ভাসমান রেস্টুরেন্টে খাওয়া-দাওয়া সাথে ঘোরাঘুরি।

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago

কেমন আছেন আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা? আমি ভালো আছি। আশাকরি আপনারা ও ভালো আছেন।


প্রচন্ড গরম পড়ার কারণে বেশ কয়েকদিন ধরে ঘরেই বসে আছি। কিন্তু ঘরে থাকতে থাকতে অনেকটা বিরক্ত হয়ে গিয়েছি। তাই চিন্তা করলাম বাইরে কোথা থেকে ঘুরে আসতে পারলে মন্দ হয় না। সেজন্য বন্ধু ফেরদৌসকে ফোন দিলাম যে বিকালে বাইরে কোথাও ঘুরতে যাবে কিনা। সে এক বাক্যে রাজি হয়ে গেলো। প্রথমে আমরা পরিকল্পনা করেছিলাম পদ্মার পাড়ে সময় কাটাবো।

IMG_20220715_182216.jpg

কিন্তু বাইরে বের হওয়ার পর যখন দুজন একসাথে মিলিত হলাম। তখন চিন্তা করে দেখলাম এখন ঈদের ছুটি চলছে। এই সময় পদ্মার পাড়ে প্রচন্ড ভিড় থাকবে। আমরা চাচ্ছিলাম কোলাহলমুক্ত পরিবেশে নিরিবিলি বসে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে। তাই আমরা ঠিক করলাম অন্য কোনো জায়গায় যাবো। গতবছর বর্ষা মৌসুমে চরের দিকে একটি জায়গায় একটি ভাসমান রেস্টুরেন্টের উদ্বোধন হয়েছিলো। সেই ভাসমান রেস্টুরেন্টটি বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছিলো। এই বছর সেই রেস্টুরেন্টটি এখনো চালু হয়েছে কিনা জানিনা। তাই আমরা চিন্তা করলাম সেই জায়গায় গিয়ে দেখে আসি রেস্টুরেন্টটি চালু হয়েছে কিনা।

IMG_20220715_182212.jpg

IMG_20220715_183516.jpg

যাই হোক আমরা রওনা দিলাম সেই জায়গার উদ্দেশ্যে। তবে জায়গাটিতে যাওয়ার যে রাস্তা। সেই রাস্তাটি খুবই চমৎকার। রাস্তার একপাশে নিচু ফসলের মাঠ। যেটি পানি আসার কারণে এখন বিলের আকৃতি ধারণ করেছে। আর রাস্তাটি বেশ ফাঁকাই বলা যেতে পারে। তেমন একটা যানবহন সেখানে নেই। যার ফলে আমরা গল্প করতে করতে সেই জায়গার উদ্দেশ্যে যাচ্ছিলাম।

IMG_20220715_184826.jpg

IMG_20220715_183632.jpg

কিন্তু সেখানে গিয়ে আমরা যে দৃশ্য দেখলাম তার জন্য মোটেই প্রস্তুত ছিলাম না। সেখানে পৌঁছে দেখি প্রচুর লোক সমাগম হয়েছে। অনেক লোকজন ছোট ছোট নৌকায় করে সেই বিলের মত জায়গাতে ঘুরে বেড়াচ্ছে। আর আমরা যেই ভাসমান রেস্টুরেন্টটি দেখার উদ্দেশ্যে গিয়েছিলাম গিয়ে দেখি সেই ভাসমান রেস্টুরেন্টটি পাড়েই ভেড়ানো রয়েছে। লোকজনের অপেক্ষায় দাড়িয়ে রয়েছে। লোকজন উঠলে তারপর সেটি ছাড়বে। তবে একটি বিষয় দেখে কিছুটা হতাশ হলাম। সেটি হচ্ছে সেই মাঠে এখনো খুব একটা পানি আসেনি। প্রতিবার এই সময় এই মাঠে প্রচুর পানি থাকে। পানি ছাড়া এইসব জায়গায় দেখতে খুব একটা ভালো লাগে না।

IMG_20220715_183700.jpg

IMG_20220715_184810.jpg

তারপরেও কি আর করা?যেহেতু চলে এসেছি তাই টিকিট কেটে সেই ভাসমান রেস্টুরেন্টে চেপে বসলাম। ৪০ মিনিটের একটি ভ্রমণের জন্য তারা মাথাপিছু ৫০ টাকা করে টিকিটের দাম ধরেছে। যাই হোক আমরা সেখানে বসার কিছুক্ষণ পর সেই ভাসমান রেস্তোরাঁটি চলতে শুরু করলো। এদিকে আমরা সেই রেস্টুরেন্টে বসে তাদের কাছে জিজ্ঞেস করলাম কি কি খাবার পাওয়া যাবে। তারা বলল তেমন একটা কিছু নেই শুধু চটপটি, ফুচকা, কফি কোলড্রিংস এগুলো পাবেন। এখন আমরা ফুচকা আর কফির অর্ডার করলাম।

