সেকাল আর একালের ঈদ। ১০% সাইফক্স।
সময়ের পরিবর্তনের সাথে সাথে মানুষের উৎসব উদযাপনের ধরনেও অনেক পরিবর্তন এসেছে। আমরা যখন ছোট ছিলাম তখন দেখতাম ঈদ মানেই সকল মানুষের একটি মিলনমেলা। যারা গ্রামের বাইরে থাকত তারা সবাই গ্রামে ফিরতো ঈদ করতে। ঈদের দিন সকালে একে অন্যের বাড়িতে যেতো। সবার সাথে দেখা-সাক্ষাৎ করতো।
তখন ছোটদের ঈদের বলতে ছিলো নতুন জামা কাপড় পরা, সালামি নেয়া, আর মজার মজার সব খাবার খাওয়া। সাথে ঘুরে বেড়ানো তো ছিলই। কিন্তু বর্তমানে এসবের অনেক কিছুই আর খুঁজে পাইনা। দীর্ঘদিন ধরে আমরা শহরে ঈদ করে আসছি। শুধু আমরা না আমাদের আত্মীয় স্বজন সকলেই। গ্রামের বাড়িতে আর এখন যাওয়া হয় না।
অথচ আমার এখনও স্পষ্ট মনে আছে ছোটবেলায় যখন আমরা ইদের ছুটি পেতাম। তখন সরাসরি গ্রামে চলে যেতাম। শুধু আমরাই না সমস্ত আত্মীয়-স্বজন ও গ্রামের বাড়িতে চলে আসতো। আমাদের চাচা ফুপুরা সংখ্যায় অনেক হওয়ায় পুরো বাড়ি লোকে লোকারণ্য হয়ে যেতো। আমরা চাচাতো ফুফাতো ভাই বোন মিলে সংখ্যায় ছিলাম অনেক। সবাই মিলে অনেক মজা হোতো।
কিন্তু সে সবই এখন স্মৃতি। এখন আর কেউ গ্রামের বাড়িতে ঈদ করতে আসে না। সবাই যার যার শহরে বাসায় ঈদ উদযাপন করে। আমরা যখন ছোট ছিলাম তখন নতুন জামা কাপড় বাদে আরো একটি জিনিসের প্রতি আমাদের প্রচন্ড আগ্রহ ছিলো। সেটা হচ্ছে বাজি বা পটকা ফোটানো নিয়ে। আবার এলাকার ছোটদের ভেতরে এক ধরনের প্রতিযোগিতা চলতো যে কার কাছে কত বাজি আছে। ঈদের কয়েকদিন আগে থেকে আমরা বাজি ফোটাতে শুরু করতাম। তবে মূল অংশটা রেখে দিতাম চাঁদ রাতের জন্য। যখন ঈদের চাঁদ দেখা যেতো তারপর শুরু হতো বাজি ফোটানো। তখন পুরো এলাকায় আর কোন শব্দ শোনা যেত না বাজির শব্দ ছাড়া। বাজি ফোটানো ছাড়াও বিভিন্ন বাসায় গিয়ে বিভিন্ন মজার মজার খাবার খাওয়া, সালামি সংগ্রহ করা এসব কিছু চলতো।
কিন্তু এখনকার ঈদ উদযাপনে অনেক ভিন্নতা এসেছে। এখন মোড়ে মোড়ে দেখা যায় সুন্দর আলোকসজ্জা আর সাথে উচ্চ শব্দে ভিনদেশি গান বাজতে থাকে। কখনো ইংলিশ কখনো হিন্দি গান। সাথে যোগ হয়েছে ভয়ঙ্কর মাদক সেবনের প্রচলন। অথচ আমরা যখন ছোট ছিলাম তখন আমাদের কাছে ঈদের গান মানেই একটি গান ছিলো। সেটি হচ্ছে নজরুলের সেই বিখ্যাত ও মন রমজানের ঐ রোজার শেষে। এই গানটি না শুনলে মনে হয় আমাদের ঈদ আনন্দ পরিপূর্ণতা পেত না। আজকালকার জেনারেশন আর এই গান শুনতে চায় না।
এসব কিছু দেখি আর পুরনো স্মৃতি মনে করে আফসোস করি। কি চমৎকার ছিলো আমাদের ছেলেবেলার দিনগুলি। তবে এখনকার এই আলোকসজ্জাটা আসলে মন কেড়ে নেয়ার মতো। সরকারি বিভিন্ন অফিস থেকে শুরু করে পাড়ার মোড়ের ক্লাব গুলি সবই চমৎকারভাবে আলোক সজ্জার মাধ্যমে রঙিন করে তোলা হয়। রাতের বেলায় ঘুরেফিরে দেখতে ভালই লাগে। আমি গত কালকে রাত্রে এভাবে ঘুরেফিরে দেখছিলাম আর কিছু ছবি তুলেছিলাম আপনাদের সাথে শেয়ার করার উদ্দেশ্যে। সেই ছবি গুলো পোস্টে শেয়ার করছি।
