স্বপ্নের পদ্মা সেতু দিয়ে যাতায়াত।
আপনার জানেন আমি কিছুদিন আগে বাড়ি গিয়েছিলাম। দুদিন হলো আবার ঢাকায় ফিরে এসেছি। এখন ঢাকা থেকে বাড়ি যাই পদ্মা সেতু হয়ে। পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর থেকে আর অন্য কোন রাস্তা দিয়ে বাড়িতে যাওয়া হয়নি। প্রথম যেবার পদ্মা সেতুতে উঠলাম সেবার এক অন্যরকম ভালো লাগা কাজ করছিলো। সবাই বলে স্বপ্নের পদ্মা সেতু। তবে আমার কাছে আসলেই পদ্মা সেতুটা একটা স্বপ্নের সেতু। পদ্মা সেতু কেন আমার মত দক্ষিণাঞ্চলের লোকের জন্য স্বপ্নের সেতু এটা দক্ষিণাঞ্চলের বাসিন্দা ছাড়া অন্য কেউ বুঝতে পারবে না।
বিশেষ করে যারা ফেরির মাধ্যমে পদ্মা নদী পার হতো তারা ছাড়া। এখনও সেই দিনগুলো মাঝে মাঝে মনে পড়ে। ঢাকা থেকে যখন বাড়িতে ফিরতাম বা বাড়ি থেকে যখন ঢাকায় আসতাম। তখন প্রায় সারা দিনের প্রস্তুতি নিয়ে আসতে হতো। সকালে উঠে যখন বাসস্ট্যান্ডে যেতাম তখন চিন্তা করতাম গন্তব্যে পৌঁছাতে হয়তো পুরো দিন লেগে যাবে। নানারকম নেতিবাচক চিন্তা নিয়ে আমাদের যাত্রা করতে হতো। কিন্তু এখন পদ্মা সেতু হয়ে যাওয়ার ফলে আমরা দক্ষিণাঞ্চলের লোকজন ঢাকায় এসে দিনে দিনে কাজ করে আবার ফিরে যেতে পারছি।
যেমন সেদিন যখন আমি বাড়িতে গেলাম তখন গুলিস্তান থেকে বাসে ওঠার পর ফরিদপুর পৌঁছাতে আমার মাত্র দুই ঘন্টা সময় লেগেছে। তারপরেও যে বাসে উঠেছিলাম সেই বাস কখনও ৬০ কিলোমিটারের উপরে তার স্পিড উঠায়নি। যদি আরও একটু দ্রুতগতির কোন বাসে যেতে পারতাম তাহলে হয়তো আরো ১৫ মিনিট আগে ফরিদপুর পৌঁছাতে পারতাম। কোন যানজট নেই কোন সমস্যা নেই ফেরির জন্য অপেক্ষা করতে হচ্ছে না। এগুলো তো আমাদের জন্য অকল্পনীয় ব্যাপার।
একটা সময় ছিল যখন পদ্মা সেতুর কথা শুনতাম কিন্তু কখনো বিশ্বাস করতাম না। আবার যখন পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু হলো। তখন মনে হতে লাগলো এই সেতু নির্মাণ কাজ কি আদৌ শেষ হবে বা শেষ হলে সেই কাজ কি আমি দেখে যেতে পারবো? এরকম নানারকম নেতিবাচক চিন্তা-ভাবনা মাথার ভেতর ঘুরপাক খেতো। আর সব সময় মনে হতো পদ্মা সেতুর কাজ দ্রুত কেন শেষ হচ্ছে না। কারণ আমাদেরকে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন কাজে ঢাকা আসতে হয়। ঢাকা আসার কথা মনে হলেই তখন খারাপ লাগতো। কারণ মাত্র ১২০ কিলোমিটার রাস্তা যেতে আমাদের প্রায় ৭-৮ ঘন্টা সময় লেগে যেতো। তাই আমি পারতপক্ষে ঢাকা আসতে চাইতাম না।
কিন্তু এখন পদ্মা সেতু হয়ে যাওয়ায় আমরা মাত্র দু ঘন্টায় ফরিদপুর পৌঁছাতে পারি। আগে আমাদেরকে গাবতলী যেতে হতো বাসে ওঠার জন্য যেটা আমাদের জন্য অনেক দূর হয়ে যেতো। কিন্তু এখন আমরা গুলিস্তান থেকে বাসে উঠতে পারি। যেটা আমার জন্য খুবই কাছে হয়েছে। পদ্মা সেতু হওয়ার ফলে আরও একটি সুবিধা হয়েছে। সেটা হচ্ছে যারা গাবতলী দিয়ে যাতায়াত করত তারাও এখন কম সময়ে দক্ষিণাঞ্চলে যেতে পারছে। কারণ পদ্মা সেতু হওয়ার কারণে ঢাকা আরিচা মহাসড়কের ওপর চাপ অনেকটা কমে গিয়েছে।
