ছোট বেলায় বাবার কাছে আঙ্গুর খাওয়ার আবদার।

in আমার বাংলা ব্লগlast year

আসসালামু আলাইকুম

প্রিয় আমার বাংলা ব্লগ পরিবারের সকল বন্ধুরা সবাই কেমন আছেন? @amarbanglablog এর সকল বন্ধুরা সবাই আশা করি পড়ন্ত বিকেলে খাওয়া-দাওয়া করে খুবই ক্লান্ত। সেই সাথে অনেকেই বিকেল বেলায় পোস্ট লেখা লিখিতে ব্যস্ত থাকেন। তো আমিও চিন্তা করলাম আজকে একটি নতুন টপিক্স নিয়ে আপনাদের সাথে শেয়ার করব। আসলেই প্রত্যেকের জীবনে ছোট বেলার অনেক কিছু স্মৃতি জড়িয়ে থাকে। ঠিক তেমনি আমারও ছোট কালের অনেক কিছু স্মৃতি আছে ভাবছি সেখান থেকে আমি আপনাদের সাথে একটা বিষয় শেয়ার করব।

vecteezy_activities-together-during-the-holidays-parents-and_18790166_403.jpg

Image Source Link


আসলে প্রত্যেকটি সন্তানের কাছে বাবা মায়ের গুরুত্ব অপরিসীম। বাবার গুরুত্ব যেমন সন্তানদের জন্য অনেক বেশি তেমনি মায়ের গুরুত্বও অনেক। তার মানে এই বাবা-মায়ের গুরুত্বের কোন তুলনা হয় না একটা সন্তান বড় হওয়ার ক্ষেত্রে। তো বন্ধুরা এমন একটি স্মৃতি আমার মনের দাগ কাটে সব সময় সেটা হচ্ছে যে ছোট বেলায় বাবার কাছে আঙ্গুর খাওয়ার আবদার করেছিলাম। বলতে গেলে আমাদের গ্রামটি অনেক অজগর পাড়া গ্রাম ছিল বলতে হয়। একদম গাড়ি চলাচল কিংবা কোন বিদ্যুৎ ছিল না সবকিছুর ক্ষেত্রে একদম অপরিবর্তন একটি এলাকা ছিল। বলতে গেলে আজ থেকে ২০-৩০ বছর আগে বাংলাদেশের সব গ্রামের চিত্র এমন ছিল। আমার বয়স পাঁচ/সাত বছরের কথা আমার মনে আছে আমার একদিন অনেক অসুখ হয়েছিল।

হয়তো আমার ভাইরাস জ্বর কিংবা অন্য একটা অসুখ হয়েছিল সেটা আমার খুব মনে আছে। তখন আমি কিছু খাচ্ছিলাম না অনেক বমি করতেছিলাম এবং অনেক দুর্বল হয়ে গেছিলাম। কিন্তু আমার আব্বু তখন ছিল। তো আমাকে জিজ্ঞেস করল মা তুমি কি খাবে তুমি তো অনেক দুর্বল হয়ে যাচ্ছ কিছু খাচ্ছ না। তখন আমি আমার আব্বুকে বললাম আব্বু আমি আঙ্গুর খাব। আমার এখন খুব আঙ্গুর খেতে মন চাইছে। এখন তো আব্বু অনেক সমস্যায় পড়ে গেল কারণ হাটে যেতে তো অনেক দূরে যেতে হবে এবং দেরি ও হবে। কারণ গাড়ি ঘোড়া তেমন কিছুর ভাল ব্যবস্থা ছিল না। তাছাড়া যে বাজারে আঙ্গুর পাওয়া যাবে সেই বাজার আমাদের গ্রাম থেকে অনেক দূরে ছিল।

কিন্তু বাবার অন্তর বলে কথা সন্তানদের জন্য যত কষ্ট হোক যেটা আবদার করা হউক না কেন কিন্তু সেটা পূরণ করতে আপ্রাণ চেষ্টা করেন। কিন্তু কিভাবে গেল কখন আসলো সেই কথা আমার মনে নেই একটা কথা আমার মনে আছে সেটা হচ্ছে আমি আঙ্গুর খাওয়ার আবদার করছিলাম। আমার আব্বু আমাকে বাজারে গিয়ে সেখান থেকে আঙ্গুর এনে আমাকে খাওয়ালেন। এতটা দূরে ছিল যদি হেঁটে যেতে হয় তাহলে দুই ঘন্টার রাস্তা। আবার রিক্সা কিংবা টেক্সি নিয়ে গেলে কিন্তু তাও আবার ঘন্টা খানেক লাগবে কারণ তখন রাস্তাঘাট এমন উন্নত ছিল না। হয়তো ইটের রাস্তা ছিল কিন্তু অনেক ভাঙ্গা রাস্তা ছিল। অথবা কিছুটা রাস্তা কাঁচা আবার কিছুটা রাস্তা আধা পাকা ঐরকমই ছিল। কিন্তু ওই রকম রাস্তাতে গাড়ি চলাচল কিন্তু এত স্পিড ছিল না।

