বিপদ যখন আসে, তখন সব দিক দিয়েই আসে।। ফেব্রুয়ারি-০১/০২/২০২৩।।

☬নমস্কার সবাইকে☬

হ্যালো বন্ধুরা,

কেমন আছেন সবাই আপনারা... ? আশাকরি সবাই অনেক অনেক ভাল আছেন সুস্থ আছেন। প্রত্যেকে তার পরিবার নিয়ে সুখে আছেন। আজকের নতুন একটা ব্লগে আপনাদের সবাইকে স্বাগতম।
বিগত ১৫ দিন আমার বেশ কষ্ট এবং বিপদের মধ্য দিয়ে গেল। যদিও সেই বিপদ এখনো পুরোপুরি কাটেনি, তবে কিছুটা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলতে পেরেছি। ঘটনার সূত্রপাত ঘটেছিল আজ থেকে প্রায় ১৫-১৬ দিন আগে যখন আমি গিয়েছিলাম বনগাঁ আমার এক দাদুর শ্রাদ্ধের অনুষ্ঠান খেতে। সাধারণত এই অনুষ্ঠানগুলোতে আমি যাইনা। তারপরও নিজেদের লোক তাই অনেকটা জোরজবস্তি করে আমাকে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু সেখানে গিয়ে আমার বেশ কিছু ব্যাপার খারাপ লাগছিল সেটা হল ওখানে যারা গেছিল সবারই প্রায় জ্বর এবং অন্যান্য অসুস্থতা ছিল। যেহেতু আমি এই ব্যাপারগুলো খুব এভয়েড করি তাই খুব বেশি একটা তাদের সাথে মেলামেশা বা কথা না বলে জাস্ট কয়টা খেয়ে সেখান থেকে বেরিয়ে আসলাম বিকেল হওয়ার আগেই। কিন্তু আমি বিপদকে পাত্তা না দিলেও বিপদ আমার পেছন ছাড়েনি। ঐদিন বাড়ি আসার পর থেকেই শরীর প্রচন্ডরকম খারাপ হতে শুরু করে এবং সারা গায়ে ব্যথা, চোখ মুখে ব্যথা হতে শুরু করে। যদিও ব্যাপারটা তখনো বুঝতে পারেনি কারণ সারাদিন এত দৌড়াদৌড়ির উপর থাকি এটা হওয়াটাই স্বাভাবিক ছিল। তবে সমস্যাটা শুরু হয় সেদিন রাত থেকে।

alone-513525_1280.jpg
সোর্স

গায়ে প্রচন্ডরকম কাঁপুনি দিয়ে জ্বর তারপর প্রচন্ড মাথা ব্যথা আমার মনে হয় না এত মাথাব্যথা এর আগে আমার কখনো হয়েছিল যেটা এইবার হয়। যাইহোক সামান্য ঠান্ডা জ্বর ভেবে খুব বেশি একটা পাত্তা দেইনি। প্যারাসিটামল এবং হিস্টাসিন খেয়ে ঐদিনের মতো ঘুমিয়ে পড়ি। তবে সকালে ঘুম থেকে উঠতে গিয়ে মনে হচ্ছিল যে আমি আমার ভিতরে নেই এত দুর্বল হয়ে গেছিল শরীর। শরীরের তাপমাত্রা মেপে দেখি ১০৩ জ্বর। সুতরাং ডাক্তার দেখার আগে যে ব্যাপারটা সব থেকে বেশি গুরুত্বপূর্ণ ছিল সেটা হল মাথায় জল দেওয়া। মোটামুটি বাড়ির সবাই আমাকে নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়ে এবং মাথায় জল দিয়ে শরীরের তাপমাত্রা কিছুটা কমায়। কিন্তু তারপরও সমস্যার সমাধান হয়নি। শরীরের তাপমাত্রা কিছু সময়ের জন্য কমলেও, পরবর্তীতে আবার সেটা বেড়ে যায়। আমাদের একজন ফ্যামিলি ডাক্তার রয়েছেন সাথে সাথে তাকে ফোন করে এবং যাবতীয় সব ইনস্ট্রাকশন তিনি ফোনের মাধ্যমে দিয়ে দেন এবং সে অনুযায়ী ওষুধ কিনে আমি খেতে শুরু করি। যদিও এই সময়টাতে সবারই জ্বর হচ্ছে তাই প্রথমে ঘরেই ট্রিটমেন্ট নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। হসপিটাল আমার খুব বেশি একটা পছন্দ না এজন্য প্রথমে সেখানে যেতে চাইনি।

