স্কুল জীবনের স্মৃতিচারণঃ পরিশ্রম ও ভালোবাসা! পর্বঃ- ১ // ১০% প্রিয় লাজুক খ্যাঁকের জন্য
১৩ই পৌষ, ১৪২৮ বঙ্গাব্দ
প্রসঙ্গ: "স্কুল জীবনের স্মৃতিচারণঃ পরিশ্রম ও ভালোবাসা! পর্বঃ- ১" |
---|
আসসালামুয়ালাইকুম, আশা করি সবাই ভালো আছেন?আমিও আলহামদুলিল্লাহ ভালোই আছি। টাইটেল ও থ্যাম্বনেইল দেখে হয়তো আপনারা বুঝে গেছেন আজকে আমি কি নিয়ে আলোচনা করবো।আজকে আমি আমার সম্পূর্ন ব্যক্তিগত অভিব্যক্তি আপনাদের সাথে তুলে ধরবো। বিষয়টি অনেক গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে। তো বন্ধুরা আর সময় নষ্ট না করে চলুন শুরু করা যাক।
আমি আজকে থেকে আমার স্কুল লাইফের কিছু স্মৃতিচারণ আপনাদের সঙ্গে পর্ব আকারে শেয়ার করব। এই স্মৃতিগুলো সুখময় ও হতে পারে, আবার কষ্টদায়ক স্মৃতি ও হতে পারে। তবুও চেষ্টা করব নিজের এই অব্যক্ত স্মৃতিগুলো আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করার। তারই ধারাবাহিকতায় আজকের প্রথম পর্বটি লিখতে শুরু করলাম।
আমি স্কুল লাইফে অর্থাৎ মাধ্যমিকে ক্যান্টনমেন্টে পড়ালেখা করেছি তো সেই সুবাদে সেখানকার সকল নিয়ম-নীতি আমি শুরু থেকেই শিখেছি। যেহেতু আমার বেড়ে ওঠা ক্যান্টনমেন্টে সেহেতু ক্যান্টনমেন্টে যা যা হয় তা প্রত্যক্ষভাবেই দেখে দেখেই বড় হয়েছি। ধরতে গেলে অর্ধেক আর্মি হয়ে গেছি। যেহেতু স্কুল লাইফ শেষ করার প্রায় তিন বছর হয়ে গেল সেহেতু এই সব স্মৃতিগুলো আমাকে এখন খুব কাঁদায়। এখন এই স্মৃতি গুলো মনে পড়লে ইচ্ছে হয় যেন আবারো ফিরে যাই সেই স্কুল জীবনে। কিন্তু বাস্তবে সেটা আর সম্ভব নয়।
একদিন আমাদের যথাসময়ে স্কুল ছুটি দেয়। তো আমরা কিছু বন্ধুরা মিলে গ্রুপ স্টাডি করে যখন বাসায় ফিরতে ছিলাম ক্যান্টনমেন্টের মধ্য রাস্তা দিয়ে। এমন সময় একটি কাহিনী দেখে আমরা সবাই হতবাক হয়ে যাই। এতটা পরিশ্রমী কেউ কি হতে পারে? সত্যিই আমরা সবাই অবাক হয়ে দেখতেছিলাম। কিছু সময়ের জন্য আমরা রাস্তার পাশে দাড়িয়ে শুধু সেই কাহিনী গুলো দেখতে ছিলাম। জীবনে বাঁচতে গেলে এবং দেশকে রক্ষা করতে হলে অনেক কঠোর পরিশ্রমী হতে হয়। কিন্তু মুখে বললেই যে পরিশ্রমী হওয়া যায় তা কিন্তু নয়।
আমরা দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে যেটা দেখছিলাম সেটা হচ্ছে কিছু নতুন আর্মি সদ্য জয়েন করেছে মাত্র, তো তাদের প্রথম রাউন্ড এর ট্রেনিং হচ্ছিল। এজন্য যতজন আর্মি রয়েছে তাদের ট্রেনিং হিসেবে পুরো ক্যান্টনমেন্ট রাউন্ড করে এক দৌড়ে শেষ করতে হবে। যারা পারবেনা বা দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে একটু বিশ্রাম করবে তাদের জন্য রয়েছে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা। এই