শীতের সকালে প্রকৃতির স্নিগ্ধ ছোঁয়ায় কিছুক্ষণ।
আপনারা জানেন স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য আমি সকালে হাঁটাহাঁটি করি। তবে সেটা যে একেবারে মনের আনন্দে করি তা ঠিক নয়। মূলত হাঁটাহাঁটি করার জন্য ডাক্তার আমাকে পরামর্শ দিয়েছে। সেজন্যই ভোরবেলার আরামের ঘুম বাদ দিয়ে আমি হাঁটতে বের হই। তবে হাঁটাহাঁটি করার পর অবশ্য বেশ ভালো লাগে। শরীর মন দুটোই ফুরফুরে মনে হয়। মাঝখানে আমার পা ভেঙে যাওয়ার কারণে তারপর আবার ঢাকা যাওয়ার কারণে বেশ কিছুদিন হাঁটাহাঁটি করা হয়নি। গত কয়েকদিন হল বাড়িতে ফিরেছি। তারপর থেকেই প্রতিদিন সকালে নিয়ম করে হাঁটতে বের হই আমি।
বেশিরভাগ দিন সাধারণত একই রাস্তা দিয়ে হাঁটাহাঁটি করি। তবে মাঝে মাঝে একটু পরিবর্তনের জন্য গ্রামের দিকে যাই। সকালবেলায় গ্রামের দিকে হাঁটতে যাওয়ার মজাই অন্যরকম। ভোর বেলায় চারপাশের প্রকৃতি এমনিতেই অনেক সুন্দর থাকে। যদিও শহরের রাস্তাঘাটে প্রকৃতির তেমন কোনো ছোঁয়া নেই। যার ফলে ব্যাপারটা বোঝাও যায় না। কিন্তু গ্রামের দিকে গেলে ব্যাপারটা সম্পূর্ণ ভিন্ন রকম। সেখানে চারদিকে সবুজের সমারোহ আর আদিগন্ত বিস্তৃত ফসলের মাঠ। আর শীতের এই সকাল গুলিতে হাঁটতে যাওয়ার মজাটা আরো অন্যরকম।
একটু খেয়াল করলেই দেখা যায় ঘাসের ডগায় শিশির বিন্দু জমে আছে। তার উপরে সদ্য উদয় হওয়া সূর্যের আলো পড়ে ঝিকমিক করছে। দুদিন আগে আমি সকালে হাঁটতে বের হয়েছিলাম। বের হওয়ার পর চিন্তা করছিলাম কোন দিকে যাওয়া যায়। তার আগে কয়েকদিন আমি শহরের রাস্তা দিয়েই হাটাহাটি করেছি। তাই সেদিন চিন্তা করলাম আজ একটু গ্রামের দিক থেকে হেঁটে আসি। চিন্তা করার সাথে সাথেই আমি গ্রামের উদ্দেশ্যে হাঁটতে শুরু করলাম। আমার বাসা থেকে মাত্র দেড় দুই কিলোমিটার গেলেই গ্রামের দেখা পাওয়া যায়। সে দিকটাতে আমি মাঝে মাঝেই যাই। সেদিনও আমি সেই গ্রামের উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম।
আমার বাসা থেকে কিছুদূর যাওয়ার পরই রেললাইন রয়েছে। রেললাইন পার হওয়ার সময় শব্দ শুনে বুঝতে পারলাম রেলগাড়ি আসছে। দীর্ঘদিন কাছ থেকে এভাবে চলন্ত ট্রেন দেখা হয় না। তাই কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকলাম ট্রেন দেখার জন্য। অল্প কিছুক্ষণ পরেই সগর্জনে ট্রেন ছুটে এলো। তারপর সেটা আমার সামনে দিয়ে চলে গেল। দৃশ্যটি দেখে সাথে সাথে ক্যামেরা বন্দি করে নিলাম। তারপর আবার গ্রামের উদ্দেশ্যে হাঁটতে শুরু করলাম। কিছুক্ষণ হাঁটার পর একটি ব্রিজের কাছাকাছি পৌঁছালাম। ব্রিজটি অতিক্রম করলে ওপার থেকে গ্রামের শুরু।
