|| গতকাল বিকেলে কাটানো কিছু মুহূর্ত ||
আজকে আমি আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করব আমার গতকাল বিকেল থেকে সন্ধে অবধি কাটানো কিছু সময়। গতকাল বিকেলে আমি বেশ কিছু কাজ নিয়েই বাড়ি থেকে বেরিয়ে ছিলাম। কালকে আমার প্রথম এবং প্রধান কাজ ছিল ব্যাংক সম্পর্কিত, তাও আবার সরকারি ব্যাংক। স্বাভাবিকভাবেই হাতে বেশ খানিকটা সময় করে বেরিয়েছিলাম।
চারটের সময় ব্যাংকের গেট বন্ধ হয়ে যায় ,কিন্তু মোটামুটি পাঁচটা সাড়ে পাঁচটা অবধি ভেতরে কাজ চলে।অর্থাৎ যতক্ষণ কাস্টমার ভেতরে থাকে ততক্ষণ কর্মচারীরা কাজ করেন। এই ব্যাঙ্কে কাজ থাকলে আমি অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সাড়ে তিনটের নাগাদ যাই, কারণ এই সময়টাতে ভিড়ও কম থাকে যে কারণে লাইনে বেশিক্ষণ দাঁড়াতে হয় না। আর বাড়ি ফেরার তারা থাকার কারণে কর্মচারীরাও একটু দ্রুত কাজ করে। তো যথারীতি গতকাল আমি ওই সময় ব্যাংকে যাই। গিয়ে দেখি যে অফিসারের কাছে আমার কাজ তিনিই তার টেবিলে উপস্থিত নেই। পাশের ডেস্কের লোককে জিজ্ঞেস করলাম তিনি বললেন তিনি জানেন না সে কোথায় গেছে সিকিউরিটি কে জিজ্ঞেস করলাম সেও নাকি জানে না সে কোথায় গেছে অর্থাৎ কখন আসবে কখন কাজ হবে সবই আমার অজানা। একান্তই আমাকে লাইনে অপেক্ষা করা ছাড়া আমার কাছে আর কোন কাজ ছিল না।
মোটামুটি মিনিট পনেরো-কুড়ি অপেক্ষা করার পর অবশেষে অফিসার হেলতে দুলতে আসলেন। যাই হোক, মাথাটা একটু গরম গরম হচ্ছিল ঠিকই কিন্তু সামলে নিয়েছিলাম। আমার সামনে আগে থেকেই মোটামুটি পাঁচ-ছয় জন ছিল তাদের পেছনে ছিলাম আমি। তারপরে যখন অফিসারের কাছে আমি আমার সমস্যা নিয়ে গেলাম, তিনি আমার সব সমস্যার শুনে বললেন যে কাজটা আমাকে বাড়ি বসেই করতে হবে অর্থাৎ অনলাইনে করতে হবে। ব্যাংক থেকে সেই পরিষেবা পাওয়া যায় না। প্রায় ৪৫ মিনিটের কাছাকাছি সময় ওইভাবে দাঁড়িয়ে থাকার পরে অফিসারের কাছ থেকে এই কথাটি শোনার জন্য আমি মোটেই প্রস্তুত ছিলাম না আমার ভেতরে ভেতরে রাগ হচ্ছিল মাথাটা যেন কেমন গরম হয়ে গেল। কিন্তু আসলে যে মাথাটা কারো উপর গরম হচ্ছে বা রাগটা কার ওপরে হচ্ছে সেটা আমি বুঝতে পারলাম না , তাই বাধ্য হয়ে বেরিয়ে গেলাম।
তারপর সেখান থেকে আমার কাজ ছিল টাইটান এর শোরুমে গিয়ে একটি ঘড়ি কিনে আনা। আমার এক বান্ধবী নতুন চাকরি পেয়েছে। তাই সে ওয়েস্ট বেঙ্গলের বাইরে আছে। চাকরির প্রথম মাইনে দিয়ে সে সবাইকে গিফট দিচ্ছে। তাই তার বাবার জন্য একটি ঘড়ি আমাকে পছন্দ করে আনতে বলেছিল যেটি সে তার বাবাকে উপহার দিতে চায়। তো সেই ঘড়ি কিনতেই আমি গেছিলাম। মাথাটা হালকা গরম গরম নিয়েই আমি ঘড়ির শোরুমের উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম। দুঃখের বিষয় শোরুমের সামনের দিক গিয়ে দেখি সেই শোরুম বন্ধ।
