হার না মানার গল্প( প্রথম পর্ব)।
দরজায় জোরে জোরে ধাক্কার সাথে সাফির ঘুম ভেঙে গেলো। ঘুম ভাঙার সাথেই সাফি শুনতে পেল তার বড় ভাই রাগে চিৎকার করে তাকে ডাকছে। সাফি চিন্তা করছিলো বড় ভাইয়ের আজ কি হলো? কখনো তো এত সকালে আমাকে ডাকাডাকি করে না।
সাফি দরজা খুলে বাইরে এসে তার ভাইকে জিজ্ঞেস করলঃ কি হইছে ভাই? সাতসকালে চিল্লাইতেছো কেন?
তার ভাই তখন তাকে উত্তর দিলোঃ এত বড় জোয়ান পোলা হইছোস। কোন কাজ কাম না কইরা শুধু বাড়ি শুয়ে বইসা খাইলে চলবো?
সাফী বললোঃ কি কাম করবো কও? গেরামে তো কোন কাম কাজ নাই। তার ভাই তখন তাকে উত্তর দিলো। এত কিছু আমি বুঝিনা। আমার ঘাড়ে আর বইসা বইসা ফ্রি খাওয়া চলবো না। এইখানে থাকতে হইলে কাম কাজ কইরা থাকতে হইবো।
সাফি কথাগুলো শুনে অবাক হয়ে যায়। তার ভাই কোনদিন তার সঙ্গে এভাবে কথা বলেনি। আজ তার ভাইয়ের কি হলো? তখন সে তাকিয়ে দেখে তার ভাবি মিটি মিটি হাসছে। সে ব্যাপারটা বুঝতে পারলো যে তার ভাবি তার ভাইয়ের কাছে তার নামে কথা লাগিয়েছে। সাফি তার ভাইয়ের ব্যবহারে মনে প্রচন্ড কষ্ট পেলো। সে ভাইয়ের কোন কথার উত্তর না দিয়ে একটি জামা গায়ে দিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে গেলো। তার ভাই তাকিয়ে তাকিয়ে তার বাড়ি থেকে বের হয়ে যাওয়া দেখলো কিন্তু কিছুই বললো না।
বেলা কিছুটা বাড়ার পর সাফি আবার বাড়ি ফিরে এলো। তারপর কাউকে কিছু না বলে জামা কাপড় গুছিয়ে বাড়ি থেকে একবারে বেরিয়ে গেলো। যাওয়ার সময় মনে মনে ওয়াদা করলো আর কখনো এই বাড়িতে সে ফিরবে না। বাড়ি থেকে বের হওয়ার পর সাফি একটু আগাচ্ছিলো আর বারবার পিছন ফিরে নিজের বসতভিটা শেষবারের মতো দেখছিলো।
মনে মনে চিন্তা করছিলো কিছুদিন আগেও কত ভালো ছিল সে। তার বাবা ছিলো মা ছিলো। তখন তাদের দুই ভাইয়ের ভিতর খুবই ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিলো। এক ভাই আরেক ভাইকে ছাড়া কিছু বুঝতো না। কিন্তু বাবা-মা দুজন মারা যাওয়ার পর ভাইয়ের ব্যবহারে একটু একটু করে পরিবর্তন আসতে থাকে।
ভাইয়ের প্রতি প্রচন্ড অভিমানে সাফির দুচোখ বেয়ে অশ্রু ঝরছিলো। কোথায় যাবে, কার কাছে যাবে, কি করবে সে কিছুই জানে না। অজানা গন্তব্যের উদ্দেশ্যে সে রওনা দিয়েছে। হাঁটতে হাঁটতে যখন সে গ্রামের সীমানা ছাড়িয়ে শহরে যাওয়ার রাস্তায় উঠে এলো। তখন তার হুঁশ হলো। সে চিন্তা করছিলো কোথায় যাবে কি করবে? তখন সে সিদ্ধান্ত নিলো শহরের দিকে যাবে।
সে শুনেছে শহরে নাকি কোন মানুষ বেকার থাকে না। সবার জন্যই নাকি কোনো না কোনো কাজ পাওয়া যায়। সাফির কাছে টাকা পয়সা তেমন কিছু নেই। সামান্য কয়েকটি টাকা তার সম্বল। দীর্ঘক্ষণ রাস্তায় দাঁড়িয়ে থেকে শেষ পর্যন্ত একটি বাসে সে উঠে বসলো শহরে যাওয়ার জন্য। কিছুক্ষণ পর বাসের সুপারভাইজার এসে তার কাছে ভাড়া চাইলে সে তার পকেট থেকে তার একমাত্র সম্বল ৫০ টাকার নোটটি বের করে দিলো।(চলবে)
![logo.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmZEaz6VZmitMY1N8dSXHuT2tfgXFnDKjY8iV7jNGuNwEE/logo.png)
Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
![Heroism_3rd.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmRejDSNMUFmRz2tgu4LdFxkyoZYmsyGkCsepm3DPAocEx/Heroism_3rd.png)
![standard_Discord_Zip.gif](https://steemitimages.com/0x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmTvJLqN77QCV9hFuEriEWmR4ZPVrcQmYeXC9CjixQi6Xq/standard_Discord_Zip.gif)
সাফি কষ্ট পেয়ে বাড়ি থেকে চলে গিয়েছে জেনে খারাপ লাগলো। হয়তো সময়ের সাথে সাথে সম্পর্ক গুলো বদলে যায়। তাই সাফির বড় ভাই বদলে গেছে। দেখা যাক পরবর্তী পর্বে কি হয়। পরবর্তী পর্বের জন্য অপেক্ষায় রইলাম ভাইয়া।
