সমুদ্র দর্শন এর উদ্দেশ্যে কুয়াকাটা ভ্রমণ (চতুর্থ পর্ব)। ১০% সাই-ফক্স।

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago

কেমন আছেন আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা? আমি ভালো আছি। আশাকরি আপনারা ও ভালো আছেন।


পূর্ববর্তী পর্বের লিংক

বেশ কিছুক্ষণ সৈকতের কাছাকাছির বিভিন্ন দোকানপাটে ঘুরে আমরা সন্ধার পরে সমুদ্রসৈকতে রাখা চেয়ারগুলোতে এসে বসলাম। চেয়ারে শুয়ে শুয়ে সমুদ্রের সৌন্দর্য উপভোগ করছিলাম। সমুদ্রের ঢেউগুলোর পাড়ে আছড়ে পড়ার আওয়াজ শুনছিলাম। সাথে মৃদু বাতাস এসে আদরের পরশ বুলিয়ে দিচ্ছিল আমাদের গায়ে। সে এক চমৎকার অভিজ্ঞতা। কুয়াকাটা ভ্রমণে আমার কাছে সবচাইতে ভালো লেগেছে এই মুহূর্তগুলো।

IMG_20220608_220025.jpg

বেশ কিছুক্ষণ চেয়ারে বসে থাকার পর আমরা চটপটি আর ফুচকা খেলাম। আশেপাশে বেশ কয়েকটি চটপটি ফুচকার দোকান ছিলো। সেখান থেকে লোভনীয় গন্ধ আসছিলো। তাই আমরা একটি দোকান থেকে চটপটি-ফুচকা অর্ডার করেছিলাম। প্রথমে কিছুটা দ্বিধা দ্বন্দের ছিলাম যে এখানকার চটপটি ফুচকা কেমন হবে। খাওয়ার পরে বুঝতে পারলাম তাদের চটপটি-ফুচকা যথেষ্ট মজাদার। চটপটি ফুচকা খাওয়ার পরে আমরা আবার গিয়ে সেই চেয়ারে বসলাম। একটি কথা বলে রাখা ভাল যে চেয়ার গুলো কিন্তু ফ্রি নয়। সেই চেয়ারে বসতে হলে ঘণ্টাপ্রতি আপনাকে টাকা দিতে হবে।

IMG_20220601_205010.jpg

আমরা সমুদ্রের সৌন্দর্য উপভোগ করছিলাম। আমাদের এতোটাই ভালো লাগছিলো যে সেখান থেকে উঠে আর হোটেলে যেতে ইচ্ছে করছিলো না। মনে হচ্ছিল এভাবেই সারারাত কাটিয়ে দিই। কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতের সাথে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের বেশ বড় একটি পার্থক্য দেখতে পেলাম। কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে সন্ধার পরে আর বিচে তেমন লোকজন থাকে না। প্রশাসন লোকজনকে নিরুৎসাহিত করে সৈকতে না থাকতে যদি মহিলা সাথে থাকে। কিন্তু এখানে তেমন কোনো সমস্যা নেই। কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতে আমি অনেক রাতে ও পরিবার পরিজন নিয়ে লোকজনকে বসে থাকতে দেখেছি। এই জিনিসটি আমার কাছে খুবই ভালো লেগেছে। আরো একটি জিনিস আমার কাছে ভালো লেগেছে সেটি হচ্ছে এখানে আমরা সমুদ্র সৈকতে বসে থাকার সময় মশার উপদ্রবের সম্মুখীন হইনি। যেটা কক্সবাজারে আমি দেখেছি।

IMG_20220601_205039.jpg

যাই হোক আরো কিছুক্ষণ সময় সমুদ্র সৈকতে বসে থাকার পর আমরা সিদ্ধান্ত নিলাম এখন মাছ ভাজা খেতে যাবো। আমরা যেখানটাতে বসেছিলাম তার ঠিক পেছনে দিকেই মাছের দোকান গুলি ছিলো। সেখানে গিয়ে আমি প্রথমে দেখলাম কি কি মাছ পাওয়া যায়। সে দোকানগুলিতে বেশ কয়েক রকমের মাছ ছিলো। যেমন টুনা মাছ, কোরাল মাছ, লবস্টার, ইলিশ মাছ, বাঁশপাতা মাছ, লইট্টা মাছ। সাথে আরো ছিল স্কুইড এবং কাঁকড়া। মানুষ বিভিন্ন রকমের মাছ ভেজে না হয় বারবিকিউ করে খাচ্ছিলো। বেশ কিছুক্ষন দেখার পর আমি চিংড়ি, লবস্টার এবং বাঁশপাতা মাছ পছন্দ করলাম খাওয়ার জন্য। সেগুলি ভেজে দিতে বললাম। অর্ডার দিয়ে অবশ্য আমি সেখানে দাঁড়িয়ে ছিলাম। কারণ আমি দেখতে চাচ্ছিলাম তারা মাছ গুলি ভালোভাবে পরিষ্কার করে কিনা। যখন দেখলাম মাছ গুলি তারা ভালোভাবেই পরিষ্কার করেছে। তারপর আমি একটি টেবিলে গিয়ে বসলাম।

