বন্ধুদের সাথে কক্সবাজার ঘুরতে যাওয়ার গল্প (তৃতীয় পর্ব)।

কেমন আছেন আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা? আমি ভালো আছি। আশাকরি আপনারা ও ভালো আছেন।


খাওয়া-দাওয়া শেষে যখন আমরা চার বন্ধু মিলে আরামবাগ পৌছালাম। তখন সেখানে যেয়ে দেখি রীতিমতো যুদ্ধ চলছে। না যুদ্ধ বলতে মারামারি বা তেমন কিছু নয়। টিকেটের জন্য যুদ্ধ। প্রচুর লোককে দেখলাম বিভিন্ন কাউন্টার কাউন্টারে ঘুরে বেড়াচ্ছে কিন্তু টিকিট পাচ্ছে না। এ অবস্থা দেখে আমরা কিছুটা শঙ্কায় পড়ে গেলাম। তারপরে আমরা চারজন দুই ভাগে ভাগ হয়ে বিভিন্ন কাউন্টারে খোঁজ নিতে লাগলাম। ভালো কোনো বাসেরই টিকিট পেলাম না। একটা সময় তো এমন মনে হচ্ছিল যে হয়তো আমাদের আর কক্সবাজার যাওয়া হবে না। তারপরেও আমরা বিভিন্ন কাউন্টারে ঘুরে ঘুরে টিকেট খুঁজতে লাগলাম। শেষ পর্যন্ত জেদ্দা এক্সপ্রেস নামে একটি গাড়ির টিকিট পেয়ে গেলাম। আমাদের ইচ্ছা ছিলো স্লিপার কোচে যাওয়ার।

1000001078.jpg

কারণ ঢাকা থেকে কক্সবাজার পৌঁছতে দীর্ঘ সময় লাগে। এই সময়টাতে যদি একটু আরামে যাওয়া যায় তাহলে জার্নির ক্লান্তিটা খুব একটা অনুভব হবে না। এই কারণেই আমরা স্লিপার বাস খুঁজছিলাম। জেদ্দা এক্সপ্রেস নামের সেই কাউন্টারে আমাদেরকে জানালো তাদের একটা বাসে চারটা সিট খালি রয়েছে। তবে সেই সিটগুলো একেবারে পেছনের দিকে। এই কথা শুনে আমি কিছুটা চিন্তায় পড়ে গেলাম। কারণ আমি আগেই তাদের কাছে জিজ্ঞেস করেছিলাম তাদের এই বাসটা কোন কোম্পানির। তারা জানিয়েছিলো অশোক লেল্যান্ডের গাড়ি। আমাদের ইচ্ছা ছিলো ভলভো, হুনদাই বা স্ক্যানিয়া এই ধরনের বাসে যাওয়ার। কারণ এই ধরনের বাস গুলো খুবই আরামদায়ক হয়ে থাকে। যাই হোক যেহেতু ভালো কোনো বাসের টিকিট পেলাম না।


1000001077.jpg

তাই জেদ্দা এক্সপ্রেসের চারটা টিকিট পেয়ে আর হাতছাড়া করিনি। টিকেট কাটা হয়ে গেলে আমরা কিছুটা নিশ্চিন্ত হলাম। আমরা যখন টিকিট কাটি তখন এগারোটার কিছু বেশি বাজে। আমাদের বাস ছিলো রাত ১২:০০ টায়। বাস যথাসময়েই উপস্থিত হয়েছিলো। বাস কাউন্টারের সামনে আসতেই কাউন্টারের লোকজন আমাদেরকে জানালো আমাদের বাস চলে এসেছে। তারপর আমরা চার বন্ধু তড়িঘড়ি করে বাসে উঠে পড়লাম। তবে বাসের ভিতর গিয়ে যখন আমাদের সিটের কাছে গিয়েছি। তখনই মনটা একেবারে খারাপ হয়ে গেলো। কারণ বাসটা দেখে আমাদের মনে হচ্ছিলো এই বাসের ফিটনেস শেষ হয়ে গিয়েছে বহু আগেই। বাসের ভেতরে সবকিছু কেমন যেন নষ্ট হয়েছিলো। দেখে বোঝা যাচ্ছিল এই বাসের কোন যত্ন নেয়া হয় না।

