দীর্ঘদিন পর বন্ধুদের সাথে আড্ডায় কাটানো কিছু মুহূর্ত।
বাড়িতে ফিরে গত কয়েক দিন ধরে ঘরেই রয়েছি। শুধু টুকটাক কেনাকাটা করার জন্য আর হাঁটাহাঁটি করার জন্য বাইরে গিয়েছিলাম। তাছাড়া আর ঘর থেকে খুব একটা বের হওয়া হয়নি। আপনারা যারা আমার পোস্ট পড়েন তারা জানেন আমি সাধারণত আমার বন্ধু ফেরদৌসের সাথেই ঘোরাফেরা করি। ফেরদৌস একটি ব্যক্তিগত কাজে ঢাকা গিয়েছে। সেজন্য এখন আমি একা হয়ে গিয়েছি। গতকাল ফেরদৌস আর রাসেলের ঢাকা থেকে ফরিদপুর আসার কথা ছিলো।
কিন্তু ফেরদৌসের কাজ শেষ না হয় সে আর আসতে পারেনি। ফেরদৌস না আসলেও রাসেল ঢাকা থেকে ফরিদপুর এসেছে। তাই চিন্তা করলাম যেহেতু ফেরদৌস নাই তাই রাসেলকে নিয়েই কোথাও ঘুরতে যাই। আপনারা জানেন কিছুদিন আগে আমি রাসেলের সাথে ধানমন্ডি লেক এবং নিউমার্কেটে গিয়েছিলাম ঘুরতে। আমরা অনেক আগে থেকেই একসাথে চলাফেরা করি। তাই রাসেল ফরিদপুর এসে আমাকে ফোন দিয়েছিল বাইরে যাওয়ার জন্য। ওর সাথে কথাবার্তা বলে আজ বিকেলে বের হওয়ার প্ল্যান করলাম।
কিন্তু বিকালে বাসা থেকে বের হয়ে দেখি পুরো শহর রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের দখলে রয়েছে। শহর জুড়ে বেশ উত্তেজনা বিরাজ করছে ক্ষমতাসীন দলের একটি প্রোগ্রাম নিয়ে। বাসা থেকে বের হয়ে আর একটু হলেই একটি ঝামেলায় পড়ে গিয়েছিলাম। যাইহোক কোন রকমে সেই ঝামেলা এড়িয়ে আমি বন্ধু রাসেলের সাথে দেখা করলাম। রাসেল ফরিদপুর ডায়াবেটিস হাসপাতালে সামনে দাঁড়িয়ে ছিল। আমি সেখানে পৌছলে দুই বন্ধু মিলে অন্য আরেক বন্ধুর বাসায় উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম। সেখানে রাসেলকে একটি জরুরী কাগজ দিতে হবে।
পরিকল্পনা হলো সেই বন্ধুর বাসায় কাগজটি দিয়ে তারপর আমরা ঘুরতে বের হব। যাই হোক পরিকল্পনা মোতাবেক সেই বন্ধুর হাতে কাগজ পৌঁছে দেয়ার পর আমরা দুজন চিন্তা করছিলাম কোথায় যাওয়া যায়। প্রথমে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম পদ্মার পাড়ে যাবো। কিন্তু আমাদের কাজ শেষ হতে হতে প্রায় সন্ধ্যা হয়ে গিয়েছিলো। তাই দুজনে সেই পরিকল্পনা পরিবর্তন করে ঠিক করলাম আমরা বন্ধুর রাফ্সানের শোরুমে যাব। সেখানে অনেকদিন যাওয়া হয় না। রাফসানের শোরুমে গেলে বেশ ভালো একটা আড্ডা দেয়া যায়।
দীর্ঘদিন ফরিদপুরের বাইরে থাকায় রাফসানের দোকানের আড্ডাটা খুব মিস করছিলাম। তাই সেখানে যাওয়া পরিকল্পনা করলাম। তবে তার আগে আমি বন্ধু রাসেলকে বললাম এখানে একটি ভালো ফুচকার দোকান আছে। চল সেখান থেকে দুজন কিছু খেয়ে তারপর রাফসানের শোরুমে যাব। কথামতো দুজন মিলে সেই ফুচকার দোকানে গেলাম যেখানে আমি কয়েকদিন আগে আমার পরিবার নিয়ে গিয়েছিলাম। সেখানে গিয়ে আমার প্রিয় একটি খাবার অর্ডার করলাম। খাবারটার নাম বেশ অদ্ভুত। সেটাকে তারা নাম দিয়েছে ভাঙচুর হিসাবে। তবে নাম যেমনই হোক খাবারটি খেতে আমার কাছে বেশ ভালো লাগে।
