বন্ধুদের আড্ডায় কিছুক্ষণ।
আগামীকাল ঈদ বেশ ব্যস্ত সময় কাটছে। শুধু আমার না আশেপাশের সবাইকেই দেখছি বেশ ব্যস্ত। কিন্তু এই ব্যস্ততার ভিতরেও মন পড়ে রয়েছে অন্য কোথাও। শহরের বাইরে থাকা বেশিরভাগ বন্ধু বান্ধব বাড়িতে ফিরেছে। সারা বছর এই দুটো ঈদের জন্য আমরা যারা নিজেদের শহরে থাকি তারা অপেক্ষা করি। কারন এই সময় আত্মীয়-স্বজন বন্ধু-বান্ধব সবাই বাড়িতে ফিরে আসে। এই কয়েকটা দিন চমৎকার সময় কাটে সবাই মিলে।
গত বেশ কয়েক বছর যাবত নিজের ভেতরে ঈদ উদযাপনে কিছু পরিবর্তন টের পাচ্ছি। একটা সময় ছিল যখন ছোট ছিলাম তখন নতুন জামা কাপড় কেনার ভিতরেই আর সালামির ভিতরেই ছিলো ঈদের বেশিরভাগ আনন্দ। কিন্তু যখন একটু বড় হতে শুরু করলাম। তখন বন্ধু-বান্ধবের সাথে আড্ডা দেয়ার ভেতর একটা অন্যরকম মজা পেতে লাগলাম। সময়ের সাথে সাথে সেই আড্ডার প্রতি আকর্ষণ ও বাড়তে থাকলো। যখন কলেজে পড়তাম তখন একসাথে অনেক বন্ধু-বান্ধব মিলে আড্ডা দিতাম।
সেই কাছের প্রাণপ্রিয় বন্ধু-বান্ধব এখন অনেকেই আর শহরে থাকে না। জীবন ও জীবিকার তাগিদে তারা দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। এই সমস্ত প্রিয় মানুষদেরকে কাছে পাওয়ার একটা উপলক্ষ হচ্ছে এই ঈদ। ঈদের সময় বেশিরভাগ মানুষই বাড়িতে ফিরে আসে। কিছুদিন আগেও যখন অবিবাহিত ছিলাম তখন বন্ধু-বান্ধব এর আড্ডা সবচাইতে বেশি প্রাধান্য পেতো। কিন্তু বিয়ে করার পর একটা নতুন দায়িত্ব এসে পড়ার ফলে আর আগের মত বন্ধুদের সাথে সময় কাটাতে পারি না। এখন পরিবারের বিভিন্ন কাজ কর্ম শেষ করে তারপর আড্ডা দিতে যেতে হয়।
যখন বাবা জীবিত ছিল তখন অবশ্য এই কাজগুলো বাবা বা বড় ভাই করতো। তখন আমি নিশ্চিন্ত মনে আড্ডা দিতে যেতে পারতাম। কিন্তু এখন সময়ের পরিক্রমায় আর সেটা হয়ে ওঠে না। গতকাল থেকেই বন্ধু-বান্ধব যারা বাইরে থেকে এসেছিলো ফোন দিচ্ছিল দেখা করার জন্য। কিন্তু গতকালকে লেভেল ওয়ানের ক্লাস থাকায় সন্ধার পরে আর বাইরে যাওয়া হয়নি। ওদেরকে কথা দিয়েছিলাম আজ সকালে ওদের সাথে দেখা করবো। কিন্তু সকালে ও নানারকম ব্যস্ততায় আর ওদের সাথে দেখা করা হয়ে ওঠেনি।
শেষ পর্যন্ত বিকালের দিকে এক বন্ধুর সাথে বের হলাম সবার সাথে দেখা করার জন্য। যথারীতি আমরা যেখানে আড্ডা দেই সেখানে গিয়ে উপস্থিত হলাম। তারপর ফোনে যোগাযোগ করার মাধ্যমে অল্প কিছুক্ষণের ভেতরে কয়েকজন সেখানে উপস্থিত হলো। আমি কলেজ লাইফ থেকেই শহরের টেপাখোলা নামক স্থানে বন্ধু-বান্ধবদের সাথে আড্ডা দেই। কারণ আমার বেশিরভাগ বন্ধু বান্ধব ওই এলাকাতেই থাকে। কিন্তু আমরা যখন কোন বিশেষ উপলক্ষে আড্ডা দিতে বসি। তখন আমাদের সকালের প্রিয় একটি স্থান হচ্ছে গুচ্ছ গ্রাম। সবাই এক জায়গায় এলে আমরা সেই জায়গাটাতে চলে যাই আড্ডা দেয়ার জন্য।
আমাদের অন্যান্য বন্ধু বান্ধবেরও এটা জানা আছে। তাই অনেক সময় দেখা যায় আড্ডাকালীন সময়ে অনেকেই সেখানে এসে উপস্থিত হয়। আজকেও যথারীতি আমাদের আড্ডা চললো প্রায় ঘন্টা দুয়েক। বন্ধু-বান্ধবের আড্ডা মানেই বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলাপ আলোচনা করা। নিজেদের কুশলাদি বিনিময় থেকে শুরু করে আন্তর্জাতিক রাজনিতি। সমস্ত কিছুই থাকে সেই আড্ডায়। দুই ঈদের সময় বন্ধুদের সাথে এই আড্ডাটা আমার ভীষণ প্রিয়। কারণ দীর্ঘদিন পর প্রিয় মানুষগুলিকে কাছে পাই তাদের সাথে গল্প করতে পারি সময় কাটাতে পারি। এই বিষয়টা আমার কাছে অনেক বেশি ভালো লাগে। আজও তাদের সাথে আড্ডা দিয়ে এসে বেশ ভালো লাগছে। আশা করি আপনারাও সময়টা ভালই উপভোগ করছেন।