সেদিন যখন বাড়ি থেকে ঢাকা ফিরছিলাম তখন এই সমস্ত চিন্তা ভাবনা মাথার ভেতর ঘুরছিল। পুরোনো দিনের কথা মনে পড়ছিল। সেই দুঃসহ যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পাওয়ার আনন্দে মনটা খুশি হয়ে উঠেছিল। যদিও আমি বর্তমান সরকারের একজন কঠোর সমালোচনা কারী। তারপরেও পদ্মা সেতুর নির্মাণে তাদের ভূমিকা জন্য তাদেরকে ধন্যবাদ জানাই। যদিও এই সেতু নির্মাণে অত্যাধিক ব্যয় দেখানো হয়েছে। যেটা মোটেই কাম্য নয়। যাই হোক পদ্মা সেতু নিয়ে আমি আমার মনের ভেতরের কিছু কথা আপনাদের কাছে তুলে ধরলাম।
আজকের মত এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।
ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত ডিভাইস | হুয়াই নোভা 2i |
---|---|
ফটোগ্রাফার | @rupok |
স্থান | পদ্মা সেতু |
সরকারের খারাপ দিকগুলোর সমালোচনা যেমন করতে হবে ভালো দিকগুলোর প্রশংসাও করতে হবে। আমি এখনো পদ্মা সেতু দেখিনি। তবে আপনাদের ভোগান্তি টা দূর হয়েছে এটা জেনে ভালো লাগল। ফেরির ঐ ভোগান্তি এখন আর নেই।
এই পদ্মা সেতু নিয়ে আমারও যথেষ্ট কৌতূহল রয়েছে। আপনি ঠিকই বলেছেন, যখন নাকি পদ্মা সেতু ছিলনা, তখন ফেরি পারাপার এ ঘন্টার পর ঘন্টা লেগে যেত। এই তথ্যটা আমি বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া থেকেও পেয়েছি। খুব ইচ্ছা আছে একদিন পদ্মা সেতুর উপরে যাওয়ার। জানিনা কবে সেই ইচ্ছা পূরণ হবে।
@tipu curate
;) Holisss...
--
This is a manual curation from the @tipU Curation Project.
Upvoted 👌 (Mana: 1/8) Get profit votes with @tipU :)
অতিরিক্ত ব্যয় দেখানো ছাড়া আর কোনো ব্যাপার ই আসলে খারাপ নয় এই সেতুটার।কারণ যাদের এই সেতু দরকার নেই তারা ট্রল করবেই, যদিও সরকার খাজনার চেয়ে বাজনা বেশি ধরনের কাজ করাতে লোকজন হাস্যকর বানিয়েছিলো বিষয়টিকে।তবে আপনারাই এর উপকারিতাটা ভালোভাবে বুঝতে পারবেন।
তবে যাই বলেন ভাইয়া আমাদের সরকার কিন্তু আমাদের জন্যে এই একটা কাজ করেছেন সত্যি ভাষায় প্রকাশ করা যাবে না ,কোয়াকাটা যাওয়ার সময় এই পদ্মাসেতুর উপরদিয়েই গিয়েছি। তবে সত্যি বলতে আপনাদের জন্যে অনেক উপকার হয়েছে।
স্বপ্নের এই পদ্মা সেতু বাংলাদেশের জন্য একটা গর্ব। এই সেতু নির্মাণ হওয়ার ফলে দেশের দক্ষিণ পশ্চিম অঞ্চলীয় লোকজন তাদের দুঃসহ যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পেয়েছে। পদ্মা সেতু করতে গিয়ে বাংলাদেশকে নানা চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হয়েছে। শেষ পর্যন্ত নক্ষত্রের মত মাথা উঁচু করেদণ্ডায়মান স্বপ্নের সেই পদ্মা সেতু। আপনার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইল।
স্বপ্নের পদ্মা সেতু হওয়াতে অনেক উপকার হয়েছে, আর বাংলাদেশ অনেক এগিয়ে গিয়েছে। যেখানে আপনার ৭/৮ ঘণ্টা লাগত সেখানে আপনি মাত্র দুই ঘণ্টার মধ্যেই পৌঁছে গিয়েছেন। সত্যি খুবই ভালো লেগেছে, আর স্বপ্নের পদ্মা সেতুতে ভ্রমণকারার আমারও ইচ্ছা রয়েছে কবে পূরণ হবে।
ছাত্রবস্থায় ঘরে বসে ইনকাম : https://grathor.com/%e0%a6%9b%e0%a6%be%e0%a6%a4%e0%a7%8d%e0%a6%b0%e0%a6%ac%e0%a6%b8%e0%a7%8d%e0%a6%a5%e0%a6%be%e0%a7%9f-%e0%a6%98%e0%a6%b0%e0%a7%87-%e0%a6%ac%e0%a6%b8%e0%a7%87-%e0%a6%87%e0%a6%a8%e0%a6%95%e0%a6%be/
আপনি ঠিকই বলেছেন ভাই পদ্মা সেতু দক্ষিণবঙ্গের মানুষের কাছে স্বপ্নের মত। সাত-আট ঘন্টা সময় যেখানে এখন পদ্মা সেতুর কারণে দুই ঘন্টায় সেটা হয়ে যাচ্ছে। পদ্মা সেতু সম্পর্কে সুন্দর মন্তব্য করার জন্য ধন্যবাদ আপনাকে।