হার না মানার গল্প ( ২য় পর্ব)।
বাসের সুপারভাইজার তাকে বললো ভাড়াতো একশো টাকা। ৫০ টাকায় কাজ হবে না আরো ৫০ টাকা দিতে হবে। তখন সে সুপারভাইজারকে অনেক কাকুতি মিনতি করে বলল ভাই বিশ্বাস করেন আমার কাছে আর কোন টাকা নেই। এই ৫০ টাকাই আমার সম্বল। বাসের সুপারভাইজার তখন তাকে বললো টাকা নাই তাইলে গাড়িতে উঠছো কেন? সাফি নিরুত্তর হয়ে তার দিকে তাকিয়ে রইলো।
সুপারভাইজার রাগে গজ গজ করতে লাগলো আর বলতে লাগলো যতো সব ফকির মিসকিন আইছে গাড়িতে চড়তে। লজ্জায় অপমানে সাফির মনে হলো তখনই বাস থেকে নেমে যায়। যাইহোক শেষ পর্যন্ত সাফি শহরে পৌছালো। কিন্তু এই শহর তার সম্পূর্ণ অচেনা। কোথায় যাবে কি করবে সে কিছুই বুঝতে পারছিলো না। সে রাস্তার পাশ দিয়ে হাঁট ছিলো আর চিন্তা করছিলো কি করা যায়? সাফি শহরের কথা বন্ধু বান্ধবদের কাছ থেকে শুনেছে। তারা বলতো শহরে নাকি কেউ কাউকে সাহায্য করে না।
ইতিমধ্যে বেলা গড়িয়ে প্রায় বিকাল হয়ে গিয়েছে। সারাদিন পেটে কোনো দানাপানি পড়েনি তার। প্রচন্ড খুধায় তার অস্থির লাগছিলো। কিন্তু তার কাছে কোন টাকা পয়সা নেই। রাস্তার পাশে একটি হোটেল দেখে সেখানে গিয়ে সে এক গ্লাস পানি চাইলো। কিন্তু হোটেলের লোক তাকে বলল এক গ্লাস পানির দাম দুই টাকা। সাফি তখন বলল ভাই আমার কাছে তো কোন টাকা নেই। হোটেলের লোকজন তাকে দূর দূর করে তাড়িয়ে দিলো। হোটেলের লোকজনের এ নিষ্ঠুর ব্যবহারে সাফি অবাক হয়ে গেলো। মানুষ পানি খেতে চাইলে যে কাউকে নিষেধ করতে পারে এটা তার কল্পনাতেও কখনো আসেনি।
ক্ষুধা তৃষ্ণায় কাতর হয়ে সাফি শহরের রাস্তা দিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছিলো। শেষ পর্যন্ত একটি জায়গায় টিওবয়েল দেখতে পেয়ে সেখান থেকে সে পেট ভরে পানি খেলো। ততক্ষণে প্রায় সন্ধ্যা হয়ে গিয়েছে। আরো কিছুক্ষণ ঘোরাঘুরি করে সাফি কাজের জন্য চেষ্টা করলো। কিন্তু কেউ তাকে কোন কাজ দিতে রাজি হলো না। শেষ পর্যন্ত প্রচন্ড ক্লান্ত অবস্থায় সাফি রাতে ঘুমানোর জন্য একটি জায়গা খুঁজতে লাগলো।
