সুলতান ডাইনসে আমাদের অতর্কিত হালমা 😉😍

in আমার বাংলা ব্লগlast year (edited)

নমষ্কার,,

বেশ কয়েকদিন আগে ধানমন্ডি লেকের আশেপাশে দিয়ে ঘুরছিলাম তিন বন্ধু। আমি তানজিম আর প্রমা। হাঁটতে হাঁটতে বেশ খিদে পেয়ে গেল। তানজিম বুয়েটে হলে চলে যেতে চাইলো। ওর মনটা কিছু কারণে ভালো ছিল না। প্রমাও দেখি মুড অফ করে আছে। কারোর মাঝে কোন জোশ নেই। আমার কাউকে এভাবে চুপচাপ দেখতে একদম ভালো লাগে না। বার বার ভাবছিলাম কি করা যায়! কি করে সবাইকে চাঙ্গা করা যায়! এর মধ্যেই মাথায় আসলো একটা বিন্দাস খানাপিনা করলে কেমন হয়! ভালো খাবার সবাই জমিয়ে খেলে সব কিছু একটু হলেও নরমাল লাগবে। পেট ঠান্ডা তো দুনিয়া ঠান্ডা। হিহিহিহি।

received_595111015464663.jpeg
Location

যেই কথা সেই কাজ। সোজা রওনা দিলাম ধানমন্ডির সুলতান ডাইনসের দিকে। কেউ তো রাজি নয় যেতে। আমি বললাম যেতেই হবে। আমি ট্রিট দেব। তবু খেতেই হবে। আমরা যখন পৌঁছাই তখন প্রায় রাত দশটা। এত ভিড় ওখানে। আমার বন্ধুরা বলছে আজ বোধ হয় না খেয়েই রওনা দিতে হবে। তবে দোতলার ম্যানেজার আমাকে তিনতলায় যেতে বললো। আর যাওয়ার সাথে সাথে ওখানে একটা টেবিল ফাঁকা পেলাম। মনে হল আমাদের জন্য টেবিলটা ফাঁকা ছিল। সাথে সাথে বসে গেলাম এবং কাচ্চি আর বোরহানি অর্ডার করলাম।

IMG_20230228_204826.jpg
Location

খাবার আসতে আসতে মোটামুটি রাত এগারোটা বেজে গেল। খিদে তে পেটে ছুঁচো দৌড়চ্ছে এমন একটা ব্যাপার। তিনজন মিলে যেন হুমড়ি খেয়ে পড়লাম খাবারের ওপর। সত্যি বলছি অসাধারণ ছিল কাচ্চি টা। বোরহানি টাও বেশ ভালো ছিল। আর মাংসের পিছও বেশি ছিল। আমরা তো খেয়ে শেষ করতেই পারি নি। পরিমাণে অনেক ছিল। সেদিন বুঝলাম সুলতান ডাইসের এত প্রচার কেন করে মানুষ। তবে একটা মজার ব্যাপার লক্ষ্য করলাম সেদিন, খাওয়া দাওয়ার সময় সবাই দেখি বেশ চাঙ্গা। ভীষন আনন্দ করে সবাই খেলো। আমার এতোটা তৃপ্তি লেগেছে বলে বোঝাতে পারব না।

IMG20230120220553.jpg
Location

তানজিম কে নিয়ে এর আগেও লিখেছিলাম আমি। ওকে নিয়ে নতুন করে বলার কিছু নেই। আমার সেরা বন্ধু গুলোর একজন। আর প্রমার সাথে খুব অল্প দিনের পরিচয়। ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হওয়ার পর এই ছেলেটা যেভাবে আমাকে দেখভাল করে বাড়িতে নিয়ে এসে ভর্তি করেছে, আমি সারাজীবন ওর কাছে ঋণী এক কথায়। ঐ দিন শেষ মুহূর্তে হলেও এই দুজনের মুখে যে একটু হাসি ফোটাতে পেরেছি এটাই ছিল আমার পরম পাওয়া। খাওয়া দাওয়া শেষ করে একদম মাঝরাত পর্যন্ত ধানমন্ডির রাস্তা দিয়ে হেঁটে মজা করে তারপর বাসায় ফিরেছিলাম। মনে রাখার মত একটা সন্ধ্যা ছিল আমার জন্য ঐদিন।

