বন্ধুকে সাথে নিয়ে রেস্টুরেন্টে ইফতার এর অভিজ্ঞতা। ১০% সাইফক্স।

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago

কেমন আছেন আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা? আমি ভালো আছি। আশাকরি আপনারা ও ভালো আছেন।


রমজান মাস শুরুর পর থেকেই আমি আমার বন্ধুকে বলছিলাম যে চলো একদিন দুজন মিলে বাইরে কোথাও ইফতার করি। কারণ প্রতিদিন ঘরে একই রকমের ইফতার করতে ভালো লাগে না। মাঝে মাঝে কিছুটা বৈচিত্র্য আসলে মন্দ হয় না। বাইরে ইফতার করতে চাইলেও কোথায় করবো সেটা নিয়ে সংশয়ে ছিলাম।

IMG_20220414_161320.jpg

যদিও এখন ফেসবুকের কল্যাণে কোন রেস্টুরেন্টে কি ধরনের আয়োজন আছে এটা জানতে কোন সমস্যা হয়না। কিন্তু বিভিন্ন রেস্টুরেন্ট এর মেনু চেক করেও ইফতারের জন্য ভালো কোন আয়োজন খুঁজে পেলাম না। সবই প্রায় একই রকমের আয়োজন। শেষ পর্যন্ত কয়েকদিন আগে ঠিক করলাম যে আজ আমরা বাইরে ইফতার করবো। সেই মোতাবেক বিকালের একটু আগেই বাসা থেকে বের হয়েছিলাম। উদ্দেশ্য ছিল গ্রামের ভেতরের দিকে ঘুরতে যাবো। পরে সেখান থেকে ফিরে ইফতার করে তারপর যার যার বাড়িতে চলে যাবো।

IMG_20220414_161758.jpg

আমরা বের হয়েছিলাম চারটার দিকে। আমাদের যেখানটায় যাওয়ার উদ্দেশ্য ছিল সেখানে পৌছতে খুব বেশি সময় লাগেনি। সেখানে গিয়ে পৌঁছে জায়গাটি আমার খুব পছন্দ হয়েছিলো। সেখানে পৌছে দেখি নদীর পাড়ে বেশ কিছু লোকজন ধান মাড়াইয়ের কাজ করছে। আবার কিছু ছেলেপেলে নদীর অল্প পানিতে লাফালাফি ঝাপাঝাপি করছে। একদম বিশুদ্ধ গ্রামীণ পরিবেশ। সেখানে বেশ কিছুটা সময় কাটিয়ে তারপর আমরা ফিরে এলাম।

IMG_20220418_102557.jpg

কিন্তু তখনও ইফতারের সময় হতে অনেক সময় বাকি। যার ফলে আমরা ঠিক করলাম আমরা পদ্মার পাড়ে গিয়ে কিছুটা সময় কাটাবো। সেই কথা সেই কাজ। আমরা দুজন পদ্মার পাড়ের একটি নিরিবিলি জায়গায় গিয়ে পৌঁছলাম। সেখানে পৌঁছে দেখি একটি বড় ট্রলার ঘাটে ভেড়ানো আছে। আমরা দুজন মোটরসাইকেল থেকে নেমে সেই ট্রলারে উঠে বসলাম। সেখানে বসে নদীর সৌন্দর্য উপভোগ করছিলাম।

IMG_20220418_102234.jpg

এর ভিতরে আমি ফেসবুকে খুজছিলাম যে কোন রেস্টুরেন্টে যাওয়া যায়। হঠাৎ করে একটি রেস্টুরেন্টের নাম মাথায় এলো। এটি আমাদের শহরের ভেতর অন্যতম অভিজাত একটি রেস্টুরেন্ট। তাই চিন্তা করলাম আজকের ইফতারটা এখান থেকে করি।এই রেস্টুরেন্টে ভিড় থাকে সবসময়। তাই আমি তাদেরকে আগেই ফোন দিয়ে জানালাম যে আমরা দুজন সেখানে ইফতার করতে আসছি এবং কোন খাবার খাব সেটাও অর্ডার করে রাখলাম। তারা জানালো ঠিক আছে।

IMG_20220418_102316.jpg

IMG_20220418_102332.jpg

এর ভেতর নদীর পাড়ে সময় কাটাতে কাটাতে কখন প্রায় ইফতারের সময় হয়ে গিয়েছে এটা খেয়ালই করিনি। হঠাৎ খেয়াল হতেই বন্ধু ফেরদৌস কে বললাম চলো তাড়াতাড়ি যেতে হবে। ইফতারের আর খুব বেশি সময় বাকি নেই। তারপর আমরা সেই রেস্টুরেন্টের উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম। নদীর পাড় থেকে সে রেস্টুরেন্ট বেশ খানিকটা দূরে ছিলো। এর মধ্যে আমরা যখন রেস্টুরেন্ট এর উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছি তখন সেই রেস্টুরেন্ট থেকে দেখি আমার নাম্বারে একটি ফোন এসেছে। রেস্টুরেন্ট কর্তৃপক্ষ ফোন দিয়ে জিজ্ঞেস করছে স্যার আপনার কি আসবেন? আমাদের আর মাত্র একটি টেবিল ফাঁকা আছে। আমি তাদেরকে জানলাম আমরা প্রায় চলে এসেছি।