ব্রিজ পার হয়ে কিছুদূর আগাতেই রাস্তার দু'পাশে দেখতে পেলাম বিস্তীর্ণ ফসলের ক্ষেত। ক্ষেতের ধান গাছগুলিতে ইতিমধ্যে দেখলাম পাক ধরেছে। হয়তো খুব শীঘ্রই ধান কাটা শুরু হবে। শীতের সকালে হাটার আরো একটা মজা হচ্ছে আপনি সহজে ক্লান্ত হবেন না। এজন্য অনেক কম পরিশ্রমে আপনি অনেকটা পথ হাঁটতে পারবেন। এজন্য আমি দীর্ঘ সময় ধরে হাঁটছিলাম। গরমের দিনে আমার সাধারণত প্রচন্ড ঘাম হয়। কিন্তু শীতের দিন হওয়ার কারণে একেবারেই ঘাম হচ্ছিল না। যার ফলে ক্লান্তিও আসছিল না। এজন্য আমি অনেকক্ষণ হাটছিলাম। তবে হাঁটার সাথে সাথে মাঝে মাঝে ঘড়ির দিকেও খেয়াল রাখছিলাম। আর ছবি তোলার বিষয়টা তো ছিলই। যখনই কোন দৃশ্য ভালো লাগছিল তখনই সেটা ক্যামেরাবন্দি করছিলাম। শেষ পর্যন্ত যখন দেখলাম আমার হাটাহাটির সময় প্রায় শেষ। তারপর বাড়ির দিকে ফিরতে লাগলাম।
আজকের মত এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।
ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত ডিভাইস | হুয়াই নোভা 2i |
---|---|
ফটোগ্রাফার | @rupok |
স্থান | ফরিদপুর |
Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote
Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote
VOTE @bangla.witness as witness
OR
আপনার শীতের সকালে হাটাহাটির অনুভূতিটা পড়লাম। পড়ে ভালই লাগলো। আসলে সকালে হাটাহাটি আমাদের শরীরের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু ঘুমের কারণে আমরা হাটাহাটি করতে পারিনা। আর হঠাৎ একদিন হাটাহাটি করতে পারলে আসলে অনেক ভালো লাগে। আপনার পোস্টটি পরে বুঝতে পারলাম আপনি অনেক দূরই হেঁটে ছিলেন। ধন্যবাদ আপনাকে আমাদের মাঝে এই সকালে হাটাহাটি মুহূর্তটা শেয়ার করার জন্য।
শরীরের উপকার চাইলে হঠাৎ হাটাহাটি করলে লাভ হবে না। নিয়মিত একই সময় হাঁটতে হবে।
ভাইয়া, শীতের এই সকালে হাটাহাটির অভ্যাসটা খুবই ভালো। যদিও বা আমরা অনেকেই এই হাটাহাটির অভ্যেসটা মেনে চলতে পারি না। তাই সকালে আপনার হাঁটাহাঁটি করার কথাটি জানতে পেরে খুবই ভালো লাগলো। এতে করে আপনার শরীর স্বাস্থ্য দুটোই ভালো থাকবে। শীতের সকালে প্রকৃতির স্নিগ্ধ ছোঁয়ার বিভিন্ন ধরনের প্রাকৃতিক ছবিগুলো ভীষণ রকম সুন্দর হয়েছে। কুয়াশায় ঘেরা ফসলের মাঠ, শীতের সকালে নদীর দৃশ্য,ঘাসের উপরে জমে থাকা শিশির বিন্দু, সব মিলিয়ে খুবই মনমুগ্ধকর পরিবেশ। আর এরকম পরিবেশে হেটে বেড়ালে শরীরের সাথে সাথে মনটাও অনেক চাঙ্গা হয়ে যায়। ভাইয়া, শীতের সকালে কাটানো সময়টুকু সুন্দর বর্ণনার মাধ্যমে আমাদের মাঝে তুলে ধরার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।
একদম ঠিক বলেছেন। শীতের সকালে প্রকৃতির একটা অন্যরকম রূপ দেখা যায়।
একবার হাঁটাহাঁটির অভ্যাস করে ফেলুন। তখন আর দেখবেন কষ্টকর মনে হচ্ছে না। আর আমি যতদূর জানি সপ্তাহে পাঁচ দিন হাঁটার কথা বলা হয়েছে শারীরিক উপকার পাওয়ার জন্য।
হা ভাই ঠিকই স্বাস্থ্যের চিন্তা করে প্রতিনিয়ত সকালে হাঁটার অভ্যাস করা উচিত। তাছাড়া সকালে উঠলে মনও ভালো থাকে।অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া।
