দুর্ধর্ষ গেরিলাদের দুঃসাহসিক অভিযান (চতুর্থ পর্ব)। ১০% সাইফক্স।
পূর্ববর্তী পর্বের-লিংক
চেকপোস্টের সফল অপারেশনের পর আমজাদ এবং তার দল পরে কয়েকদিন গা ঢাকা দিয়েছিলো। কিছুদিন পর যখন পরিস্থিতি শান্ত হয়ে এলো তখন আমজাদের কাছে খবর পৌঁছালো যে সবগুলো গেরিলা দল মিলে একটি মিটিং করতে হবে। সেই মিটিং-এ পুরো পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা হবে এবং প্রত্যেকটা দলকে তার কাজ বুঝিয়ে দেয়া হবে।
যথাসময়ে আমজাদ তার দল নিয়ে পূর্বপরিকল্পিত স্থানে পৌঁছলো। সেখানে গিয়ে দেখল আরো চারটি গেরিলা দল এসে উপস্থিত। সব মিলিয়ে পাঁচটি দলে প্রায় ৭০ জন এর কাছাকাছি গেরিলাযোদ্ধা আছে। প্রথমে অস্ত্রাগারে যারা রেকি করে এসেছিল তারা সবার কাছে সেখানকার পরিস্থিতি তুলে ধরল। তারা জানালো অস্ত্রাগারের সামনের দিকে প্রচুর আর্মি পাহারা দেয়। বলতে গেলে তিন দিক দিয়েই সৈন্যরা অস্ত্রাগার ঘিরে রেখেছে। শুধু পিছনের একটি দিক আছে সেখানে মাত্র ৫/৬ জন সৈন্য থাকে পাহারায়। যদি কিছু করতে হয় তাহলে এদিক দিয়েই আক্রমণ করতে হবে।
পরিকল্পনা হলো পিছন দিয়ে আক্রমণ করা হবে। পিছনে পাহারায় যে কয়জন পাক আর্মি থাকবে হঠাৎ আক্রমণ করে তাদেরকে কাবু করে তারপর অস্ত্রাগার গুলোতে বিস্ফোরক সেট করা হবে। তারপর নিরাপদ দূরত্বে এসে বিস্ফোরণ ঘটাবে তারা।যাতে অস্ত্রাগার গুলো সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে যায়। এই অস্ত্র ধ্বংস করতে পারলে ঢাকার ভেতরে পাক আর্মি অনেক দুর্বল পড়বে। কারণ এটিই তাদের মূল অস্ত্রাগার।
তাদের পক্ষে আর এখন পাকিস্তান থেকে নতুন রসদ পাওয়া সম্ভব নয়। কারণ ইন্ডিয়ান সেনাবাহিনী, নৌ বাহিনী এবং বিমান বাহিনী বাংলাদেশে আসার পথ অবরোধ করে রেখেছে। যার ফলে এই অস্ত্র ধ্বংস করতে পারলে ঢাকার ভেতরে অবস্থানরত পাক আর্মিরা অনেক দুর্বল হয়ে পড়বে। পরিকল্পনা করা হলো হঠাৎ আক্রমণ করে অতি দ্রুততার সাথে সফল করা হবে।
তারপর দলের প্রত্যেক কে আলাদা আলাদা অস্ত্র বুঝিয়ে দেয়া হলো। যেই দুই ট্রাক অস্ত্র ঢাকায় এসেছিল সেই অস্ত্র গুলি এই পাঁচটি দল নিজেদের ভেতর ভাগ করে নিলো। এই দুই ট্রাক অস্ত্রের ভিতরে ছিল এলএমজি, বহনযোগ্য রকেট লাঞ্চার ছিল 6t লঞ্চার লঞ্চার কয়েকটি গ্রেনেড লঞ্চার, সাথে ছিলো কিছু অ্যাসল্ট রাইফেল, বেশকিছু গ্রেনেড আর অস্ত্রাগার গুলো ধ্বংস করার জন্য পরিমাণমতো আর ডি এক্স। আর দূর থেকে নির্দিষ্ট শত্রুকে নিশানা করার জন্য ছিল চারটি স্নাইপার রাইফেল।
প্রত্যেক দলকে অস্ত্র দিয়ে তাদের দায়িত্ব বুঝিয়ে দেয়া হলো। ঠিক হলো বিকালের দিকে আক্রমণ করা হবে অস্ত্রাগার গুলোতে। কারণ রাতে অস্ত্রাগারের চারপাশে পাহারা বাড়িয়ে দেয়া হয়। পিছনের দিকে দিনের বেলায় মাত্র ৫/৬ জন সৈন্য পাহারায় থাকে। যার ফলে ওরা ঠিক করল সন্ধ্যার একটু আগে আক্রমন করা হবে।
এত অস্ত্র আনার একমাত্র কারণ হচ্ছে যেহেতু ওরা একটি ক্যাম্পে আক্রমণ করতে যাচ্ছে। ক্যাম্পে প্রচুর সেনা থাকে। তাই গেরিলা আক্রমণ হলেও ওরা পুরোপুরি সম্মুখ যুদ্ধের প্রস্তুতি নিয়ে সেখানে যাচ্ছে। কারণ সবকিছু পরিকল্পনা মতো নাও হতে পারে। যদি চুপিসারে কাজ সারতে না পারে তখন ওরা সর্বশক্তি দিয়ে পাকবাহিনীর উপর ঝাপিয়ে পড়বে।
ঠিক হলো শুক্রবার ঠিক সন্ধ্যার আগে আক্রমন করা হবে এবং প্রত্যেকটি দলকে বলে দেয়া হলো সবাই যেন আলাদা আলাদা ভাবে নির্ধারিত জায়গায় এসে উপস্থিত হয়। কারণ সবাই একসাথে আসতে গেলে এটা কারো নজরে পড়তে পারে। সেজন্যই ছোট ছোট দলে ভাগ হয়ে সবাইকে নির্দিষ্ট জায়গায় আসতে বলা হয়েছে। নির্ধারিত দিনে সময়মতো সবাই নির্দিষ্ট জায়গায় এসে উপস্থিত হলো।(চলবে)
Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |