কলকাতার স্ট্রিট ফুড রিভিউ।। জানুয়ারি-০৩/০১/২০২৩।।

☬নমস্কার সবাইকে☬

হ্যালো বন্ধুরা,

কেমন আছেন সবাই আপনারা... ? আশাকরি সবাই অনেক অনেক ভাল আছেন সুস্থ আছেন। প্রত্যেকে তার পরিবার নিয়ে সুখে আছেন। আজকের নতুন একটা ব্লগে আপনাদের সবাইকে স্বাগতম।
অফিসপাড়া হিসেবে পরিচিত ডালহৌসি এলাকা লুচি ও আলুরদমের জন্য জনপ্রিয়। শহরের প্রধান ব্যবসায়িক কেন্দ্রগুলির মধ্যে একটি এই ডালহৌসি স্কোয়্যার বা বিবাদী বাগে রোজই অনেক মানুষজন দুপুরের খাবারের জন্য রাস্তার খাবারের স্টলে ভিড় করে। সেরা খাবারের বিক্রেতারা আবার বসে ফেয়ার্লি প্লেসের কাছে, রাইটার্স বিল্ডিংয়ের পিছনে এবং ব্যাঙ্কশাল কোর্টের কাছেই। আপনি এখানে লুচি, কচুরি এবং আলুদোম, ছোলার ডাল, ভাত এবং মাছের তরকারি থেকে শুরু করে মুঘলাই, পাঞ্জাবি চাইনিজ এবং অবিশ্বাস্য কমে দামে বিরিয়ানি পর্যন্ত খেতে পারেন। আর সেই উদ্দেশ্য নিয়েই আমি আর আমার এক বন্ধু গেছিলাম কিছু দিন আগে।

InShot_20230103_152348591.jpg
সাধারণত আমি রাস্তার খাবার খুব বেশি একটা খাই না এবং যদিও বা খাই তাহলে পরবর্তীতে আমার পেটের সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তবে কলকাতার পার্টিকুলার কিছু স্ট্রিট ফুড বেশ জনপ্রিয়। তার ভিতরে এই জায়গাটা বিশেষভাবে পরিচিত। কলকাতার বিভিন্ন অলিগলিতে বড় বড় রেস্টুরেন্ট এবং তার ঠিক পাশেই একটা ছোট্ট গলির ভিতর এই দোকানগুলো অবস্থিত। এই জায়গার রেগুলার কাস্টমার সাধারণত অফিস বা নিয়মিত যারা এখানে কাজ করে তারা। যেহেতু আমার কাছে জায়গাটা নতুন ছিল এবং জীবনে প্রথমবার এই জায়গার খাবার টেস্ট করছি তাই অনেকটাই শংকিত বোধ করছিলাম। তবে সত্যি কথা বলতে জায়গাটা প্রচন্ড পরিমাণে নোংরা। কিন্তু একটা বিষয়ে বেশ স্বস্তি পেলাম সেটা হল এখানকার সবকিছু ফ্রেশ এবং যারা খাবার পরিবেশন করে তারা যথেষ্ট পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন ভাবে সবাইকে খাবার দেয়। যাইহোক যেহেতু খিদেও লেগেছিল তাই এদিক-ওদিক কোন কিছু চিন্তা না করে গলির ভিতরে ঢুকে গেলাম এবং ভালো দেখে একটা দোকানের সামনে এসে দাঁড়ালাম।

InShot_20230103_152619526.jpg
স্থান: কলকাতা , ইন্ডিয়া।
ক্যামেরা: স্যামসাং।
মডেল: M31s.

InShot_20230103_152553450.jpg
স্থান: কলকাতা , ইন্ডিয়া।
ক্যামেরা: স্যামসাং।
মডেল: M31s.

InShot_20230103_152542281.jpg
স্থান: কলকাতা , ইন্ডিয়া।
ক্যামেরা: স্যামসাং।
মডেল: M31s.