আজকের মতো এখানেই শেষ করছি।
পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে।
সে পর্যন্ত সবাই ভাল থাকুন সুস্থ থাকুন।
ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত ডিভাইস | হুয়াই নোভা 2i |
---|---|
ফটোগ্রাফার | @rupok |
স্থান | পুলিশ লাইন, পৌরসভা |
![logo.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmZEaz6VZmitMY1N8dSXHuT2tfgXFnDKjY8iV7jNGuNwEE/logo.png)
Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
![Heroism_3rd.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmRejDSNMUFmRz2tgu4LdFxkyoZYmsyGkCsepm3DPAocEx/Heroism_3rd.png)
![standard_Discord_Zip.gif](https://steemitimages.com/0x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmTvJLqN77QCV9hFuEriEWmR4ZPVrcQmYeXC9CjixQi6Xq/standard_Discord_Zip.gif)
ভাইয়া আপনার পোস্টটি পড়ে আমার কাছে খুবই ভালো লাগলো। আপনার পোস্ট পড়ছিলাম আর যেন ছোটবেলার সেই সুন্দর দিনগুলো অনুভব করছিলাম। তবে কি ভাইয়া আমি এখনও আমার বাবা-মার কাছ থেকে জোর করে ঈদ সালামি আদায় করে থাকি। ঈদের দিন ঈদগাহ মাঠ থেকে নামাজ পড়ে এসে আমি আমার বাবা মাকে সালাম করি। এবং সেই সাথে তাদের কাছ থেকে একপ্রকার জোর করেই ঈদ সালামি নিয়ে থাকি। যদিওবা আমি দুই সন্তানের বাবা তবুও এই কাজটি করতে আমার কাছে খুবই ভালো লাগে। আর আমার থেকে আমার সন্তানেরাও একই কাজ করে মজা পেয়ে থাকে। আমিও ওদের ঈদ সালামি দিয়ে সন্তুষ্ট করি। আপনি একটি কথা ঠিকই বলেছেন ভাইয়া, তখনকার ঈদ আর বর্তমান সময়ে ঈদ অনেকটাই তফাৎ হয়ে গেছে। তখনকার সময়ে নতুন জামা কাপড় এনে আমরা লুকিয়ে রাখতাম, কাউকে দেখতে দিতাম না। কিন্তু এখন আর সেই প্রচলনটা নেই। খুবই মিস করি সেই সব দিনগুলি। আপনার সুন্দর বর্ণনামূলক পোস্ট, সেকাল আর একালের ঈদ সম্পর্কে আপনি যে সুন্দর মন্তব্যগুলো করেছেন তা আমার হৃদয় ছুঁয়ে গেছে। এত সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে উপহার দেওয়ার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।
খুব মিস করি সেই দিনগুলি। যদিও জানি আর কখনোই সেই দিনগুলো ফিরে পাবোনা। পোস্টটি আপনার ভালো লেগেছে জেনে খুশি হলাম।
আমি আমার দৃষ্টিকোণ থেকে এটাই বলব যে আগের দিনের ঈদ উদযাপন গুলো ছিল গ্রামমুখী। আর এখন কার ঈদ উদযাপন গুলো হয়ে গেছে আড্ডা মুখে। যার জন্য আপনি তার তফাৎ খুঁজে পেয়েছেন। তবে এই বিষয়ে সব মিলিয়ে সুন্দর একটি পোস্ট তৈরী করে আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন । যা পড়ে খুব ভালো লেগেছে আমার।
শুধু গ্রামমুখী নয় আগের দিনের যেকোনো উৎসব উদযাপন ছিল অনেক আন্তরিকতায় ভরা। কিন্তু এখন হয়ে গিয়েছে সব লোক দেখানো উদযাপন।
