হ-য-ব-র-ল অনুভূতি||~~~
সকলকে ঈদের আগাম শুভেচ্ছা।আশা করি সকলেই ভাল আছেন আলহামদুলিল্লাহ আমার ও দিন কেটে যাচ্ছে কোন এক রকমের।এরকম কঠিনতম দিন পার করতে হবে ঈদের মধ্যে এটা কল্পনাও করতে পারি নাই।তবে আমার bangla-blog পরিবারের সকলের ঈদ আনন্দ হয়ে উঠুক আনন্দ মুখর এটাই প্রত্যাশা করি।
বন্ধুরা প্রতি বছর ঈদে নানা রকমের আয়োজন থাকে।
এ বছর ঈদকে ঘিরে ও অনেক পরিকল্পনা ছিল।কিন্তু হঠাৎ করেই সিয়ামের অসুস্থতা সব আয়োজনকে ধুলিস্যাৎ করে দিল।আমি প্রতিবছরই ঈদে বেশকিছু তালিকাভুক্ত হতদরিদ্র মানুষদের মধ্যে বস্ত্র বিতরন করি।যা একান্তই নিজের থেকে।এবং ওই মানুষ গুলো আমার কাছে খুব বেশি প্রত্যাশা করে থাকে প্রতি বছর। তারমধ্যে দুই থেকে তিনজন রমজানের আগেই ইন্তেকাল করেছেন।তাদের জন্য মনটা ভীষণ খারাপ।কিন্তু করোনার পর থেকে আমি আমার কাজে আজ পর্যন্ত যোগদান করি নাই আর সেজন্যই আহাদ খুব টানাটানির মধ্যে আছে।তাই প্রত্যাশিত এতগুলো মানুষের জন্য এবার কেনাকাটা করা আমার কাছে প্রায় অসম্ভব ছিল।তার পরেও চিন্তা করেছিলাম এবার ঈদের শপিং করব সিয়াম আসলে একসাথে।এবার প্রতিবছর তাই করি।তবে সিয়াম আসার আগেই বেশকিছু হতদরিদ্র মানুষের জন্য হালকা কেনাকাটা করেছিলাম।আর বাকিগুলো করবো সিয়াম আসার পর।কিন্তু সিয়াম এত পরিমান অসুস্থ হয়ে পরলো যে, শপিং এর কথা ভুলে গিয়েছি।আমাদের বাসায় এখনো কারো জন্যই তেমন কোনো শপিং করা হয়ে ওঠেনি।এবং ঢাকায় থাকাকালীন অবস্থায় সিয়াম নিজের জন্য কোনকিছুই কেনাকাটা করে নি।ওর অসুস্থতার খবর আমাকে এতটাই মর্মাহত করেছে যে, আমি প্রায় আধা পাগলের মত অবস্থা।যাই হোক মহান আল্লাহ তায়ালার অশেষ রহমতে ঢাকা থেকে ওকে বিমানে করে খুব ভালোভাবে অল্পসময়ের মধ্যে আনতে পেরেছিলাম।তা না হলে এই গরমে ঢাকায় সে আরো বেশি অসুস্থ হয়ে যেত।
এদিকে গায়ে তীব্র জ্বর এবং ব্যথা। অন্যদিকে কোন কিছু খেতেই পাচ্ছে না। তারপরেও আমার বাংলা ব্লগে পোষ্ট করার জন্য,, কাজ করার জন্য ঘুমের ঘোরেও বলতেছে।কি অদ্ভুত রকমের টান আমার বাংলা ব্লগের জন্য।গতকাল রাত থেকে টানা শুধুই বমি হচ্ছে।পানি খেলেও বমি হচ্ছে কোনকিছুই পেটে রাখতে পারছে না।একদিকে সিয়ামের শরীরের এই অবস্থা অন্যদিকে বাসায় এত কাজ।সবকিছুই সামলাচ্ছি।তবে শিপু যথেষ্ট পরিমাণে সাহায্য করছে আমাকে।আজ আবারো সিয়ামকে হাসপাতালে নিয়ে গেলাম এরপর সেখান থেকে ক্লিনিকে নিয়ে গেলাম।ছেলের এই মুমূর্ষ অবস্থায় দেখে কলিজার ভেতরটা কেমন যেন ক্ষতবিক্ষত হচ্ছে।গতকাল রাতে নামাজ পড়েছি এবং ওকে পাহারা দিয়েছি।এতোটুকু ঘুম নাই চোখে।তার পরেও আজকে যখন ওকে ইনজেকশন দিচ্ছিল। ঠিক সেই মুহূর্ত ইনজেকশনের ব্যাথা মনে হয় আমার বুকের ভিতর এসে বিধছে।এই অনুভূতিগুলো শুধুমাত্র একজন মায়ে'ই বুঝতে পারবেন।মহান আল্লাহ তাআলার কাছে এতবেশি প্রার্থনা করছি আল্লাহ তোরে আমার সিরিয়াল কে সুস্থ করে দাও।কখনও কখনও বিধাতার প্রতি একটা অভিমান জন্ম নিচ্ছে যে এই ঈদের সময় আমার ছেলেটাকে এভাবে কষ্ট দিতে হবে? কিন্তু হাসপাতাল-ক্লিনিকগুলোতে যখন অন্যান্য রোগি গুলোকে দেখলাম। তখন মহান আল্লাহ তায়ালার কাছে শুকরিয়া জ্ঞাপন করলাম। তাদের চেয়ে আল্লাহ আমাদেরকে অনেক ভালো রেখেছেন।।এই ঈদানন্দ অনেকেরই কাটবে হাসপাতালের বেডে।সেইসব রোগীগুলোর দের কথা ভাবলে অনেক বেশী কষ্ট হচ্ছে।