গল্প লেখাঃ ভালবাসার গল্প- অভিমান। পর্ব-২ (শেষ পর্ব)
সবাইকে শুভ সকাল বন্ধুরা,
শীতের দিনে সবার দিনকাল কেমন যাচ্ছে? আমাদের এদিকে তো অনেক বেশি শীত। তো আপনাদের ওখানে শীতের তাপমাত্রা কেমন আশা করি খুব বেশি শীত? শীত হোক, বৃষ্টি হোক কিংবা গরম হোক আমাদের জীবনের গতিধারা জীবনের মত কর চালিয়ে নিয়ে যেতে হবে। আসলে কোন কিছুর জন্য কিছুই থেমে থাকে না। সবকিছু যার যার গতিতে চলতে থাকে। আশা করি শীত কমে যাবে সেই আশাবাদী। বন্ধুরা উপস্থিত হয়েছি আপনাদের সাথে প্রতিনিয়ত ধারাবাহিকতা বজায় রেখে ব্লগিং শেয়ার করার জন্য। অনেক ব্যস্ততার মধ্যে সময় গুলো যাচ্ছে। যদিও ব্যস্ত সময় যাচ্ছে কিন্তু প্রিয় কমিউনিটির কাজ গুলো করার জন্য সব সময় চেষ্টা করি। আজকে আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করব ভালোবাসার গল্পঃ “অভিমান” নিয়ে লেখা দ্বিতীয় পর্ব এবং শেষ পর্ব।
প্রথম পর্বে আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করেছিলাম দিনা এবং আরিফের সুন্দর একটি ভালবাসার অভিমানের গল্প।প্রথম পর্ব লিংক
আসলে আরিফ এবং দিনার মধ্যে একটা মান অভিমান চলছিল। যেই অভিমান যদিও তারা সরাসরি একে অপরের প্রতি রাগারাগি কিংবা কথা কাটাকাটির মধ্যে হয়নি। যখন দেখতে পেল আরিফ তার স্ত্রী দিনার অ্যাকাউন্টের মধ্যে বড় অংকের টাকা চলে আসে। যখন তার স্ত্রীর নামে দুটি বাড়ি উইল করে দেওয়া হয় তার বাবা। তখন তো আরিফ চিন্তায় পড়ে গেলেন। তখন দিনা কি করল তার সেই ছোট বাসাটি থেকে চলে এসেছে তার বাবার উইল করে দেওয়া বাড়িতে। সেই বাড়িটি ছিল বিশাল বড় আকারের। অনেক গুলো ফ্ল্যাট ছিল সেগুলো দিনা ভাড়া দিয়ে দিলো। এবং বড় একটি ফ্ল্যাটের মধ্যে তারা জীবন যাপন করতে শুরু করে।
আগে তো স্বামী-স্ত্রীর দুইজন এবং তাদের একটি কন্যা সন্তান নিয়ে তারা এক রুমে থাকতো। কিন্তু এখন দিনা তার মেয়েকে একটি রুমে রাখে। আর দিনা এবং আরিফ দুইজনে মিলে আরেকটি রুমে থাকে। যদিও দিনা তার মেয়েকে রাতে দেখতে যেত রুমে তা আরিফ খেয়াল করতো না। আরিফ ভাবতে থাকে দিনার মধ্যে একটা ভিন্নতা চলে আসে সেটা হচ্ছে দিনা আরিফকে এড়িয়ে চলতেছে। ছোট একটা মেয়েকে একা রুমে রাখে। আরিফ ভাবতে লাগলো মেয়েকে রাতে একা রাখে। তাছাড়াও দিনার চলাফেরার মধ্যে একটু ভিন্নতা চলে আসে। এটা আসলে স্বাভাবিক দিনার হাতে যখন বেশি পরিমাণ টাকা চলে আসে তখন সে তার পছন্দমত জিনিস পত্র কেনাকাটা করতেছে। সেই চলে যায় মার্কেটে এদিক-ওদিকে। যখন টাকা পেল তখন দিনা চিন্তা করল যে তার একটি প্রাইভেট গাড়ির দরকার।
তখন দিনা একটি বড় এমাউন্টের টাকা দিয়ে অনেক ভালো মানের একটি গাড়ি কিনে নিলো। সে গাড়িটি দিয়ে দিনা আরিফকে দিল অফিসে যাওয়া আসার জন্য। কিন্তু আরিফ তো সেই গাড়ি নিয়ে সন্তুষ্ট নয়। গাড়ি নিয়ে যখন আরিফ অফিসে যাইতো তখন অর্ধেক রাস্তায় যেয়ে গাড়ি থেকে আরিফ নেমে যেত। যাতে আরিফের অফিসের কলিগরা হাসাহাসি না করে বউয়ের টাকা দিয়ে কিনা গাড়ি দিয়ে অফিসে আসে। যদিও দিনা সে খবর গুলো তার ড্রাইভার এর কাছ থেকে জেনে নিতো গাড়ি থেকে নেমে যেত আরিফ। কিন্তু সেই কারণে দিনা আরিফের সাথে আরো বেশি অভিমান করে। এই নিয়ে দিনা আরিফের সাথে এমনি এমনি কথা বলা বন্ধ করে দিল। আর সকালে নাস্তা দেওয়ার জন্যও ঘুম থেকে ওঠতো না দিনা।
