স্কুল জীবনের স্মৃতিচারণঃ "বিতর্ক প্রতিযোগিতা" পর্বঃ- ০৩ // ১০% প্রিয় লাজুক খ্যাঁকের জন্য
০৬ই মাঘ, ১৪২৮ বঙ্গাব্দ
প্রসঙ্গ: স্কুল জীবনের স্মৃতিচারণঃ "বিতর্ক প্রতিযোগিতা" পর্বঃ- ০৩ |
---|
আসসালামুয়ালাইকুম, আশা করি সবাই ভালো আছেন?আমিও আলহামদুলিল্লাহ ভালোই আছি। টাইটেল ও থ্যাম্বনেইল দেখে হয়তো আপনারা বুঝে গেছেন আজকে আমি কি নিয়ে আলোচনা করবো।স্কুল জীবনের স্মৃতিচারণঃ এর তৃতীয় পর্বে আপনাদের স্বাগতম। আশা করি, আপনারা যারা এই পর্বটি পড়তেছেন, তারা আগের পর্বটি পড়ে নিয়েছেন। যারা এখনো পড়েন নি, তাদের জন্যে আরেক বার দিলাম। এখানে ক্লিক করুন!
ডিবেট বা বির্তক প্রতিযোগিতার যাবতীয় শিক্ষার হাতেখড়ি আমি আমার স্কুলের মাধ্যমেই পেয়েছি। স্কুল লাইফে আমাদের একটা ডিবেট টিম ছিলো এবং সেই টিমকে পারফেক্ট করতে তুলতে যা করার লাগতো। তাঁর সব কিছুই আমাদের সন্মানীয় শিক্ষকমহাদয়গণ আমাদের শিখিয়ে দিয়েছিলেন। মূলত আমার এই ডিবেট ক্যারিয়ার এখান থেকেই শুরু হয়েছিলো
আপনাদের একটা কথা বলে রাখা ভালো, শুরুর দিকে আমি খুব নার্ভাস ফিল করতাম। সবার সামনে নিজেকে কথার মাধ্যমে রিপ্রেজেন্ট করার সময়ে ভয় খেয়ে যেতাম। যার কারণে যা বলতে যেতাম, তাঁর অধিকাংশই ঘুলিয়ে ফেলতাম। তো এই ভয়কে কাটিয়ে তোলার জন্যে আমাদের শিক্ষকরা অনেক কাজ করেছেন এবং বিশেষ করে আমাকে গাইড করেছিলেন। এরপরেও ডিবেট করার সময়ে ভয় পেতাম, কিন্তু তা মুখে প্রকাশ পেত না। তো মূলত এই ট্রিক্সগুলোই আমাদের শিক্ষকগণ দিয়েছিলেন। যদিওবা এখনও কথা বলার সময় নার্ভাস অনুভব হয়। যদি তখন ওই টিমে না থাকতাম তাহলে আজকেও মনে হয় কথা বলার দিক থেকে ভীতুর ডিম থেকে যেতাম।
তো যাই হোক, আসল টপিকে ফিরে আসি। আমি তখন নবম শ্রেণিতে পড়তাম। তো সেই সময়ে হঠাত করে আন্তঃ স্কুল বির্তক প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। সেই সুবাদে আমাদের নবম শ্রেণি হতে আমি ও আমাদের ক্লাস টপার ফ্রেন্ড সিলেক্ট হয়েছিলো, সেই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করার জন্য। মূল আয়োজনের আগে আমাদের স্কুল থেকে বির্তক প্রশিক্ষণের জন্য ক্লাসের মধ্যেই বির্তক প্রতিযোগিতার আয়োজন করে। সেখানে একদলে থাকি আমি ও আমার সেই বন্ধু সহ আরো দুজন এবং অন্য টিমে থাকে আরো চার জন।
তো চার জন আর চার জন মোট ৮জন কে নিয়েই সেদিন শুরু হয়েছিলো বির্তক প্রতিযোগিতার অনুশীলনমূলক আয়োজন। সেই আয়োজনটি ভালো ভাবে চলছিলো। কিন্তু হঠাত করেই ঘটে বিপত্তি। ঘটনা আমি আপনাদের আগেই বলেছি, আমি তখনো নার্ভাস হয়ে যেতাম কথা বলার সময়। তো সেদিন ও হয়ে গিয়েছিলাম। তো বির্তক চলাকালীন সময়ে নার্ভাস ফিলের কারণে আমার মুখ ফসকে যেটা বলার দরকার ছিলো সেটা না বলে অন্য একটি শব্দ বলে ফেলি। যেটা বলা মোটেও উচিত হয় নি সেখানে।
আমি বর্জ্যপাত বলতে গিয়ে অন্যকিছু বলে ফেলেছিলাম, যেটা শুনার পর ক্লাসের সবাই হেসে উঠেছিলো। আমি তখন মোটেও প্রস্তুত ছিলাম না, হুট করেই এমনটি হয়ে গিয়েছিলো। তো যাই হোক, তারপর স্যার ম্যাডাম রা চলে যাওয়ার পর আমার ক্লাসমেটরা এই নিয়ে অনেক হাসি-তামাসা করেছিলো। যেটা আমি ইচ্ছা করে বলিও নি।