আজকের মত এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।
ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত ডিভাইস | হুয়াই নোভা 2i |
---|---|
ফটোগ্রাফার | @rupok |
স্থান | টেপাখোলা |
@tipu curate
Upvoted 👌 (Mana: 6/9) Get profit votes with @tipU :)
আসলে ভাই বাবা বেঁচে থাকলে নিজের উপর কোনো দায়িত্ব থাকে না অনেক আনন্দের সাথে ভ্রমণ করা যায় আড্ডা দেওয়া যায়। কিন্তু বাবা মারা গেলে বোঝা যায় একটা পরিবার চালাতে কতটা কষ্ট। যাইহোক আপনি বন্ধুদের সাথে নিয়ে নানান ব্যস্ততার মধ্যে সময় বের করে তাদের সাথে আড্ডা দিয়েছেন। এজন্য খুবই ভালো লাগলো। আপনার বন্ধুদের সাথে খুবই সুন্দর জায়গা ভ্রমন করেছেন। ফটোগ্রাফি গুলো আমার ভালো লেগেছে।
আসলে দায়িত্বটা এমন একটা জিনিস কেউ চাইয়ছ নেয়। আবার কেউ না চাইতেও বহন করতে হয়। যাই হোক বন্ধুদের সাথে ঘুরে খুব সুন্দর সময় অতিবাহিত করেছেন পোস্টটি পড়ে বুঝতে পারলাম। আমিও আজ দুদিন দেশের বাড়িতে এসে সারাদিন অর্ধেক রাত বন্ধুদের সাথেই ঘোরাঘুরি করছি বাড়িতে আর সময় দিতে পারলাম কই।।
ঠিকই বলেছেন ভাই যত বড় হচ্ছি ততই যেন ঈদের আনন্দ টা ক্ষীণ হয়ে যাচ্ছে। একসময় আমিও আপনার জায়গাই গিয়ে উপনিত হব। যখন সত্যি সত্যি ঈদ ছাড়া আর বন্ধুদের সাথে দেখা হবে না। বিষয়টি ভাবলে বেশ কেমন জানি লাগছে। যাইহোক ভালো সুন্দর একটি মূহুর্ত কাটিয়েছেন বন্ধুদের সাথে।।
আসলে সময়ের সাথে সাথে সব কিছুর পরিবর্তন দেখতে পাচ্ছি। আমরা যখন ছোট ছিলাম এই তো কয়েক বছর পূর্বে যখন ঈদের সময় বাড়িতে আসতাম তখন বিভিন্ন ধরনের খেলার আয়োজন করা হতো। চমৎকার একটা সময় কাটতো। কিন্তু এখন সবার ব্যস্ততা বেড়ে গেছে আসলে এই হাই হ্যালো ১০ থেকে ১৫ মিনিট কথা। আসলে সব কিছু সময় ও বয়সের সাথে জড়িত। একটা সময় ছিল বন্ধুদের সাথে কত রাতে পর্যন্ত আড্ডা দিতাম। এখন সন্ধ্যার পর যে কোন প্রকারই হোক বাড়ি আসতে হবে। আনন্দগুলো ভাগাভাগি হয়ে গেছে। একটা সময় আসবে আপনিও ব্যস্ত হয়ে পড়বেন বন্ধুদের সময় দেয়ার সময় পাবেন না। জীবনটা এখনই উপভোগ করার সময়।
মানুষের জীবন কখন কোথায় যে ঠেকে তা কেউ বলতে পারে না। তবে বলবো বাবা মানে বটবৃক্ষ যার ছায়া তলে থেকে অনেক ইনজয় করা যায় পরিবারের বিশেষ দায়-দায়িত্ব কথা চিন্তা না করে। সেই সমস্ত চিন্তা গুলো দূরে রেখে ঈদের সময় বন্ধুদের সাথে আরো আনন্দ করতে পারে, মন প্রফুল্ল থাকবে।
আসলে ভাইয়া দুটি ঈদে শহরের মানুষ গ্রাম অঞ্চলে বেড়াতে আসে। তখনই সবাই একসাথে হওয়ার সময়। বন্ধু-বান্ধব আত্মীয়-স্বজন সবাই যখন দেখা হয় তখন খুবই ভালো লাগে।
ছোটবেলা, কলেজে পড়াকালীন সময়, বিয়ের পর বিভিন্ন সময়ের বিভিন্ন অনুভূতি। সময়ের সাথে সাথে সব কিছু পরিবর্তন। এক সময় দায়িত্ব নিজের কাঁধে পড়ে। ধন্যবাদ ভাইয়ের সুন্দর কিছু কথা আমাদের মাঝে উল্লেখ করার জন্য শুভকামনা রইল আপনার জন্য।