খাওয়া-দাওয়া শেষ হলে আমরা দুজন রাফসানের শোরুমের উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম। যখন সেখানে পৌঁছলাম ততক্ষণে সন্ধ্যা হয়ে গিয়েছে। তাই আমি বন্ধু রাসেল কে বললাম তুই ওর শোরুমে গিয়ে বস। আমি নামাজ পড়ে আসছি। তারপর আমার নামাজ শেষ হলে আমি গিয়ে ওদের সাথে আড্ডায় যোগ দিলাম। তবে সেখানে গিয়ে আরেক প্রস্থ খাওয়া দাওয়া হল। বন্ধুরা রাসেল সিঙ্গারা পিয়াজু এগুলি কিনে এনেছে খাওয়ার জন্য। আমি খাব না খাব না করেও কিছুটা খেলাম। খাওয়া দাওয়া শেষ হলে আমরা বেশ কিছুক্ষণ আড্ডা দিলাম।
আড্ডার বিষয়বস্তু ছিল টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট বিশ্বকাপ। আপনারা জানেন আড্ডার জমার অন্যতম অনুষঙ্গ হচ্ছে চা। তাই কিছুক্ষণ আড্ডা দিয়ে আমি বললাম চল আমরা চা খেয়ে আসি। কারণ রাফসানের শোরুম যে জায়গাটাতে সেখানে গরুর দুধের চা পাওয়া যায়। সেই চা খেতে বেশ মজাদার। চা খেতে এতই ভালো যে শহর থেকে পর্যন্ত অনেকে যায় সেখানে চা খেতে। তারপর আমরা তিন বন্ধু মিলে গেলাম চায়ের দোকানে। চা খেতে দোকানটি ওর শোরুম থেকে খুব কাছেই। তারপর সেখান থেকে চা নিয়ে আরেক দফা আড্ডা চললো। গল্প গুজব শেষ হলে তারপর আমরা যার যার মতো বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম। অনেকদিন পর বন্ধু-বান্ধবের সাথে আড্ডা দিয়ে দিনটি বেশ ভালোই কাটলো।
আজকের মত এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।
ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত ডিভাইস | হুয়াই নোভা 2i |
---|---|
ফটোগ্রাফার | @rupok |
স্থান | গজারিয়া বাজার |
Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote
Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote
VOTE @bangla.witness as witness
OR
আসলে বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিতে বেশ ভালোই লাগে। আর কেউ যদি প্রিয় বন্ধু থাকে সে চলে গেলে মনে হয় যে পুরো একা হয়ে গেলাম। যাক আপনার বন্ধুদের সাথে আড্ডা কাটানো কিছু মুহূর্ত গুলো পড়ে বেশ লাগলো। কিন্তু একটা জিনিস করে অবাক হয়েছি সেটা হচ্ছে খাবারের নামটা। ভাঙচুর নামে যে কোন খাবার হতে পারে এটা আমার জানা ছিল না। যাইহোক ধন্যবাদ আপনাকে এই মুহূর্তে শেয়ার করার জন্য।
নামটা যখন আমি প্রথম শুনেছিলাম। তখন আমিও আপনার মত অবাক হয়েছিলাম।
আসলেই ভাই খাবারের নামটা আমার কাছে অদ্ভুত লেগেছে, ভাঙচুর কোন খাবারের নাম হয় সেটা আসলেই অবাক করেছে। তারপরেও নাম যেমনি হোক খাওয়াটা অনেক সুস্বাদু ছিল। আপনি আপনার বন্ধুর রাসেলকে নিয়ে ফুচকার দোকানে এসে এই খাবারটি খেলেন। আসলে বন্ধুদের সাথে আড্ডা দেওয়ার মুহূর্তটা সত্যিই অসাধারণ।