প্রথমত আমরা ভেবেছিলাম যে চিকেন স্টু দিয়ে শুরু করব। কারণ এই জায়গাটাতে চিকেন স্টু বেশ জনপ্রিয়। যাইহোক সে আশা আমাদের পূরণ হলো না। কারণ আমরা যেতে না যেতেই সব শেষ হয়ে গেছিল। তাই ভাবলাম লুচি ছোলার ডাল দিয়ে প্রথমে খাওয়া শুরু করি। খুব সম্ভবত লুচি গুলোর ভেতর ডিম দেওয়া ছিল এবং ডালটা এত সুন্দর হয়েছিল খেতে যে বলে বোঝানো যাবে না। আমাদের পাড়ার আশেপাশে অথবা ইউনিভার্সিটি ক্যাম্পাসে অনেকবার খেয়েছি তবে এত সুন্দর টেস্ট এই প্রথমবার পেলাম। এরপর আমরা মেইন কোর্সে কি খাব সেই সিদ্ধান্ত নিতে পারছিলাম না। পরে গিয়ে উনাদের কাছে জিজ্ঞেস করলে উনারা বললেন যে এখানকার সব থেকে বিখ্যাত হলো চিলি চিকেন এবং ফ্রাইড রাইস।

InShot_20230103_152409393.jpg
স্থান: কলকাতা , ইন্ডিয়া।
ক্যামেরা: স্যামসাং।
মডেল: M31s.

InShot_20230103_152359958.jpg
স্থান: কলকাতা , ইন্ডিয়া।
ক্যামেরা: স্যামসাং।
মডেল: M31s.

এর আগে আমি অনেক বড় বড় রেস্টুরেন্টে গিয়ে চিলি চিকেন এবং ফ্রাইড রাইস খেয়েছি বিশেষ করে দাদা বৌদির বিরিয়ানির দোকানের ফ্রাইড রাইস এবং চিলি চিকেন নাকি খুব বিখ্যাত। আমি সেখানে গিয়েও টেস্ট করেছি কয়েকবার কিন্তু এই জায়গার চিলি চিকেন ফ্রাইড রাইসের থেকে বেটার আমি কোথাও পেলাম না। আপনার বিশ্বাস করবেন কিনা জানিনা, মুখে দিতে একটা অন্যরকম অনুভূতি তৈরি হলো। চালটাও যেমন ফ্রেশ ছিল তেমনি চিকেন গুলো খুব সুন্দর করে রান্না হয়েছিল। এবং এই ফ্রাইড রাইস আর চিলি চিকেন বাবদ আমার থেকে মাত্র ৭০ টাকা নিয়েছিল। আর আগে যা খেয়েছিলাম সেটা বাবদ ৩০ টাকা সব মিলিয়ে ১০০ টাকার ভিতরে আমার দুপুরের খাওয়া কমপ্লিট হয়ে যায়। আসলে এদের প্রচুর পরিমাণে সেল হয়, তাই তারা থেকে খুব বেশি লাভ রাখেনা এবং খাবারের কোয়ালিটি সব সময় ভালো রাখার চেষ্টা করে। আমি বাড়ি থেকে যে এক্সপেক্টেশন নিয়ে এসেছিলাম যে হয়তো খাবার খেতে ভালো হবে না বা কোয়ালিটি ধরে রাখতে পারবে না এত কম টাকার ভিতরে, আমার সেই ধারণা একদমই ভুল প্রমাণিত হয় এবং আমার মনে হয়েছে এই জায়গার খাবার বড় বড় রেস্টুরেন্ট কেও হার মানাতে পারে। এছাড়াও এখানে আরো অনেক ধরনের খাবার ছিল তবে পেটে জায়গা ছিলনা জন্য খেতে পারিনি।

InShot_20230103_152528406.jpg
স্থান: কলকাতা , ইন্ডিয়া।
ক্যামেরা: স্যামসাং।
মডেল: M31s.