Sort:  
 last year 

সত্যিই ভাই মন খারাপ থাকলে আমিও মাঝে মাঝে বাহিরে খেতে বের হয়ে যাই। আপনি বন্ধুদের নিয়ে সুলতান ডাইন্স এ খুব মজার কিছু মুহূর্ত পার করেছেন। সুলতান ডাইনস এর কাচ্চি আসলেই অনেক মজার। আমি ধানমন্ডি এবং পুরান ঢাকা দুটি শাখাতে খেয়েছি দুটোই ভাল সার্ভিস এবং কোয়ালিটি খাবার দিয়েছিল। খাবারের সমারোহ দেখে পেটের ভিতর তুফান শুরু হয়ে গেল। আপনার বন্ধুরা অনেক ভাল তা আপনার বর্ণনা থেকে বোঝা যাচ্ছে। ধন্যবাদ ভাইয়া।

 last year 

এই মানুষগুলোর জন্যই জীবনে নতুন কিছু করার সাহস পাই ভাই। এই বন্ধু গুলো আছে বলেই জীবনকে আবার সাজানোর চেষ্টা করছি। তাই এদের জন্য আমি সবকিছু করতে পারি। অনেক ধন্যবাদ ভাই। ভালো থাকবেন।

 last year 

হাহাহা! দিনশেষে পেট ঠিক তো দুনিয়া ঠিক 😁। পেট ঠিক না থাকলে কোনো কিছুতেই ভালো লাগে না। আপনার আইডিয়ার প্রশংসা করতেই হয় দাদা! না হয় দুজনই মুড অফ করে বসে থাকতো। যাক, মনটা তো ভালো হলো অবশেষে সেটাই কম কিসের!

 last year 

আসলেই ভাই, খাওয়া দাওয়া মন মত হলে আমরা বাঙ্গালী সবকিছু ভুলতে পারি হিহিহিহি। আর কারো মুখে হাসি ফোটাতে পারাটা অনেক বড় একটা পাওয়া । অনেক ধন্যবাদ ভাই। ভালোবাসা রইলো।

 last year 

ভাই, বেশ ভালই বুদ্ধি করেছেন দেখছি, মন ভাল করার এত সুন্দর একটি পদ্ধতি আপনার পোষ্ট দেখে শিখে নিলাম। জমপেশ খাওয়া-দাওয়া হলে সবকিছুই দেখি নরমাল হয়ে যায়। এত সুন্দর বুদ্ধি পরবর্তী সময়ে আমারও কাজে লাগবে। যাই হোক, আপনারা তিন বন্ধু মিলে সুলতান ডাইনসে অতর্কিত হামলা করে বেশতো পেট পুরে খেয়েছেন। পরিমাণে এতটাই বেশি ছিল যে শেষ পর্যন্ত পুরো খাবারটি খেতেই পারেননি। এই অবস্থায় আমাকে একটু ডেকে নিলে পারতেন, আমি না হয় সব খাবার সাবার করে দিয়ে আসতাম। হাহাহাহা মজা করলাম আর কি! সুলতান ডাইনসে তিন বন্ধুর খাওয়া ও মন ভালো হয়ে যাওয়া নিয়ে দারুণ লিখেছেন ভাই। শেয়ার করার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।

 last year 

ভাই একদিন আমরাও একসাথে এভাবে খাব আর আড্ডা দেব জমিয়ে। বলা যায় নাহ্ খুব তাড়াতাড়িই হয়তো এমন দিন আসতে পারে। দোয়া করবেন ভাই। অনেক ধন্যবাদ।