stress-2902537_1280.jpg
সোর্স

দুইদিন এইভাবে কাটানোর পর একদিন রাতে হঠাৎ করে কাপুনি দিয়ে জ্বর আসে এবং হাত-পা বেঁকে যেতে শুরু করে আমার। ঠিক করে কথা বলতে পারছিলাম না এবং এমন অবস্থা হয়ে গেছিল যে সোজা হয়ে দাঁড়ানোর মত কোন অবস্থা ছিল না। এবার আমাকে হসপিটালে নিতে বাধ্য হয় পরিবারের লোকজন। মোটামুটি রাত তিনটার সময় অ্যাম্বুলেন্স বাড়ির কাছে চলে আসে এবং আধা ঘন্টার ভিতরে আমি হসপিটালে গিয়ে পৌছাই। হসপিটালে যাওয়ার সাথে সাথে আমাকে স্যালাইন দেওয়া হয়। তারপর তাদের নিয়ম অনুযায়ী চিকিৎসা করে এবং ঘন্টাখানিকের ভিতরে আমার শরীরের তাপমাত্রা কিছুটা কমতে থাকে এবং ধীরে ধীরে আমি সুস্থ হতে থাকে। তবে আমাকে হসপিটালে বেশি দিন রাখেনি মাত্র একদিন রেখেই যাবতীয় ওষুধ দিয়ে বাড়ি পাঠিয়ে দিয়েছিল। এরপর থেকে তো আমি বিগত ১০-১২ দিন বিছানায় পড়ে আছি। কিন্তু সমস্যার শেষ এখানে হলেই হয়তো ভালো হতো। আমার শরীরের জ্বর এরপর আমার ভাই এবং মায়ের শরীরে গিয়ে বাসা বাঁধে। ভাই কিছুটা সুস্থ হলেও মায়ের অবস্থা এখন খুবই খারাপ। জ্বর মাথা ব্যথা এবং ঠিকঠাক করে কথা বলতে পারছে না। আশা করব আমার মায়ের জন্য সবাই আশীর্বাদ করবেন।

man-4957154_1280.jpg
সোর্স

যাইহোক আজকের পর্ব এই পর্যন্তই ছিল। আশাকরি আপনাদের ভালো লেগেছে আজকের পর্বটি। আর ভালো লাগলে অবশ্যই একটি কমেন্ট করতে ভুলবেন না। কারণ আপনাদের একটি কমেন্ট আমাকে নতুন এবং ভালো কিছু করার উৎসাহ যোগায়। ভালো থাকবেন সবাই।

🕉️ধন্যবাদ সবাইকে🕉️

Sort:  
 2 years ago 

চারদিকের আবহাওয়া আবারও খারাপ হতে শুরু করেছে। কারণ আমাদের ঘরের অনেকেই এই অসুস্থতায় ভুগছে। আমার গত তিনদিন যাবত গলা ব্যথা। গলা গরম রাখার জন্য বেঁধে রাখি যাতে ব্যথাটা বেশি না হয়। তার পাশাপাশি আমার আব্বু এবং আমার স্ত্রী,ছেলেও অসুস্থ। তাদেরও ঠান্ডা, জ্বর হয়েছে। তবে তারা ওষুধ খাচ্ছে। কিন্তু আমার যেহেতু গলা ব্যথা সেজন্য আর ওষুধ খাওয়া হচ্ছে না। শুধুমাত্র গরম পানির উপর নির্ভর।যাই হোক আপনার মা খুব অসুস্থ সেটা শুনে বেশ খারাপ লাগছে। উনি যেন তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে যায় সে প্রার্থনা রইলো।