নামটি আমি প্রথম শুনতে পাই একজন ফুড ব্লগারের ভিডিও থেকে। রাজশাহী ইউনিভার্সিটিতে উনি একটি খাবার খেয়েছিলেন এই নামে।
ভাই আপনার বন্ধুদের সাথে আড্ডার গল্পটি বেশ ভালোই লেগেছে আমার কাছে। ভাঙচুর খাবারটির নাম আমি কখনো শুনিনি। একটু জানাবেন কাকে আপনি ভাঙচুর খাবার বলেন। আরেকটি কথা আপনার মত বাহিরে গেলে আমিও এরকম গরুর দুধের চা খেতে পছন্দ করি। যা গত রাতে খেয়ে এসেছি।
এই খাবারটির নাম আমি প্রথম জানতে পারি একজন ফুড ব্লগারের ভিডিও থেকে। তবে সেই খাবারের সাথে এটার কোন মিল নেই। এটা ইন্ডিয়ান চাট মাসালা টাইপের খাবার।
ভাইয়া অনেক ভাল লাগলো আপনার বন্ধুদের সাথে আড্ডা দেয়ার অনুচ্ছেদটি পড়ে। আসলে নিজের জন্য কিছু একটা সময় বের করে সময় কাটানো উচিত। তাতে মনটা প্রফুল্ল থাকে। খাবারের নামটি কিন্তু খুব মজার ছিল। অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া শেয়ার করার জন্য।
ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য।
Mistake comment
আমি বগুড়া থাকি এ কথা কি কোথাও বলেছি ? আমার তো মনে পড়ছে না।
Oo তালে আমি ভুল বলেছি sorry ভাইয়া
আপনাদের ওখানে যেটা ভাঙচুর, আমাদের এখানে সেটা চুরমুর। হা হা হা... আমি খাইনা, কারণ নোংরা ভাবে বানায় ফুচকার দোকানে গুলোতে। যাইহোক আপনার পুরো পোস্টটা পড়লাম। বেশ ভালো লেগেছে আমার। পড়ছিলাম আর মনে হচ্ছিল যেন আমি ঘুরতে বেরিয়েছি বন্ধুদের সাথে আর তাদের সাথে আড্ডা এবং খাওয়া দাওয়া করছি। আর টি-টোয়েন্টি নিয়ে তো আমি কোন কথাই বলবো না। কারণ আমি খেলার কিছুই বুঝিনা।
আমাদের উপমহাদেশ স্ট্রিট ফুড গুলো কিছুটা নোংরা পরিবেশে তৈরি হয়ে থাকে। তবে আমি যেখান থেকে খেয়েছি সেটা রীতিমতো একটি ফুচকার রেস্টুরেন্ট। পরিবেশটা মোটামুটি পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন।
বাহ্ বএশ ভালোই সন্ধ্যেবেলার আড্ডা জমিয়ে দেয়েছেন তো তিন বন্ধু মিলে। তবে ফিরদৌসদা জানলে কিন্তু ভীষণ মিস করবে। আর ভাঙাচুরা টা কি জিনিস যদি কখনও পারেন একটু ছবি দেখাবেন প্লিজ। নাম শুনে কৌতুহল জাগলো আর কি! আচ্ছা আপনারা যে ফুচকা খেলেন বন্ধুর শোরুমে যাওয়ার সময় ওর জন্য নিয়ে যান নি? 😀 আবার উল্টো সিঙাড়া, পেঁয়াজি খেয়ে এলেন। বন্ধুদের মধ্যে এমনই হয় তাই না? ৯ তারিখ আমিও আমার একটা বান্ধবী এমন সন্ধ্যাবেলা আড্ডা দিতে বেড়িয়ে ছিলাম কোর্টের কাজ মিটিয়ে। এমন মাঝে মাঝে বেড়োলে মনটা ভালো হয়ে যায়।
যে খাবারটা আমরা খেয়েছিলাম সেটা আসলে রেস্টুরেন্টে বসেই খেতে হয়। ওটা অন্য কোথাও নিতে গেলে সাদটা আর সেরকম পাওয়া যায় না। আপনার জন্য ছবি দিয়ে দিলাম।
আচ্ছা! এটা অনেকটা দই পাঁপড়ি চাটের মত। ঠিকই, এটা নেওয়া সম্ভবনা সাথে করে।