 last year 

বন্ধুদের মুড অফ দেখে তাদেরকে খাওয়া দাওয়া করে তাদের মনটা খুশি করেছেন খুবই ভালো লাগলো। আসলে এরকম বন্ধুত্ব এখন সচরাচর দেখা যায় না। বন্ধুত্ব খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটা জিনিস। কারণ বিপদে আপদে সবসময় বন্ধুরাই কাজে লাগে। বন্ধুদের সাথে রেস্টুরেন্টে গিয়ে খাওয়া দাওয়া করার মুহূর্তগুলো আপনি আমাদের সাথে শেয়ার করেছেন দেখে খুবই ভালো লাগলো। ধন্যবাদ আমাদের সাথে এরকম একটি সুন্দর মুহূর্ত শেয়ার করার জন্য।

 last year 

বন্ধুরা মিলে হৈ হুল্লোর না করে থাকলে বড্ড ফাঁকা ফাঁকা লাগে আপু। তাই ওদের মুখে শেষ বেলায় হাসি ফুটিয়ে আমিও অনেক তৃপ্তি পেয়েছি এক কথায়। অনেক ধন্যবাদ আপু আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য।

 last year 

সুলতান ডাইঞ্ছের কাচ্চি আমার বেশ পছন্দের। ঢাকাতে গিয়ে বেশ কয়েকবার এখানকার কাচ্চি খাওয়া হয়েছে এবং সাথে বোরহানিও। এদের কাচ্চিসাত আমার কাছে খুবই ভালো লেগেছে। আপনারাও দেখছি বেশ মজা করে খাবারগুলি উপভোগ করছেন। আপনাদের জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইল।

 last year 

হ্যাঁ ভাইয়া, খাবারের স্বাদ টা মনে রাখার মত একদম। আর এই জন্যই বোধ হয় এত ভিড় লেগে থাকে এখানে। অনেক ধন্যবাদ ভাই আপনার মন্তব্যের জন্য।

 last year 

সুলতান ডাইনসে আপনারা সবাই সুন্দর একটি মুহূর্ত অতিবাহিত করেছেন।খাওয়া দাওয়া সব মিলিয়ে দারুন সময় ছিল আপনাদের।নিমিষেই সকলের মুড অফ ভালো হয়ে গিয়েছিল।ধন্যবাদ সুন্দর মুহূর্তের পোস্টটি শেয়ার করার জন্য ভাইয়া।

 last year (edited)

আমরা বাঙালিরা ভোজন রসিক সবাই। তৃপ্তি নিয়ে খেতে পারলে সবাই খুশি হিহিহিহি। অনেক ধন্যবাদ আপু। ভালো থাকবেন ।

 last year 

আমারও এরকম ঘুরাঘুরি আর খাওয়া-দাওয়া করতে অনেক ভালো লাগে। কোথাও যাবো আর খাওয়া-দাওয়া করবো না তা কি করে হয়। প্রথমে তো গেলে খাওয়া-দাওয়াটাই শেষ করতে হবে আমার। আমাদেরকে ডাকলে তো আমরাও যেতে পারতাম খেতে। যাই হোক না ডেকে ভালোই করলেন। আমরা গেলে আবার আপনাদের পেটে কিছুই পড়তো না 😁 আপনার সুন্দর মুহূর্তটা দেখে অনেক ভালো লাগলো।

 last year 

ওরে বাবা আপু বুঝি এতোই খেতে পারে যে সবার টা সাবার করে দেবে!! হিহিহিহি,,, একদিন দেখে নেব কতোই পারেন খেতে। সময়ের অপেক্ষা। অনেক ধন্যবাদ আপু আপনার মন্তব্যের জন্য। ভালো থাকবেন।

Coin Marketplace

STEEM 0.27
TRX 0.12
JST 0.032
BTC 65345.02
ETH 2944.90
USDT 1.00
SBD 3.76