InShot_20230103_152513053.jpg
স্থান: কলকাতা , ইন্ডিয়া।
ক্যামেরা: স্যামসাং।
মডেল: M31s.

যাইহোক আজকের পর্ব এই পর্যন্তই ছিল। আশাকরি আপনাদের ভালো লেগেছে আজকের পর্বটি। আর ভালো লাগলে অবশ্যই একটি কমেন্ট করতে ভুলবেন না। কারণ আপনাদের একটি কমেন্ট আমাকে নতুন এবং ভালো কিছু করার উৎসাহ যোগায়। ভালো থাকবেন সবাই।

🕉️ধন্যবাদ সবাইকে🕉️

Sort:  
 2 years ago 

আপনি কি যেখানেই যান ঐখানের খাবার শেষ হয়ে যায় নাকিও🤣🤣।আসলে মাঝে মাঝে স্ট্রিট ফুড গুলো ভালো ভালো মানের রেস্তোরাঁ থেকে ভালো হয় এবং স্বাদের ও হয়।আপনার তোলা প্রতিটি খাবারেই বেশ লোভনীয় লাগছে।যাক অবশেষে আপনার ভুল ধারনা ভাঙ্গলো,একা একা খেলেন তো পেটে নিশ্চিত অসুখ হবে। ধন্যবাদ

আমারও তাই মনে হয়, যে আমি যেখানে যাই সেখানেই খাবার শেষ হয়ে যায়। বিশেষ করে স্পেশাল আইটেমগুলো। আর আপনার অভিশাপ এখন আমার আর গায়ে লাগেনা। 🤣

 2 years ago 

নতুন বছরের অনেক অনেক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন আপনাকে ভাইয়া।আপনি স্ট্রিট ফুড খেতে ডালহৌসি এলাকায় আপনার বন্ধু কে নিয়ে গেলেন। কিন্তু বাইরের খাবার আবার আপনার পেটে সয়ও না।আর আপনার কাছে পরিবেশটা ভালোও লাগছিল না কিন্তু যারা খাবার পরিবেশন করছিল তারা খুব পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন ছিল। আপনারা প্রথম লুচি ও ছোলার ডাল খেলেন,বেশ ভাল ছিল খেতে।এরপর ফ্রাইড রাইস ও চিলি চিকেন নিলেন।এতটাই মজার ছিল যে আপনার ধারনা যা ছিল তা ভেঙে গেল। বড় দোকানের খাবার থেকেও এর টেস্ট দারুন ছিল।এত কম টাকায় এত মজার খাবার খেতে পারবেন, বাসায় বসে তা ভাবেননি। ১০০ টাকার মধ্যে খাওয়া হয়ে গেল।বেশ ভাল ছিল আপনার স্ট্রীট ফুড খাওয়ার অভিজ্ঞতা। অনেক ধন্যবাদ শেয়ার করার জন্য। অনেক অভিনন্দন আপনাকে।

পুরো পোস্ট পড়ে এত সুন্দর একটা গঠনমূলক মন্তব্য করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আপু।

 2 years ago 

লুচি আর আলুর দম বাঙালির প্রানের খাবার ৷ আর তাই তো বলাই যায় বাঙালি মানেই তো লুচি আর আলুর দম ৷ তবে দাদা বাইরের খাবার আমিও কম খাই ৷ তবে আপনার খিদে পাওয়াতে খেয়েছেন ৷ যেভাবে বললেন যে অনেক পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন কর্মী রযেছে ৷
যা হোক খাবারের ফটোগ্রাফি গুলো দেখে অনেক ভালো লাগলো ৷ আর ইচ্ছে করছে আমিও চিকেন বিরিয়ানি খাই ৷
ধন্যবাদ দাদা সুন্দর একটি পোষ্ট শেয়ার করার জন্য ৷