IMG_20220418_102210.jpg

যথারীতি কিছুক্ষণের ভেতরে আমরা রেস্টুরেন্টের সামনে পৌঁছে গেলাম। তারপর রেস্টুরেন্টে গিয়ে দেখি আশেপাশের সব টেবিল পরিপূর্ণ। শুধু তাদের কাউন্টারের সামনে দিয়ে একটি টেবিল সাজানো আছে। সেই টেবিলটা আমাদের জন্য রাখা। আমরা আমাদের নির্ধারিত আসনে বসে আশেপাশে তাকিয়ে দেখি আমাদের বসার ব্যবস্থাটা হয়েছে সবচাইতে আরামদায়ক। কারণ বাদবাকী সবাই নরমাল কাঠের চেয়ারে বসে আছে। আর আমরা যেখানে বসে আছি এটা কিছুটা রেক্লাইনিং সোফা টাইপের।

IMG_20220414_180657.jpg

যাই হোক আমরা বসার কিছুক্ষণের ভেতরে আমাদেরকে খাবার পরিবেশন করলো। যদিও তখনও ইফতারের সময় হয়নি। কিন্তু খাবার গুলো দেখে আমার কাছে খুবই ভালো লাগলো। কারণ খাবারের যে রংটা এসেছে তাতে মনে হচ্ছে খাবারের স্বাদ ভালই হবে। সেখানে ছিলো তরমুজ আপেল খেজুর জিলাপি ফ্রাইড রাইস বাফেলো উইংস থাই ফ্রাইড চিকেন চাইনিজ ভেজিটেবল জুস এবং পানি। সব মিলিয়ে খাবারের বিল এসেছিলো ৭৩০ টাকা।

IMG_20220418_102155.jpg

IMG_20220418_102252.jpg

কিছুক্ষণ পর আযান দিলে আমরা ইফতার শুরু করলাম। প্রথমে খাবার দেখে মনে করেছিলাম পরিমাণে খুবই অল্প। কিন্তু খাবার যখন খাওয়া শুরু করলাম তখন বুঝতে পারলাম এখানে পর্যাপ্ত খাবার আছে। খাবার শেষ করার পর দেখলাম পেটে আর জায়গা নেই। ইফতার শেষ হলে আমরা সেখান থেকে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম।

আজকের মতো এখানে শেষ করছি।

পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে।

সে পর্যন্ত সবাই ভাল থাকুন সুস্থ থাকুন।


ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত ডিভাইসহুয়াই নোভা 2i
ফটোগ্রাফার@rupok
স্থানলিংক
Sort:  
 2 years ago 

আমার সাথেও না অনেকবার এটা হয়েছে।রাইস দেওয়ার ধরণ দেখলে মনে হয় অনেক কম দিয়েছে।তবে খাওয়ার সময় টের পাই আসলেই অনেক দিয়েছে।

 2 years ago 

প্রথমে দেখে আমিও এমনটা মনে করেছিলাম। পরে খাওয়ার সময় বুঝতে পারলাম পরিমাণে যথেষ্ট আছে।

 2 years ago 

ভাইয়া প্রথমেই বলব নদী তীরবর্তী অঞ্চলে ধান মাড়াইয়ের দৃশ্য গুলো আমার কাছে খুব ভালো লাগে। ভালো লাগার কারণ আমাদের কৃষক ভাইয়েরা অক্লান্ত পরিশ্রমের ফলে তাদের কাঙ্ক্ষিত ফসলগুলো ঘড়ে তোলার জন্য এই অক্লান্ত পরিশ্রম করছে। যাইহোক আপনি আজকে যে রেস্টুরেন্টে ইফতার করেছেন সেটার পরিবেশ আমার খুব ভালো লেগেছে। যদিও আমি ইফতারটা বাইরে করতে পছন্দ করি না। তারপরেও আপনার আজকের ইফতারের মেনু দেখে মনে হচ্ছে আপনি অনেক তৃপ্তি সহকারে ইফতার করেছেন।আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।

 2 years ago 

ধান মাড়াইয়ের দৃশ্যটি আমার কাছে অনেক ভালো লেগেছে। দীর্ঘদিন পর এই দৃশ্যটি দেখতে পেয়েছি। সেটা ও একদম নদী সংলগ্ন জায়গায়।

 2 years ago 

বন্ধুকে সাথে নিয়ে রেস্টুরেন্টে ইফতার এর অভিজ্ঞতাটি খুব সুন্দরভাবে আমাদের সামনে তুলে ধরেছেন।অনেক শুভকামনা রইলো আপনার জন্য।

 2 years ago 

ধন্যবাদ আপু আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য। নিজের মতো করে অভিজ্ঞতাটি আপনাদের কাছে উপস্থাপন করার চেষ্টা করেছি। কতটুকু পেরেছি সেটা জানিনা।

