বেদনামুখর সফলতার গল্প।।।
বন্ধুরা
আমি আপনাদের সাথে অনেক আগের একটি বেদনা মুখর সফলতার গল্প ভাগ করে নিব।যা এখনো আমাকে ভাবায়, কাঁদায়।
আশা করি সকলের ভাল লাগবে।
আমাদের পরিবারে আমার ৩ ভাই ও ১ টি বড় বোন মিলিয়ে আমরা ৫ ভাই বোন।
ভাই বোন সবারই প্রায় বিয়ে হয়েছে।বাবা অনেক অসুস্থ থাকার কারনে তার পিছনে ব্যায় বহুল চিকিৎসা করানো হয়া। এবং বাবা মারা যাওয়ার পর আমি অথর্নৈতিক ভাবে খুব খারাব অবস্হায় ছিলাম। আমার টাকার খুব দরকার ছিল।নিজের পড়াশুনা সহ সার্বিক বিষয়ের জন্য। আমার ছোটবেলা থেকে খুব ইচ্ছে বা দূর্বলতা ছিল স্কুল শিক্ষক বা সাদা পোশাক পরা নার্স বা সেবিকার হওয়ার উপর। মনে হতো ছোট ছোট বাচ্চাদের পড়াতে পাড়লে আমার খুব ভাল লাগত।
একদিন আমার বড় দুলাভাই আমাদের বাসায় এসে বলল তার বন্ধুর কিন্টার গার্ডেন স্কুলে
শিক্ষক নিয়োগ হবে। তাই তিনি আমাকে বায়ো ডাটা নিয়ে সেই স্কুলে যেতে বললেন।ইন্টারভিউ নেয়ার জন্য। বাকিটা দুলাভাই সুপারিশ করলেই চাকুরিটা হয়ে যাবে। বাসা থেকে রেডি হয়ে মনে অনকটা আনন্দ নিয়ে বেড় হলাম ইন্টারভিভ দেওয়ার জন্য
স্কুলে গেলাম।ছোট ছোট বাচ্চাদের সাথে কিছুটা সময় কাটালাম।ততক্ষণে স্কুল কতৃপক্ষ চলে আসল এবং আমার দুলাভাই ও আসল। কিন্তু দুলাভাইয়ের সাথে ছিল আমার ছোট ভাবি। দেখে বেশ ভালই লাগল। নিয়ম অনুযায়ী আগে আমার ভাবিকে ভিতরে ডাকা হল আমি আগে বুঝিনি ভাবি ইন্টারভিউ দিতে গেছে। যাই হোক ভাবি বের হলে আমাকে ডাকা হল। আমার ব্যবহারে তারা মুগ্ধ। এবং চাকুরিটা আমার হচ্ছে বলে আমাকে জানিয়ে দিল।আমার সাথে কথা শেষ হওয়ার পর আমি বাইরে চলে আসি। তারপর দুলাভাই অফিস রুমে গিয়ে স্কুল পরিচালকের কাছে আমার ভাবির জন্য সুপারিশ করল। ঐ স্কুলে শুধু ১ জন শিক্ষক এর প্রয়োজন ছিল। তাই আমার চাকুরিটা আর হলনা। স্কুল পরিচালক আমাকে ডেকে দুঃখ প্রকাশ করল।কিছুই করার ছিলনা।আমি সেদিন এতোটাই মর্মাহত হলাম যা ভাষায় প্রকাশ করা যাবেনা।মনকে প্রশ্ন করলাম কে আপন কে পর।আমি ভাবলাম ভাবি অসুস্থ মানুষ আর ৩/৪ মাসের মধ্যে তার বাচ্চা হবে।তাছাড়া চাকুরিটা তার জন্য অতটা প্রয়োজন ছিলনা। কি আর করা।বিশ্বস করুন ঐ সময়ে আমার চাকুরিটা খুব প্রয়োজন ছিল। ফিরে এলাম বাড়িতে, মনে নানা রকম প্রশ্নের উদয় হল, দুলাভাই কেন আমার সাথে এমনটা করল, করতে পারল? ভাবির জন্যই যদি সুপারিশ করবে তাহলে আমাকে জানাল কেন। কেন আমাকে অপমান করল। এরকম হাজারো প্রশ্ন আমাকে বিষিয়ে তুলল।আমি ঘরে ঢুকে দরজা বন্ধ করে ভলিয়ম হাই করে মিউজিক ছেড়ে চিৎকার করে কাদঁলাম।আমার কান্নায় যেন আকাশ বাতাশ ভাড়ি হয়ে আসল।ফুলের মধু সংগ্রহে যে ভ্রমর তাড়াও কষ্টে সামিল হল। ফুল পাখি প্রকৃতি সাবাই যেন আমার সাথে একাত্বতা প্রকাশ করল।তাড়াও আহত হলেন। কিন্তু পরিবারের কেই বুঝতেই পারলনা আমার যন্তণামুখর সময়টা।
