গল্প হলেও সত্যি ••আত্মহত্যা•• |||| 10% Beneficiary To @shy-fox 🦊

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago

হ্যালো বন্ধুরা।
সবাই কেমন আছেন? আশা করছি মহান সৃষ্টিকর্তার রহমতে ভালো আছেন সবাই। আমিও আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি।

freedom-2053281.jpg

Image source

"তৃপ্তি" ডাক্তার দম্পতির একমাত্র মেয়ে। সবে অষ্টম শ্রেণি ফাইনাল পরীক্ষা দিয়েছে। পরীক্ষা শেষ হতে না হতেই বাবা-মা ক্রমাগত বোঝা যাচ্ছে তৃপ্তি কেও ডাক্তার হতে হবে তাই সাইন্স নিয়ে পড়তে হবে।

বাবা মা হিসেবে তারা তৃপ্তির পড়াশোনার বিষয়ে খুবই কড়া। এখন থেকেই যেনো তৃপ্তির ভবিষ্যতের কথা ভেবে তাদের রাতের ঘুম উড়ে গিয়েছে। তাদের ধারণা তারা দুজনের ডাক্তার, তাই তৃপ্তিরও ডাক্তার হওয়ার বিকল্প অন্য কিছুই নেই।

কিন্তু তৃপ্তির স্বপ্ন অন্য কিছু। সে ভবিষ্যতে নিজেই নিজের জন্য কিছু করতে চাই। এবং সে চায়, সে যাতে অন্য দশজনের ও রুজি রোজগারের ব্যবস্থা করে দিতে পারে। তাই সে ব্যবসায় শিক্ষা নিয়ে পড়তে চায়।

মেয়ের কথা শুনে ডাক্তার দম্পতি রেগে গিয়ে একশেষ। তাদের মাথায় যেন আকাশ ভেঙ্গে পড়লো। তৃপ্তির মা তাকে রেগে গিয়ে বলল, তৃপ্তি যদি সাইন্স না নেয় আর ভবিষ্যতে ডাক্তার না হয় তাহলে তারা কোথাও মুখ দেখাতে পারবে না।

তৃপ্তি তার বাবা-মাকে অনেক বোঝানোর চেষ্টা করল। কিন্তু কোন কাজ হলোনা। তার মা তার দিকে রাগান্বিত ভাবে তাকিয়ে বললেন-তোমার ভবিষ্যতের কথা ভেবেই আমরা এ সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তোমাকে কিছু জিজ্ঞেস করা হয়নি। তোমাকে যা বলা হয়েছে তুমি তাই করবে। তুমি সাইন্স নিবে এবং ভবিষ্যতে ডাক্তার হবে। এভাবেই মানসিকভাবে প্রস্তুত হও।

নবম শ্রেণীতে উঠে সাইন্স নেয়া ছাড়া আর কোনো উপায় ছিল না তৃপ্তির। কিন্তু এই বিষয়ে তার একদমই মন বসে না পড়ায়। এদিকে তার বাবা-মা তাকে ক্রমাগত চাপ দেয় ভালো ফলাফল করার জন্য। একেতো অপছন্দের বিষয় তার মধ্যে মানসিক চাপ। এই দুইয়ে মিলে তৃপ্তি কোন কিছুই সামলে উঠতে পারছিলো না। এর ফলে সে পড়াশোনায় একদমই মনোনিবেশ করতে পারেনি এবং পরীক্ষায় ও আশানুরূপ ফলাফল আনতে পারেনি।

তৃপ্তির বাবা-মা পরীক্ষার ফলাফল জানতে চাইলে তৃপ্তি খুব ভয়ে ভয়ে তার পরীক্ষার ফলাফল বাবা-মাকে জানায়। ফলাফল শোনার পর তৃপ্তির বাবা-মা রেগে গিয়ে মেয়েকে অনেক কথা শুনিয়ে দিল। তৃপ্তি এ সবকিছু সহ্য করতে না পেরে আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়।

image.png

গল্পটি কাল্পনিক হলেও এ ধরনের ঘটনা প্রতিনিয়ত আমাদের চারপাশে ঘটে যাচ্ছে। ছেলেমেয়েদের ভবিষ্যৎ খুব বেশি ভালো করার চিন্তায় তাদের ভবিষ্যত নষ্ট করে দেয়া হচ্ছে। এই ধরনের চিন্তাভাবনার জন্যে শত শত স্বপ্ন নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। ব্যতিক্রম আছে, তবে এরকম ঘটনা অস্বীকার করা যাবে না। বাবা-মার উচিত ছেলেমেয়েদের ইচ্ছাকে সম্মান করা এবং তারা যেভাবেই বা যে বিষয়ে পড়াশোনা করতে চায় সেদিকেই তাদের উৎসাহ দেয়া। জোর করার প্রশ্নই আসবেনা। এতে করেই তাদের ভবিষ্যৎ অনেক ভালো হবে।

আজ এখানেই শেষ করছি। সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ সময় নিয়ে কষ্ট করে আমার লেখা টি পড়ার জন্য। আবার দেখা হবে নতুন কিছু নিয়ে নতুন একটি পোস্ট এ। সবাই ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন ও সাবধানে থাকবেন।