ঠিকই বলেছেন। সময়ের সাথে সাথে সম্পর্ক নেই গুলো অনেক সময় বদলে যায়।
কিছু কিছু মহিলার জন্যই সংসারে অশান্তি সৃষ্টি হয়। সাফির একমাত্র সম্বল ৫০ টাকার নোট দেওয়ার পর তার কি হবে সেটাই ভাবছি। যাই হোক আপনার পরবর্তী পোষ্টের অপেক্ষায় থাকবো আমি।
মহিলারা যদি এটা বুঝতো। তাহলে আমাদের সমাজের অনেক সমস্যার সমাধান হতো।
দুনিয়াটা অনেক নিষ্ঠুর। গল্প হলেও বাস্তবতার নিরিখে লিখা মনে হয়েছে আমার কাছে। এই নিষ্ঠুর পৃথিবীতে কেউ কারো নয় আর সম্পর্ক বদলে যায় চোখের পলকে।
পরের পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।
দেখি তার ভাগ্যে শহরে কি জোটে।
বাস্তবে এমন ঘটনা আমাদের চারপাশে হরহামেশাই ঘটছে।
ভাই আজকে আপনার গল্পটি পড়ে কেন জানি খুবই কষ্ট হচ্ছে, কারণ এরকম গল্প আমাদের সমাজে হাজার হাজার রয়েছে। আসলে মা-বাবা বেঁচে থাকলে ভাইবোনের সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ থাকে, কিন্তু মা-বাবা মারা গেলে সম্পর্কটা আর আগের মত থাকে না। সাফির ও তেমনই হয়েছে। বাবা-মা মারা যাওয়ার পরে ভাই আর আগের মতো দেখতে পারে না, যার কারণে অভিমানে শহরের দিকে রওনা দেয়। কোথায় যাবে কি করবে তার কাছে টাকা নেই। তারপরেও সে বাসে করে শহরের দিকে রওনা দেয় এবং বাস ভাড়া চাই, আগামী পর্বে কি হবে সেটার অপেক্ষায় রইলাম।
বাবা মা মারা গেলে ভাইয়ের সাথে সম্পর্ক নষ্ট হওয়ার দুটো কারন থাকতে পারে। হয় সম্পত্তি না হয় নারী।
ছোট বেলায় পাশের বাড়ির চাচার রুমে যেতাম টিভি দেখতে তো টিভির ঠিক উপরের দেওয়ালে একটা পোস্টার সব সময় চোখে পড়তো। তাতে লিখ ছিল
গল্পের প্রথম বিচ্ছেদটার কারণ এটাই বোঝা যাচ্ছে।
পরবর্তী অংশের অপেক্ষায় রইলাম।
একদম ঠিক ধরেছেন। আশাকরি পরবর্তী পর্ব পড়েছেন।
ভাই বড় ধন রক্তের বাঁধন যদিও পৃথক হয় নারীর কারণ
আজকে আপনার গল্পটি পড়ে খুব ভালো লাগলো ।যদিও এটা অনেক বিয়োগান্ত একটি লেখা ।আমাদের সমাজে এ ধরনের ঘটনা এভেইলেবল। আসলে ভাবা যায় ছোটকালে ভাই বোনেরা কত মিল থাকে সম্পর্কগুলো কত জোরালো থাকে কিন্তু কালের পরিক্রমায় সে সম্পর্ক গুলোকে অনেক শিথিলতা আসে এ কথা ভেবে খুব মন খারাপ হয়ে যায়।
ঠিকই বলেছেন আমাদের সমাজে এটা একটা কমন ঘটনা।
কিছু ভাবিদের জন্য ভাই ভাই খুব মধুর সম্পর্ক নষ্ট হয়ে যায়। ভালো লাগলো গল্পটি ভাই। তবে সাফির জন্য কষ্ট হচ্ছে। বেচারা এখন কই যাবে কে জানে। পরের পর্বের অপেক্ষায় রইলাম ভাই।
ভাবিদের জন্যই বেশিরভাগ সময় ভাইদের ভেতর সম্পর্ক নষ্ট হয়।
হঠাৎ করে তার ভাই শাফিকে অনেকটা আঘাত দিয়েছে যেটা সে সহ্য করতে না পেরে অভিমানে বাড়ি থেকে বেরিয়েছে। যাইহোক, যে কোন একটা কাজ পাবে চেষ্টা কখনো বিফলে যায় না। আশা করি পরবর্তী পর্বে সেই বিষয়ে জানতে পারব।
ঠিক বলেছেন চেষ্টা কখনো বিফলে যায় না।
আপনার লেখা পড়ে একটি গান মনে পড়লো। ঐ যে
বসে আসি স্টিশনেতে
লেবু লজেন্সের শিশি টা হাতে
বোকা কোকিলটার গলা শুকিয়ে কাঠ
গাড়ী আজ লেটে দৌড়োচ্ছে
বাড়ী ছেড়েছি ডিসেম্বর মাসে
পালাতে হয়নি দাদা তাড়িয়েছে
ফিরতে হলে আরাইশো টাকা
দিতে হবে মাসের শেষে।
হা হা। ভালই লিখছেন লিখুন। ধন্যবাদ।
গানটি বেশ অদ্ভুত তো। এমন গান আগে কখনো শুনিনি।
এই গল্পের দ্বিতীয় পর্ব টি আমার সামনে আসে, কিন্তু মনে হলো প্রথম থেকেই পড়াটা ভালো হবে। শুরুতেই এরকম একটি ধাক্কা গল্পের মধ্যে যেন আরো বেশি রহস্য তৈরি করে দিলো। একটা সময় ভাই ভাইয়ের সম্পর্ক গুলো এভাবেই শেষ হয়ে যায়।
আসলেই ঠিক বলেছেন। সম্পর্ক গুলো একটা সময় এভাবেই শেষ হয়ে যায়।