চাকুরীতে ভাবি জয়েনিং করে মাত্র ৪ মাস পরে ছেড়ে দেয়।
সেদিন থেকে চাকুরির প্রতি অনিহা সৃষ্টি হয়। যেখানে মেধার মূল্যায়ন হয়না মামা চাচার সুপারিশ লাগে ডোনেশন লাগে এরকম চাকুরীর পিছনে ছুটে সময় ব্যায় না করে উদ্দ্যোক্তা হতে হবে যেন নিজের রাজ্যে নিজেই রাজা হতে পাড়ি। এমন চিন্তা চেতনা আমাকে ঘীরে রাখে সারাক্ষণ। যাই হোক সময় আর স্রোত কখনো থেমে থাকেনা। একটা দূর্যোগ অনেক গুলো সুযোগ বয়ে আনে।যে আমি স্বপ্ন দেখতাম শিক্ষক হব, ছোট ছোট বাচ্চা পড়াব, সেই আমি আজ যখন স্বস্হ্য সেমিনার বা ক্যারিয়ার ডেভলপমেন্ট ট্রেনিং করাই তখন ভার্সিটর প্রিন্সিপাল , কলেজ প্রিন্সিপাল স্কুল প্রাধান সহ পৌর মেয়র, চেয়ারম্যান, কাউন্সিলর, সিভিল সার্জেন, এম বি,বি এস এফ সি পি এস ডাক্তার রা সহ বীরমুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার, এ্যাডভোকেট সহ সকল শ্রেণীর মানুষ আমার বক্তব্য শুনেন।বা ট্রেনিং করেন ভেবে বেশ ভাল লাগে।
এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের প্রায় ১৯ টি জেলায় ট্রেনিং / সেমিনার পরিচালনা করেছি।এবং ব্যাপক সুনাম অর্জন করেছি। ইচ্ছে আছে ইন্টান্যশনাল ট্রেইনার হবার। সকলেই দুয়া করবেন মহান আল্লাহ্ যেন আমার ইচ্ছা গুলো পূর্ণ করে। তাই বলবো বন্ধুরা হতাশ হবেন না লেগে থাকুন কাজ করুন পরিকল্পনা অনুযায়ী ইনশাআল্লাহ্ জয় হবেই হবে।
**তবে আমি সবাইকে যে কথাটা বলে থাকি সচরাচর সাগরের ঢেউকে কখনো বালুর বেরিকট আটকাতে পারেনা
কিংবা আগুনকে মুষ্টি করে আটকে রাখলেও ধোঁয়া আটকানো যায়না।*
এরকম হাজারো গল্প আছে যা পরবর্তীতে একটি একটি করে ভাগ করে নিব।
আমার বেদনা মুখর গল্পটি পড়ার জন্য আপনাদের অসংধ্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি আমি সেলিনা সাথী।
ধন্যবাদ
আমি সেলিনা সাথী। আমার প্রফেশন, প্রেজেন্টার, ট্রাইনার ও মোটিভেটর। আমি একজন সমাজ কর্মি ও সংগঠক। এছারা ও তৃনমূল নারী নেতৃত্ব সংঘের নির্বাচিত সভাপতি, বাংলাদেশ। আমি "নারীসংসদ" সংগঠেন প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি, ও প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি "সাথী পাঠাগার"। আমার লেখা মোট ১০ টি একক ও যৌথ কাব্য গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে। একুশে বই মেলায় প্রতি বছর একটি করে কাব্য গ্রন্থ প্রকাশের চেস্টা করি। আমার লেখা কাব্যগ্রন্থের মধ্যে "মিস্টি প্রম" (উপন্যাস), "অশ্রু ভেজা রাত" (কবিতা), "জীবন যখন যেমন" (কবিতা), "একুশের বুকে প্রম" (কবিতা), "নারীকন্ঠ" (ম্যাগাজিন) অন্যতম।