তখন রাগটা আরো বেড়ে গেল কিন্তু তখনও আমি বুঝলাম না যে আমি আসলে কারো উপর রাগটা করব🙁। তারপরে সেখান থেকে ঘুরে ঘুরে অন্য একটি দোকানে গেলাম যেটা টাইটেনের শোরুম নয় কিন্তু টাইটানের ঘড়ি সেখানে পাওয়া যায়। তারপর সেখানে ঢুকে কয়েকটি ঘড়ি পছন্দ করে সেই বান্ধবীকে পাঠাতে লাগলাম। মোটামুটি এক ঘন্টা সময় আমি ঘড়ির দোকানে কাটালাম সেই বান্ধবীর কোনো ঘড়ি পছন্দ না হওয়ায়।কিছু না হলেও কুড়ি থেকে ত্রিশ পিস মডেল তাকে পাঠিয়েছি আমি, বেশিরভাগ ক্ষেত্রে শেষ মুহূর্তে গিয়ে তার আর পছন্দ হচ্ছে না। শেষে বিরক্ত হয়ে তাকে পছন্দ করতে না বলে আমি নিজেই পছন্দ করার দায়িত্ব নিলাম। কিন্তু আমার পছন্দ করা ঘড়ি তার আর পছন্দ হলো না। তারপরে আরো ১৫ মিনিট সময় কাটল একই ভাবে, আরো কিছু ঘড়ির মডেল তাকে পাঠালাম কিন্তু তার পছন্দ হলো না। অবশেষে আমার পছন্দ করা ঘড়িটিই ফাইনাল হলো।
মজার বিষয় হলো আমি সেখানে ফোনে কথা বলছিলাম সেই কনভারসেশন দোকানের কর্মচারী গুলি শুনছিলেন, ঘড়িটি প্যাকিং করার সময় তাদের মধ্যে থেকে একজন আমায় খালি জিজ্ঞেস করলেন ,"দাদা আপনি ফোনে কোন মহিলার সাথে কথা বলছিলেন না?" সেটা শুনে আমি আর হাসি আটকাতে পারিনি। যাইহোক সেই কর্মচারী কেন আমাকে ওরকম কথা বলল, কিভাবেই বা বুঝলে আমি ফোনে কোনো বান্ধবীর সাথে কথা বলছিলাম এ বিষয়ে এখানে বিস্তারিত আর কিছু বললাম না, আপনাদের কিছু বলার থাকলে কমেন্টে বলবেন প্লিজ😁।
যাইহোক তারপরে সে সমস্ত কাজ করে গেলাম আমার এক জেঠিমার বাড়ি। অনেকদিন যাবত জেঠিমার সঙ্গে দেখা করা হয় না জেঠিমাও দুঃখ করে, আমারও খারাপ লাগে। আসলে আমাদের বাড়ি থেকে জেঠিমার বাড়ি বেশ খানিকটা দূরে আর সচরাচর আমার ওয়েবসাইটে যাওয়া হয় না তাই দেখা-সাক্ষাৎ সম্ভব হয়ে ওঠেনা। যেহেতু কালকে সুযোগ ছিল তাই ভাবলাম দেখা করে আসি। তবে যে সময় বাড়িতে গিয়ে আমার বেশ ভালই হয়েছে, কারণ জেঠিমা আমাকে চা আর ক্ষীরের পিঠে দিয়ে ভালোই আপ্যায়ন করেছে😋।এই সুযোগে আমার এই বছরে প্রথম পিঠে খাওয়াও হয়ে গেলো।
বেশ খানিকক্ষণ জেঠিমার বাড়িতে ছিলাম ,গল্প করলাম। জেঠিমা ছাড়াও বাড়িতে দাদা বৌদি ভাইপো ছিল তাদের সাথে গল্প করলাম। তারপরে সেখান থেকে রাত আটটা সাড়ে আটটার দিকে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম। এই ছিল আমার গতকালের বিকেল থেকে সন্ধ্যা অবধির কাটানো পুরো মুহূর্তটা, আশা করি আপনাদের ভালো লাগলো। আজকে এখানেই শেষ করছি আমার লেখা।
