"সে এসে বসুক পাশে"......
নমস্কার,,
"সে এসে বসুক পাশে" গল্পের বইটা এবার বইমেলায় কিনেছিলাম। তবে শুরুতেই জানিয়ে রাখি বই পড়ার অভ্যাস আমার একদমই নেই। মা ভীষণ বকাবকি করতো বই পড়তাম না দেখে। ছোট থেকে ভার্সিটি লাইফ পর্যন্ত শুধু মাত্র একটা গল্পের বই পড়েছিলাম। ফাল্গুনী মুখোপাধ্যায়ের শাপমোচন বইটা। ছোট ওই বইটা শেষ করতেও প্রায় কয়েক মাস লেগে গিয়েছিল। বই পড়ার অভ্যাস না থাকলে যা হয়। কিন্তু নতুন বই দেখতে আমার বরাবরই খুব ভালো লাগে। আর ছোটবেলা থেকেই খুব ইচ্ছে ছিল ঢাকা বইমেলা ঘুরে দেখার। এ বছরে যেহেতু সুযোগটা হয়ে গিয়েছিল তাই সেখান থেকে খালি হাতে ফিরতে ইচ্ছে করেনি একদমই। সাদাত হোসেনের লেখা "সে এসে বসুক পাশে" বইটি কিনেছিল।
মজার ব্যাপার হচ্ছে বইটা যখন কিনি তখন আমি মোটামুটি নিশ্চিত ছিলাম যে এই মোটা বই আমার দ্বারা কখনোই শেষ করা সম্ভব হবে না। বাড়ি ফেরার পথে গাড়িতে বসে ভাবছিলাম যে বই কেনার পেছনে ৪১০ টাকা হয়তো পুরোটাই জলে চলে গেল। প্রথম কয়েক দিনে অবশ্য এক পাতাও পড়া হয়নি। হঠাৎ একদিন মনে হল এত টাকা দিয়ে যখন বইটা কিনলাম তখন কয়েকটা পাতা না পড়লে একদম পাপের অংশীদার হয়ে যাব। আর ঠিক ঐদিন থেকেই বইটা পড়া শুরু করলাম। শুরুতে অতটা ভালো লাগত না। তবে আমি প্রতিদিন রাতে ঘুমানোর আগে কয়েক পাতা করে পড়ার একটা অভ্যাস করে তুললাম। আর বইটাও আমার বালিশের পাশেই রেখে দিতাম যাতে করে শোয়ার সময় পড়ার কথা মনে পড়ে। সত্যি বলতে এভাবে বই পড়তে নিয়ে কিভাবে যে আমি নিজেও গল্পের ভিতরে ঢুকে গিয়েছিলাম সেটা একদমই বুঝতে পারিনি। ধীরে ধীরে বেশ মজা পেতে শুরু করলাম।
প্রতিদিনই যে বই টা পড়েছি এমনটা নয়। মাঝেমধ্যে গ্যাপ যেত। তবে মাথায় থাকতো যে বইটা পড়তে হবে আমাকে। আর শেষও করতে হবে। অবশেষে গতকাল রাতে পুরো বইটা পড়া শেষ হয়ে গেল। একটা অদ্ভুত মায়ায় পড়ে গিয়েছিলাম পড়তে গিয়ে। কিছু কিছু চরিত্রের প্রতি ভীষণ ক্রোধ জন্মেছে আবার কিছু কিছু চরিত্রের প্রতি মনের অজান্তে একটা ভালো লাগা তৈরি হয়েছে। কখনো কখনো ভীষণ আবেগাপ্লুত হয়ে গিয়েছি। গল্পটার কেন্দ্রীয় চরিত্রে যে ছিল আমি ভেবেছিলাম তাকে নিয়েই হয়তো শেষ হবে। কিন্তু আমাকে অবাক করে দিয়ে এমন ভাবে শেষ হল যেটা আমি কখনো কল্পনাও করতে পারিনি। তবে শেষে গিয়ে কোথাও যেন খুব খারাপ লাগা কাজ করছিল। হয়তো এখানেই লেখকের সার্থকতা।
সবশেষে এ কথা বলতে আমার একদম দ্বিধা নেই যে, আমি হয়তো এখন থেকে নিয়মিতই বই পড়বো। একটা বইয়ের কিছু কিছু লাইন এত চমৎকার হতে পারে এটা আমি কখনো ভাবতেও পারিনি। আর শুরুতে একটা পেজ শেষ করতে অনেক লম্বা সময় লেগে যেত। তবে এখন খুব দ্রুতই শেষ হয়ে যায়। দেখলাম কিছুটা হলেও উন্নতি হয়েছে নিজের ভেতর, হিহিহিহি। গল্পের পুরো কাহিনী নিয়ে আমি কিছু লিখিনি ইচ্ছে করেই। কারণ এত চমৎকার একটা লেখার সারসংক্ষেপ ছোট্ট একটা পোস্ট করে কখনোই মেলানো সম্ভব নয়। ভাবছি খুব তাড়াতাড়ি আবার নতুন একটা বই পড়া শুরু করব। দেখা যাক আবার কবে সেই দিনটা আসে।
গল্পের বইটার পিছনে আপনার ৪১০ টাকা লাগে। আসলেই গল্পের বই পড়তে আমার তেমন একটা ভালো লাগে না। কেমন একটা অলস লাগে। কিন্তু যখন কোন কিছু নিয়মিত করা হয় তার প্রতি কেমন একটা মায়া লেগে যায় ।আপনি গল্পের বইটি পড়তেন বলে গল্পের বইটার উপর আপনার মায়ের লেগে গিয়েছিল ।ফাল্গুনী মুখোপাধ্যায়ের শাপমোচন বইটা কিছু গল্প আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
আপু আপনি কি পোস্ট টা ঠিকভাবে পড়েছিলেন? আমি সাদাত হোসেনের লেখা বই নিয়ে কথা বলেছি। আশা করি এরপর থেকে আরেকটু যত্নশীল হবেন। ভালো থাকবেন আপু।
সাদাত হোসেনের লেখার সাথে আমি পরিচিত। তার লেখা দুটি উপন্যাস এবং কাজল চোখের মেয়ে নামক কবিতার বই আর কাছে আছে। তবে এই বইটা নেই। এরপর ঢাকায় আসলে নিয়ে আসিয়েন কিন্তু বইটা 😇😇 বই নিয়ে আমি আবার কিছু কথা সহজে ভুলি না। দই এর কথা বাদ, কিন্তু বই বাদ দেয়া যাবে না!
হাহাহাহা,, দিদি আমি তো ঢাকাতেই থাকি এখন, এখনো ঢাকাতেই আছি 😊। বাড়ি মাসে একবার যাই জাস্ট দুই দিনের জন্য। আপনি যখন বই নিবেন আমাকে জানাবেন কেমন। আর সাথে আপনার কাছে থাকা সুন্দর একটা বই নিয়ে আসবেন। এটা আমার তরফ থেকে আবদার রইলো। 😊 তারপর জমিয়ে আড্ডা দিয়ে ফিরব 🤟।
ওকে ডান! তবে পড়তে হবে কিন্তু! এই সুযোগে পড়ার অভ্যেসটা নতুন করে শুরু হলে মন্দ হয় না ব্যাপারটা!কি বলেন?
একদম,,,, আজে বাজে কাজে তো অনেক সময় নষ্ট করছি, এবার একটু ভালো কিছুর অভ্যাস তো হোক 😊🙌 অপেক্ষায় রইলাম।