জীবনে হঠাৎ ছন্দপতন (তৃতীয় পর্ব)।

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago

কেমন আছেন আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা? আমি ভালো আছি। আশাকরি আপনারা ও ভালো আছেন।


পূর্ববর্তী পর্বের লিংক

এর ভেতরে সেই কনস্টেবল এসে শহিদুলের স্ত্রীকে বলে গেল এখানে বসে কান্নাকাটি করে কোন লাভ হবে না। পারলে টাকার ব্যবস্থা কর না হলে এখান থেকে চলে যাও। শহিদুলের স্ত্রী চিন্তা করছিল কার কাছে যাওয়া যায়? তাদের কোন আত্মীয়-স্বজন এখানে থাকে না। তেমন কোনো পরিচিত লোকজনও নাই যার কাছে এখন সাহায্যের জন্য যাওয়া যায়। চিন্তা করতে করতে হঠাৎ করে তার মনে পড়ল সজলের কথা।

Polish_20220807_192055306.jpg

শহিদুল আর সজল একসাথে চাকরি করতো। সজল শহিদুলের নিচের পোস্টে ছিল। চাকরির শুরুতে সজলের অবস্থা খুবই খারাপ ছিল। তখন শহিদুল তাকে অনেক সাহায্য করেছে। শহিদুল সজলকে তার ছোট ভাইয়ের মতো দেখতো। সজল শহিদুলের বাসায় এসেছে থেকেছে খেয়েছে। বহুবার তার একসাথে আড্ডা দিয়েছে। এমন কি ছেলেটি বিয়ের পর তার স্ত্রীকে নিয়েও ওদের বাসায় বেড়াতে এসেছে। কিন্তু তিন চার বছর হলো তাদের সাথে আর তেমন একটা যোগাযোগ নেই। ছেলেটি চাকরি ছেড়ে দেয়ার পর থেকে তাদের সাথে যোগাযোগ কমে গিয়েছে।

অনেক আগেকার কথা তাই ছেলেটির নাম্বার শহিদুলের স্ত্রী খুঁজে পেল না। কিন্তু সজলের বাসা কোথায় সেটা তার জানা আছে। কারণ তারা অনেকবার সেখানে বেড়াতে গিয়েছে। শহিদুলের স্ত্রী পাশের বাসার ভাবির কাছ থেকে কিছু টাকা নিয়ে চলে গেল সজলের বাসার উদ্দেশ্যে। সেখানে গিয়ে কলিংবেল চাপতে এক অপরিচিত মহিলা বেরিয়ে এলো। জিজ্ঞেস করল কাকে চাই? শহিদুলের স্ত্রী জিজ্ঞেস করল এটা সজল ভাইয়ের বাসা না? মহিলাটি তখন জানালো না। এই নামের কাউকে তিনি চেনেন না। এখন কি করা যায়? অনেক আশা নিয়ে সে এখানে এসেছিলো। শহিদুলের স্ত্রী তখন সেই মহিলাটিকে জিজ্ঞেস করল আপনাদের এখানে যারা ভাড়া ছিল তারা এখন কোথায় আছে আপনি জানেন?

মহিলাটি বলল না আমি জানিনা। শহিদুলের স্ত্রী প্রচন্ড মুষড়ে পড়ল।ধীর পায়ে সে বিল্ডিং থেকে আস্তে আস্তে করে নেমে যাচ্ছিল। ক্ষুধায় আর প্রচন্ড ক্লান্তিতে শরীর আর চলছিল না। দুটো বাচ্চাকে সাথে নিয়ে এইভাবে ঘুরে বেড়াতে বেড়াতে সে ক্লান্ত হয়ে পড়েছে। দুদিন ধরে তারা প্রায় অনাহারে রয়েছে। হঠাৎ করে শহীদুলের স্ত্রীর মনে পড়ল বাড়িওয়ালার কাছে তাদের মোবাইল নাম্বার বা ঠিকানা থাকতে পারে। তাই সে চারতলায় বাড়িওয়ালার দরজায় গিয়ে নক করল।