যাইহোক যেহেতু টিকিট কেটে ফেলেছি তাই সেই বাসেই যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলাম। আপনারা জানেন স্লিপার কোড গুলিতে নিচতলা আর দোতলায় সিটের ব্যবস্থা থাকে। আমি আর ফেরদৌস উপরের কম্পার্টমেন্টে উঠলাম। রাফসান আর রাসেল ওরা দুজন নিচের কম্পার্টমেন্টে শুয়ে পড়লো। তবে সেই বাসের ভেতর উঠে আমরা নিজেদের ভেতর নানা রকমের ফাজলামি করছিলাম। আর মনে মনে চিন্তা করছিলাম জার্নিটা মনে হয় ভয়াবহ হবে। বাসের ভেতর বেশ কিছু সমস্যা দেখতে পেয়ে আমরা সুপারভাইজার কে জানালাম। সে আমাদেরকে কাউন্টারে যোগাযোগ করার পরামর্শ দিলো। বুঝতে পারলাম সেখানে পরামর্শ করে কোনো লাভ হবে না। তাই আমরা আর কথা বাড়ালাম না। বাসটি যথা সময়ে চলতে শুরু করলো। তবে কোনো এক অদ্ভুত কারণে কিছুদূর যাওয়ার পরই বাসটি বেশ কিছুক্ষণ রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে থাকছিল। এমনটা কেন হচ্ছিল সেটা সম্বন্ধে কোনো ধারণা ছিল না। তবে মূল সমস্যা যেটা হয়েছিল সেটা হচ্ছে। সেই বাসের সাস্পেনশন ছিলো খুবই খারাপ। যার ফলে আমাদেরকে প্রচন্ড ঝাকুনি সহ্য করতে হচ্ছিলো।

আজকের মত এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।


ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত ডিভাইসহুয়াই নোভা 2i
ফটোগ্রাফার@rupok
স্থানঢাকা

logo.png



PUSS_Banner2.png



Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png

standard_Discord_Zip.gif


break .png

Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote


VOTE @bangla.witness as witness


witness_vote.png

OR

SET @rme as your proxy

witness_proxy_vote.png



🇧🇩🇧🇩ধন্যবাদ🇧🇩🇧🇩


@rupok

Sort:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

 last month 

বন্ধুদের সাথে ঘুরতে গেলে বাস একটু খারাপ হলেও মানিয়ে নেয়া যায়। ফ্যামিলি সাথে থাকলে অবশ্য বিষয় টা আরও খারাপ হতে পারে।

ধন্যবাদ আপনাকে জেদ্দা এক্সপ্রেস এ যাওয়ার অভিজ্ঞতা শেয়ার করার জন্যে।

 last month 

যাক শেষ পর্যন্ত যে বাসের টিকেট পেয়েছেন এটাই অনেক। লং জার্নিতে স্লিপার কোচের বিকল্প নেই। শুয়ে শুয়ে যাওয়া যায় বলে মনে হয় যে বাসার বেডে শুয়ে আছি। এই বছর ফেব্রুয়ারিতে ইমপেরিয়াল এক্সপ্রেস স্লিপার কোচে চড়ে কক্সবাজার গিয়ে দারুণ অভিজ্ঞতা হয়েছে। যাইহোক জেদ্দা এক্সপ্রেসে চড়ে কক্সবাজার গেলেও,আসার সময় মনে হয় ভালো কোনো স্লিপার কোচে চড়ে ঢাকায় ফিরেছেন। যাইহোক পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম ভাই।

Coin Marketplace

STEEM 0.15
TRX 0.17
JST 0.028
BTC 68886.39
ETH 2464.41
USDT 1.00
SBD 2.42