পরিকল্পিত প্রতিশোধ (দ্বিতীয় পর্ব)।
তিনি ছেলেকে খুঁজতে শুরু করলেন। তিনি রাফির সমস্ত বন্ধুদের বাড়িতে খোঁজখবর নিলেন। কিন্তু কেউ কিছু বলতে পারল না। এদিকে বেশ রাত হয়ে গিয়েছে। রাফির মা সন্ধ্যা থেকেই কান্নাকাটি জুড়ে দিয়েছে। শেষ পর্যন্ত নিরুপায় হয়ে রাফির বাবা থানায় যোগাযোগ করলো। তিনি যেহেতু রাজনীতি করতেন তাই থানার লোকজন তার অভিযোগ বেশ গুরুত্বের সাথে শুনলো। তারপর তারা তাকে পরামর্শ দিল আরো কিছুক্ষণ অপেক্ষা করার জন্য কারণ ২৪ ঘন্টা পার না হলে তো মিসিং কমপ্লেন নেয়া যায় না।
থানার ওসি বললো আপনারা আরো কিছুক্ষণ অপেক্ষা করে দেখুন। হয়তো সে কোন আত্মীয় স্বজনের বাড়িতে গিয়েছে। সব জায়গায় খোঁজ করুন। আমরাও আমাদের লোকজন দিয়ে তাকে খোঁজার চেষ্টা করছি। থানার লোকজন রাফির বাবার কাছ থেকে রাফির একটা ছবি নিয়ে নিলো। ইতিমধ্যে রাত প্রায় বারোটা বেজে গিয়েছে। এর ভিতরে রাফির বাবা আশেপাশের সমস্ত থানা হাসপাতাল সব জায়গায় খোঁজখবর নিয়েছে। কিন্তু রাফির কোন পাত্তা নেই। শেষ পর্যন্ত বিধ্বস্ত শরীরে রাফির বাবা রাত একটার দিকে বাড়িতে ফিরলো।
ফেরার সাথেই রাফির মা তাকে দেখে কান্নায় ভেঙে পড়লেন। তিনি কাঁদতে কাঁদতে বলতে লাগলেন আমার রাফিকে আমার কাছে এনে দাও। আমার ছেলেটার না জানি কি বিপদ হয়েছে। যেভাবে পারো আমার ছেলেকে আমার কাছে এনে দাও। রাফির বাবা তাকে সান্তনা দেয়ার চেষ্টা করলো। ইতিমধ্যে তাদের সমস্ত আত্মীয়-স্বজন খবর পেয়ে তাদের বাড়িতে চলে এসেছে। রাফির চাচাতো ভাইয়েরা এসে রাফির একটি ছবি নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় খুঁজতে শুরু করে দিয়েছে। কিন্তু কোথাও রাফিকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।
পরদিন সকালে রাফির বাবা আবার থানায় গেল। তখন থানার লোকজন মিসিং কমপ্লেন নিয়ে নিলো। তারপর তারা রাফির বাবাকে রাফি সম্বন্ধে বিভিন্ন প্রশ্ন জিজ্ঞেস করতে লাগলো। রাফির বন্ধু বান্ধব কারা ছিলো? রাফিক কোথায় ঘুরতে যেতো? কোথায় যেতে পছন্দ করতো? আরো নানারকম প্রশ্ন। এ সমস্ত প্রশ্নের উত্তর দিয়ে রাফির বাবা থানা থেকে কেবল বাসায় ফিরেছে। এর ভেতরে তার নাম্বারে অপরিচিত একটি নাম্বার থেকে কল এলো।
রাফির বাবা কিছু বলার আগেই ওপার থেকে বলল যা বলবো মনোযোগ দিয়ে শুনবেন। বেশি চালাকি করার চেষ্টা করলে আপনার ছেলেকে আর কখনো দেখতে পাবেন না। রাফির বাবা তাকে জিজ্ঞেস করলো আপনি কি চান? আপনি কেন আমার ছেলেকে নিয়ে গিয়েছেন? কোথায় রেখেছেন তাকে? তখন অপর প্রান্ত থেকে বলল আপনার কোন প্রশ্নের উত্তর আমি এখন দেব না। শুধু আপনাকে জানিয়ে রাখি আপনার ছেলে আমার কাছে আছে। ছেলেকে জীবিত ফেরত পেতে চাইলে আমি যা বলব সেই অনুযায়ী কাজ করতে হবে।