ভাইয়া একদম ঠিক বলেছেন ও মন রমজানের ঐ রোজার শেষে এলো খুশির ঈদ এই গানটি আমরা প্রাণভরে শুনতাম। আসলে আমাদের সময় ঈদের আগের দিন সন্ধ্যাবেলা চাঁদ দেখা থেকেই ঈদের আনন্দ শুরু হয়ে যেত। এখন এসব চোখেই পড়ে না ছোটবেলায় আমরাও ঈদের সময় গ্রামের বাড়িতে গিয়ে ঈদ করতাম। আপনার মত আমারও চাচাতো মামাতো ফুফাতো ভাই বোন মিলে সংখ্যায় অনেক ছিল। সেই সময় আমরা দলবেঁধে ফাঁকা মাঠে গিয়ে চাঁদ দেখতাম। আর চাঁদ দেখা থেকেই ঈদের আনন্দ শুরু। চাঁদ দেখার পরেই পটকা ফাটানো শুরু হতো চলতে অনেক রাত অব্দি। আর এখন শহুরে ঈদের আনন্দ অনেকটাই পাল্টে গেছে এখন ঈদ আনন্দ করতে গিয়ে অনেকেই দেখি আমার পাড়াতেও মাদক নিয়ে আড্ডা বসায়। অনুভূতিগুলো আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
দিনদিন সবকিছুই খারাপের দিকে যাচ্ছে। এখন আর কোনো কিছুতেই আগের মত বিশুদ্ধ আনন্দ নেই।
ভাইয়া,আপনি ঠিক কথা বলেছেন এই গানটি যদি শুনা না হতো তাহলে মনে হয় ঈদ ঈদ লাগত না 🥰কিন্তু এখনে জেনারেশনে এই গানগুলো পছন্দ করেনা ডিজে পার্টি আরো অন্যান্য অনুষ্ঠানের আয়োজন করে চাঁদ রাতে। ভাইয়া, সেকালের ঈদের মধ্যে অনেক পার্থক্য রয়েছে সেকালে ঈদ করার জন্য মানুষ গ্রামে ছুটে যেত।এ যেনো এক অন্য রকম আনন্দ।ভাইয়া, বিশেষ করে আমার বাবা সেনাবাহিনীতে চাকরি করতেন তখনও আমাদের সবাইকে নিয়ে ঈদে করতে বাড়িতে চলে যেতেন। গ্রামে যে আনন্দ উপভোগ করতাম ঈদে।এখন সেই আনন্দ উপভোগ করতে পারি না। শহরে আর গ্রামের ঈদের মধ্যে অনেক পার্থক্য রয়েছে ভাইয়া, আপনি এই পোষ্টের মাধ্যমে আমাদের মাঝে তুলে ধরেছেন।ভাইয়া, এখনো কিছু কিছু গ্রামে কিছু কিছু এলাকাতে ঈদের আমেজ সেই আগের মতোই রয়ে গেছে। ধন্যবাদ ভাইয়া এত সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে তুলে ধরার জন্য।।
শুধু মনে হয় সেই দিন গুলি যদি ফিরে পেতাম। কতো ভালোই না হোতো।
ঠিক বলেছেন ভাই আমাদের পূজোর সময় আমরা একে অপরের বাসায় যেতাম কত কি খেতাম। কত আত্মীয় স্বজন বেড়াতে আসতো বাড়ীতে কিন্তু এখন আর তেমন ভাবে কেউ আসে না । আমরাও কেন জানি না পাশের বড়ীতেও যাই না। মূলত যান্ত্রিকতার ছোয়ায় আমরা রোবটে পরিনত হচ্ছি দিন দিন। আগের মতন সেই অনুভূতি আর কাজ করে না যেন।আর মহামারি আমাদের মাঝে আরো ফারাক তৈরী করে দিয়ে গেছে। সত্যি সেকাল আর একালের মধ্যে কতটা পার্থক্য ।
শহুরে সমাজ থেকে সামাজিকতা উঠে গিয়েছে। এই জন্যই আজ এই অবস্থা।
সত্যিই ভাইয়া আগের দিনের ঈদ এখকার ঈদ অনেক পার্থক্য। আগে চাঁদ রাতে ফোটকা ফুটাতাম পরে সারা রাত জেগে মেহেদী দিতাম হাতে আর দুরবিন দিয়ে চাঁদ দেখার মজাই ছিল অন্য রকম। আর একটি গান শোনা যেত বেশি ও মোর রমজানের ওই রোজার শেষে এলো খুশির ঈদ। আর এখন সেই দিন নেই। আগে সবাই গ্রামে ঈদ করার জন্য পাগল ছিল আর এখন। সত্যিই ভাইয়া আপনার পোস্ট পরে সেই পুরানো সৃতি মনে পরে গেলো। ধন্যবাদ ভাইয়া আপনাকে।