IMG_20220715_183757.jpg

IMG_20220715_183118.jpg

তারপর আমরা ছবি তোলায় ব্যস্ত হয়ে পড়লাম। যখন রেস্টুরেন্ট চলতে শুরু করেছে ততক্ষণে বেলা প্রায় শেষ হয়ে এসেছে। যার ফলে চারদিকে একটি চমৎকার পরিবেশ তৈরি হয়েছিলো। আরো একটি মজার জিনিস দেখতে পেলাম। বিলে যে সমস্ত ছোট ছোট ডিঙ্গি নৌকায় করে মানুষ ঘুরে বেড়াচ্ছিল। মাঝে মাঝে কিছু নৌকা এসে ভাসমান রেস্টুরেন্টের পাশে দাঁড়িয়ে বিভিন্ন রকম খাবার অর্ডার করছিলো। ব্যাপারটি দেখে বেশ মজা পেলাম। যদিও সেখানকার খাবারের মান খুব একটা ভালো না। বিশেষ করে কফির স্বাদ ছিল একেবারেই খারাপ। তবে ফুচকা খেতে খুব একটা খারাপ লাগেনি।

IMG_20220715_183511.jpg


আজকের মত এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।


ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত ডিভাইসহুয়াই নোভা 2i
ফটোগ্রাফার@rupok
স্থানমোহাম্মাদপুর

logo.png

Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png

standard_Discord_Zip.gif


🇧🇩🇧🇩ধন্যবাদ🇧🇩🇧🇩


@rupok

Sort:  
 2 years ago 

বাহ ! বেশ চমৎকার তো এই প্রথম পানির উপরে কোন ভাসমান রেস্তোরাঁ দেখতে পেলাম আপনার মাধ্যমে ভাইয়া । রেস্তোরাঁটি দেখি নৌকার মতো ভাসতে পারে পানির উপরে এবং সেখানে খাওয়া-দাওয়া ও ব্যবস্থা আছে ভালোই ।ফুচকা কোল্ড্রিংস খেলেন আপনারা । বর্ষার মৌসুমে মনে হয় আরো বেশি পানি থাকে সেখানে।

 2 years ago 

শুধু নৌকার মতো ভাসতে পারে না। চলাফেরাও করতে পারে।

 2 years ago 

আসলে ভাইয়া এই ধরনের পরিবেশের রেস্টুরেন্ট গুলোর খাবারের মান ভালো হোক কিংবা খারাপ হোক সে দিকটা মানুষ খুব একটা বেশি লক্ষ্য করেনা। এই ধরনের পরিবেশে খাওয়া-দাওয়া করতে সবার মনের মধ্যে অন্য রকমের এবং একটি অনুভূতি কাজ করে। কফিটা ভালো না লাগলে কি হবে ভাইয়া ফুচকা তো ভালো লেগেছে।

 2 years ago 

একদম ঠিক বলেছেন। এই ধরনের পরিবেশে খাবারের মান যেমনই হোক সেই খাবার খেতে এক ধরনের অন্যরকম অনুভূতি কাজ করে।

 2 years ago 

কিছুদিন আগে আমিও ভাসমান রেস্টুরেন্ট গিয়েছিলাম তবে অনেক রাতের বেলা, তাই নদীর দৃশ্য গুলো মিস করেছি ভালই লাগছে আপনার নদীর সেই দৃশ্যগুলো মন জুড়িয়ে যাওয়ার মত কিছু প্রাকৃতিক দৃশ্য ছিল।

 2 years ago 

রাতে অবশ্য আলাদা এক ধরনের মজা হয় এই ধরনের রেস্টুরেন্টে বসতে পারলে।

 2 years ago 

এখন প্রায় জায়গায় ভাসমান রেস্টুরেন্ট দেখা যায়। আমার মনে হয় এটা ব্যবসাগত একটা পলিসি ।মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য‌। আসলে ঢালাওভাবে বলা উচিত হবে না কিছু কিছু জায়গায় বাস মান রেস্টুরেন্টে ভালো খাবার পাওয়া যায় কিছু কিছু জায়গায় ভালো পাওয়া যায় না । যেই খাবারটা সচরাচর বেশি বিক্রি হয় ওই খাবারটা সাধারণত এই ধরনের রেস্টুরেন্টগুলোতে ভালো পাওয়া যায়। দেখেন তো আপনার কিন্তু খুবই ভালো না লাগলেও ফুচকা কিন্তু ঠিকই ভালো লেগেছে।

 2 years ago (edited)