 2 years ago 

বন্ধুদের সাথে নিয়ে খুব সুন্দর করে আনন্দে ইফতার পার্টি করেছেন। রেস্টুরেন্টটি বেশ বড় ছিল ভাইয়া খুব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন। আমার কাছে বেশ ভালো লেগেছে। আপনার খাবারের ছবিগুলো দেখে লোভ সামলাতে পারছিনা। ইচ্ছে করছে সব খেয়ে ফেলি। এর আগে সব সাবাড় করে দিয়েছেন😁😁। যাইহোক ভাইয়া আপনার জন্য অনেক অনেক শুভেচ্ছা রইল।

 2 years ago 

ঠিকই বলেছেন ভাইয়া রমজান মাসে প্রতিদিন একই রকমের ইফতারি দিয়ে ইফতার করাটা আসলে কী রকম যেন লাগে। একটু বৈচিত্র, ভিন্নতা আনা দরকার। আপনি আপনার বন্ধুদের সাথে সেই ভিন্নতা জন্য রেস্টুরেন্টে খুবই সুন্দরভাবে ইফতারি আয়োজন করেছেন। আসলে বন্ধুদের সাথে ইফতারির আয়োজন এ মুহূর্তে অনেক আনন্দের হয়। শুভকামনা রইল আপনার জন্য এবং আপনাদের জন্য সুস্থতা কামনা করছি।

 2 years ago 

আসলে বাঙালি তো ভোজন রসিক জাতি। সে জন্য খাওয়া-দাওয়ার ব্যাপারে একঘেয়েমি আমরা পছন্দ করি না। মাঝে মাঝে এমন বাইরে খাওয়া দাওয়া হলে মন্দ হয় না।

 2 years ago (edited)

ইফতার মানেই এক স্বস্তিকর অবস্থা। আর তা যদি হয় বন্ধু কে সাথে নিয়ে কোনো নামিদামি রেস্টুরেন্টে করা তাহলে নিজের উৎসাহ আরো বেড়ে যায়।আমিও সেদিন ইফতারের সময় যাত্রাকালে এক হোটেলে ইফতার করেছি।আপনার পোস্ট দেখে আমার সেদিনের কথা মনে পড়ে গেল।ধন্যবাদ ভাই এরকম সুন্দর গুছিয়ে উপস্থাপনা করার জন্য

 2 years ago 

আমি আসলে বন্ধুদের সাথে সময় কাটাতে খুবই পছন্দ করি। সহচর হিসেবে আমার বন্ধুটি খুবই চমৎকার মানুষ।

 2 years ago 

বাহ ভাইয়া রেস্টুরেন্ট টি অনেক সুন্দর। মাঝে মাঝে অনেক রেস্টুরেন্ট যায় দেখতেই ভালো লাগে না খাওয়া তো দুরের কথা। ভাল একটা সময় কাটালেন।

 2 years ago 

রেষ্টুরেন্টটির ইন্টেরিয়র আসলেই খুব সুন্দর। রেস্টুরেন্টের মালিক যে যথেষ্ট রুচিশীল ব্যক্তি সেটা বোঝা যায়।

 2 years ago 

বন্ধুকে নিয়ে ভালোই ঘুরে বেড়াচ্ছেন ভাই। এর সাথে সাথে বাহিরে ইফতার করে নিয়েছেন। আপনারদেড় থেকে সবার চেয়ার আলাদা হবে কারণ আপনার তো অনেক ঘুরে ফিরে এসেছেন কষ্ট হয়েছে একটু আরামে বসবেন। সেজন্য হয়তো আল্লাহ সেই ব্যবস্থা করে দিয়েছে। খুব ভালো লাগলো আপনার লেখা ভাই অনেক দোয়া আপনার জন্য

 2 years ago 

আসলে ব্যাপারটা দেখে আমরা দুজন অবাক হয়েছি। আবার বেশ ভালোও লেগেছে। বসার ব্যবস্থাটা খুবই আরামদায়ক ছিলো।

 2 years ago 

ইস এমন ইফতার করতে কতই না ভাল লাগে, যদি পয়সাটা নিজের পকেট থেকে না দিতে হয় হাহাহাহা। আবার এমন ইফতার করতে ইচ্ছে করলে জানাতে ভুল করো না। আই এম অলওয়েজ রেডি টু গো উইথ ইউ।🤪🤪🤪👍

 2 years ago 

দুজনে আরেকদিন বাইরে ইফতার করবো। তৈরি থেকো।

 2 years ago 

বাহ! রেস্টুরেন্টের খাবার আর পরিবেশ দেখেই বোঝা যাচ্ছে স্ট্যান্ডার্ড লেভেলের একটি রেস্টুরেন্ট। বন্ধুর সাথে ইফতারি করার অভিজ্ঞতা বেশ চমৎকার ভাবে উপস্থাপন করেছেন ভাই। শুভকামনা আপনাদের দুজনের জন্য।

 2 years ago 

আমাদের শহরের সবচাইতে অভিজাত রেস্টুরেন্ট এটা। এখানকার সবকিছুই বেশ ভালো।

Coin Marketplace

STEEM 0.16
TRX 0.15
JST 0.029
BTC 56596.99
ETH 2394.78
USDT 1.00
SBD 2.32