IMG_20220601_204954.jpg

টেবিলে বসে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করার পর তারা মাছ আমাদের টেবিলে দিয়ে গেলো। কিন্তু মাছ ভাজা খেয়ে আমি খুবই হতাশ হয়েছি। তারা সব মাছ একই ধরনের মসলা দিয়ে মেখে ভেজেছে। যেটা খেতে আমার কাছে মোটেও ভালো লাগেনি। অবশ্য আমিও একটি ভুল করেছি। বরাবরের মতো মাছের ছবি তুলতে ভুলে গিয়েছি। ইচ্ছা ছিল আরো কিছু মাছ খাবো। কিন্তু সাদ খারাপ হওয়ার কারণে পরে সে পরিকল্পনা বাদ দিলাম।

IMG_20220601_205035.jpg

মাছ খাওয়ার পর্ব শেষ হলে আমরা আবার গিয়ে সমুদ্রসৈকতে রাখা চেয়ারগুলোতে বসলাম। চেয়ারগুলো অবশ্য বেশ আরামদায়ক ছিলো। কারণ তারা চেয়ারের উপরে এক ধরনের গদি দিয়েছে। যেখানে বেশ আরাম করে শোয়া যাচ্ছিলো। অবশ্য এজন্য শেয়ারগুলোর ভাড়াও তারা বেশি ধরেছে। সমুদ্রসৈকতে শুয়ে আমরা নিজেদের ভেতর পরবর্তী দিনের পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা করছিলাম। এভাবেই সেখানে দীর্ঘক্ষন কাটালাম।

IMG_20220601_205000.jpg

কিন্তু রাত যতই হোক আমাদের এখান থেকে যেতে ইচ্ছা করছিল না। তবুও শেষ পর্যন্ত আমাদের সেই রাতের মতো সমুদ্র সৈকত ত্যাগ করতে হলো। সৈকত থেকে ফেরার পথে আমরা একটি হোটেল থেকে কিছু খাবার কিনে নিয়ে রুমে চলে গেলাম। কারন তখনও আমাদের তেমন খুদা লাগেনি। কারন বাইরে থেকে টুকিটাকি প্রচুর খাবার খাওয়া হয়েছে। সে জন্য চিন্তা করেছিলাম খাবার রুমে নিয়ে যাই। পরে যখন ক্ষুধা লাগবে তখন খাওয়া যাবে।

আজকের মতো এখানে শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভাল থাকুন সুস্থ থাকুন।


ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত ডিভাইসহুয়াই নোভা 2i
ফটোগ্রাফার@rupok
স্থানকুয়াকাটা

logo.png

Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png

standard_Discord_Zip.gif


🇧🇩🇧🇩ধন্যবাদ🇧🇩🇧🇩


@rupok

Sort:  
 2 years ago 

আমার কাছেও এই জিনিসটি সবচেয়ে বেশি অবাক লেগেছে যে, সমুদ্র পাড়ে পরিবার-পরিজন নিয়ে গভীর রাতেও নিশ্চিন্তে থাকা যায়। আমাদের দেশে পর্যটন এলাকা গুলো বরাবরই ঝুঁকিপূর্ণ। যে কারণে বিদেশি পর্যটক প্রায় আসেন না বললেই চলে। নিরাপত্তা ব্যবস্থার এ উন্নতি সকলেরই কাম্য। ধন্যবাদ

 2 years ago 

চেয়ারে বসতে হলে ঘণ্টাপ্রতি আপনাকে টাকা দিতে হবে।

ভারী মজার ব্যবসা তো।সমুদ্রে সৈকতের কাঁকড়াগুলি। দেখেই লোভ লেগে গেল।তাছাড়া এখানে বসে চটপটি খাওয়ার মজাই আলাদা।দারুণ সময় কাটিয়েছেন ভাইয়া, ধন্যবাদ আপনাকে।

 2 years ago 

কিন্তু মাছ ভাজা খেয়ে আমি খুবই হতাশ হয়েছি। তারা সব মাছ একই ধরনের মসলা দিয়ে মেখে ভেজেছে। যেটা খেতে আমার কাছে মোটেও ভালো লাগেনি।

ভাইয়া ঐ সমস্ত জায়গার বেশিরভাগ হোটেলগুলোতে এ ধরনের একই মসলা দিয়ে রান্না করে। তবে তারা মাছ ভাজা কেমন ছিল ছবিটা দেখার খুব ইচ্ছে হচ্ছে। ভাইয়া এরপর তারা মাছ ভাজা খেতে গেলে অবশ্যই ছবি তুলবেন এবং আমাদের সাথে শেয়ার করবেন। ভাইয়া আপনার কুয়াকাটা ভ্রমন আনন্দময় হোক।

Coin Marketplace

STEEM 0.15
TRX 0.12
JST 0.025
BTC 54852.52
ETH 2440.67
USDT 1.00
SBD 2.18