দুই বন্ধুর সাথে পদ্মার চরে ঘোরার অভিজ্ঞতা (প্রথম পর্ব)।

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago

কেমন আছেন আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা? আমি ভালো আছি। আশাকরি আপনারা ও ভালো আছেন।


গত বেশ কয়েকদিন থেকে ঘরেই বসে ছিলাম। এমনিতে বাইরের আবহাওয়া প্রচন্ড খারাপ। ঠান্ডায় ঘর থেকে বাইরে বের হতে ভয় লাগে এমন একটা পরিস্থিতি বিরাজ করছিলো। তাছাড়া আমার বন্ধু ফেরদৌস ও অনেকদিন হলো ফরিদপুরের বাইরে ছিলো। যার ফলে একা একা আর বাইরে ঘুরতে যাওয়া হয়নি। এজন্য আগে থেকে ঠিক করে রেখেছিলাম। ফেরদৌস ফরিদপুরে এলেই আবার ঘোরাফেরা শুরু করব।

IMG_20230108_113450.jpg

IMG_20230108_113446.jpg

কয়েকদিন আগে ফেরদৌস ফরিদপুরে ফিরেছে। সেদিন বিকালেই ফেরদৌসের সঙ্গে ঘুরতে বেরিয়েছিলাম। সেদিন গিয়েছিলাম বন্ধু রাফসানের শোরুমে। সেখানে গিয়ে গল্প গুজব করে বেশ কিছুটা সময় কাটিয়ে তারপর বাড়ি ফিরেছিলাম। তখনই পরিকল্পনা করেছিলাম আমরা একদিন চরে ঘুরতে যাব। এই পরিকল্পনা অনেকদিন আগে থেকেই করছিলাম। কিন্তু সময় সুযোগের কারণে আর সেটা হয়ে উঠছিল না। তবে এই ধরনের ঘোরাফেরাতে লোক একটু বেশি হলে ভালো হয়। সেজন্য আমাদের আরেক বন্ধু প্রদীপের সাথে যোগাযোগ করলাম। প্রস্তাব দিতেই সে রাজি হয়ে গেল।

IMG_20230108_113455.jpg

পরবর্তীতে ঠিক করলাম আমরা পরদিন সকাল ১১ টার দিকে উদ্দেশ্যে রওনা দেবো। প্রথমে ফেরদৌস কিছুটা মোড়ামুরি করলো। সে বলল এত সকালে ঘুম থেকে ওঠা যায় নাকি? আমি বললাম এগারোটা অনেক বেলা। তুমি দশটার ভিতর ঘুম থেকে উঠলেই হবে। অতপর সেও রাজি হল। সকালে ঘুরতে যাওয়ার পরিকল্পনা নিয়ে রাতে ঘুমাতে গেলাম। তবে ঘুম থেকে উঠতে আমারই দেরি হয়ে গিয়েছিল। আমার পরিকল্পনা ছিল দশটার ভিতরে ঘুম থেকে ওঠার। কিন্তু ঘুম থেকে উঠে দেখি সাড়ে দশটা বেজে গিয়েছে। এর ভেতরে ফ্রেশ হতে হবে নাস্তা করতে হবে আবার নদীর পাড়ে পৌঁছাতে হবে।

IMG_20230108_113552.jpg

আমার বাসা থেকে নদীর পাড়ে পৌঁছতে প্রায় ২৫ মিনিট মতো সময় লাগে অটো রিক্সা বা রিক্সা করে গেলে। যাই হোক আমি ঘুম থেকে উঠে তড়িঘড়ি করে তৈরি হয়ে রওনা দিলাম নদীর পাড়ের উদ্দেশ্যে। এর ভিতর দুই বন্ধুর সাথে কথা হয়েছে। তবে আমি যখন নাস্তা করছিলাম তারা আমাকে ফোন দিয়েছিল। আমাকে না পেয়ে দুজন নদীর পারে পৌঁছে গিয়েছিল। প্রথমে আমাদের পরিকল্পনা ছিল তিনজনে টেপাখোলা বাজারে মিলিত হব। তারপর সেখান থেকে একসাথে নদীর পাড়ের উদ্দেশ্যে রওনা দেবো।

