স্বরচিত কবিতা|| বিজয় মেলা||~~
স্বরচিত -কবিতা-
সকলকে বিজয় মাসের রক্তিম শুভেচ্ছা। আশা করি সকলেই ভালো আছেন। আলহামদুলিল্লাহ আমিও ভালো আছি। আর আপনারা সবাই সব সময় ভালো থাকবেন,এটাই প্রত্যাশা করি।
অনুভূতির কিছু কথা
বিজয় মেলার প্রতিটি মুহূর্ত যেন হৃদয়ের গভীরে এক গভীর ঢেউ তোলে। আকাশে উড়তে থাকা পতাকাগুলো যেন বলে,
"তোমরা জিতেছ, তোমাদের রক্ত বৃথা যায়নি।"
প্রতি পলাশ ফুলের লাল আভায় অনুভব হয় রক্তের গন্ধ,যে গন্ধে মিশে আছে মা, মাটি, আর বিজয়ের গল্প।
শিশুর হাসিতে আজ আনন্দ ঝরে পড়ে,
কিন্তু সেই হাসির গভীরে লুকিয়ে থাকে এক ইতিহাস,
যে ইতিহাসে কান্না ছিল, মৃত্যু ছিল, আর ছিল এক অদম্য লড়াই—স্বাধীনতার জন্য, মর্যাদার জন্য।
বিজয় মেলায় পা রাখলেই হৃদয় ভারি হয়ে আসে,
এ যেন এক পবিত্র যজ্ঞে উপস্থিত হওয়া। প্রতিটি তাঁবুতে, প্রতিটি গানে,মনে হয় কেউ যেন কানে কানে বলে—"তোমার মাটি, তোমার দেশ, তোমার জন্যই আমরা দিয়েছিলাম সব।"
এই অনুভূতি একদিকে গর্বের,অন্যদিকে এক অদ্ভুত ভারাক্রান্ত আবেগ।আমাদের স্বপ্নের এই বাংলাদেশে আজও কি আমরা মুক্ত? বিজয়ের পতাকা হাতে নিয়ে,
নিজের মনকেই প্রশ্ন করি—"আমরা কি সত্যি স্বাধীন?"
বিজয় মেলা শুধু আনন্দ নয়, এ যেন এক নিরব শপথের মঞ্চ। যেখানে দাঁড়িয়ে প্রতিজ্ঞা করি,
"তোমাদের রক্তে লাল হওয়া মাটি কখনোই কলুষিত হতে দেব না।"
মেলা বসেছে বিজয়ের মাটিতে,
লাল-সবুজের শিখরে।
পলাশের রঙে রাঙানো দুপুর,
মুক্ত বাতাসে উড়ছে পতাকা।
আমাদের বিজয়—শুধু যেন
এক শ্বাসের স্পন্দন।
শিশুদের কোলাহলে ভরপুর মাঠ,
যেন এক টুকরো স্বপ্নের বাংলাদেশ।
তোমার কি মনে পড়ে?
শূন্য চোখের দিনগুলো,
বধ্যভূমির আর্তনাদ,
বুক ফেটে যাওয়া মা'দের কান্না,
অসহায় বোনের চিৎকার—
তার মাঝেই তো ফুটে উঠেছিল এই মেলা।
আজ আর সেসব চোখ ভেজা স্মৃতি নেই।
তবু এই মেলার প্রতিটি তাঁবুতে,
রক্তের ঘ্রাণ মিশে আছে।
পলাশের ঘ্রাণে মিশে আছে
আমাদের বীরত্বের গল্প।
এই মেলা তো বিজয়ের কাছে
মাথা নত করার প্রতীক।
যে হাত আজ খেলনা কিনে,
সেই হাত একদিন অস্ত্র ধরেছিল,
স্বাধীনতার মঞ্চ সাজিয়েছিল
বিজয়ের জন্য।🇧🇩
তুমি যদি কান পেতে শোনো,
তবে শুনতে পাবে মাটির
নিচ থেকে আসা শব্দ—
“আমাদের রক্তের মূল্য দিও,
বিজয় অমল রাখো।”
বিজয় মেলা এই স্মরণ,
বিজয় মেলা এক প্রতিজ্ঞা,
যেখানে স্বপ্ন আর ইতিহাস এক হয়ে যায়।
আজও তাই প্রতিটি মেলার
লাল-সবুজ তাঁবুতে
বিজয়ের গান গেয়ে যায় মাটি,
আর আমরা খুঁজে পাই নিজের পরিচয়।
২৪ ডিসেম্বর ২০২৪
সময় -- রাত ১১:৩৯
কবিতা কুটির -নীলফামারী।
বন্ধুরা আমার আজকের কবিতটি, নিশ্চয়ই আপনাদের কাছে ভালো লেগেছে। আর আপনাদের ভালোলাগাই আমার সার্থকতা ও পরম পাওয়া। সকলের সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করে আজকের মত এখানেই বিদায় নিচ্ছি। পরবর্তীতে আবারো সুন্দর সুন্দর কবিতা নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির হব, আমি সেলিনা সাথী...