এখন সব পরিবার এ কম বেশি এরকম সমস্যা হচ্ছে সুতরাং সাবধানতা অবলম্বন করা বেশ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই পোস্টটি পড়ার জন্য।

 2 years ago 

আপনাকে ও অসংখ্য ধন্যবাদ আমার মন্তব্যের যথাযথ একটি ফিডব্যাক দেয়ার জন্য ভালো থাকবেন।।

😊😊

 2 years ago 

আপনাকে কি বলে সান্ত্বনা দিব বুঝতে পারছি না। আসলে বর্তমানে এরকম অবস্থা হয়ে পড়েছে। পরিবারের একজনের যদি অসুখ হয় তাহলে দেখা যায় আস্তে আস্তে একজন থেকে অন্য জনের অসুস্থতা বেড়ে যায়। আপনার তো দেখছি বেশ খারাপ অবস্থা হয়েছিল। আর আপনার মায়ের জন্য একটু বেশি খারাপ লাগছে। আশা করি আপনার মা এবং পরিবারের সবাই আপনারা সুস্থ হয়ে উঠবেন। আপনাদের জন্য শুভকামনা রইল।

এখন বর্তমান পরিস্থিতি সত্যিই এরকম হয়ে গেছে যে বাড়ির একজন অসুস্থ হলে বাকি সবাই অসুস্থ হয়ে যাচ্ছে। কি আর করা যাবে, সবকিছু ম্যানেজ করে চলতে হচ্ছে আর কি।

 2 years ago 

জি ভাই আপনার কথা একেবারে বাস্তব । বিপদ যখন আসে তখন চার দিক দিয়ে আসে। পরিবারের সবাই অসুস্থ জেনে খুবই খারাপ লাগলো। বিশেষ করে আপনার মায়ের জন্য সৃষ্টিকর্তার কাছে বিশেষ প্রার্থনা করছি যেন তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে ওঠেন। আসলে আবহাওয়া পরিবর্তন হওয়ার কারণে এখন জ্বর সর্দি-কাশি মাথা ব্যথা হওয়ার প্রবণতা চারদিকে বেড়ে গেলো। একজন অসুস্থ হলে পরিবারের সবাই অসুস্থ হয়ে পড়ছে।

আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই, পোস্টটি পড়ার জন্য। আসলে এই সময়টাতে সবাই অসুস্থ হয়ে যাচ্ছে, তাই একটু সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে।

 2 years ago 

ভাইয়া ব্যাপারটা বুঝলাম না আমার পরিচিত প্রায় অনেক মানুষ অসুস্থ। জ্বর,ঠান্ডা,গলা ব্যথা, মাথা ব্যথা এমনকি আমারও এই অবস্থা। ডাক্তারের কাছে যাওয়ার পর বললো আবহাওয়া পরিবর্তনের কারণে এমনটা হচ্ছে। আবার করোনা নামক কিছু চাই না। সবাই তারাতারি সুস্থ হয়ে যাক। ধন্যবাদ ভাইয়া।

বর্তমানে সবারই একই অবস্থা হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমার পরিবারের সবাই অসুস্থ এবং আশেপাশের যত আত্মীয়-স্বজন ছিল তারাও খুব অসুস্থ। কিছু করার নেই ওয়েদার চেঞ্জ হচ্ছে, একটু সাবধানে থাকবেন।

Coin Marketplace

STEEM 0.16
TRX 0.15
JST 0.028
BTC 58665.29
ETH 2302.95
USDT 1.00
SBD 2.51