এভাবে দুইজনের মধ্যে যখন দূরত্ব বৃদ্ধি হতে থাকে দিনা চিন্তায় পড়ে গেল। আসলেই যে টাকার কারণে তাদের সংসারের অশান্তির সৃষ্টি হচ্ছে সেটা দিনা একদম মন থেকে মেনে নিতে চাই না। আরিফ আসলে বুঝতে পারিনি যে দিনার মধ্যে কোন পরিবর্তন আসেনি। আরিফ নিজে নিজে ভয় পাচ্ছিল দিনার এত বেশি টাকা। হয়তো কোন একদিন দিনা তাকে ছেড়ে দিয়ে যদি চলে যায় সেজন্য। এরমধ্যে দিনা সিদ্ধান্ত নিল তার সমস্ত জায়গা সম্পদ সব আরিফের নামে লিখে দেবে। তাদের মধ্যে আগের মত একটি সুন্দর পরিবেশ তৈরি করবে। আসলেই দিনার মধ্যে কোন পরিবর্তন আসেনি তবে দিনা দেখছিল তার স্বামী আরিফের অবস্থা গুলো। কিন্তু যখন আরিফের এই ধরনের ভয়-ভীতির কথা জানতে পারে তখন দিনা এই সিদ্ধান্ত নিল। দিনা চাই তাদের মধ্যে কোন ধরনের মান-অভিমান থাকবে না।
সেই আগের মত তিন জনের সংসারে যেন সুখ শান্তিতে ভরে যায়। সেই সিদ্ধান্ত নিল এবং চিন্তা করল বিষয় গুলো সেই আরিফের সাথে খোলামেলা আলোচনা করবে। এভাবে দুইজনের সংসার আগের মতই সুখে শান্তিতে ভরে যায় আবার একদিন। মূল কথা হলো আসলে টাকা মানুষের জীবনে সুখ দেয় না। অতিরিক্ত টাকা মানুষের জীবনে অশান্তির কারণ। যা আরিফ এবং দিনার জীবনের ঘটে যাওয়া বিষয় গুলো থেকে বোঝা যায়। সুখে শান্তিতে জীবন যাপন করতে হলে যতেষ্ট পরিমাণ অর্থের প্রয়োজন হয় না। আশা করি আমার গল্প আপনাদের কাছে ভালোই লাগলো বন্ধুরা।
লেখার উৎস | কাল্পনিক |
---|---|
ইমেজ সোর্স | ভিক্টিজি ডট কম |
অবস্থান | কক্সবাজার, বাংলাদেশ |
ক্যাটাগরি | ভালবাসার- গল্প |
সবাইকে অনেক ধন্যবাদ সময় দিয়ে আমার ব্লগটি ভিজিট করার জন্য।
![268712224_305654151337735_1271309276897107472_n.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmUD3WR1TT66vwU4urXWaDDDT53AxDyK2LK8qqZmeDdiKb/268712224_305654151337735_1271309276897107472_n.png)
🥀আল্লাহ হাফেজ সবাইকে🥀
আমি সামশুন নাহার হিরা। আমার ইউজার আইডি @samhunnahar। আমি আমার বাংলা ব্লগে কাজ করছি বাংলাদেশের কক্সবাজার থেকে। আমি বাংলা ভাষায় লিখতে-পড়তে অনেক ভালবাসি। রান্না করতে আমি অনেক পছন্দ করি। তাছাড়া সময় পেলে ভ্রমণ করি আর প্রকৃতিকে অনুভব করি। ফটোগ্রাফি করতে আমার ভীষণ ভাল লাগে। আমি মাঝে মাঝে মনের আবেগ দিয়ে কবিতা লেখার চেষ্টা করি। আমার প্রিয় শখের মধ্যে তো গান গাওয়া অন্যতম। আমার মনের ভাব বাংলায় প্রাকাশ করতে পেরে অনেক আনন্দিত। তার জন্য আমার প্রাণের/ভালবাসার কমিউনিটি "আমার বাংলা ব্লগ"কে অনেক ভালবাসি।
এই গল্পটার প্রথম পর্ব আমার পড়া হয়েছিল। তাই আজকে শেষের পর্ব টা পড়তে ও আমার কাছে খুব ভালো লেগেছে। আসলে টাকা-পয়সার কারণেই একটা সংসার ভেঙে যায়। টাকা পয়সার কারণে মানুষের সুখের সংসারটাই নষ্ট হয়ে যায়। দিনা কিন্তু একটুও পরিবর্তন হয়নি, তবে আরিফ ভেবেছিল দিনা হয়তো টাকা পয়সা পেয়ে তার থেকে দূরে সরে যাচ্ছে এবং নিজের মত থাকতেছে। আর এসব কারনে নিজেদের মধ্যে অভিমান সৃষ্টি করেছিল। খুব সুন্দর করে লিখেছেন।
আমি মনে করি প্রয়োজনের তুলনায় অতিরিক্ত সম্পদ আসলে কোন কাজে আসে না। শুধু শুধু মানুষের অশান্তির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। আমার পোস্ট পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
এই গল্পের প্রথম পর্ব আমি পড়েছিলাম। আজকে এর শেষ পর্ব পড়ে খুবই ভালো লাগলো৷ টাকা পয়সা থাকলে সবকিছু করা যায় না। অনেক টাকা পয়সা বেশি থাকার কারনে সংসার নষ্ট হয়ে যায়৷ এখানে আরিফ সাহেব ভেবেছিল দিনা টাকা পেয়ে তার থেকে দূরে সরে যাচ্ছে এবং সে পরিবর্তন হয়ে গিয়েছে। এই কারণে তাদের মধ্যে অভিমানের সৃষ্টি হয়। খুব ভালোভাবে আপনি এই গল্পের সমাপ্তি ঘটিয়েছেন৷ অনেক ভালো লাগলো ৷
অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া প্রথম পর্ব টি পড়েছিলেন এবং দ্বিতীয় পর্ব টি পড়লেন ভাল লাগলো।
https://twitter.com/nahar_hera/status/1747971556343758861?t=9NpafQSyRHzulSX0yTCYLw&s=19