IMG_20230108_113555.jpg

তবে আমার আসতে কিছুটা দেরি হওয়ায় তারা আগেই নদীর পাড়ে পৌঁছে গিয়েছিল। নাস্তা শেষ করে যখন তাদের ফোন আমি দেখতে পেলাম। তখন তাদের সাথে যোগাযোগ করলে ফেরদৌস আমাকে বলল। সরাসরি নদীর পাড়ে চলে যেতে। অগত্যা আমি তাই করলাম। শীতের দিনে পদ্মার চরে ঘুরতে আমার কাছে অন্যরকম মজা লাগে। কারণ গরমের দিনে রোদের তাপে চরের বালি প্রচন্ড গরম হয়ে যায়। সেখানে গাছপালা খুব বেশি না থাকায় প্রচন্ড রোদের ভেতর হাঁটতে খুব কষ্ট লাগে। এই জন্য আমার কাছে পদ্মার চরে ঘোরার সবচাইতে উপযুক্ত সময় মনে হয় এই শীতকাল।

IMG_20230108_115131.jpg

তবে আমার ইচ্ছা ছিল মূলত শৈত্য প্রবাহ চলাকালীন যে কোন একদিন ঘুরতে যাওয়ার। আজকে সকালে যখন ঘর থেকে বের হয়েছি তখনও বেশ কিছুটা ঠান্ডা ছিল। তবে সেটা গতকাল থেকে অনেকটা কম। কিন্তু আমরা যখন নদীর পারে গিয়ে পৌঁছলাম। ততক্ষণে দেখি রোদ উঠে গিয়েছে। ঠান্ডার প্রকোপ অনেকটা কমে গিয়েছে। পদ্মার পাড়ে পৌঁছে আমরা কিছুক্ষণ গল্প গুজব করতে লাগলাম। মূলত আমরা যে ট্রলারের মাধ্যমে নদী পার হব সেটা তখনও এসে পৌঁছায়নি। তাই আমরা ট্রলারের জন্য অপেক্ষা করতে করতে নিজেদের ভেতর গল্প গুজব করছিলাম।

IMG_20230108_115141.jpg

এর ভেতর হঠাৎ করে চলে একটি অপ্রীতিকর ঘটনা দেখতে পেলাম। সেটা অন্য আরেকদিন আপনাদের সাথে শেয়ার করব। যাই হোক নদীর পাড়ে আরো মিনিট দশেক অপেক্ষা করার পর ট্রলার চলে এলো। যখন ওপার থেকে ট্রলার এপারে এসে পৌঁছল। তখন দেখতে পেলাম সেখানে অনেক লোক রয়েছে। তারা আস্তে আস্তে করে সবাই ট্রলার থেকে নামছিল। এর ভেতরে হঠাৎ করে এক ভদ্রলোকের কোলে একটি বাচ্চা দেখতে পেলাম। সেই ভদ্রলোক ট্রলার থেকে নামার সময় বেখেয়ালে পা বেকায়দায় পড়ে যাওয়ায় বাচ্চাটা নিয়ে প্রায় পানির ভিতর পড়ে গিয়েছিল। তবে তার ভাগ্য ভালো যে বাচ্চাটা শুকনো জায়গায় পড়েছিল। এর ভিতর কয়েকজন লোক দৌড়ে গিয়ে বাচ্চাটাকে কোলে তুলে নিল। বাচ্চাটা আঘাত পেয়েছে কিনা সেটা বুঝতে পারছিলাম না। কারণ তখনও সে কান্নাকাটি শুরু করেনি। তবে যে লোকটা বাচ্চাটাকে কোলে করে নামছিলো তার প্যান্ট অনেকটাই ভিজে গিয়েছিল নদীর পানিতে। দৃশ্যটা দেখে নিজের মনের ভিতরে কিছুটা সতর্ক হয়ে গেলাম। কারণ বুঝতে পারলাম সামান্য বেখেয়ালে পা একটু এদিক ওদিক পড়লেই এমন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা রয়েছে। (চলবে)

ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত ডিভাইসহুয়াই নোভা 2i
ফটোগ্রাফার@rupok
স্থানপদ্মার চর

logo.png

Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png

standard_Discord_Zip.gif


break .png

Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote


VOTE @bangla.witness as witness


witness_vote.png

OR

SET @rme as your proxy

witness_proxy_vote.png



🇧🇩🇧🇩ধন্যবাদ🇧🇩🇧🇩


@rupok

Sort:  
 2 years ago 

ফেরদৌস ভাই এর সাথে তো ভালোই ঘোরাঘুরি করছেন ৷ এর আগেও যতবার দেখেছি আপনি ফেরদৌস ভাই এর সাথে ই ঘরেছেন ৷
যা হোক পদ্মা চরে দারুন একটি সময় অতিবাহিত করেছেন ৷ আর নদীর পাড়ে বেড়াতে সত্যি অনেক ভালো লাগে ৷ ফটোগ্রাফি দেখে অনেক ভালো লাগলো ৷
ধন্যবাদ ভাই

 2 years ago 

ফেরদৌস ভাই এর দেশে ফেরা সেই সাথে আপনারও আনন্দ বেড়ে যাওয়া বুঝতেই পারলাম পোস্টটি পড়ে।। দুই বন্ধু মিলে পদ্মার চর ভ্রমণ করে অনেক সুন্দর সময় অতিবাহিত করেছেন সেই সাথে সুন্দর ফটোগ্রাফি শেয়ার করেছেন।। আমিও সময় পেলে বন্ধুদের সাথে পর্দার চরে ঘুরতে বের হই অনেক ভালো সময় পার হয় সেখানে গেলে।।

 2 years ago 

আসসালামু আলাইকুম ভাইয়া। আশাকরি এই শীতে পরিবারের সবাই কে নিয়ে ভাল আছেন,এমনটাই আশাকরি।
আপনার বন্ধু ফেরদৌস ভাইয়া ফরিদপুর এসেছে তাই তাকে নিয়ে বন্ধু রাফসান ভাইয়ার শোরুমে বেশ গল্প করলেন আর তখন ঠিক করলেন পদ্মার চরে ঘুরতে যাবেন।গরম কালে বালি রোদের তাপে গরম হয় তাই আপনার শীতকালেই ঘুরতে ভাল লাগে। আর এসব জায়গায় বেশি মানুষ হলে ঘুরতে বেশ ভাল লাগে।কিন্তু প্রথমে ফেরদৌস ভাইয়া এত সকালে উঠে যেতে চাইছিল না। যাই হোক শেষমেষ প্রদীপ ভাইয়া সহ আপনারা গেলেন। যদিও আপনি দেরীতে ঘুম থেকে উঠেছেন তাই তারা আগেই সেখানে পৌঁছে গিয়েছিল।আপনি পরে গেলেন। আপনার বাসা থেকে ২৫ মিনিটের মত সময় লাগে। আপনি বলছিলেন সেখানে একটা অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছিল, তা জানতে আমার মন ব্যাকুল হয়ে গেল। আপনি পরে একদিন জানাবেন, ঠিক আছে তখন জেনে নেব।আপনারা ট্রলারে করে ঘুরলেন। খুব সুন্দর সময় কাটিয়েছেন। বেশ কিছু ফটোগ্রাফি ও আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন, দেখে ভাল লাগলো। ট্রলার থেকে নামার সময় এক লোক বাচ্চা কোলে পানিতে পরে গিয়েছিল কিন্তু বাচ্চাটা শুকনো জায়গায় পরেছিল। ট্রলার থেকে নামতে সাবধানতা অবলম্বন করতে হয় আসলে।সব মিলিয়ে আপনি ঘুরতে পেরেছেন এটাই ভাল লাগলো। অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া শেয়ার করার জন্য। অনেক অভিনন্দন আপনার জন্য।

 2 years ago 

সামান্য বেখেয়ালে অনেক সময় অনেক ধরনের দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে। আসলে সবাইকে সাবধানে চলাচল করা উচিত। ভাগ্য ভালো বাচ্চাটা খুব বেশি ব্যথা পায়নি। তবে আরেকটু হলেই হয়তো পানিতে পড়ে যেত। নদীর পাড় বা চরাঞ্চল গুলোতে ঘুরতে ভীষণ ভালো লাগে। আপনি আপনার বন্ধু ফেরদৌস ভাইয়ের সাথে অনেক সুন্দর সময় কাটিয়েছেন বুঝতে পারছি। কিন্তু কি অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছে সেটা জানার অপেক্ষায় রইলাম ভাইয়া।

Coin Marketplace

STEEM 0.20
TRX 0.14
JST 0.030
BTC 67808.66
ETH 3248.00
USDT 1.00
SBD 2.67