রান্না ঘরে গিয়ে স্বাদের বিস্ফোরণ 🤪😅
নমষ্কার,
বেশ কিছুদিন আগের কথা বলছি আজ। আমার বন্ধু অন্তু আর আমি আছি শুধু ফ্ল্যাটে। অন্তু মেট্রো রেলে জব করছে। সিভিল ইঞ্জিনিয়ার। ওর নাইট ডিউটি ছিল। সকালে আট টায় রুমে আসলো। আমাকে বললো শরীর খুব ক্লান্ত লাগছে কিছু একটা রান্না করিস , একটু ঘুমিয়ে নেই তারপর খাব। আমি বললাম, ব্রয়লার মুরগি খাবি? অনেক দিন খাই না। বলল একা একা করতে পারবি ,, আমি বুক ফুলিয়ে বলে দিলাম, হ্যাঁ ম্যানেজ করে নেব।
আসলে ভার্সিটি লাইফে তো হলে থাকার সময় ব্রয়লার মুরগি ছিল জাতীয় খাবার। বাড়িতে আসলে খাওয়া হয় না। বাবা বাড়িতে ওই মাংস তুলেই না। আর মা তো মুরগী খায় না একদম। আমি ভাবলাম এটাই সুযোগ। অনেক দিন পর খাব জমিয়ে।
বাজার পাশেই ছিল। দ্রুত নিয়ে আসলাম একটা মুরগী। আমি কেটেই নিয়ে এসেছিলাম। তারপরও যেগুলো বড় সাইজের ছিল , বাড়ি এনে একটু কেটে নিলাম। মাংস ধুয়ে পিয়াজ আলু কেটে রান্নার যোগাড় শুরু করলাম। অনেক বড় মুখ করে বন্ধুকে বলছি যে একাই পারব সব 🤪। মোটামুটি খাওয়ার যোগ্য করতেই হবে।
শুরুতে কাটা আলু গুলো ভেজে নিলাম। তার আগে মাংস গুলো মুরগীর মাংসের মশলা আর লবন দিয়ে একটু মাখিয়ে রেখেছিলাম।
ভাবলাম মাংসগুলো তেলে হালকা করে ভেজে তারপর কষিয়ে রান্না করব। আমার কিন্তু এসবের অভিজ্ঞতা নেই একদম। তবু মনের জোর খাটিয়ে করতে নিলাম। মাংস একটু একটু ভেজে নিলাম। কত গুলো পুড়িয়েও ফেললাম।
এইবার পিয়াজ দিয়ে কষানোর পালা। তখনই হয়ে গেল বিপত্তি। তেলতো অনেক গরম হয়ে ছিল। পিয়াজ দেওয়ার সাথে সাথে দেখি লাল হয়ে যাচ্ছিল। সে কি অবস্থা। আমি কি করি তখন। চুলা বন্ধ করে দিয়ে কড়াই টা কিছুক্ষণ নামিয়ে রাখলাম। ভাবলাম ,, না দেরি করে কাজ নেই। এর মাঝেই মাংস গুলো দিয়ে দেই। মাংস দিয়ে ওভাবেই একটু কষাতে লাগলাম। আবার একটু মুরগীর মশলা দিলাম। কিন্তু কেমন যেন মন মত হচ্ছে না কিছুই। পিয়াজ গুলো বার বার লেগে ধরছে। কি এক বাজে অবস্থা। ওভাবেই জল ঢেলে ঝোল দিয়ে দিলাম । মাংস টা সেদ্ধ হয়ে গেলে ঝোলের পরিমাণ টা বুঝে নামিয়ে নিলাম।
এবার হল আসল খেলা। অন্তু ঘুম থেকে উঠে বলছে রান্না হয়েছে নাকি। আমি বললাম হ্যা সব রেডি। চল খাব। খেতে বসে অন্তু আগে মুখে দিল তরকারি। বিশ্বাস করুন ওর চোখ মুখের অবস্থা দেখে আমি জ্ঞান হারিয়ে ফেলব এমন অবস্থা। আমাকে বললো, তুই মুখে দে আগে। ওরে ভাই,, মুখে দিয়ে দেখি এক ফোঁটা লবণ নেই ঝাল নেই 🤪🤪। রান্না ঘরে দৌড়ে গিয়ে দেখি কেটে রাখা মরিচ দিতে ভুলে গেছি , ওগুলো ওভাবেই পরে আছে 😀। পরে যে লবণ দেব সেটাও মনে নেই। আর সবচে বড় কথা আদা রসুন থেকে শুরু করে আরো অনেক মশলা ছাড়া আমি রান্না করে ফেলেছি। তাহলে আপনারাই ভাবুন খেতে কত মজা হতে পারে 🤪😀😀।
কোন রকমে তখন কাজ চালিয়ে একটু খেলাম। ওটা ছাড়া আর উপায় ছিল না। হিহিহিহি 😉😅। জীবনে এই প্রথম এমন অভিজ্ঞতার সম্মুখীন। কত যে হাসাহাসি করেছি দুজন।