এরপর এলো মাহেন্দ্রক্ষণ। আমি, আমার বন্ধু ও বড় একটি ভাই ও বোন মোটে চারজন ও আমাদের গাইড টিচার এই নিয়ে পাঁচ জনের টিম নিয়ে গেলাম আমাদের উপজেলার আরেকটি সনামধন্য বিদ্যাপিটে। আমাদের সেদিন মনোবলের কোনো কমতি ছিলো না। আত্মবিশ্বাসে পরিমাণ ছিলো অনেক বেশি। এর কারণ হচ্ছে, আমাদের শিক্ষকগণ আমাদেরকে অনেককিছুই বুঝিয়ে দিয়েছিলেন। যার কারণে আমাদের কনফিডেন্স লেভেল হাই ছিলো।
আমরা সেদিন আর কোনো ভূল করি নি। আমাদের সবার পারফোমেন্স ছিলো দেখার মত। আমাদের সাথে যেনো কেউ বির্তক দিয়ে লাগতেই পারছিলো না। আর ফলস্রুতিতে আমরা হয়ে যাই বিজয়ী দল। আর এই খবর শোনার পর আমাদের প্রধান শিক্ষক মহাদয় অনেক খুশি হয়ে গিয়েছিলেন এবং আমাদের খাওয়া দাওয়ার জন্যে অনেক ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন। যার কারণে আমরা সবাই অনেক আনন্দে আত্মহারা হয়ে গিয়েছিলাম। তো এই ছিলো আজকের পর্বটি।
আশা করি, পরবর্তী পর্বটি খুব দ্রুতই আপনাদের সামনে নিয়ে আসতে পারবো। ধন্যবাদ
আশা করি, আমার এই ব্লগটি আপনাদের ভালো লেগেছে। সকলের সুস্বাস্থ্য কামনা করে এখানেই শেষ করছি।
আমার সম্পর্কে কিছু কথাঃ-
আমি মোঃ আবু হেনা সরকার। আর আমার ডাক নাম সাগর। আমি একজন স্বাধীন চেতনাময়ী ছেলে। যে সবসময় স্বাধীনতাকে প্রাধান্য দেই। আমি লিখতে, পড়তে, ফটোগ্রাফি, ভিডিওগ্রাফি, বিশ্লেষন এবং কোনো অজানা বিষয় সম্পর্কে জানতে ভীষণ আগ্রহী ও ভালোবাসি। আমি একজন মিশুক ছেলে। সবার সাথে মিশতে আমার অনেক ভালো লাগে।
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
স্কুলজীবনে বিতর্ক প্রতিযোগিতা গুলো এখন অনেক মিস করি। স্কুল জীবনে থাকতে বড় আপু ভাইদের সঙ্গে ও অনেক বিতর্ক প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে অনেক কিছু জানতে করেছিলাম। বিতর্ক প্রতিযোগিতা একজন ছাত্র জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটি দিক। ধন্যবাদ আপনাকে এত সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে উপস্থাপন করার জন্য।
আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ খুব সুন্দর একটি মন্তব্য করেছেন।
স্কুল জীবনে ডিবেট নিয়ে আমারও বেশ দারুণ কিছু মূহুর্ত ছিল। তবে আমি কখনোই স্কুলের সেরা বিতর্কদলে জায়গা করে নিতে পারিনি। আমার দৌড় ছিল ঐ ক্লাস মেটদের বিতর্কের মধ্যেই সীমাবদ্ধ।
এবং নার্ভাস ফিল করলে অনেক অনাকাঙ্ক্ষিত ভূল হবে এটাই স্বাভাবিক যেটা আপনার ক্ষেএেও ঘটেছিল। যাইহোক ভাই ভালো লাগল আপনার ডিবেট এর কাহিনী টা পড়ে।
গঠনমূলক মন্তব্য করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
ওয়াও অসাধারন একটি পোস্ট পেলাম। যার মাধ্যমে আমাদের নিজেদের স্কুল জীবনের বিতর্ক প্রতিযোগিতার কথা মনে পড়ে গেল। আপনার পোস্টটা দেখে আমার স্কুল জীবনের অনেক কথা মনে পড়ে গেল। আর আপনি ঠিকই বলেছিলেন এরকম পরিস্থিতিতে নার্ভাস ফিল বেশি লাগে। আপনি মুখ ফসকে অন্য কথা বলে ফেলেছিলেন বলে আপনার ক্লাসের বন্ধুরা সবাই হাসাহাসি করছিলেন। আসলে এটা মোটেই কাম্য নয়। এরকম পরিস্থিতিতে হাসাহাসির না করে সান্তনা দেওয়াটা সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন। আপনার পুরো কাহিনী টা শুনে অনেক ভালো লাগলো। অনেক ধন্যবাদ আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ আপু খুব সুন্দর একটি গঠনমূলক মন্তব্য করেছেন।