কিন্তু এই শহরে তার পরিচিত কেউ নেই। যার ফলে তার যাওয়ারও কোন জায়গা নেই। সে দেখতে পেলো একটি জায়গায় রাস্তার পাশে ছাউনির নিচে বেশ কিছু লোক ঘুমিয়ে আছে। পাশে একটু জায়গা খালি দেখে সেও সেখানে গিয়ে ঘুমিয়ে পড়লো। সাফি কিছুক্ষণ হলো ঘুমিয়েছে। এর ভেতরে হঠাৎ করে এক লোক এসে তাকে টেনে উঠালো। তারপর তাকে জিজ্ঞেস করল তুমি কোথা থেকে এসেছো? এখানে থাকতে হলে টাকা দিতে হয়। সাফি জানালো তার কাছে কোন টাকা নেই। তখন লোকটি বলল এখানে থাকতে হলে টাকা দিতে হবে। টাকা না থাকলে অন্য কোথাও যাও। সাফি সেখান থেকে উঠে গিয়ে শেষ পর্যন্ত ফুটপাতের উপরে ঘুমিয়ে পড়লো।
ভোরবেলা পরিছন্নতা কর্মীদের ডাকে সাফির ঘুম ভেঙে গেলো। তারা তাকে জানালো এখন আর ফুটপাতে ঘুমিয়ে থাকা যাবে না। ইতিমধ্যে পুরো একটি দিন পার হয়ে গিয়েছে পেটে কোন খাবার পড়েনি। প্রচণ্ড ক্ষুধায় তার একদম অস্থির লাগছিলো। সে হন্যে হয়ে একটি কাজের চেষ্টা করতে লাগলো। অনেক খোঁজাখুঁজির পর সে একটি হোটেলের সামনে দাঁড়িয়ে ছিলো। হোটেলটি ছিলো নিম্নবিত্তদের একটি হোটেল। সে হোটেলের ভিতরে লোকজনের কথাবার্তা থেকে জানতে পারল তাদের হোটেলের একজন কর্মচারী আজকে আসেনি। কিন্তু তাদের হোটেলে কাজ করার জন্য একজন লোক খুব দরকার। কথাটি সাফির কানে যাওয়ার সাথে সাথেই সে হোটেলের ভিতরে গিয়ে হাজির হলো। (চলবে)
![logo.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmZEaz6VZmitMY1N8dSXHuT2tfgXFnDKjY8iV7jNGuNwEE/logo.png)
Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
![Heroism_3rd.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmRejDSNMUFmRz2tgu4LdFxkyoZYmsyGkCsepm3DPAocEx/Heroism_3rd.png)
![standard_Discord_Zip.gif](https://steemitimages.com/0x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmTvJLqN77QCV9hFuEriEWmR4ZPVrcQmYeXC9CjixQi6Xq/standard_Discord_Zip.gif)
সুপারভাইজার কে ১০০ টাকার জায়গায় ৫০ টাকা ভাড়া দেয়াতে যেমন অনেক আজেবাজে কথা শুনিয়ে দিল। ঠিক তেমনি আমি এমন সুপারভাইজার দেখেছি টাকা নাই শুনলে বাকি ৫০ টাকাও ফেরত দিয়ে দিতে হয়তো। আসলে দৃষ্টিভঙ্গির একেক জনের একেক রকম। ভাবতেও খারাপ লাগে স্বাধীন বাংলাদেশ পানি খেতে এবং খোলা আকাশের নিচে ঘুমাতে টাকা দিতে হয়। যাইহোক পরিচ্ছন্নতা কর্মীর ডাকে ফুটপাত থেকে ঘুম ভাঙলো শাফির। উঠেই দেখে তার পেটে প্রচুর ক্ষুধা খাওয়ার মত টাকা নেই। তাই মরিয়া হয়ে একটি কাজের সন্ধান করছে। দেখা যাক হোটেলে সাফির কাজের দোকান হয় কি না ?