Sort:  
 2 years ago 

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
Please check my new project, STEEM.NFT. Thank you!
default.jpg

 2 years ago 

গল্প হলেও সত্যি ঘটনাটি জানতে পেরে সত্যিই খুব খারাপ লাগলো। কেননা বর্তমানে আমরা সময়ের সাথে পাল্লা দিতে গিয়ে আমরা আমাদের সন্তানদের ইচ্ছার কথা কখনই কর্ণপাত করিনা। আর তাই তৃপ্তির মত স্বাধীনচেতা মানুষের কপালে বোধহয় এরকমই দুর্ভাগ্য লেখা হয়ে থাকে। তৃপ্তির বাবা-মা ডাক্তার দম্পতি হওয়া সত্বেও অনিচ্ছার বোঝা তৃপ্তির মাথায় চাপিয়ে দেওয়া মোটেই ঠিক কাজ করেনি। আর তাই অবশেষে তৃপ্তি তার জীবন দিয়ে অনিচ্ছার বোঝা ঝেড়ে ফেলে দিল। হৃদয়বিদারক গল্পটি পড়ে মনে খুব কষ্ট পেলাম। আপনার সুন্দর উপস্থাপনার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।

 2 years ago 

এরকম ঘটনা গুলো আসলেই খুব কষ্টদায়ক। আমাদের চারপাশে অহরহ এরকম ঘটনা ঘটে যাচ্ছে। সে চিন্তা ভাবনা করে এই গল্পটি লিখেছিলাম। আপনি খুব চমৎকার একটি মন্তব্য করেছেন। অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
শুভকামনা রইলো।

 2 years ago 

ঠিকই বলেছেন আপু, এই গল্পটা আমাদের চার পাশে ঘটেই যাচ্ছে। তবে আমার আব্বু আম্মু আমার উপরই দায়িত্ব দিয়েছিলেন আমি যা ভালো বুঝি সেই বিষয় নিয়েই যাতে পড়াশোনা করি। যদিও আমি সাইন্স নিয়েই পড়েছি। তবে আপনার গল্প থেকে যে সব বাবা মা তার ছেলে-মেয়েদের এমন চাপ প্রয়োগ করে তাদের অনেক কিছু শেখার আছে। ধন্যবাদ বাস্তবধর্মী একটা গল্প শেয়ার করার জন্য। ❣️

 2 years ago 

আমার আব্বু আম্মু আমাকে এই দায়িত্ব দিয়েছিলেন আমি কোন বিষয়ে পড়াশোনা করবো। আর আমি আমার ইচ্ছেতেই ব্যবসা শিক্ষা নিয়ে পড়েছিলাম।
আপনিও নিজের পছন্দ করা বিষয় নিয়ে পড়াশোনা করতে পেরেছেন এটা জানতে পেরে ভালো লাগলো।
ভালো থাকবেন ভাইয়া।

 2 years ago 

এমন গল্প এখনো বাংলাদেশের অনেক পরিবারেই দেখতে পাওয়া যায়। বাবা-মা তাদের ইচ্ছার প্রাধান্য দিতে গিয়ে সন্তানের ওপর জোরপূর্বক অনেক কিছু চাপিয়ে দেয়। আসলে যার যে বিষয়ে সহজাত দক্ষতা আছে সেটার বিকাশের সুযোগ করে দেয়াই বুদ্ধিমানের কাজ। দারুন লাগলো আপনার গল্প ধন্যবাদ।

 2 years ago 

যে বিষয় নিয়ে পড়াশোনার ইচ্ছা থাকে না, সে বিষয়ে পড়াশোনায় মনোযোগ দেয়া যায় না। এটা যেদিন বাবা-মা'রা বুঝতে পারবে সেদিনি একটি সুন্দর জাতি গড়ে উঠবে।
আপনার মন্তব্যের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া।

এবিষয়টি বিশেষ করে আত্মহত্যার বিষয়টি সম্পূর্ণরূপে আমাদের পরিবেশের উপর নির্ভর করে অহরহ ঘটছে ।আর পরিবারগুলোও পরিবেশ এর বাইরে নয় ।আমরা কেউই কারো কিছু সহজভাবে নিতে চাই না ।যার উপর যতটুকু ক্ষমতা প্রয়োগ করার সুযোগ পাই ততটুকু সুযোগই কাজে লাগিয়ে থাকি ।এজন্যই আজ লেখার পাতায় পাতায় ,ভাজে ভাজে এসব *অসম সভ্যতা" উঠে আসিতেছে ।ভালো লিখেছেন।

 2 years ago 

একদম ঠিক বলেছেন ভাইয়া, আমরা ক্ষমতা প্রয়োগ করার সুযোগ পেলেই হয়। আসলে যে ক্ষমতার অপব্যবহার করা হচ্ছে এটা বোঝেনা।
সুন্দর মন্তব্যের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।

Coin Marketplace

STEEM 0.18
TRX 0.14
JST 0.030
BTC 60115.56
ETH 3203.28
USDT 1.00
SBD 2.46