শাস্তিগুলো যে তৎক্ষণাৎ ভাবেই দেওয়া হয় সেটা আমরা প্রত্যক্ষভাবে দেখতে পেরেছি। প্রতিটি রাস্তার মোড়ে একজন করে ট্রেইনার দাঁড়িয়ে ছিল তো যারা যারা ঠিক মত দৌড়াতে পারছিল না তাদের নিতম্বে জোরে জোরে মোটা লাঠি দিয়ে মাইর দিচ্ছিল। তো সেটা দেখে আমরা সবাই আরো আতঙ্কে পড়ে যাই। আর্মিতে জয়েন করলে যে এত কষ্ট সহ্য করতে হয় তা আমাদের আগে জানা ছিল না। এটাতো ছিল শুধুমাত্র প্রথম রাউন্ডের ট্রেনিং। দ্বিতীয় পর্যায়ে যে আরও কত কঠিন ট্রেনিং বাকি আছে তা আমাদের জানা ছিল না। একটা ক্যান্টনমেন্টের আয়তন অনেক বড় হয় আর সেই ক্যান্টনমেন্ট রাউন্ড করে দৌড়ানো তাও আবার এক দমে। সেটা হেলা করার মত কোন বিষয় নয়। কিন্তু একজন সৈনিক নিজের দেশকে রক্ষা করার প্রতিজ্ঞা করার পর থেকে এত পরিশ্রম সহ্য করে যায়।
আসলে সেই দিনের পর থেকে আমরা বুঝতে শিখেছি যারা দেশরক্ষায় নিয়োজিত থাকে তারা কত বড় ত্যাগ স্বীকার করে। কত বড় পরিশ্রম করে থাকে। আসলে সেই দিনের পর থেকে তাদের প্রতি আমার সম্মান শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা বহুগুণে বেড়ে গেছে। আসলে ক্যান্টমেন্টে বড় হয়েছি তো সবকিছু সহজেই চোখের সামনে দেখতে পেয়েছি এবং বুঝতে শিখেছি নিজের দায়িত্ব ও কর্তব্য নিয়ে।
ভালোবাসা, শ্রদ্ধা ও সন্মান জানাই প্রতি দেশের প্রতিটি সৈনিককে। যারা নিজের মাতৃভূমিকে রক্ষা করার জন্য নিজের জীবনকে বলিদান করে দিতে কৃপণতা করে না।
আশা করি, আমার এই ব্লগটি আপনাদের ভালো লেগেছে। সকলের সুস্বাস্থ্য কামনা করে এখানেই শেষ করছি।
আমার সম্পর্কে কিছু কথাঃ-
আমি মোঃ আবু হেনা সরকার। আর আমার ডাক নাম সাগর। আমি একজন স্বাধীন চেতনাময়ী ছেলে। যে সবসময় স্বাধীনতাকে প্রাধান্য দেই। আমি লিখতে, পড়তে, ফটোগ্রাফি, ভিডিওগ্রাফি, বিশ্লেষন এবং কোনো অজানা বিষয় সম্পর্কে জানতে ভীষণ আগ্রহী ও ভালোবাসি। আমি একজন মিশুক ছেলে। সবার সাথে মিশতে আমার অনেক ভালো লাগে।
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
আপনি খুব সুন্দর ভাবে আপনার স্কুল জীবনের প্রথম পর্ব আমাদের মাঝে তুলে ধরেছেন। দেশরক্ষার জন্য সেনাবাহিনী আমাদের দেশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। তাদের দক্ষ করে , যোগ্য হিসেবে তৈরি করার জন্য প্রতিনিয়ত বিভিন্ন ধরনের ট্রেনিং এর ব্যবস্থা করা হয়েছে। পরিশ্রম এবং কষ্ট যদি একই সূত্রে আমরা না গেঁথে নিতে পারি তাহলে কখনোই ভালো কিছু আমি করতে পারবোনা। আমিও যেহেতু ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজে পড়াশোনা করেছি সেই ক্ষেত্রে বিষয়গুলো আমিও উপলব্ধি করেছি এবং স্বচক্ষে দেখেছি। তার প্রতিনিয়ত ও কঠোর পরিশ্রমের মধ্যে দিয়ে নিজেকে ছাড়িয়ে গিয়েছে নিজেকে দেশের জন্য প্রস্তুত করেছে। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই এত সুন্দর একটি অনুভূতি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ আপু এত সুন্দর এবং গঠনমূলক মন্তব্য করার জন্য।