আমি সেলিনা সাথী। ছন্দের রাজ্যে, ছন্দরাণী কাব্যময়ী-কাব্যকন্যা বর্তমান প্রজন্মের নান্দনিক ও দুই বাংলার জনপ্রিয় কবি সেলিনা সাথী। একধারে লেখক, কবি, বাচিক শিল্পী, সংগঠক, প্রেজেন্টার, ট্রেইনার, মোটিভেটর ও সফল নারী উদ্যোক্তা তার পুরো নাম সেলিনা আক্তার সাথী। আর কাব্যিক নাম সেলিনা সাথী। আমি নীলফামারী সদর উপজেলায় ১৮ মার্চ জন্মগ্রহণ করেন। আমার বাবা পিতা মরহুম শহিদুল ইসলাম ও মাতা রওশনারা বেগম। ছড়া কবিতা, ছোট গল্প, গান, প্রবন্ধ, ব্লগ ও উপন্যাস ইত্যাদি আমার লেখার মূল উপজীব্য। আমার লেখনীর সমৃদ্ধ একক এবং যৌথ কাব্যগ্রন্থের সংখ্যা ১৫ টি। আমার প্রথম প্রকাশিত কবিতার বই অশ্রু ভেজা রাত, উপন্যাস মিষ্টি প্রেম, যৌথ কাব্যগ্রন্থ একুশের বুকে প্রেম। জীবন যখন যেমন। সম্পাদিত বই 'ত্রিধারার মাঝি' 'নারীকণ্ঠ' 'কাব্যকলি'সহ আরো বেশ কয়েকটি বই পাঠকহমলে বেশ সমাদৃত। আমি তৃণমূল নারী নেতৃত্ব সংঘ বাংলাদেশ-এর নির্বাচিত সভাপতি। সাথী পাঠাগার, নারী সংসদ, সাথী প্রকাশন ও নীলফামারী সাহিত্য ও সংস্কৃতি একাডেমির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি। এছাড়াও আমি জেলা শাখার সভাপতি উত্তোরন পাবনা ও বাংলাদেশ বেসরকারি গ্রন্থাগার পরিষদ নীলফামারী জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক এবং কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সমাজ কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদকের দায়িত্বে রয়েছি। তিনি মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীনে ২০১৪ সালে নীলফামারী জেলা ও রংপুর বিভাগীয় পর্যায়ে সমাজ উন্নয়নে অসামান্য অবদানের জন্য শ্রেষ্ঠ জয়িতা অ্যাওয়ার্ড অর্জন করেছি। এছাড়াও সাহিত্যের বিভিন্ন শাখায় ও সামাজিক সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে বিশেষ অবদান রাখায় আমি বহু সম্মামনা পদক অর্জন করেছি। যেমন সাহিত্যে খান মইনুদ্দিন পদক ২০১২। কবি আব্দুল হাকিম পদক ২০১৩। শিশু প্রতিভা বিকাশ কেন্দ্র কর্তৃক সম্ভাবনা স্মারক ২০১৩। সিনসা কাব্য সম্ভাবনা ২০১৩। বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস উদযাপন উপলক্ষে সম্মামনা স্মারক ২০১৩। জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ৩৭ তম মৃত্যুবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে সম্মাননা স্মারক ২০১৩। জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম এর ১১৫ তম জন্ম জয়ন্তী উদযাপন উপলক্ষে ২০১৪। দৈনিক মানববার্তার সম্মামনার স্মারক ২০২৩। চাতক পুরস্কার চাতক অনন্যা নারী সম্মাননা ২০২৩ ওপার বাংলা মুর্শিদাবাদ থেকে মনোনীত হয়েছি।
বিষয়: ক্রিয়েটিভ রাইটিং
কমিউনিটি : আমার বাংলা ব্লগ
আন্তরিক ভাবে ধন্যবাদ জানাই এই কমিউনিটির সকল সদস্য কে, ধন্যবাদ.......
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
আপনার লেখা কবিতাটি পড়ে অনেক ভালো লাগলো। এত সুন্দর ভাষায় আপনি কবিতা লেখেন, সত্যি আপনার কবিতা পড়তে অনেক ভালো লাগে আমার।
আমাদের এই কমিউনিটির কমবেশি সবাই এখন সুন্দর সুন্দর কবিতা লিখে থাকে। আর তার মধ্যে আপনিও অনেক সুন্দর কবিতা লিখে থাকেন। সুন্দর ছিল আপনার এই কবিতাটা লেখার টপিক। কবিতার প্রত্যেকটা লাইন এত সুন্দর করে লিখেছেন। এটা দেখে আমার কাছে অসম্ভব ভালো লাগলো। এত সুন্দর টপিক নিয়ে কবিতা লেখার জন্য ধন্যবাদ।
বাহ আপু আপনি আজকে আমাদের মাঝে খুবই সুন্দরভাবে আপনার স্বরচিত কবিতা আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। আপনার লেখা কবিতার প্রতিটা লাইন আমাকে বেশি মুগ্ধ করেছে। এত সুন্দর সহজ সরল ভাষায় কবিতা লিখে আমাদের মাঝে তুলে ধরার জন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ আপু।
আপনার লেখা কবিতাগুলো যত পড়ি ততই খুব ভালো লাগে। কারণ আপনি সবসময় অনেক সুন্দর সুন্দর কবিতা লেখেন, যেগুলো অনেক সুন্দর হয়। আজকেও খুব সুন্দর একটা কবিতা লিখেছেন। আমার কাছে আপনার লেখা আজকের এই কবিতা পড়তে অসম্ভব ভালো লেগেছে।
এই প্লাটফর্মে অনেক সুন্দর সুন্দর কবিতা লেখে। আপনার কবিতা তো সব সময় অসাধারণ হয়।বিজয় মেলা কবিতাটি পড়ে সত্যি মুগ্ধ হয়ে গেলাম। এবং আপনার কবিতা থেকে অনেক কিছু শিখা যায় এবং উপলব্ধি করা যায়। ধন্যবাদ ভালো লাগার মত এত সুন্দর একটি কবিতা লিখে আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।