ঠিক বলেছেন। এই ভাসমান রেস্টুরেন্ট গুলি এক ধরনের নতুন বিজনেস পলিসি।

 2 years ago 

এর আগেও ভাসমান রেস্টুরেন্টের ছবি দেখেছিলাম।আজকে ও দেখলাম।খুবই সুন্দর লোকেশন।আসলেই ঈদে মনে হচ্ছে যেখানে যাই ঐখানেই মানুষের সমাগম। যাই হোক ছবিগুলো বেশ সুন্দর। ধন্যবাদ আপনাকে

 2 years ago 

আগে যেই ভাসমান রেস্টুরেন্টের ছবি দেখেছেন সেটা শুধু পারে দাঁড়িয়ে থাকে চলাফেরার ক্ষমতা নেই। কিন্তু এই রেস্টুরেন্টটি দিব্যি ঘুরেফিরে বেড়াতে পারে।

 2 years ago 

ভাসমান রেস্টুরেন্টে ঘুরে খাওয়া-দাওয়ার সাথে সুন্দর ফটোগ্রাফি করেছেন খুবই ভালো লাগলো ভাসমান রেস্টুরেন্টের আশপাশের পরিবেশ দেখে। আসলে এমন সুন্দর জায়গায় কান্না মন চায় কিছু সময় অতিবাহিত করতে। আমরাও কুষ্টিয়া পদ্মার পাড়ে পার্কে অনেকটা সময় ঘোরাঘুরি করেছি এবং খুব মজা করেছি

 2 years ago 

এবারে সেখানকার পরিবেশ এখনও খুব একটা ভালো হয়নি। গত বছর এই সময় ওই স্থানে প্রচুর পানি ছিলো। পরিবেশটাও আরো সুন্দর ছিলো।

 2 years ago 

ভাসমান রেস্টুরেন্ট সচরাচর কোন জায়গায় দেখা যায়। আপনি আজকে ঠিক তেমনি সুন্দর একটা ভাসমান রেস্টুরেন্টের বর্ণনা দিয়েছেন এবং সেখানে খাওয়া-দাওয়া করে ঘোরাঘুরি করেছেন বেশ ভালো লাগলো আপনার এত সুন্দর একটি বর্ণনামূলক পোস্ট দেখতে পেরে। নদীর কুল ঘেঁষে গড়ে ওঠা এ জাতীয় রেস্টুরেন্ট গুলো মানুষকে বেশি আকৃষ্ট করে থাকে। যাইহোক সব মিলিয়ে সুন্দর একটি পোস্ট আপনি শেয়ার করেছেন আমাদের মাঝে, যা পড়ে খুব ভালো লাগলো আমার।

 2 years ago 

ঠিকই বলেছেন এই ধরনের রেস্টুরেন্ট বেশি মানুষজনকে আকৃষ্ট করে।

 2 years ago 

আপনার পোস্টটি পড়ে মনে হচ্ছে ভাসমান রেস্টুরেন্টে খাওয়া দাওয়া করে এবং ঘোরাঘুরি করে আপনি অনেক আনন্দের সাথে সময়টুকু কাটিয়েছিলেন। এ ধরনের রেস্টুরেন্টে খাওয়া দাওয়া করার মজাই আলাদা।

 2 years ago 

সময়টা আসলেই খুব উপভোগ করেছি।

 2 years ago 

আপনার এই পোস্ট দেখেই বোঝা যাচ্ছে ভাসমান রেস্টুরেন্টে অনেক চমৎকার একটি মুহূর্ত অতিবাহিত করেছেন সেই সাথে কিছু সুন্দর মুহূর্তের ফটোগ্রাফি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন দেখে আমার খুবই ভালো লেগেছে। আমাদের এদিকেও এরকম ভাসমান রেস্টুরেন্ট আছে আমি শুনেছি তবে কখনো যাওয়া হয়নি তবে আপনার এই পোস্ট দেখে এখন যেতে খুব ইচ্ছে করছে।

 2 years ago 

এই ধরনের রেস্টুরেন্টে সময় কাটাতে বেশ ভালই লাগে।

 2 years ago 

ভাসমান রেস্টুরেন্ট নাম অথচ খাবারের আইটেম এত কম! যাইহোক ভেসে ভেসে খাওয়াও যায় আর নদীর নির্মল দৃশ্য উপভোগ করাও যায় এটাই শান্তি।কোলাহল মুক্ত পরিবেশ,দারুণ সময় কাটিয়েছেন।ধন্যবাদ ভাইয়া।

 2 years ago 

খাবারের আইটেম আসলেই কম। এটাকে ভাসমান রেস্টুরেন্ট না বলে একটা নৌকা বলাই ভালো।

Coin Marketplace

STEEM 0.17
TRX 0.13
JST 0.027
BTC 60796.19
ETH 2601.58
USDT 1.00
SBD 2.57