দাদা আপনার আজকে পোস্টটি অত্যন্ত চমৎকার ছিল। শিশির ভেজা গ্রামের প্রকৃতি আরুপ বৈচিত্র যেন আপনার পোস্টটিতে সুন্দর ভাবে ফুটে উঠেছে। গ্রামের প্রকৃতির কাছে সবকিছু হার মেনে যায়। খাল, নৌকা, রেলগাড়ি, গ্রামের ব্রিজ আর মাঠ ছবি আমার কাছে বেশ ভালো লেগেছে।
গ্রামীণ সকাল যেন আসলেই অন্যরকম। সবকিছুই যেন ভাল লাগে।
অনেকদিন যাবত আমিও ভাবছি সকালবেলায় হাটাহাটি শুরু করব কিন্তু সকালের আলসে ঘুম যেন আর উঠতে দেয় না। সকালবেলায় হাটাহাটি করতে গেলে শহরের চেয়ে গ্রামের সৌন্দর্য টাই বেশি ভালো লাগে কারণ এখন শীতের সিজন, গ্রামের রাস্তাগুলোর দুই পাশে ঘাস থাকে আর শিশির ভেজা ঘাসের সৌন্দর্যটাও অনেক ভালো লাগে। আর দূরে তাকালে কুয়াশার আচ্ছাদনে ঢাকা একটা সৌন্দর্য চোখে পড়ে যেটা শহরে দেখা যায় না।
শহরে এখন হয়ে গিয়েছে কংক্রিটের জঙ্গল। সেখানে এখন প্রকৃতির ছোঁয়া নেই বললেই চলে। এই জন্যই মাঝে মাঝে আমি গ্রামের দিকে যাই।
ভাইয়া, একদম মনের কথা বলছেন সকালের আরামের ঘুম রেখে উঠা খুব কষ্টের। কিন্তু উঠে হাঁটতে শুরু করলে মনটা ফুরফুরে হয়ে যায়। গ্রামের পরিবেশ অনেক ভাল লাগে। আর শীতের ভোরের গ্রাম তো আরো অপরূপ। অনেক ভাল লাগলো ভাইয়া জেনে আপনি হাঁটছেন। কারন "স্বাস্থ্যই সকল সুখের মূল"।দিনশেষে একথা তো ভুলে গেলে চলবে না। অনেক শুভকামনা রইল আপনার জন্য।
কিছু পেতে গেলে কিছুটা কষ্ট তো করতেই হবে। যেমন সুস্বাস্থ্য পেতে গেলে সকালে আরামের ঘুম বাদ দিয়ে হাঁটতে হবে।
শীতের এই সকালগুলা আসলেই সুন্দর। টাকা দিয়ে বা অন্য কোন কিছু দিয়েই এর সমতুল্য আর কিছু পাওয়া যাবেনা। যদিও বহুদিন যাবত আমি সকালে হাটা হাটি করিনা। আমাদের এদিকে আসলে খবর দিও। হাটতে যাব তোমার সাথে।
তুমিতো দীর্ঘদিন যাবত এই পরিকল্পনা করছো। কিন্তু এখন পর্যন্ত সেই পরিকল্পনা বাস্তবের মুখ দেখল না। আদৌ কোনদিন দেখবে কিনা সেটা নিয়েও সন্দেহ রয়েছে।
ডাক্তার ভালোই করেছে আপনাকে হাঁটাহাঁটি করতে বলে। কারণ এই জন্য আপনি শীতের এই সুন্দর সকালটা দেখতে পাচ্ছেন। এমনিতেই শীতের সকালে হাঁটাহাঁটি করাটা বেশ ভালো। তাছাড়া হাঁটতে হাঁটতে গ্রামের দিকে গেলে গ্রামের দৃশ্যগুলো ও উপভোগ করতে পারেন। ঘাসের উপরে শিশির বিন্দুগুলো দেখে আরও বেশি স্নিগ্ধ অনুভব হয়। আপনার বাসার পাশে দেখছি আবার রেললাইনও আছে।। আমার কাছে কিন্তু রেললাইনে হাঁটতে বেশ ভালোই লাগে। অনেক সুন্দর সুন্দর কিছু ফটোগ্রাফিও করেছেন। সব মিলিয়ে বেশ ভালোই সময় কাটিয়েছেন।
রেললাইনে হাটতে আমারও বেশ ভালো লাগে। তবে আমাদের দেশের রেললাইন। বিশেষ করে যে সমস্ত জায়গায় রেললাইনের পাশে জনবসতি রয়েছে। সেগুলি খুব নোংরা হয়ে থাকে। সেজন্যই ভাল লাগলেও রেললাইন ধরে খুব একটা হাটা হয় না।
শীতকালে ভোরের পরিবেশ অতি পরিচিত হলেও চির নূতন থাকে আমাদের কাছে। কি যে এক মাদকতা কাজ করে এই পরিবেশ উপভোগ করার জন্য, বলে বোঝাতে পারব না। এই রাস্তা, এই শিশির জমা পাতা, এই কুয়াশা ঘেরা পরিবেশ সবটাই যেনো আমার চেনা,আমার প্রিয়।
বেশ কাব্যিকভাবে কমেন্টটি করেছেন ।পড়ে ভালো লাগলো।