মাঝরাতে মিষ্টি খেতে যাওয়ার প্লান।। নভেম্বর-১৪/১১/২০২২।।

গতকাল সারাদিন বেশ ব্যস্ততার ভিতর দিয়ে কাটলো আমার। আপনারা হয়তো কেউই ব্যাপারটা জানেন না, তবে দু-একদিনের ভিতরে হয়তো আমি ব্যাপারটা আপনাদের সাথে শেয়ার করব। যাইহোক তাও ছোট করে একটু বলার চেষ্টা করি। আসলে আগামী ২১ তারিখ আমার একমাত্র বেস্ট ফ্রেন্ড এর বিয়ে। সেটা নিয়েই আসলে আমি একটু দৌড়াদৌড়ির ভেতরে আছি। তাকে নিয়ে মার্কেটে যাওয়া এবং তারপর বিয়ের কার্ড বিলি করা। সবমিলিয়ে বেশ তাড়াহুড়ো করে প্রত্যেকটা দিন কাটছে এবং তার উপর রয়েছে steemit এ পোস্ট করার কিছুটা চাপ। যাইহোক তারপরও সবকিছু ম্যানেজ করে করার চেষ্টা করছি আর কি। মোটামুটি বিয়ের কার্ড বিলি করতে করতে সন্ধ্যা হয়ে গেছিল এবং সবশেষে আমার বেস্ট ফ্রেন্ড (মেয়ে বেস্ট ফ্রেন্ড) আমাকে সাথে নিয়েই আমাদের বাড়ি আসে তার বিয়ের কার্ড দিতে।

সবাই মিলে কথা বলতে বলতে এক পর্যায়ে সে বলে ওঠে তার মিষ্টি এবং দই ফুচকা খাওয়ার খুব ইচ্ছা করছে। এদিকে আমাদের বাড়ি এসে আড্ডা এবং গল্প করতে করতে মোটামুটি রাত সাড়ে আটটার মত বেজে গেছে। কিন্তু কিছু করার নেই, কারণ তার বিয়ের আর বেশি দিন নেই। আর এই দাবিগুলো হয়তো আর কখনোই আমার কাছে করতে পারবে না সে। সুতরাং দ্বিতীয়বারের মতো একবারও আমি ভাবিনি, যে যাব কি যাব না। সাথে সাথে সিদ্ধান্ত নিয়ে নিলাম, যে করেই হোক তাকে আজকে খাওয়াবো, সে যা খেতে চায়। ছোটবেলা থেকেই বলতে গেলে আমাদের খুব পছন্দের একটা মিষ্টির দোকান হল মৌচাক। এখানকার মিষ্টির কোয়ালিটি যেমন ভালো তেমনি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার দিক থেকে এরা খুব সতর্ক। আর তার থেকে বড় কথা এখানকার দই ফুচকা খুব বিখ্যাত। তবে আমি দই ফুচকার থেকে দই বড়া এবং পাপড়ি চাট খুব ভালো খাই।

যাইহোক তাড়াহুড়ো করে ঘর থেকে বেরিয়ে গেলাম। আমাদের বাড়ি থেকে মৌচাক হেঁটে মোটামুটি আধা ঘন্টার মত সময় লাগে, তাই সিদ্ধান্ত নিলাম হেটে যাব। ইচ্ছা করলে ট্রেনেও যাওয়া যেত, তবে আমার রাতের বেলা হাঁটতে খুব ভালো লাগে। আর যখনই আমি হাটতে বের হই তখন হাতে কোনো না কোনো খাওয়ার জিনিস থাকে। কারণ হাঁটতে হাঁটতে খেতেও আমার খুব ভালো লাগে। তাই দোকান থেকে একটা চিপস কিনে নিলাম আর ওটা খেতে খেতেই মৌচাকের দিকে রওনা দিলাম। মোটামুটি মৌচাকে পৌঁছাতে আমাদের চল্লিশ মিনিটের মতো সময় লাগলো। কারণ আমরা গল্প করতে করতে হেলেদুলে যাচ্ছিলাম।তবে ওখানে এত রাতেও প্রচন্ড পরিমাণে ভিড় ছিল, তাই আমাদের একটু অপেক্ষা করতে হলো। এই সুযোগে আমরা কি খাব সেটা সিদ্ধান্ত নিয়ে নিলাম। আমার বান্ধবী বলল সে দই ফুচকা খাবে, @ronggin বলল সে নাকি পাপরি চাট খাবে, আর আমার তো দই বড়া খুব পছন্দ। তাই আমি দই বড়া অর্ডার করে একটা টোকেন নিয়ে নিলাম।

এরপর টুকটাক ভিড় কমলে টোকেন নিয়ে আমরা কাউন্টারে চলে গেলাম। মোটামুটি টোকেন দেওয়ার সাথে সাথেই খাবার বানানো শুরু হয়ে গেল। তবে আগেরবার যখন এখানে খেতে এসেছিলাম তখন দই ফুচকায় প্রচুর ঝাল দিয়েছিল, তাই আগে থেকে সতর্ক করে দিলাম শুকনো লঙ্কার গুঁড়ো একটু কম দেওয়ার জন্য। মোটামুটি ১০ মিনিটের ভিতরেই আমাদের খাবার রেডি হয়ে গেল। এইবার তো খাবার পালা, তবে খাওয়ার আগে সব থেকে একটা গুরুত্বপূর্ণ কাজ হল খাবারের ফটো তোলা যেটা আমার খুবই বদভ্যাস। তাই সেটা শেষ করে খাওয়া শুরু করে দিলাম। সত্যি কথা বলতে বন্ধুদের সাথে একসাথে বসে খাবার খাওয়া এবং আড্ডা দেওয়ার মজাই আলাদা। আমরা আলাদা আলাদা খাবারের আইটেম অর্ডার করলেও সবাই মিলেমিশে ভাগ করে খেয়েছিলাম। সবশেষে খেলাম মিষ্টি এবং তারপর মৌচাকের বিখ্যাত সিঙ্গারা। সিঙ্গারা টা খাওয়ার একমাত্র উদ্দেশ্য ছিল এরপর যাতে কোল্ড ড্রিংকস খাওয়া যায়। কারণ মিষ্টি খাওয়ার পর কোল্ড ড্রিংকস খেতে তেমন একটা ভালো লাগে না। যাই হোক সেখানেই আমাদের রাত দশটার কাছাকাছি বেজে গেছিল তারপর সেখান থেকে আবার হাঁটতে হাঁটতে বাড়ি পৌঁছে আসতে আমাদের রাত এগারোটার মতো বেজে যায়।

যাইহোক আজকের পর্ব এই পর্যন্তই ছিল। আশাকরি আপনাদের ভালো লেগেছে আজকের পর্বটি। আর ভালো লাগলে অবশ্যই একটি কমেন্ট করতে ভুলবেন না। কারণ আপনাদের একটি কমেন্ট আমাকে নতুন এবং ভালো কিছু করার উৎসাহ যোগায়। ভালো থাকবেন সবাই।