এই বাবা নামের বট বৃক্ষ আমাদের সকল সন্তানদের জন্য অনেক অনেক প্রয়োজনীয়। যেদিন এই বাবা নামের বট বৃক্ষ মাথার ছাঁয়া থেকে নেমে যায় সেদিন বুঝা যায় বাবার অভাব কি রকম। পৃথিবীতে বাবার মত কেউ খরচ করে না। সব আবদার কিন্তু বাবাই পূরণ করতে চেষ্টা করেন। আবার সবার সাথে সেই আবদার গুলো করাও যায় না। সেই দিনের কথা আমার সারা জীবন থেকে যাবে এবং এখনো আমি ধুকে ধুকে মরি সে কথা গুলো মনে করে। কারণ সেদিন আমি আবদার করেছিলাম বলে আমার আব্বু অনেক দূর রাস্তা পেরিয়ে আমাকে আঙ্গুর এনে খাওয়াই ছিল। সে কথা কি ভুলার মত! সে দিন বলছিল আমার মেয়ে অসুস্থ আঙ্গুর খাওয়ার আবদার করছে আমাকে যেভাবে হোক এনে খাওয়াতে হবে।

কিন্তু বর্তমান সময়ে জিনিসপত্র পাওয়া এত বেশি সুযোগ সুবিধা হয়ে গেছে বলতে গেলে একদম হাতের নাগালের ভিতরে। আবার অনেকেই ঘরে বসে অনলাইনে অর্ডার করতেছে। কিছুক্ষণের মধ্যে দরজায় নক দিচ্ছে আপনার কাঙ্খিত জিনিস গুলো ঘরে পৌঁছে দেওয়ার জন্য চলে আসলো। তো বন্ধুরা আশা করি আমার আজকের অনুভূতিটা আপনাদের অনেক ভালো লাগবে। কেমন লেগেছে জানালে ভাল লাগবে। আজকে আমার লেখা এখানে সমাপ্তি করছি।ধন্যবাদ সবাইকে আবার দেখা হবে।


24QmLBi2hi5sxeF4rfhXesN4Z3rEWTikWPFADtR6zyMx1Eh2qs4cCyucf3FD7ahStNw2cTHPk2QiaQacbQjJNEWnuhyjY1PXfUUMr27ifyD15nkQhFHksgx6bm9BxYLdCkQDMy8JhQrktZHYy6njdzRU4bQ9b1d2xjCdoVzCDDY85pLPq2s7FhKBwPjpuHdozHaReDxEaFH2aYse13zaqogf9utVshuSban6ex1saRA.png

লেখার উৎসনিজের অনুভূতি থেকে
ইমেজ সোর্সভিকটিজি ডট কম
অবস্থানকক্সবাজার, বাংলাদেশ
রাইটিং ক্রিয়েটিভিটি@samhunnahar
ক্যাটাগরিজেনারেল রাইটিং


সবাইকে অনেক ধন্যবাদ সময় দিয়ে আমার ব্লগটি ভিজিট করার জন্য।

268712224_305654151337735_1271309276897107472_n.png

🥀আল্লাহ হাফেজ সবাইকে🥀


আমার পরিচয়
আমি সামশুন নাহার হিরা। আমার ইউজার আইডি @samhunnahar। আমি আমার বাংলা ব্লগে কাজ করছি বাংলাদেশের কক্সবাজার থেকে। আমি বাংলা ভাষায় লিখতে-পড়তে অনেক ভালবাসি। রান্না করতে আমি অনেক পছন্দ করি। তাছাড়া সময় পেলে ভ্রমণ করি আর প্রকৃতিকে অনুভব করি। ফটোগ্রাফি করতে আমার ভীষণ ভাল লাগে। আমি মাঝে মাঝে মনের আবেগ দিয়ে কবিতা লেখার চেষ্টা করি। আমার প্রিয় শখের মধ্যে তো গান গাওয়া অন্যতম। আমার মনের ভাব বাংলায় প্রাকাশ করতে পেরে অনেক আনন্দিত। তার জন্য আমার প্রাণের/ভালবাসার কমিউনিটি "আমার বাংলা ব্লগ"কে অনেক ভালবাসি।

24QmLBi2hi5sxeF4rfhXesN4Z3rEWTikWPFADtR6zyMx1Ehur2Z3EsVgTD2AcTmkokXePYxgzpSqwnBNBj3ZteFgQGBvoV1Gau6PdZ2iRjGoCbkshRWuRQSfGSpuzhGGAeLA4Vf5U1Hc8iJwwxD89QHRxVn1je1P4CmpDJ3i8T6K3VVLivshpofZcmEc1F66yhadmSAKB5S67TB9CT5ts8F67pFjTnJQ9RnA2Qqq1Qc1.gif