তখন রাফির বাবা জিজ্ঞেস করল আপনি কি চান? ও প্রান্ত থেকে বলল নগদ দুই কোটি টাকা দিতে হবে। কখন দিবেন কিভাবে দেবেন সেটা আমি পরে ফোন করে জানিয়ে দেবো। আর যদি পুলিশকে এই ব্যাপারটা জানান তাহলে আপনার ছেলেকে আর কখনো জীবিত দেখতে পারবেন না। বলেই ফোনটা কেটে দিলো। রাফির বাবা অবাক হয়ে চিন্তা করতে লাগলো কে তার ছেলেকে কিডন্যাপ করতে পারে? কে এ কাজ করেছে সে চিন্তা করতে লাগলো।
রাজনীতি করাকালীন সময়ে তিনি বিভিন্ন রকম মন্দ কাজের সাথে জড়িত ছিলেন। হতে পারে হয়তো সেই সময়ের বদলা নিচ্ছে কেউ। আবার পেশাদার অপহরণকারী ও হতে পারে। রাফির বাবা কিছু বুঝতে পারল না এখন সে কি করবে? একবার সে চিন্তা করে দেখল পুলিশকে জানাই ব্যাপারটা। পরমুহূর্তে আবার চিন্তা করল পুলিশের সাথে যোগাযোগ করলে যদি তার ছেলেকে অপহরণকারীরা মেরে ফেলে?(চলবে)
Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
মনে হয় যে ব্যাপারটা পুলিশকে জানালে ভাল হত কেননা তারা কোনো বুদ্ধি করে কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারত। এসব বিষয়ে তাদের বেশি জ্ঞান থাকে, কিন্তু যদি রাফির বাবা এ ব্যাপারে একা সিদ্ধান্ত নিতে চায় তাহলে হয়তো কোনো বিপদে পড়তে পারে। ভালো লাগছে আপনার গল্প, পরের পর্বের জন্য অপেক্ষায় রইলাম।
পুলিশকে জানালে অনেক সময় হিতে বিপরীত হয়।
জি ভাই তা ঠিক বলেছেন
রাজনীতি করলেও অনেক শত্রু তৈরি হয়ে যায়| রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ সব সময় ঘায়েল করতে চায়| নিশ্চিত ভাবেই রাফির বাবাকে ঘায়েল করার জন্য এই অপহরণ| তবে আমার মতে রাখি আবার উচিত পুলিশের সাথে গোপনে হলেও বিষয়টি শেয়ার করা|
ঠিকই বলেছেন রাজনীতি করলে রাজনীতিবিদদের অনেক শত্রু তৈরি হয়।
রাফির বাবা নিশ্চয় অনেক বৃত্তশালী ছিল না হলে কিডনাপার দুই কোটি টাকা দাবি কিভাবে করে। যাই হোক আমার মনে হয় এক্ষেত্রে অবশ্যই পুলিশের সহযোগিতা নিয়ে কিডন্যাপারকে ধরা উচিত। পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।
তা তো অবশ্যই। বৃত্তশালী লোক ছাড়া অন্য কারো বাচ্চার সাধারণত কিডনাপাররা কিডন্যাপ করে না।
যেহেতু রাজনীতি করে তাহলে হয়তো পরিচিত কেউই রাফিকে কিডন্যাপ করেছে । এজন্য তারা ২ কোটি টাকা দাবি করেছে রাফির বাবার কাছে । রাফির বাবাও হয়তো অনেক বিত্তশালী । পুলিশকে জানালে আশা করি তারা যথাযথভাবে তদন্ত করবে । হয়তো পরের পর্বে সম্পূর্ণটা জানতে পারবো । অপেক্ষায় রইলাম ভাইয়া । ধন্যবাদ
আশা করি ইতিমধ্যে সব জেনে গিয়েছেন।
এরকম পরিস্থিতিতে আমি মনে করি পুলিশকে জানানো উত্তম। ভাই আপনার গল্পের দ্বিতীয় পর্বটি বেশ আকর্ষণীয় ছিল। আবারো পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।
পুলিশকে জানালে জীবন হারানোর ভয় থাকে। নিজের বাচ্চার ক্ষেত্রে অনেকেই এই ধরনের ঝুঁকি নিতে চায় না।