দ্বিতীয় জীবন (তৃতীয় পর্ব)। ১০% সাই-ফক্স।
ট্যুরে যাওয়ার আগের দিন রাকিব এবং তার বন্ধু সজল দুজন মিলে টুকিটাকি কিছু কেনাকাটা করলো। দুজন হাফপ্যান্ট এবং সানগ্লাস কিনেছে। কেনাকাটা শেষ করে রাকিব বাড়ি ফিরে তার ব্যাগ গোছাতে শুরু করেলো। রাকিবের মা দেখে রাকিব অনেক জামাকাপড় ঢুকাচ্ছে ব্যাগে।সে রাকিবকে বলল তুইতো মাত্র দুদিনের জন্য কুয়াকাটা যাচ্ছিস। তাহলে এত কাপড়চোপড় দিয়ে কি করবি? রাকিব চিন্তা করলো কথাটা মা ঠিকই বলেছে।
তারপর সে ব্যাগ থেকে কিছু বাড়তি জামা কাপড় বের করে ফেললো। তার গোছগাছ মোটামুটি কমপ্লিট হয়েছে। একটু পরেই তারা রওনা দেবে। যার ফলে সে তাড়াতাড়ি করে ভাত খেয়ে মার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে চলে গেলো। যাওয়ার আগে রাকিবের মনের ভেতর যেন কেমন লাগছিলো। তার ইচ্ছা ছিল বাবার সাথে দেখা করে যাওয়ার। কিন্তু ওদিকে বাস ছাড়ার সময় হয়ে গিয়েছে প্রায়। তাই আর দেরি করতে পারেনি সে।
এদিকে রাকিব বের হয়ে যাওয়ার কিছুক্ষণ পরেই তার বাবা এসে উপস্থিত হলো। রাকিবের বাবা এসে রাকিবের মাকে জিজ্ঞেস করলো রাকিব কি চলে গিয়েছে? রাকিবের মা জানালো কিছুক্ষণ আগে বেরিয়েছে সে। রাকিবের বাবার খারাপ লাগতে লাগলো। তাই সে রাকিবের মা কে বললো আমি যাই গিয়ে দেখি ওদের বাস ছেড়েছে কিনা। যদি বাস না ছাড়ে তাহলে রাকিবের সাথে দেখা করে আসা যাবে। কিন্তু সে পৌঁছতে পৌঁছতে বাস ছেড়ে দিলো। রাকিবের বাবা ওদের কলেজে পৌছে দেখে সেখানে আর কেউ নেই। কলেজের দারোয়ানকে জিজ্ঞেস করায় সে জানালো একটু আগে বাস ছেড়েছে। রাকিবের বাবা কিছুটা মন খারাপ করে বাড়ি ফিরে এলো। জীবনে এই প্রথম তাদের ছেলে বাবা মা ছাড়া কোথাও গিয়েছে। তাই রাকিবের বাবা-মা দুজনেরই মন অস্থির লাগছিলো। তারা শুধু আল্লাহকে ডাক ছিল যেনো ছেলে সহিসালামতে ফিরে আসতে পারে।
যখন বাস ছাড়লো তখন রাকিবের মন কিছুটা খারাপ ছিলো বাবার সাথে দেখা করে আসতে না পারার ফলে। কিন্তু বাস ছাড়ার কিছুক্ষণ পরেই বন্ধু-বান্ধবের হই হুল্লোরের কারণে সে সবকিছু ভুলে গেলো। রাকিবদের সাথে তাদের কয়েকজন শিক্ষক ও এসেছে। তারা বসেছে একদম বাসের সামনের দিকে। আর ছাত্ররা সব বসেছে স্যারদের পর থেকে পেছনদিকে। রাকিব যেখানে বসেছে তার পাশের সিটে তার দুজন শিক্ষক বসে রয়েছেন। যার ফলে রাকিব বারবার পিছনে উঁকি দিয়ে তার বন্ধু বান্ধবদের মজা করা দেখছিলো। কিন্তু সেখানে যেতে সাহস পাচ্ছিলো না।
রাকিবকে বারবার পেছনে তাকাতে দেখে রাকিবের এক শিক্ষক ব্যাপারটা বুঝতে পারলো। সে তখন মুচকি হেসে রাকিব কে বলল যাও তুমি পেছনে গিয়ে ওদের সাথে আনন্দ করো। রাকিব স্যারের কাছ থেকে অনুমতি পেয়ে খুব খুশি হলো। পিছনে গিয়ে তার বাকি বন্ধুদের সাথে যোগ দিলো। সারা পথ তারা মজা করতে করতে কাটিয়ে দিলো। যদিও ভোরের দিকে সবাই বেশ ক্লান্ত হয়ে ঘুমিয়ে পড়লো।
হঠাৎ করে তাদের এক শিক্ষকের ডাকে তাদের ঘুম ভাঙলো। তাদের শিক্ষক জানালো আমরা কুয়াকাটা চলে এসেছি। বাসে থাকা সমস্ত শিক্ষার্থীরা হই হই করে উঠলো। কিন্তু শিক্ষক তাদেরকে জানালেন আমরা এখন প্রথমে হোটেল রুমে চেক ইন করবো। তারপর যার যার বরাদ্দকৃত রুমে জিনিসপত্র রেখে নাস্তা করে তারপর সমুদ্রসৈকতে যাবো। এদিকে রাকিবের আর তর সইছিলো না। তারা চাইছিলো সরাসরি বাস থেকে নেমেই সমুদ্রসৈকতে চলে যেতে। কিন্তু যেহেতু সাথে স্যারেরা রয়েছেন তাই এটা করার সুযোগ নেই।
যাইহোক কি আর করা। তারা স্যারদের পিছু পিছু হোটেলে পৌঁছালো। সেখানে তাদের জন্য আগে থেকেই বেশ কিছু রুম রেডি রাখা ছিলো। এক রুমে চারজন করে তারা ঢুকে পরলো। তারপর তড়িঘড়ি করে ব্যাগ রেখে ফ্রেশ হয়ে রুম থেকে বের হয়ে এলো। তারপর তাদের শিক্ষকেরা তাদেরকে নিয়ে গেলো নাস্তা করাতে। নাস্তা করা শেষ হলে যখন রাকিবরা সবাই সমুদ্রে যেতে চাচ্ছে তখন দুজন শিক্ষক বললেন সবাই আমাদের সাথে এসো। বাকি শিক্ষকরা সবাই হোটেল রুমে ফিরে গেলেন বিশ্রাম নেয়ার জন্য। (চলবে)
![logo.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmZEaz6VZmitMY1N8dSXHuT2tfgXFnDKjY8iV7jNGuNwEE/logo.png)
Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
![Heroism_3rd.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmRejDSNMUFmRz2tgu4LdFxkyoZYmsyGkCsepm3DPAocEx/Heroism_3rd.png)
![standard_Discord_Zip.gif](https://steemitimages.com/0x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmTvJLqN77QCV9hFuEriEWmR4ZPVrcQmYeXC9CjixQi6Xq/standard_Discord_Zip.gif)
আসলে মা-বাবারা এরকমই হয় ভাই যে সন্তানের যদি স্বপ্ন পূরণ করতে পারে তাহলে খুব ভালো লাগে। আবার সন্তান ছেড়ে কোথাও দূরে থাকতে ইচ্ছে করে না। তবে অবশেষে রাকিব কুয়াকাটা পৌঁছালো এটা শুনে ভালো লাগলো পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।