ওটা চিকেন বিরিয়ানি ছিল না তো, ওটা ছিল ফ্রাইড রাইস আর চিলি চিকেন। যাইহোক পোস্ট পড়ে এত সুন্দর একটা মন্তব্য করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই।

 2 years ago 

স্ট্রিট ফুড খাওয়ার আমার সব সময় খুব পছন্দ। খেতে খুবই ভালো লাগে। রাস্তার ধারের স্ট্রীট ফুড খাবার গুলো একেবারে মুখরোচক হয়ে থাকে। আমার তো ছবিতে দেখে খুব খেতে ইচ্ছে করছে। তবে সব সময় শুনছি কলকাতার স্টিট ফুড খাওয়ার গুলো একেবারেই অন্যরকম হয়। খুব খাওয়ার ইচ্ছে হয়।

আমি খুব বেশি একটা বাইরের খাবার বা ফুটপাতের খাবার খাই না। তবে মাঝেমধ্যে মনে হয় যে বড় বড় রেস্টুরেন্ট থেকে ফুটপাতের খাবারই বেশি সুস্বাদু।

 2 years ago 

আপনি তো আপনার এক বন্ধুকে নিয়ে খুব মজার মজার খাবার খেলেন। তবে আমার কাছে লুচি ও আলুর দম খেতে অনেক ভালো লাগে। আপনাদের ওখানে তুলনামূলক খাবার গুলোর দাম একটু কম। আপনার ফটোগ্রাফি দেখে বোঝা যাচ্ছে খাবার গুলো খেতে অনেক মজা হয়েছে। আমি তো খাওয়াগুলো দেখে খেতে খুব ইচ্ছে করতেছে। আপনি যেদিকে যান খুব মজার মজার খাওয়ার খেয়ে থাকেন এবং আমাদের মাঝে শেয়ার করতে থাকেন। ধন্যবাদ আপনাকে খুব সুন্দর করে আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।

আমাদের কলকাতায় খাবারের দাম সত্যি খুব কম। মোটামুটি যে কোন আয়ের মানুষ পেট ভরে খাবার খেতে পারে। আসলে এগুলো মাথায় রেখেই এই খাবার দোকানের ব্যবসায়ীরা তাদের খাবার বিক্রি করে। তবে বড় বড় রেস্টুরেন্টগুলোতে কিন্তু আমার গলা কাটা দাম।

 2 years ago 

আমি স্ট্রিট ফুডের আশেপাশে পরিষ্কার থাকতে খুব কম দেখেছি।মাঝে মাঝে তো মনে হয় ঐ পরিবেশের জন্যই খাবারে এত স্বাদ আসে।আর এই জায়গাটির নাম কয়েকটি গল্পের বইয়ে পড়েছি।আবার অনেক ফুড রিভিউ ও দেখেছিলাম।খাবারের দাম ও বেশ সস্তা।আর কিছু কিছু খাবার থাকে যেগুলো স্ট্রিটে যত স্বাদ,রেস্তোরায় তা পাওয়া যায়না।ধন্যবাদ সুন্দর একটি জায়গা ও সুস্বাদু খাবারের রিভিউ দেওয়ার জন্য।

আমারও তাই মনে হয় রে ভাই। হা হা হা... এই নোংরা পরিবেশের জন্যই হয়তো খাবারের টেস্ট আরো অনেক বেশি হয়। যাইহোক তারপরেও অভিজ্ঞতা অনেক ভালো ছিল, আর খাবারের মান বলতে গেলে খুবই ভালো। কারণ এখানে নিয়মিত অফিসের লোকজন খাওয়া-দাওয়া করে। কোয়ালিটি খারাপ করার কোন সুযোগ নেই।

Coin Marketplace

STEEM 0.18
TRX 0.15
JST 0.029
BTC 62622.35
ETH 2442.15
USDT 1.00
SBD 2.64