বাড়িওয়ালা বের হয়ে এলে তার কাছে সজলের মোবাইল নাম্বার চাইলো। বাড়িওয়ালা বলল তারা তো অনেকদিন আগে এখান থেকে চলে গিয়েছে। তার মোবাইল নাম্বার আমার কাছে নাই। তবে সে একটা কাগজে আমার কাছে তার নতুন বাড়ির ঠিকানা লিখে দিয়েছিলো। আমাকে সেখানে বেড়াতে যেতে বলেছিল। কিন্তু সময়ের অভাবে আর যাওয়া হয়নি। আমি সেই ঠিকানাটা আপনাকে দিতে পারি। আশা করি সেখানে গেলে আপনি সজলকে পাবেন। কারণ সেটি সজলের নিজের বাড়ি।

কথাটি শুনে শহিদুলের স্ত্রী অবাক হয়ে গেলো। সজল এর ভিতর ঢাকা শহরে বাড়িও করে ফেলেছে? যাইহোক বাড়িওয়ালা ভদ্রলোক কিছুক্ষণ পর একটি কাগজে সজলের ঠিকানা লিখে শহিদুলের স্ত্রী কে দিল। শহিদুলের স্ত্রী নতুন আশার আলো দেখতে পেলো। জায়গাটি সজলের পূরণ বাসা থেকে খুব একটা বেশি দূরে না। অল্প সময়ে রিক্সায় করে শহিদুলের স্ত্রী সেখানে পৌঁছে গেলো। বাড়ির সামনে পৌছে গেট দিয়ে ঢুকতে গেলে দারোয়ান তাকে বাধা দিলো। বলল কার কাছে যাবেন?

তখন শহিদুল স্ত্রি দারোয়ানকে জিজ্ঞেস করল এই বাড়ির মালিক কি সজল সাহেব? দারোয়ান বললো জি। শহিদুলের স্ত্রী বলল তার সাথে আমার কিছু জরুরী কথা আছে। দারোয়ান শহিদুলের স্ত্রী চেহারা আর বেশভূষা দেখে তাকে জিজ্ঞেস করল আপনার কি স্যারের সাথে অ্যাপয়েন্টমেন্ট আছে? শহিদুলের স্ত্রী জানালো না তার সাথে আমার কোন কথা হয়নি। তার নাম্বারটা আমি হারিয়ে ফেলেছি। দারোয়ান মনে করলো হয়তো সাহায্য চাওয়ার জন্য কেউ এসেছে। তাই সে তাকে জানালো স্যার এখন বাসায় নেই। আর এপয়েন্টমেন্ট ছাড়া স্যারের সাথে দেখা করতে পারবেন না। দারোয়ানের এই বাজে ব্যবহারে সে বেশ কষ্ট পেলো।

logo.png

Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png

standard_Discord_Zip.gif


🇧🇩🇧🇩ধন্যবাদ🇧🇩🇧🇩


@rupok

Sort:  
 2 years ago 

ভাইয়া গল্পটি পড়ে একেবারেই শেষের দিকে দারোয়ানের বাজে ব্যবহারটি আমার কাছেও ভালো লাগেনি। তবে আপনার গল্পের প্রতি তীব্র আকর্ষণ আমার রয়ে গেল। পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম ভাইয়া।

 2 years ago 

তৃতীয় পর্ব পড়লাম। ভালো লাগলো। ক্রমশ লিখে যাচ্ছেন। এটা বেশ ভালো লাগছে। সেই সুযোগে আপনার এই সিরিজ পড়ছি। কলম অবিরত চলুক...

 2 years ago (edited)

আপনাদের এমন মন্তব্য আরো লিখতে অনুপ্রেরণা যোগায়।

Coin Marketplace

STEEM 0.17
TRX 0.13
JST 0.028
BTC 59575.00
ETH 2607.14
USDT 1.00
SBD 2.43