এবং সেইসময় হৃদয়ের অন্তস্থল থেকে একটি কথাই উচ্চারিত হচ্ছে হে আল্লাহ পৃথিবীর সকল মানুষকে তুমি সুস্থতা দান করো। অনেকদিন পর সিয়ামের এরকম অসুস্থতা দেখতে পেয়ে,মানসিকভাবে খুব খারাপ অবস্থায় আছি, বর্তমানে।ছেলেদের কিছু হলে মাথা সঠিকভাবে কাজ করেনা। আপনাদের সকলের দোয়ায় ইনশাআল্লাহ খুব দ্রুত সুস্থতা লাভ করবে। এবাং ঈদের আনন্দ সবার সাথে ভাগাভাগি করে নেবে। মানুষে মানুষে ভেদাভেদ না করে, সকলের সাথে ঈদ আনন্দ সকলে মিলে ভাগাভাগি করে নেবো। এই প্রত্যাশায় আজকের মত এখানেই।
আমি সেলিনা সাথী। আমার প্রফেশন, প্রেজেন্টার, ট্রেইনার ও মোটিভেটর। আমি একজন সমাজ কর্মি ও সংগঠক। এছারা ও তৃনমূল নারী নেতৃত্ব সংঘের নির্বাচিত সভাপতি বাংলাদেশ। আমি "নারীসংসদ"
এর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি, ও প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি "সাথী পাঠাগার"। আমার লেখা মোট ১০ টি একক ও যৌথ কাব্য গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে। একুশে বই মেলায় প্রতি বছর একটি করে কাব্য গ্রন্থ প্রকাশের চেস্টা করি। আমার লেখা কাব্যগ্রন্থের মধ্যে "মিস্টি প্রেম" (উপন্যাস), "অশ্রু ভেজা রাত" (কবিতা), "জীবন যখন যেমন" (কবিতা), "একুশের বুকে প্রেম" (কবিতা), "নারীকন্ঠ" (ম্যাগাজিন) অন্যতম।
আপু আপনার পোস্ট পড়ে অনেক খারাপ লাগল, সত্যি সন্তানের কিছু হলে মা বাবা ঠিক থাকে না।আর এত গরমে বেশির ভাগ মানুষই অসুস্থ। এটা সত্যি বলেছেন আপু অন্যান্য মানুষের দিকে তাকালে মনে হয় আমরা তার থেকে আসলে ভাল আছি। আর আমার বাংলা ব্লগ এমন জায়গা সত্যি এখানে পোস্ট না করলে ভাল লাগে না। সিয়াম ভাইয়ের জন্য দোয়া করি তারাতাড়ি সুস্থ হয়ে উঠবে। আল্লাহ তাআলা আমাদের সবাইকে সুস্থতা দান করুন, আমিন।
প্রথমে সিয়ামের সুস্থতার জন্য মহান আল্লাহর দরবারে দোয়া রইল। আল্লাহ যেন সিয়ামকে তাড়াতাড়ি সুস্থ করে দেন। তবে আপনি প্রতিবছরের ন্যয় এবারও হত দরিদ্রদের মাঝে কিছু বিতরণ করার ইচ্ছা পোষণ করেছিলেন তবে সেটা হয়তো কোন একটা কারণে পুরোপুরি হয়নি, তবে সেটা নিয়ে চিন্তিত না হওয়াটাই বুদ্ধিমান এর কাজ। কারণ আপনি তো আর এমনি এমনিই এমনটি করেননি। তবে সবচেয়ে ভালো লাগলো যে সিয়াম অসুস্থতার মাঝে ও আপনাকে আমার বাংলা ব্লগে পোস্ট করার জন্য বিনীত অনুরোধ করলো। আসলে সন্তান অসুস্থ হলে বাবা মায়ের মাথা ঠিক না থাকাটাই স্বাভাবিক। জীবনের প্রতিটা ক্ষেত্রে আমাদেরকে আশেপাশের পরিস্থিতির উপর খেয়াল রাখতে হবে, তবেই আমরা বুঝতে পারবো যে অন্যদের থেকে আমরা কতটা ভালো আছি। ধন্যবাদ আপু আপনার পরিবারের এমন একটি ঘটনা আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
আসলেই সিয়াম ভাইয়ের জন্য খুব খারাপ লাগছে। কারণ আমি সিয়াম ভাইয়ের পোস্ট নিয়মিত পড়ি। সেই প্রেক্ষাপটে খুব ভালো করে এটা জানি যে ঢাকা থাকা অবস্থায় সবসময়ই তিনি খুব ব্যস্ততার মধ্যে সময় পার করে এবং অনেক প্যারার মধ্যে থাকে। কতদিন পর বাসায় গেল তা ও আবার প্লেনে করে। বাসায় গিয়ে সবার সাথে মিলে মিশে আনন্দ করবে এবং ঈদ উদযাপন করবে এটাই প্রত্যাশা ছিল। তবে অসুস্থতার জন্য সেটা সম্ভব হচ্ছে না। যাইহোক সিয়াম ভাইয়ের দ্রুত সুস্থতা কামনা করছি। আপনার পুরো পরিবারের প্রতি অনেক অনেক দোয়া এবং শুভকামনা রইল।