জি ভাই ঠিক কথাই বলেছেন আর আপনাকে জানাই আমার অন্তরের অন্তস্থল থেকে শুভেচ্ছা ও ভালোবাসা। আপনার বড় ভাইয়ের জন্য রইল আমার অন্তরের গহীন থেকে এক বুক ভালোবাসা।
সৈনিকদের প্রশিক্ষণের যে ঘটনা আপনি বর্ণনা করলেন একই রকম ঘটনা আমিও দেখেছি। তাৎক্ষণিকভাবে আমার খুবই খারাপ লেগেছিল কিন্তু পরবর্তীতে বুঝতে পেরেছি যে কঠোরতম প্রশিক্ষণ না পেলে দেশরক্ষার জন্য তারা যোগ্য সৈনিক হয়ে উঠবে না। অসংখ্য ধন্যবাদ আপনার স্কুল জীবনের গল্প শোনানোর জন্য।
আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই এত সুন্দর ও গঠনমূলক মন্তব্য করার জন্য।
আপনি ঠিক বলেছেন ভাই দেশের স্বার্থ রক্ষার্থে তারা দিন রাত অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছে। তাদের এই পরিশ্রম আসলে ভুলার মতো নয়। আপনি স্কুল জীবনে ভালো একটি শিক্ষণীয় দিক আমাদের সাথে শেয়ার করেছেন। আর্মি বা অন্যান্য সরকারি চাকরি যারা করে তাদের ট্রেনিং আসলেই অনেক কষ্টের হয়। আপনাকে ধন্যবাদ ভাই আপনার স্কুল জীবনের অনুভূতি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
অন্যান্য সরকারি চাকরিজীবীদের এককালীন ট্রেনিং হয় শুধুমাত্র। কিন্তু আর্মিদের হয় প্রতি বছর। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই এত সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য
ভাই আপনার জন্য শুভকামনা রইল, ক্যান্টনমেন্টে পড়াশোনার সুযোগ পেয়েছেন জেনে আমার অনেক ভালো লাগলো, ক্যান্টনমেন্টে পড়াশোনার সুযোগ সবাই পায়না এবং সবার যোগ্য হয়ে উঠে না, আপনার স্কুল জীবনের স্মৃতিচারণ পর্ব প্রথম থেকে অনেক কিছু শিখতে পারলাম যা বাইরের কোন ছাত্র-ছাত্রী লাভ করতে পারে না এমনকি জনসাধারণের ধারণার বাইরে। শুভকামনা রইল ভাই আপনার জন্য।
গঠনমূলক এত সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই।
ভাইয়া, আপনি খুবই চমৎকার ভাবে আপনার স্কুল জীবনের গল্প গুলো আমাদের নিকট উপস্থাপন করেছেন। দেশরক্ষার জন্য আমাদের দেশের সেনাবাহিনী অতন্ত্র প্রহরী হিসেবে কাজ করছে রাতদিন। তবে এটা সত্য কথা যে সেনাবাহিনী দের ট্রেনিং খুবই কষ্টের। আর তারা অতি কষ্টের ট্রেনিং করে দক্ষ হাতে দেশকে রক্ষা করার জন্য সব সময় প্রস্ততি নিয়ে থাকে। সুন্দর একটি পোষ্ট উপহার দেয়ার জন্য আপনাকে জানাই অসংখ্য ধন্যবাদ ও মোবারকবাদ। আপনার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইল।