মুঘল দুর্গ লালবাগ কেল্লা দর্শন।
আপনারা যারা আমার পোস্ট পড়েন তারা ইতিমধ্যে জানেন কয়েকদিন আগে আমি গিয়েছিলাম পুরান ঢাকায়। উদ্দেশ্য ছিল সেখানকার প্রাচীন কিছু স্থাপনা ঘুরে ফিরে দেখবো আর সাথে পুরান ঢাকার ঐতিহ্যবাহী বিরিয়ানির স্বাদ গ্রহণ করবো। যখন পুরান ঢাকায় আমি পৌঁছায় ইতিমধ্যে তখন দুপুর হয়ে গিয়েছে। যার ফলে প্রথমে খাওয়া দাওয়ার পাঠ চুকিয়ে তারপর গেলাম লালবাগ কেল্লার উদ্দেশ্যে। এই জায়গাটিতে আমি এর আগেও একবার গিয়েছি। কিন্তু সেটা অনেকদিন আগের কথা।
বাংলাদেশের যতগুলো প্রাচীন স্থাপনা আছে তার ভেতরে আমার কাছে সবচাইতে ভালো লাগে এই লালবাগ কেল্লা। যদিও অনেকেই জানেনা এটি একটি অসমাপ্ত কেল্লা। যেটির নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছিল কিন্তু আর শেষ হয়নি। যাইহোক খাওয়া দাওয়ার পর লালবাগ কেল্লার দিকে রওনা দিলাম। নাজিরা বাজার থেকে রিকশায় করে সোজা লালবাগ কেল্লার গেটের সামনে গিয়ে নামলাম। তারপর টিকেট কেটে কেল্লার ভিতর প্রবেশ করলাম। অবশ্য বাইরে এত প্রচন্ড গরম ছিল যে আমি কেল্লায় ঢোকার আগে একটি ঠান্ডা পানির বোতল নিয়ে ঢুকেছিলাম।
লালবাগ কেল্লার যেই গেট দিয়ে এখন দর্শনার্থীরা প্রবেশ করে। সেই গেট দিয়ে প্রবেশ করলেই ঠিক সামনেই চমৎকার একটি স্থাপনা দেখা যায়। অনেকে মনে করে এটিই লালবাগ কেল্লার মূল স্থাপনা। আসলে এটি পরিবিবির মাজার। কেল্লায় প্রবেশ করে দেখতে পেলাম ভেতরটা চমৎকার করে সাজানো গোছানো রয়েছে। এর আগে যখন এসেছিলাম তখন জায়গাগুলো এত সুন্দর করে সাজানো ছিল না। বলতে গেলে পুরনো আকৃতি অনেকটা ফিরিয়ে আনা হয়েছে। লালবাগ কেল্লার গেট দিয়ে প্রবেশ করার পরেই প্রচন্ড রোদ্রের কারণে আমি গেটের একপাশে গাছের ছায়ায় কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে বিশ্রাম নিলাম।
কারণ টিকিট কেটে ভিতরে ঢুকতে ঢুকতে এর ভেতরে রোদের তাপে অনেকটা পেরেশান হয়ে গিয়েছিলাম। তাই গাছের ছায়ায় দাঁড়িয়ে কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিলাম। কারণ সামনে কিছুটা পথ রোদের ভিতরে হাঁটতে হবে। বিশ্রাম নেয়া শেষ হলে আমি সোজা হেঁটে পরী বিবির মাজারের কাছে গেলাম। দেখতে পেলাম মাজারের একদিকে যেখানে ছায়া পড়েছে সেখানে বেশ কিছু দর্শনার্থী আশ্রয় নিয়েছে রোদ থেকে বাঁচার জন্য। এই দিন আসলেই গরম অনেক বেশি পড়েছিলো। যার ফলে দর্শনার্থীরা কেউই স্বস্তিতে ছিল না।
আমিও লালবাগ কেলায় প্রবেশ করার পর মনে হচ্ছিল আজকে আসাটা ঠিক হয়নি। কারণ আবহাওয়া এমন থাকলে ঘুরে ফিরে মজা নাই। যাই হোক তারপরে যেহেতু এসে পড়েছি তাই আর না ঘুরে ফিরে যাওয়ার প্রশ্নই আসে না। পরী বিবির মাজারের পাশে গিয়ে দাঁড়িয়ে বেশ কিছু ছবি তুললাম। পরিবির মাজারটা পার হলেই সামনের দিকে আরও একটা স্থাপনা আছে। যেটা আসলে কি আমি এখনো ভালোভাবে বুঝতে পারিনি। তবে দেখে মনে হয় নিচে একতলা বিল্ডিং সমপরিমাণ উঁচু। পাশ দিয়ে ছাদে ওঠার জন্য সিঁড়ি রয়েছে। কিন্তু সেই ছাদের নিচে যে কি ছিল সেটা আমার জানা নেই। সেই ছাদে উঠলে পুরো লালবাগ কেল্লার একটি চমৎকার ভিউ পাওয়া যায়। অনেকেই দেখলাম সেখানে দাঁড়িয়ে ফটো সেশন করছে। আমিও সেখানে গিয়ে কেল্লার বেশ কিছু ছবি তুলে নিলাম। রোদ্রের প্রখর তাপের কারণে আর বেশিক্ষণ না কাটিয়ে আমি লালবাগ কেল্লা থেকে বাইরে চলে এলাম।
লালবাগ কেল্লা আসলে বুড়িগঙ্গা নদীর তীরে অবস্থিত একটি অসমাপ্ত মুঘল দূর্গ। সম্রাট আওরঙ্গজেবের পুত্র মুঘল সুবেদার মোহাম্মদ আজম শাহ ১৬৭৮ সালে এটি নির্মাণ কাজ শুরু করেন। পরে তার উত্তরসূরী মুঘল সুবাদার শায়েস্তা খাঁ ১৬৮০ সালে এটা পুনরায় নির্মাণ কাজ শুরু করেন। কিন্তু তিনিও শেষ করতে পারেননি।
আজকের মত এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।
ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত ডিভাইস | হুয়াই নোভা 2i |
---|---|
ফটোগ্রাফার | @rupok |
স্থান | লালবাগ কেল্লা |
![logo.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmZEaz6VZmitMY1N8dSXHuT2tfgXFnDKjY8iV7jNGuNwEE/logo.png)
Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
![Heroism_3rd.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmRejDSNMUFmRz2tgu4LdFxkyoZYmsyGkCsepm3DPAocEx/Heroism_3rd.png)
![standard_Discord_Zip.gif](https://steemitimages.com/0x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmTvJLqN77QCV9hFuEriEWmR4ZPVrcQmYeXC9CjixQi6Xq/standard_Discord_Zip.gif)
লালবাগ কেল্লায় আপনার ভ্রমণ কাহিনী এবং ফটোগ্রাফিক গুলো দেখে খুবই ভালো লাগলো। আমিও ভ্রমণ করেছি। জায়গাটি খুবই সুন্দর আর এই জায়গাটি ঐতিহ্যবাহী জায়গা আজকে ফটোগ্রাফি গুলো দেখে মুগ্ধ হলাম।
জায়গাটি আমার কাছেও অনেক ভালো লাগে।
লালবাগ কেল্লায় আমিও দু-দুবার ভ্রমণ করেছি জায়গাটি অনেক ঐতিহ্য বহন করে রয়েছে বাংলার।। অনেক ভালো লাগলো আপনার ভ্রমণ কাহিনী এবং ফটোগ্রাফি গুলা দেখে।। আসলে যতবারই যায় না কেন এমন ঐতিহ্য হয়ে জায়গায় বারবার ঘুরে আসতে মনে চায়।।
ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য।
লালবাগকেল্লা তে বেশ কয়েকবার গিয়েছি অনেক ভালো লাগার মতো একটি দর্শনীয় স্থান।লালবাগকেল্লা দেখেছি কিন্তু এর সম্পর্কে এতকিছু জানা ছিলনা, ভাইয়া আপনার পোস্টের মাধ্যমে অনেক গুরুত্বপূর্ণ কিছু তথ্য জানতে পারলাম।গুরুত্বপূর্ণ কথা এবং সুন্দর দৃশ্য ও মুহূর্ত গুলো শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই ভাইয়া
চিন্তা করলাম যেহেতু একটি ঐতিহাসিক স্থাপনা দেখতে গিয়েছি তাই এটার ইতিহাস সম্বন্ধে কিছু বলা জরুরী। সেজন্যই কিছু তথ্য উপস্থাপন করেছি। ধন্যবাদ আপনাকে সেই তথ্যগুলো পড়ার জন্য।
লালবাগের কেল্লা এর অনেক নাম শুনেছি এবং পাঠ্যপুস্তকেও অনেক পড়েছি কিন্তু জীবনে কখনো সেখানে যাওয়ার সুযোগ পায়নি। ভাইয়া তবে আপনার পোস্টটি পড়ে মনে হচ্ছে আমিও লালবাগের কেল্লায় পৌঁছে গেছি। অসাধারণ সুন্দর এবং ঐতিহাসিক একটি স্থান লালবাগের কেল্লা। পরিবেশটা খুবই সুন্দর দেখাচ্ছে। ছোট ছোট ফুলের গাছ এবং শোভা বর্ধনকারী গাছ, সম্পূর্ণ সবুজ প্রকৃতি। এমন ঐতিহাসিক এবং সুন্দরী স্থানের ফটোসেশন করাটাই স্বাভাবিক।
সময় পেলে একবার সেখান থেকে ঘুরে আসবেন। আশা করি ভালো লাগবে।
লালবাগ কেল্লা যে অসমাপ্ত সেটা জানা ছিল না।লালবাগ কেল্লাটি বেশ অনেক জায়গা নিয়ে অবস্থিত মনে হচ্ছে ।আর চারিদিকের সাজানো গোছানো পরিবেশটি দেখে ভালো লাগলো ভাইয়া।আমার মনে হয় চতুর্থ ছবিগুলোতে মাঝের অংশ জলের ফোয়ারার জন্য তৈরি করা হয়েছিল।যদিও প্রচন্ড রোদে আপনারা ভালোভাবে ঘুরতে পারেননি তবু অসমাপ্ত জায়গাটি চমৎকার।
বেশিরভাগ মানুষই জানে না যে কেল্লাটি অসমাপ্ত।
দাদা আমি শুনেছিলাম যেটার ছাদে ওঠা যায় ওটা নাকি জলের ট্যাংক হিসেবে ব্যবহার করা হত আর পাশেই ছিল গোসল খানা আর বিচার কাজ পরিচালনার আদালত।আলোক চিত্র গুলো৷ অসাধারণ হয়েছে।
ঠিকই শুনেছেন ফোয়ারার পানি সেখান থেকেই আসতো।
একটা সময় ছিল যখন ইউনিভার্সিটিতে পড়ি তখন লালবাগ কেল্লা প্রায়ই যাওয়া হত। তখন খুব ভাল লাগত। কিন্তু যারা এর রক্ষনাবেক্ষনের দায়িত্বে আছে তারা খুব একটা যত্ন নেয় না। অনেকদিন হল যাই না। এখন কি অবস্থা জানিনা। যখন যেতাম দেখতাম দেয়ালে শেওলা পড়ে আছে, গাছের পাতা ঠিকমত কাটা নাই, এখানে সেখানে ময়লা পড়ে থাকত। দেখে খারাপ লাগত কারন ঢাকায় ঐতিহ্যবাহী কয়েকটি স্থাপনার মধ্যে লালবাঘ কেল্লা অন্যতম। আপনার ছবিগুলো দেখে মনে হচ্ছে আগের থেকে অনেকটা গুছানো আছে। আপনি খুব সুন্দরভাবে প্রতিটি ছবি তুলেছেন। দেখে ভাল লাগছে। ধন্যবাদ ভাইয়া।
আগের থেকে এখন অবস্থার উন্নতি হয়েছে। একবার দেখে আসতে পারেন।
ভাইয়া আপনার পোস্ট দেখে আমার মেয়ে কে নিয়ে গিয়েছিলাম ২০/৯/২২ তারিখ। কিন্তু জ্যামের কারনে দেরি হয়ে গিয়েছিল। বিকেল ৪ঃ৩০ বাজাতে আর ঢুকতে দেয় নি। ধন্যবাদ ভাইয়া।
প্রাচীন ঐতিহ্য বহনকারী মুঘল দুর্গ লালবাগ কেল্লা বেশ সুন্দর। আপনি খুব সুন্দর ভাবে পর্যায়ক্রমে লালবাগ কেল্লায় ঘুরে বেড়ানোর অনুভূতি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। লালবাগ কেল্লার ফটোগ্রাফি গুলাও বেশ চমৎকার ছিল। আর লালবাগ কেল্লা যে অসমাপ্ত আছে সেটা আপনার পোষ্টের মাধ্যমে জানতে পারলাম। একটা অসমাপ্ত স্থাপনাও এতটা সৌন্দর্য বহন করে জানা ছিল না। পরিশেষে বলতে চাই আপনি ভালো ভালো কনটেন্ট শেয়ার করে আমার বাংলা ব্লগ কে প্রতিনিয়ত সমৃদ্ধ করে চলছেন এজন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
আপনার চমৎকার মন্তব্যের জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
আসলে পুরাতন ঐতিহ্যগুলো দেখতে খুবই ভালো লাগে। মুঘল সাম্রাজ্যের আমলে নির্মিত এ কেল্লা অসাধারণ ঐতিহ্য বহন করছে বাংলাদেশের। দেশ ও দেশের বাইরের অসংখ্য দর্শনার্থী প্রতিদিনেই সমাগম ঘটে এই সমস্ত ঐতিহ্যবাহী স্থাপনা দেখতে। আমার কখনো যাওয়া হয়নি তবে ইচ্ছা আছে যাওয়ার। অনেক ভালো লাগলো ভাই আপনার ফটোগ্রাফি গুলো। আপনার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইল।
এই ধরনের স্থাপনা আমাদের দেশে খুব বেশি নেই। এজন্যই হয়তো প্রতিনিয়ত প্রচুর মানুষজন আসে এখানে ভ্রমণ করতে।
কয়েক বছর আগে গিয়েছিলাম লালবাগ কেল্লায়। বেশ ভালো একটা সময় কেটেছিল। আজ অনেকদিন পর আবার আপনার এই ছবিগুলোর মাধ্যমে জায়গাটা দেখা হল। প্রাচীন এই নিদর্শনগুলো আমাদের বাংলার নানা ঐতিহ্যের সাক্ষী বহন করে চলেছে। রোদের তীব্রতা বেশ প্রখর দেখা যাচ্ছে। এরকম একটা আবহাওয়া যে ঘুরেছেন এটা সত্যিই অনেক চ্যালেঞ্জিং ছিল।
রোদের কারণে আসলে ভালো মতো ঘুরতে পারিনি। ইচ্ছা ছিল বেশ কিছুটা সময় সেখানে কাটানোর। কিন্তু বৈরী আবহাওয়ার কারণে আর সেটা হয়ে ওঠেনি।