আসলে মেয়েরা সবকিছু খুবই বুঝে শুনে কেনার চেষ্টা করে। তাই তো খুব সহজে কোন কিছু পছন্দ হতে চায় না। যাই হোক ফোনের অপর প্রান্তে যেহেতু একটি মেয়ে ছিল তাই তো অনেকটা সময় লেগেছে ঘড়ি কিনতে। আসলে মেয়েদের পছন্দ সব সময় পারফেক্ট হয়। ছেলেদের মত হুটহাট করে কিনতে পারেনা। যাইহোক ভাইয়া সরকারি ব্যাংক কিংবা সরকারী যে কোন দপ্তরে গেলেই অনেক ভোগান্তির মধ্যে পড়তে হয়। আপনার কাটানো মুহূর্তগুলো সুন্দর করে তুলে ধরেছেন দেখে ভালো লাগলো।
হ্যাঁ দিদি ঠিকই বলেছেন,মেয়েরা সব কিছু পারফেক্ট চায়, তাই সময় নিয়ে ফেলে অনেক বেশি,আবার সহজে তাড়াতাড়ি চিন্তা ভাবনাও করতে পারেনা।কিন্তু সব শেষে সব কিছু সুন্দর ভাবে উপস্থাপনা করে।তবে আজকালকার দিনে শুধু মেয়েরাই নয়,কিছু ছেলেরাও পারফেক্ট চাই সব কিছুই।আমি তো অন্ততঃ চাই 😂।
আমার শেয়ার করা মুহুর্তে গুলি আপনার পছন্দ হয়েছে জেনে ভালো লাগলো।অনেক শুভ কামনা রইলো আপনার জন্যে।
ভাইয়া আপনি গতকাল বিকেলে কাটানো সুন্দর মুহূর্ত আমাদের সাথে শেয়ার করেছেন দেখে অনেক ভালো লাগলো। এভাবে মাঝে মাঝে ঘুরাঘুরি করলে অনেক ভালো লাগে। ভাইয়া আপনার ঘড়ি হয়তো ফোনের অপর প্রান্তের মানুষের পছন্দে কিনেছেন তারজন্যই তো দোকানের কর্মচারীরা বলতে পারছে। আপনার জেঠিমা দেখছি খুবই মজার খাবার দিয়েছেন। বিকাল বেলা ঘুরাঘুরির ফাঁকে এমন নাস্তা খেতে কিন্তু দারুণ লাগে। ধন্যবাদ আপনার ঘুরাঘুরি সুন্দর মুহূর্ত শেয়ার করার জন্য।
ঠিকই বলছেন দিদি,মাঝে মাঝে বিকেলে এরকম ঘোরাঘুরি করতে বেশ ভালোই লাগে,মনও ভালো হয়ে যায়
আর ঘোরাঘুরির মাঝে এরকম নাস্তা হলে পুরো জমে যায়।
ব্যাংক ফাঁকা পাবেন জন্য তিনটার দিকে গিয়েও তো লাভ হলো না। বেশ ভিড়ইতো দেখা যাচ্ছে। তাছাড়া ঘরে বসে যেই কাজ করা যেত তার জন্য অযথা লাইনে এক ঘন্টা দাঁড়াতে হলো। শুনে আমারই তো বিরক্ত লাগছে । আমি তো ভয়ে ভয়ে আপনার পোস্টটি পড়ছিলাম। ভাবছিলাম যে আপনি দোকানের মধ্যে না রাগারাগি শুরু করে দেন। এতগুলো ঘড়ি দেখানোর পরে যেহেতু পছন্দ হচ্ছিল না অবশেষে নিজের পছন্দমত কিনেই ভালো করেছেন। তা না হলে আরো একঘন্টা লাগতো আপনার বান্ধবীর ঘড়ি পছন্দ করতে। দোকানদাররা এরকম বিশেষ সচরাচর দেখে জন্যই আপনার বান্ধবীর সঙ্গে কথা বলাও টের পেয়েছে। । গরম মাথা নিয়ে জেঠিমার বাড়িতে গিয়ে নিশ্চয়ই মাথা ঠান্ডা হয়ে গিয়েছে এত সুন্দর পিঠা খেয়ে।
আমার অবস্থা শুনেই আপনার বিরক্ত লাগছে,তাহলে আমার কি অবস্থা হয়েছিল তা আশাকরি বুঝতে পারছেন।
তবে রাগারাগির পর্যায়ে যাইনি😂।তবে এটা আপনি ঠিকই বুঝেছেন যে মাথা গরম নিয়ে জেঠিমার বাড়ি গেলেও বিশেষ কারণে আমার মাথা ঠান্ডা হয়ে যায় 😁।