রান্না যেমনই হোক। এই স্মৃতি গুলোই থাকবে আজীবন 🥰🥰🥰🥰।
ভাইয়া আপনার বৌ তো মহা সুখে থাকবে আপনি সবসময় এমন মজার মজার রান্না করে আপনার বউকে খাওয়াবেন। বউ বলবে আমার জামাই টা কত ভালো কত চিন্তা করে সংসার নিয়ে যার কারণে সংসার টাকা বাঁচাতে গিয়ে রান্না আদা গরম মসলা রসুন লবণ কাঁচামরিচ কোন কিছুই দেয় না 🤣🤣। আপনার কপালে সুখ থাকলেও বউয়ের কপালে বড় দুঃখ রয়েছে😟😟। পরিবারের লোকজন তো কিছু বলেনি , তবে বিয়ে করার আগে অন্তত রান্না বান্না শিখেন। তা না হলে সারাদিন ফুডপান্ডা থেকে অর্ডার করতে হবে 😁। যাই হোক ভাই আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ খুব সাহস করে সাহসিকতা দেখি আপনি রান্না করতে গিয়েছেন। যদিও সেটা সাধের বিস্ফোরণ হয়ে গেছে। আচ্ছা ফায়ার সার্ভিস খবর পাঠিয়ে ছিলেন্ত 🤪? আপনি না বললে কিন্তু আমরা বুঝতেই পারতাম না যে মুরগির মাংস টা বিস্ফোরণ যুক্ত। আমি তো ভেবেছিলাম এটা খেতে খুবই সুস্বাদু হয়েছে।
ওরে আপু আমার জীবনের সেরা কমেন্ট ছিল এটা 😊😊। এত মজার কমেন্ট এখন পর্যন্ত পাই নি। হিহিহিহি। খুব খুব মজা পেলাম। আর আপু বিয়ে করে বউয়ের থেকে সব শিখে নেব। তারপর আমি করব সব। বউকে কষ্ট দেবো না একদম 😉। আর মাঝে মাঝে ফুড পান্ডা থেকেও অর্ডার করব। না হলে ওদের ব্যাবসা চলবে কি করে 🤪। অনেক ভালো থাকবেন আপু। ❤️❤️
ভাইয়া আপনার পোস্টের টাইটেল দেখে আমি প্রথমে ঘাবড়ে গিয়েছিলাম। রান্নাঘরে গিয়ে স্বাদের বিস্ফোরণ, এটা আবার কেমন কথা। কিন্তু যখন পুরো পোস্ট পড়ে নিলাম ঠিক তখনই বুঝতে পারলাম সত্যি সত্যি স্বাদের বিস্ফোরণ। আপনার জাতীয় খাবার টি আর জাতীয় থাকলো না। লবণ ঝাল ছাড়াই সুস্বাদু খাবার তৈরি করে ফেললেন। প্রথমদিকে সব ঠিকঠাক ছিল কিন্তু শেষের দিকে এসে বিস্ফোরণটি ঘটে গেল। যাইহোক ভাইয়া, আপনার রন্ধনপ্রণালী দেখে এবং তার বর্ণনা পড়ে আমি কিন্তু খুবই মজা পেয়েছি। খাবার খেয়ে আপনি মজা না পেলে কি হবে আসল মজাতো আমরা পেয়ে গেলাম। খুব সুন্দর বর্ণনা করে রান্না ঘরের স্বাদের বিস্ফোরণ উপস্থাপন করার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।
হিহিহিহি,, কি আর বলবো ভাই,, প্রথম প্রথম এমন হয়ে গেছে তাই। আপনার কমেন্ট পড়ে অনেক মজা লেগেছে 😊। ভালো থাকবেন ভাই ❤️
ভাইয়া আপনার রান্নার বিষয়ে পড়তে গিয়ে আমার হাসতে হাসতে পেটে ব্যাথা দরে গেলো, লবণ ঝাল সব কিছু ছাড়াই রান্না করে ফেললেন রান্না.. 😁😁
অনেক মজা পাইছি ভাইয়া, অনেক দিন পর একা একা মন খুলে হাসলাম, অনেক সুন্দর ছিলো ভাইয়া আপনি উপস্থাপনাটা, এতো মজার একটি রেসিপি শেয়ার করার জন্য আপনাকে জানাচ্ছি অসংখ্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
ভাই এসব মনে হলে হাসতে হাসতে আমি নিজেই শুয়ে পরি 🤪। অনেক ভালো থাকবেন
হা হা,বেশ মজা পেলাম পোস্ট পড়ে।যাক সাহস করে যে রান্না করেছেন তাই তো অনেক।টাইটেল দেখে না পড়ে পারলাম না।লবন ছাড়া ১৬ আনাই বৃথা😉😉।ভালোই হয়েছে।ধন্যবাদ