সমাজে ভালো খারাপ দুই ধরনের মানুষই আছে। তবে এখন মনে হয় খারাপ মানুষের সংখ্যাটা একটু বেড়ে গিয়েছে।
আসলে ভাই আমরা যত যাই করি না কেন আমরা যদি নিজের ভিতর আত্মবিশ্বাস নিয়ে কাজ করি তাহলে সেই কাজে সফলতা আসবেই। সাফির আজকে ঘুম ভাঙলো পরিচ্ছন্ন কর্মীদের ডাকে ঠিকমতো ঘুমাতে পারো না। কিন্তু সে কোথাও কাজ খুঁজে পাচ্ছে না এবং পেটে খাবার নেই। তার কাজ খুবই দরকার। অবশেষে হোটেলের সামনে এসে শুনতে পারলে সেই হোটেলে একজন কর্মী আসেনি কিন্তু কাজ করতে একজন কর্মীর দরকার, সেই সুযোগে সাফি হোটেলের ভিতরে চলে গেলো এবং জানিনা তাকে কাজ করার সুযোগ দিলো কি না। আগামী পর্বের কি অবস্থা হয় সেটা পড়ার অপেক্ষায় রইলাম।
চেষ্টা করলে মানুষের জীবনের সফলতা আসে। সাফির এই গল্পটা তারই একটা উদাহরণ।
সাফি সারাদিন কোন কিছু খায়নি রাতে ভালো করে ঘুমাতে পারেনি তার জন্য হোটেলের এই চাকরিটি বোধহয় ভালো একটি অফার হতে পারে, এর পরবর্তী পোষ্টের জন্য অধীর আগ্রহে রইলাম।
এই চাকরিটাই তার জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দেবে।
এই পর্ব খুব তাড়াতাড়ি শেষ হয়ে গেল। কেবলই না বেচারা কাজ খুজে পেল। সারাদিন কাজের পর একটু খেতে পাবে আরামছে রাতে একটু ঘুমাতে পারবে কিনা এই চিন্তায় এখন আমার রাতের ঘুম হবে না। শফির সাথে আমিও যেন ক্ষুধা পেটেই রয়ে গেলাম।
খারাপ সময়ের পরেই আসে ভালো সময়। হয়তো সাফির জন্য সামনে ভালো সময় অপেক্ষা করছে।
আপনা লেখা গল্প টা পড়ে চোখের জল ধরে রাখতে পারলাম না। ক্ষুধার জ্বালা বড় জ্বালা তা শুধুমাত্র একজন ক্ষুদার্ত ব্যক্তিই জানে। অবশেষে যদি হোটেলের চাকরি টা পায় তাহলে কিছুটা হলেও স্বস্তি পাওয়া যাবে। পরবর্তী গল্পের অপেক্ষায় রইলাম। ধন্যবাদ ভাইয়া এত সুন্দর একটি গল্প শেয়ার করার জন্য।
এমন মানুষ আমার আপনার আশেপাশেই অনেক ঘুরে বেড়াচ্ছে। একটু খেয়াল করলেই দেখতে পাবেন।
রিজিকের মালিক রিজিক দিবেন, কোথায় দিবেন কিভাবে নিবেন সেটা নিজের কর্মফলেই।
পরের পর্বে জানতে পারা যাবে নিশ্চয়ই, সেখানে কাজের সুযোগ পেয়েছে কী না
ঠিকই বলেছেন রিজিকের মালিক রিজিক নির্ধারণ করবেন।
আসলেই আমরা শহরের মানুষরা কেউ কাউকে সাহায্য করি না।শহরে টিকে থাকা বেশ কষ্টকর।পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় থাকলাম।ধন্যবাদ
শহরের মানুষের ভেতর মানবিকতা অনেক কমে গিয়েছে।
এরকম হাজারো সাফি আমাদের চারিদিকে ঘুরে বেড়াচ্ছে।সাফির সাথে বাসে যা ঘটল সত্যি লজ্জাজনক এবং অপমানজনক।এবং দুই টাকার অভাবে সে পানি খেতে পারল না।অবশেষে টাকার জন্য ছাউনির নিচ থেকেও তার ঘুম ভেঙে উঠে আসতে হল।শেষমেষ মোনে হচ্ছে হোটেলের কাজটা পেয়ে যাবে।আগামী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম,,,,,
এমন কঠিন পরিস্থিতিতে অনেক মানুষ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ঘুরে বেড়াচ্ছে।
গল্প গুলো আমার কাছে খুব ভালো লাগে ভাই আজকের গল্পটা আমার কাছে অনেক ভাল লেগেছে। তবে মানুষ এত নিষ্ঠুর হয় আসলে দুই টাকার জন্য পানি খেতে দেয় না এগুলো শুনে খারাপ লাগল। তবে আমি আসলে আশা করব পরবর্তীতে সে হোটেলের কর্মচারী চাকরিটা পাবে
এমন নিষ্ঠুর মানুষ আমাদের আশেপাশেই অনেক আছে।
সাফির কষ্টের শেষ নেই দেখছি। একদম বাসের হেনস্থা থেকে শুরু করে খাবারের কষ্ট সত্যিই নিদারুণ। যাক অবশেষে হয়তো কাজের সন্ধান পাবে। পরের পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।
কষ্ট করলে কেষ্ট মেলে। কঠিন সময়ের পরেই আসে সুখ। তবে ধৈর্য ধরতে হয়।