমরাও এই বয়সে উপনীত হব তখন আমাদেরও সন্তান-সন্ততি যদি বৃদ্ধাশ্রমে রাখি আসে তখন কেমন লাগবে বলুন ? অবশ্যই খারাপ লাগবে। সব কিছুই বন্ধুরা নিজের থেকে ভাবতে হয় তাহলেই অন্য কে উপলব্ধি করা যায়।

আসুন কিছু বাস্তবিক কথা তুলে ধরি। একটা পরিবারের মধ্যে চারজন সন্তান। চার জনই এখন প্রাপ্তবয়স্ক স্ত্রী সন্তান সবই রয়েছে। এখন বাবা মার হয়ে গেছে বৃদ্ধ বয়স। এখন সন্তানের চিন্তাধারা হলো কিভাবে মা বাবার সম্পত্তি ভাগাভাগি করে নিবে। এই নিয়ে বেজে যায় নিজেদের মধ্যে কঠিন বিভেদ ঝগড়া। কুত্তার মত কাড়াকাড়ি করে সম্পদে ভাগ বসানোর জন্য এটা কতটা সুস্থ মন-মানসিকতা পরিচয় বহন করে কি আপনারাই বলুন ? তাদের এই সম্পদ ভাগাভাগি করে নেওয়ার মতো লড়াইয়ের ফাঁদে পড়ে যায় মা-বাবা, যার ফলে তাদের অবস্থান হয় ঘরের বাইরে বৃদ্ধাশ্রম নামের জেলখানায়। একবার ভাবুন তো এই কুত্তার মত সম্পদ ভাগাভাগি করে নেওয়ার মতো যদি মা-বাবাকেও আদর যত্নে রাখার জন্য তারা ভাগাভাগি করে নেওয়ার প্রতিযোগিতা করতো তাহলে মা-বাবার অবস্থান কোথায় থাকতো বৃদ্ধাশ্রমে নাকি সন্তানদের বাসায় ? কেন প্রয়োজন হবে দেশে বৃদ্ধাশ্রমের ? কেন মা বাবা শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করবে বৃদ্ধাশ্রমে ? কেন মা-বাবা কি অমূল্য রত্ন নয় ? তারা সম্পদ দিতে পারবে না ঠিকই কিন্তু দোয়া তো করতে পারবে। সন্তানরা যদি নিজের থেকে চেষ্টা করতো মা-বাবাকে সুখি রাখার তাহলে দেশে একটাও বৃদ্ধাশ্রম তৈরি হতো না বা দেশে বৃদ্ধাশ্রম গুলো ছাতা পড়ে নষ্ট হয়ে যেত, খুঁজে পাওয়া যেত না কোন বৃদ্ধাশ্রম। আপনাদের কি অভিমত ?

আর একটা বাস্তবিক কথা তুলে ধরে আজকের ব্লগ শেষ করব বন্ধুরা, মা বাবার বৃদ্ধাশ্রমে যাওয়ার পিছনে আমি মনে করি পিতা মাতার ও কিছু হস্তক্ষেপ রয়েছে। কি অবাক হলেন তো ? হ্যাঁ আমি সত্যিটাই বলেছি এখানে অবাক হওয়ার কিছুই নেই। সন্তানকে লক্ষ কোটি টাকা খরচ করে ইঞ্জিনিয়ারিং, ডাক্তারি এবং বিসিএস ক্যাডার বানাও। আর মসজিদের যে হুজুর তোমার সন্তানকে দ্বীনী হলেন শিক্ষা দিতে যায় সেই হুজুরের মাসিক বেতন ৫০০ টাকা দিতে তোমার হাত কেঁপে ওঠে, কার্পণ্যতা সৃষ্টি হয়। তাহলে তুমি বৃদ্ধাশ্রমে যাবে না তো কে যাবে ? সময় থাকতে সচেতন হন বন্ধুরা কেননা আমাদের সবাইকে একদিন না একদিন বয়সের ভারে হেলে পড়তে হবে। তখন সবাই বলবে বৃদ্ধ , অকেজো, অপদার্থ ইত্যাদি এইসব কথা যাতে শুনতে না হয় এখন থেকে পরিকল্পনা গ্রহণ করে সামনের দিকে এগিয়ে যান।ভবিষ্যতের জন্য কিছু জমিয়ে রাখুন। বৃদ্ধ বয়স অনেক বেশি ভয়ংকর যেটা আমাদের কল্পনার বাইরে। আজ রক্তের জোর আছে কালকে নাও থাকতে পারে।

আজকে আমাদের কমিউনিটির একজন প্রিয় ইউজার @redwanhossain ভাইয়ের পোস্টে একটা সুন্দর বাণী দেখতে পেলাম সেটি হচ্ছে,“সময় তবুও সময় মতো পাল্টে তবে মানুষ যেকোনো সময় পাল্টে যায়”। মানুষ সময়ের থেকেও ভয়ংকর ভাবে পাল্টে যায়। তাই এখন থেকেই কিছু সঞ্চয় করা শুরু করুন বৃদ্ধ বয়সের জন্য নইলে সন্তান হোক আর যেই হোক আপনার পকেটে কিছু না থাকলে ,সঞ্চিত সম্পদ না থাকলে,আপনাকে ছুড়ে ফেলে দিবে 😔। প্রশ্ন আমার থেকেই গেল এরকম ভাবে যদি চিন্তা করা যেতো
তাহলে কি বৃদ্ধাশ্রমের প্রয়োজন আছে দেশে ? কেনই বা প্রয়োজন বৃদ্ধাশ্রমের ?

বন্ধুরা আজকের মত আমার ব্লগটি এখানেই শেষ করছি।আশা করি আপনাদের ভালো লেগেছে।দেখা হবে আবারো আপনাদের সাথে নতুন কোনো পর্বে।আল্লাহ হাফেজ।

vote@bangla.witness as a witness

Set@rme as your proxy