হিহিহিহি কি যে বলি আপু, টাইটেল টা একদম পারফেক্ট দিয়েছি না বলুন? 😉 অনেক ভালো থাকবেন।
উফ!! ভাই, আপনি রান্না ঘরে স্বাদের বিস্ফোরণ তো ঘটবেই। আমি চিকেন রেসিপি অনেক পছন্দ করি। তবে আপনার ঝাল লবণ ছাড়া আমি খেতে চাই না, হাহাহা খুবই মজা পেলাম আপনার পোস্ট পড়ে। ব্যতিক্রম একটি রেসিপি পোস্ট ছিলো। ধন্যবাদ আপনাকে।
ভাই মাঝে মাঝে ভিন্ন স্বাদের কিছু খেতে চাইলে আমার কাছে চলে আসবেন 😊😊। ভালোবাসা রইলো 🥰
প্রথমে রেসিপি দেখে সত্যিই মনে পড়েছে অনেক সাধের একে রেসিপি তৈরি করেছেন পরে যখন দেখলাম লবন ঝাল ছাড়া রান্না করেছেন তখন খুবই হাসি পাইছে । যাইহোক সাথে এখন আবার সব কিছু মিশিয়ে রান্না করেন ।তারপর খেয়ে নেবেন অনেক ভালো লাগবে। এত সুন্দর একটি মজার পোস্ট আমাদের মাঝে তুলে ধরার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ
এরপর আর কখনো ট্রাই করা হয় নি আপু। রান্না ঘরে যেতেই ভয় করে 😉। অনেক ভালো থাকবেন আপু। ❤️
আপনার পোস্ট পড়ে ভীষণ মজা পেলাম। লবণ ঝাল ছাড়াই সুস্বাদু খাবার তৈরি ফেলেছেন আপনি দেখছি। আসলে সত্যি কথা হলো প্রথম প্রথম রান্না করতে গেলে এই রকম একটু একটু ভুল সবারই হয়। আপনি কয়েক দিন চেষ্টা করে দেখবেন আপনার হাতের রান্না খুবই মজা হচ্ছে। তখন আংগুল চেটে চেটে খাবেন। খুবই ভালো লাগলো আপনার পোস্ট পড়ে। আমি তো প্রথমে ভেবেছিলাম কীনা কি হয়ে গেল পরে পুরো পোস্ট করে সবটা বুঝতে পারলাম। ধন্যবাদ আপনাকে শেয়ার করার জন্য। শুভকামনা রইল আপনার জন্য।
বাচ্চা ছেলে রান্না ঘরে গেলে যা হয় আপু 😊। তরকারি যে সেদ্ধ হয়েছিল এটাই বেশি , না হলে ওটাও খাওয়া যেত না । হিহিহিহি। অনেক অনেক শুভেচ্ছা রইলো
বয়লার মুরগির অসাধারণ একটি রেসিপি শেয়ার করেছেন ভাই। যা দেখে খেতে মন চাচ্ছে। এরকম করে ভাজি করে রেসিপি করলে অনেক সুস্বাদু হয়। আপনার মুরগির মাংসের রেসিপি আমার কাছে বেশ ভালো লেগেছে। খুব সুন্দর করে উপস্থাপন করেছেন আপনি। ধন্যবাদ ভাই আপনাকে এরকম সুন্দর একটি মুরগির মাংসের রেসিপি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
ভাই পুরো লেখা টা দেখেও এই কথা বললেন!! 🤔🤔। আমি চিরো কৃতজ্ঞ 🙏🙏🙏
হাহা। লবণ ঝাল ছাড়া চিকেন কেমন লাগবে ভাই খেতে?? পড়ে খুব আনন্দ পেলাম আপনার আজকের পোস্ট। ধন্যবাদ আপনাকে শেয়ার করার জন্য
ওরে ভাই এসব খাওয়ার কথা আর মুখেও আনেন না,, যা দিন গেছে ওই দিন 😊😊
দাদা আপনার পোস্টটি পড়ে অনেক ভালো লাগলো।মনে হলে এটা কোনে রেসিপি না ,কিন্তু রেসিপি মাঝে দারুন সব মজার গল্প ভরা ছিলে।যা পড়তে পড়তে অনেক মজা নিচ্ছি ছিলাম।তবে আপনি অনেক মজার মানুষ মনে হলে।আপনার রেসিপিটি অনেক সুন্দর করে তৈরি করছেন।দেখতে অনেক ভালো লাগছে।অনেক ধন্যবাদ ,এতে সুন্দর পোস্ট শেয়ার করার জন্য।
আসলে ঐ সময় খারাপ লাগলেও এখন যখনই মনে পড়ে, খুব হাসি পায়। তাই মজার ছলেই সবটা লিখেছি। অনেক ভালো থাকবেন ❤️