Cc:
Subscribe My Channel on YouTube: https://youtube.com/channel/UC1lAnoejZgfsGXZaaYwNljg
আপু জীবনের ছোট ছোট ধাক্কাগুলো আমাদের শক্ত করে, আমি মানি যে আল্লাহ যা করেন আমাদের ভালোর জন্য। ক্ষমা করে দেন আপনার দুলাভাই আর ভাবিকে কারণ ক্ষমাতেই মহত্ব, যখন কিছু পাবেন না ভেবে নেবেন আল্লাহ আপনাকে আরো ভালো আরও উন্নত কিছু দিতে চান। এটা আমার বেলায় অনেকবার হয়েছে আর আল্লাহর প্রতি ভরসা অনেকগুণ বেড়ে গেছে।
ধন্যবাদ আপু মনি গল্পটি পড়ার জন্য। আসলে আমি সেই কবেই তাদের ক্ষমা করে দিয়েছি।এবং তারা আজো জানেনা এই বিষয়ে আমি কষ্ট পেয়েছি।তবে তাদের সেই ধাক্কায় আজকের আমি হতে পেড়েছি।আমি বিশ্বাস করি যার প্রত্যাশা যতটুকু তার প্রাপ্তী ততটুকু।শুভ কামনা আপু।
আপনাকেও শুভকামনা আর দোআ,। ফিআমানিল্লাহ ❤️💖💕
আমিন।
গল্পটি পড়ে আমি অনেক ইনসপায়ার্ড হলাম।জীবনের এই সব আঘাত গুলোই 'আজকের আমি' হতে বাধ্য এবং সাহায্য দুটোই করে। আপনার জন্য অনেক ভালো কিছুই রেখেছেন আল্লাহ পাক। অনেক দুয়া রইলো আপু❤️
অসংখ্য ধন্যবাদ আপু মনি। আমাকে দুয়া করার জন্য। শুভ কমনা অবিরাম
ক্ষমা মহৎ গুন। অতিত ভুলে সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার নাম জীবন।
জীবন মানেই যুদ্ধ,
আর
যুদ্ধ কখনোই সহজ
হয়না।
ধন্যবাদ।
অনেক শিক্ষণীয় লিখনী। জীবন সম্পর্কে নতুন করে আবার নতুন কিছু শিখলাম । ধন্যবাদ ।জীবনের বাস্তবতা তুলে ধরার জন্য আপু।
আপনাকে ও অসংখ্য ধন্যকাদ ভাইয়া পোষবটিতে চোখ বোলানোর জন্য।শুভ কামনা।
জীবন মানেই সংগ্রাম
আর তাতে শত বাধা অবিরাম।
আপনার জন্য শুভকামনা রইলো আপু।
বাস্তবতা সত্যি অনেক নিষ্ঠুর, এটা হয়তো ইতিমধ্যে আপনি আমার থেকে ভালো বুঝে গেছেন। আসলে আসলে মাঝে মাঝে আমরা নিজেদের উপর না বরং অন্যদের উপর বেশী ভরসা করি, যার কারনে আমাদের এই অবস্থা। আপনি হয়তো আমার পিছনের কথাগুলো শুনলে আপনার ঐ অভিজ্ঞতাটা আরো ছোট মনে হবে।
তবে আমি সেগুলো মনে করি না এবং পেছনে ফিরে তাকাই না। আমি আমার যোগ্যতা দিয়ে এই পর্যন্ত এসেছি এবং এগিয়ে যাবো। আপনি আপনার যোগ্যতার সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করেছেন, আমি দোয়া করি আপনি সফলতার শীর্ষে পৌছাতে সক্ষম হবে।
আপনার জীবনের কিছু ট্রাজেডি আমাদের সাথে শেয়ার করলেন, পড়ে সত্যি অবাক আমি, কাছের মানুষের অচেনা রূপ সত্যি যতটা কষ্ট দেয় , তেমন আর কোনো কিছুতেই দেয় না । আপনার জীবন সংগ্রামের কাহিনি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অনেক ধন্যবাদ ।
ধন্যবাদ দাদা, এরকম আরও অনেক গল্প আছে যা সিনেমা কিংবা স্টার জলসা কেও হার মানায়।
ওই যে জীবন মানেই যুদ্ধ, আর যুদ্ধ কখনোই সহজ হয়না। শুভ কামনা দাদা ভাই।