Sort:  
 last year 

আপু আপনার লেখাগুলো পড়ে কখন যেন মনের অজান্তেই দুচোখে পানি চলে এলো। আসলে বাবারা সব সময় এমনই হয়। অনেক পথ পাড়ি দিয়ে কিংবা অনেক কষ্ট করে আমাদের প্রয়োজনীয় কিছু এনে দেন। তবে আজকাল সবকিছুই হাতের নাগালে পাওয়া যাচ্ছে। তাই তো আর এতটা কষ্ট করার দরকার হচ্ছে না। ভিন্ন ধরনের একটি পোস্ট পড়ে সত্যিই ভালো লাগলো আপু।

 last year 

বাবার অভাব যার নাই সেই বুঝে আপু আমি প্রতিনিয়ত অনুভব করি বাবার অভাব।

 last year 

বাবা নামের এই বট বৃক্ষের ছায়া যাদের মাথার উপরে রয়েছে তারা বড়ই সৌভাগ্যবান। আর যারা এই ছায়া থেকে বঞ্চিত হয়েছেন তারা বড় দুর্ভাগ্যবান। আপনার বাবা আপনার আঙ্গুর খাওয়ার কথা শুনতেই অনেক কষ্ট করে আপনার আবদার পূরণ করার জন্য তিনি বাজার থেকে আঙ্গুর কিনে এনে আপনাকে খাইয়েছেন। আপনার বাবা ছিলেন বলে হয়তো আপনার আবদারটি পূরণ হয়েছে। আর যদি বাবা না থাকতো, তাহলে হয়তো সে আবদার কখনোই পূরণ হতো না। আমার বাবাও অনেক বৃদ্ধ হয়ে গেছেন, তবুও যখন বাবা বলে ডাকি তখন মনের ভেতরে খুব শান্তি অনুভব করি। সত্যিই আপু বাবারা সন্তানের জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম করেন তাদের সুখ স্বাচ্ছন্দের জন্য। হয়তো আমরা অনেকেই আছি বাবা নামের এই মানুষটির খুবই কদর করছি, আবার হয়তো অনেকেই আছি বাবা নামের এই মানুষটিকে খুবই অবহেলা করছি। যাইহোক আপু, ছোটবেলায় বাবার কাছে আঙ্গুর খাওয়ার আবদার নিয়ে আপনার অনুভূতি টুকু শেয়ার করার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।

 last year 

শুকরিয়া ভাইয়া আঙ্কেল সুস্থ আছেন আপনি এখনো বাবা নাম ধরে ডাকতে পারছেন আপনি অনেক সৌভাগ্যবান। দোয়া করি আঙ্কেল যেন সুস্থভাবে আরও দীর্ঘ হায়াত নিয়ে বেঁচে থাকতে পারেন।

 last year 

আসলে বাবারা এমনই হয়। কোন কিছু চাইলে তাদের যত কষ্টই হোক না কেন সন্তানের চাহিদাগুলো পূরণ করার চেষ্টা করে। আপনি আপনার বাবার কাছে আঙ্গুর খাওয়ার আবদার করেছেন। এখনকার মতো তখন এরকম সুযোগ-সুবিধা ও ছিল না। তাও আপনার আবদার পূরণ করতে অনেক দূর থেকে আপনাকে আঙ্গুল কিনে এনে দিয়েছেন। আপনার লেখাগুলো পড়ে আমার কাছে খুব ভালো লেগেছে। এত সুন্দর অনুভূতি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।

 last year 

বাবার কাছে কোন কিছুর আবদার করলে তা কখনো ফেরত হয় না আপ্রাণ চেষ্টা করেন পূরণ করার জন্য।

 last year 

আপনার এই ভিন্ন ধরনের পোস্ট আমার ছোটবেলার অনেক স্মৃতি স্মরণ করিয়ে দিয়েছে। তবে বর্তমান যুগে হয়তো এতটা কষ্ট আর করতে হয় না, পিতা-মাতাদের যা হাতের নাগালের মধ্যে পাওয়া যায়। আর বর্তমান যোগাযোগ ব্যবস্থা এতটাই সচল হয়ে গেছে যা শুধু পেতে হলে টাকা প্রয়োজন। আর পূর্বের দিনগুলোতে টাকা থাকা সত্ত্বেও হয়তো এত সহজে সবকিছু জিনিস পাওয়া যায়নি। যাই হোক ভালো লাগলো আপনার এই বিস্তারিত ঘটনা জানতে পেরে।

 last year 

হ্যাঁ ভাইয়া একজন সন্তানের জন্য একজন বাবা এই পৃথিবীতে আবদার পূরণের যথেষ্ট অবদান রাখে বলতে হয় কিন্তু অন্য কেউ তা তেমন করে না।

 last year 

Coin Marketplace

STEEM 0.17
TRX 0.14
JST 0.028
BTC 58471.44
ETH 2587.53
USDT 1.00
SBD 2.44